ভারতের ১৮ তম লোকসভা নির্বাচনের ভোট গণনা শুরু হয়েছে। দেশটির স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৪ জুন) সকাল ৮টায় (বাংলাদেশ সময় সাড়ে ৮টা) ভোটগণনা শুরু হয়। এবার ভারতের সরকার গঠন করবে কে? বিজেপি নাকি কংগ্রেস, এনডিএ জোট নাকি বিরোধী ইন্ডিয়া জোট; তা আজই জানা যাবে।

সংবাদমাধ্যম বলছে, ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট হওয়ায় গণনা খুব দ্রুত শেষ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিশ্বের সব চেয়ে বড় নির্বাচন বলে পরিচিত এই প্রক্রিয়ায় প্রায় ১০০ কোটি মানুষ ভোটার ছিলেন, যার মধ্যে ৬৪ কোটি ২০ লাখ মানুষ ভোট দিয়েছেন বলে দেশটির নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে।

নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে মূলত দুটি জোটের মধ্যে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভারতীয় জনতা পার্টি বা বিজেপি-নেতৃত্বাধীন এনডিএ এবং বিরোধী কংগ্রেসের মিত্রদের নিয়ে গঠিত ‘ইন্ডিয়া’ জোট।

নির্বাচনে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও তার দল বিজেপি-র নেতৃত্বাধীন জোট ‘এনডিএ’ একটানা তৃতীয়বার দেশের ক্ষমতায় আসার জন্য লড়ছে। বিজেপি ক্ষমতায় এলে স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর পর নরেন্দ্র মোদি হবেন প্রথম ব্যক্তি, যিনি পরপর তিনবার দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার গৌরব অর্জন করবেন।

অন্যদিকে বিরোধী শিবিরের মূল জোট ‘ইন্ডিয়া’র নেতারাও আশাবাদী যে তারা সরকার গড়ার জন্য যে গরিষ্ঠতা দরকার, তা অর্জন করতে পারবেন।

‘ইন্ডিয়া’ জোট জয়ী হলে কে প্রধানমন্ত্রী হবেন, তা এখনো নিশ্চিত নয়। বিরোধী জোট নির্বাচনী প্রচারণার সময় কোনও নেতাকেই তাদের ‘প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী’ হিসেবে উপস্থাপন করেনি।

‘ইন্ডিয়া’ জোটের সব চেয়ে বড় দল কংগ্রেসের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে ভোটপর্ব শেষের পর দাবি করেছেন তাদের জোট ২৯৫ বা তার কাছাকাছি আসন পাবে বলে তাদের ধারণা। ভারতীয় সংসদের নিম্নকক্ষ ৫৪৩ আসন বিশিষ্ট লোকসভায় নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার জন্য দরকার অন্তত ২৭২টি আসন। যে দল বা জোট ২৭২ বা তার বেশি আসন পাবে তারা দেশের পরবর্তী সরকার গঠন করবে।

এদিকে সাত দফার নির্বাচন গত শনিবার শেষ হওয়ার পরে যে এক্সিট পোল বা বুথ ফেরত জনমত সমীক্ষা সংবাদমাধ্যম এবং সমীক্ষা সংস্থাগুলো করেছে, তাতে এনডিএ সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পাবে বলে দেখা গেছে। তারা জানিয়েছে, এনডিএ হয় আগের বারের মতো ৩৫৩ (৬৫ শতাংশ) আসন পাবে বা তার থেকে আরও ১০ শতাংশ বেশি পেয়ে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করবে।

কিন্তু প্রায় প্রতিটি বিরোধী দল এই সমীক্ষার বিরোধিতা করে বলেছে, এর কোনো ভিত্তি নেই এবং অতীতে অনেকবারই বুথ ফেরত জরিপ বা এক্সিট পোল ভুল প্রমাণিত হয়েছে।

পাঁচ বছর আগে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি ৩৭.৭ শতাংশ ভোট পেয়ে ৩০৩ আসনে জয়লাভ করেছিল। তার বিপরীতে কংগ্রেস ১৯.৬৬ পেয়ে মাত্র ৫২ আসন পায়। অন্য দলগুলোর অনেকেই নির্দিষ্ট অঞ্চলে সীমাবদ্ধ থেকেছে। যেমন পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস ২২টি আসন, তামিলনাডুতে ডিএমকে ২৩টি আসন, অন্ধ্র প্রদেশে ইউভাজানা স্রামিকা র‍্যথু কংগ্রেস পার্টি ২৩টি আসন এবং মহারাষ্ট্রে শিব সেনা ১৮টি আসন পেয়েছিল।

নিউজ লাইট ৭১