ঢাকা ০১:২৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাচঁদিন বয়সী সেই নবজাতককে দত্তক নিয়েছেন কিশোগঞ্জ জেলা প্রশাসক

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ১০:২৯:৪৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২০
  • / 121

নিউজ লাইট ৭১: কিশোরগঞ্জের ভৈরবে পৃথিবীতে আসা এই ফুটফুটে নবজাতক শিশুটির মায়ের কোল থেকে স্থান হয় রাস্তার ভিক্ষুকের কোলে। পরবর্তীতে অস্থায়ী ঠিকানা হয় ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।

সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্তও হাসপাতালের বিছানাটিতে যার সময় কেটেছে একাকীত্বে, পাচঁদিন বয়সী সেই নবজাতককে দত্তক নিয়েছেন কিশোগঞ্জ জেলা প্রশাসক সারওয়ার মোর্শেদ চৌধুরি।

আগামী বৃহস্পতিবার শিশুটিকে জেলা প্রশাসকের হাতে হস্থান্তর করা হবে। তবে এর আগ পর্যন্ত শিশুটির নিরাপত্তার কথা ভেবে হাসপাতাল থেকে মায়ের আদরে নিজের বাসায় তুলেছেন ভৈরব উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা লুবনা ফারজানা।

গত ২৪জানুয়ারি সন্ধ্যায় কিশোরগঞ্জের ভৈরব বাসষ্ট্যান্ড এলাকায় টয়লেটে যাবার কথা বলে এক ভিক্ষুকের কোলে দুইদিন বয়সী নবজাতক কন্যাকে রেখে পালিয়ে যায় এক নারী। ঘটনাটি জানতে পেরে ইউএনও’র নির্দেশে তাৎক্ষণিক শিশুটিকে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়।

পরে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরিক্ষা শেষে শিশুটির সুস্থ্যতা নিশ্চিত করেন চিকিৎসকরা। ঘটনাটি বিভিন্ন গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে অন্তত চল্লিশজন শিশুটির দায়িত্ব নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেন কিন্তু আইন অনুযায়ী শিশুটির ঠিকানা নির্ধারনে আদালতে আবেদন করেছেন সমাজ সেবা অধিদপ্তর। পরে কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক সারওয়ার মোর্শেদ চৌধুরি শিশুটিকে দত্তক নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করলে আদালত এতে সম্মতি দেন।

সোমবার কিশোরগঞ্জ ১নং আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মো. রফিকুল বারী আইন প্রক্রিয়া শেষে এ রায় দেন। আগামী বৃহস্পতিবার শিশুটিকে জেলা প্রশাসকের হাতে হস্তান্তর করা হবে বলে নিশ্চিত করেছেন ভৈরব উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা লুবনা ফারজানা। আর আগ পর্যন্ত শিশুটির সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করণের লক্ষে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে মাতৃ স্নেহে নিজের বাসায় গেছেন ইউএনও লুবনা ফারজানা।

গতকাল রাত আটটার দিকে ইউএনও লুবনা ফারজানা হাসপাতাল থেকে শিশুটিকে বাসায় নিয়ে যান।

শিশুটিকে হাসপাতালে নেওয়ার প্রথমরাতে ক্ষাণিকক্ষণ কান্নাকাটি করলেও এরপরে এই নবজাতককে আর কাদতে দেখেনি কেউ।

অন্য সবার মতো প্রকৃতির নিয়মে পৃথিবীতে আসা হলেও ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তাকে যেন মেনেই নিয়েছিল এই নবজাতক। পাষন্ড বাবা-মায়ের নির্মমতার স্বীকার শিশুটির ঠিকানা যেখানেই হোক, ভবিষ্যত তার উজ্জল হবে এমনটাই প্রত্যাশা সকলের।

Tag :

শেয়ার করুন

পাচঁদিন বয়সী সেই নবজাতককে দত্তক নিয়েছেন কিশোগঞ্জ জেলা প্রশাসক

আপডেট টাইম : ১০:২৯:৪৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২০

নিউজ লাইট ৭১: কিশোরগঞ্জের ভৈরবে পৃথিবীতে আসা এই ফুটফুটে নবজাতক শিশুটির মায়ের কোল থেকে স্থান হয় রাস্তার ভিক্ষুকের কোলে। পরবর্তীতে অস্থায়ী ঠিকানা হয় ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।

সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্তও হাসপাতালের বিছানাটিতে যার সময় কেটেছে একাকীত্বে, পাচঁদিন বয়সী সেই নবজাতককে দত্তক নিয়েছেন কিশোগঞ্জ জেলা প্রশাসক সারওয়ার মোর্শেদ চৌধুরি।

আগামী বৃহস্পতিবার শিশুটিকে জেলা প্রশাসকের হাতে হস্থান্তর করা হবে। তবে এর আগ পর্যন্ত শিশুটির নিরাপত্তার কথা ভেবে হাসপাতাল থেকে মায়ের আদরে নিজের বাসায় তুলেছেন ভৈরব উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা লুবনা ফারজানা।

গত ২৪জানুয়ারি সন্ধ্যায় কিশোরগঞ্জের ভৈরব বাসষ্ট্যান্ড এলাকায় টয়লেটে যাবার কথা বলে এক ভিক্ষুকের কোলে দুইদিন বয়সী নবজাতক কন্যাকে রেখে পালিয়ে যায় এক নারী। ঘটনাটি জানতে পেরে ইউএনও’র নির্দেশে তাৎক্ষণিক শিশুটিকে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়।

পরে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরিক্ষা শেষে শিশুটির সুস্থ্যতা নিশ্চিত করেন চিকিৎসকরা। ঘটনাটি বিভিন্ন গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে অন্তত চল্লিশজন শিশুটির দায়িত্ব নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেন কিন্তু আইন অনুযায়ী শিশুটির ঠিকানা নির্ধারনে আদালতে আবেদন করেছেন সমাজ সেবা অধিদপ্তর। পরে কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক সারওয়ার মোর্শেদ চৌধুরি শিশুটিকে দত্তক নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করলে আদালত এতে সম্মতি দেন।

সোমবার কিশোরগঞ্জ ১নং আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মো. রফিকুল বারী আইন প্রক্রিয়া শেষে এ রায় দেন। আগামী বৃহস্পতিবার শিশুটিকে জেলা প্রশাসকের হাতে হস্তান্তর করা হবে বলে নিশ্চিত করেছেন ভৈরব উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা লুবনা ফারজানা। আর আগ পর্যন্ত শিশুটির সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করণের লক্ষে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে মাতৃ স্নেহে নিজের বাসায় গেছেন ইউএনও লুবনা ফারজানা।

গতকাল রাত আটটার দিকে ইউএনও লুবনা ফারজানা হাসপাতাল থেকে শিশুটিকে বাসায় নিয়ে যান।

শিশুটিকে হাসপাতালে নেওয়ার প্রথমরাতে ক্ষাণিকক্ষণ কান্নাকাটি করলেও এরপরে এই নবজাতককে আর কাদতে দেখেনি কেউ।

অন্য সবার মতো প্রকৃতির নিয়মে পৃথিবীতে আসা হলেও ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তাকে যেন মেনেই নিয়েছিল এই নবজাতক। পাষন্ড বাবা-মায়ের নির্মমতার স্বীকার শিশুটির ঠিকানা যেখানেই হোক, ভবিষ্যত তার উজ্জল হবে এমনটাই প্রত্যাশা সকলের।