ঢাকা ০৮:২৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৫ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আগেভাগেই গ্রামে ছুটছে মানুষ

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ০৯:৩৫:৪১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৫ এপ্রিল ২০২৪
  • / 34

মুসলমানদের বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতরের আনন্দ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ভাগাভাগি করতে কর্মস্থল ছাড়া শুরু করেছেন অনেকে। দলে দলে বাস টার্মিনালে আসছেন তারা, করছেন বাসের অপেক্ষা। প্রথম দিনেই যানবাহনের সংকট বলে দাবি করেছেন যাত্রীরা।

বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) বিকাল ৩টার দিকে ঢাকা-আরিচা ও নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের নবীনগর, বাইপাইল, শ্রীপুর ও জিরানীবাজার বাসস্ট্যান্ডে যায়, বিকাল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কর্মস্থল ছেড়ে বাসস্ট্যান্ডে আসছেন মানুষ। শেকড়ের টানে এবার গ্রামে ফেরার পালা। তবে মহাসড়কে যানবাহনের চাপ চোখে পড়েনি। যাত্রী রাবেয়া খাতুন বলেন, আমরা পরিবারের ৫ জন একসঙ্গে বাড়ি যাচ্ছি। আমরা পোশাক কারখানায় কাজ করি। অগ্রিম টিকিট করার কোনো সুযোগ আমরা পাই না। একটু আগেভাগে ছুটি পেয়েছি, তাই সবাই মিলে নবীনগর বাসস্ট্যান্ডে গাড়ির অপেক্ষা করছি। আমরা ফরিদপুর যাব। এ লাইনে পদ্মা সেতু হওয়ার পর থেকে তেমন ভোগান্তি পোহাতে হয় না। শুধু যানবাহন সংকটে পড়তে হয়। আজও তার ব্যতিক্রম নয়।  দীর্ঘ সময় ধরে গাড়ির অপেক্ষা করছি, কিন্তু গাড়ি পাই না। এখন নবীনগর থেকে পাটুরিয়া গিয়ে নদী পার হয়ে আবার অন্য গাড়ি ধরে বাড়ি যাব।

বাইপাইল হানিফ কাউন্টারের কাউন্টার মাস্টার গণমাধ্যমকে বলেন, আমাদের টিকিট অগ্রিম বিক্রি হয়ে গেছে। আমাদের লোকাল  যাত্রী নেয়ার সুযোগ নেই। মাত্র মানুষ টার্মিনালে আসা শুরু করেছেন। এজন্য একটু গাড়ি কম। তবে সময় গড়ার সঙ্গে সঙ্গে গাড়ির চাপ বাড়বে। সেক্ষেত্রে লোকাল গাড়ি সড়কে নামবে। এ ব্যাপারে সাভার হাইওয়ে থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাবুল আক্তার বলেন, ঘরে ফেরা মানুষ বাস টার্মিনালে আসা শুরু করেছে। ধীরে ধীরে যানবাহনের চাপ বাড়বে। আমরা মহাসড়কে রয়েছি। যানজট নিরসন ও নির্বিঘ্ন ঈদযাত্রায় আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

বাসে বেশি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ: সরকার-নির্ধারিত ভাড়া থেকে কম মূল্যে টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন দূরপাল্লার পরিবহনের টিকিট বিক্রেতারা। তবে যাত্রীদের অভিযোগ, আগের তুলনায় বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। সরেজমিনে দেখা যায়, গাবতলী বাস টার্মিনাল ঘিরে ব্যাপক পুলিশি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। আপাতত যাত্রী কম থাকলেও অনেক যাত্রী টিকিটের খোঁজে টার্মিনালে এসেছেন। কোনো কোনো কাউন্টারে টিকিট না থাকলেও কেউ কেউ ডেকে ডেকে টিকিট বিক্রি করছেন। তবে বেশি দামে টিকিট বিক্রির বিষয়টি কাউন্টারের কর্মচারীরা স্বীকার করেছেন।

তারা জানান, অন্যান্য সময়ের তুলনায় কিছু টাকা বেশি নেয়া হচ্ছে। তবে বিটিআরসির নির্ধারিত ভাড়া থেকে কম নেয়া হচ্ছে। গাবতলী বাস টার্মিনালে টিকিট কাটতে এসেছেন রাশেদ হোসেন নামের এক ব্যবসায়ী। তিনি বলেন, আমার বাড়ি চুয়াডাঙ্গাতে। টিকিট পাওয়া যাচ্ছে, তবে ভাড়া বেশি দাবি করছে কাউন্টারগুলো। এখন ফেরিঘাটেও সেরকম জ্যাম নেই। তারপরও ভাড়া বেশি চাওয়া হচ্ছে। অন্যান্য সময় আমরা সাড়ে ৬শ টাকায় গেলেও ঈদ আসলেই বাস ভাড়া বেড়ে যায়। তারপরও তো আমাদের বাধ্য হয়ে যেতে হয়।

টিকিটের দাম প্রসঙ্গে সোহাগ কাউন্টারের কর্মকর্তা বলেন, আমাদের টিকিটের দাম বাড়েনি। আগে যেই দামে টিকিট বিক্রি করতাম এখনো সেই একই দামে বিক্রি করছি। তবে ঈদের দাম শুরু হয়নি। আগামী রবিবার থেকে যাত্রীদের চাপ শুরু হতে পারে বলে জানান তিনি।

দেশ ট্রাভেলস কাউন্টারের ম্যানেজার তুষার জানান, গাবতলী থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ যেতে সরকার নির্ধারিত ভাড়া অনুযায়ী ৮৩৮ টাকা গুনতে হয় যাত্রীদের। কিন্তু আমরা ৮ টাকা কমিয়ে ৮৩০ টাকা করে নিচ্ছি। প্রত্যেকটা গাড়িই পরিপূর্ণ যাত্রী নিয়ে যাচ্ছে। আমাদের বাসের প্রায় সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে।

নিউজ লাইট ৭১

Tag :

শেয়ার করুন

আগেভাগেই গ্রামে ছুটছে মানুষ

আপডেট টাইম : ০৯:৩৫:৪১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৫ এপ্রিল ২০২৪

মুসলমানদের বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতরের আনন্দ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ভাগাভাগি করতে কর্মস্থল ছাড়া শুরু করেছেন অনেকে। দলে দলে বাস টার্মিনালে আসছেন তারা, করছেন বাসের অপেক্ষা। প্রথম দিনেই যানবাহনের সংকট বলে দাবি করেছেন যাত্রীরা।

বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) বিকাল ৩টার দিকে ঢাকা-আরিচা ও নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের নবীনগর, বাইপাইল, শ্রীপুর ও জিরানীবাজার বাসস্ট্যান্ডে যায়, বিকাল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কর্মস্থল ছেড়ে বাসস্ট্যান্ডে আসছেন মানুষ। শেকড়ের টানে এবার গ্রামে ফেরার পালা। তবে মহাসড়কে যানবাহনের চাপ চোখে পড়েনি। যাত্রী রাবেয়া খাতুন বলেন, আমরা পরিবারের ৫ জন একসঙ্গে বাড়ি যাচ্ছি। আমরা পোশাক কারখানায় কাজ করি। অগ্রিম টিকিট করার কোনো সুযোগ আমরা পাই না। একটু আগেভাগে ছুটি পেয়েছি, তাই সবাই মিলে নবীনগর বাসস্ট্যান্ডে গাড়ির অপেক্ষা করছি। আমরা ফরিদপুর যাব। এ লাইনে পদ্মা সেতু হওয়ার পর থেকে তেমন ভোগান্তি পোহাতে হয় না। শুধু যানবাহন সংকটে পড়তে হয়। আজও তার ব্যতিক্রম নয়।  দীর্ঘ সময় ধরে গাড়ির অপেক্ষা করছি, কিন্তু গাড়ি পাই না। এখন নবীনগর থেকে পাটুরিয়া গিয়ে নদী পার হয়ে আবার অন্য গাড়ি ধরে বাড়ি যাব।

বাইপাইল হানিফ কাউন্টারের কাউন্টার মাস্টার গণমাধ্যমকে বলেন, আমাদের টিকিট অগ্রিম বিক্রি হয়ে গেছে। আমাদের লোকাল  যাত্রী নেয়ার সুযোগ নেই। মাত্র মানুষ টার্মিনালে আসা শুরু করেছেন। এজন্য একটু গাড়ি কম। তবে সময় গড়ার সঙ্গে সঙ্গে গাড়ির চাপ বাড়বে। সেক্ষেত্রে লোকাল গাড়ি সড়কে নামবে। এ ব্যাপারে সাভার হাইওয়ে থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাবুল আক্তার বলেন, ঘরে ফেরা মানুষ বাস টার্মিনালে আসা শুরু করেছে। ধীরে ধীরে যানবাহনের চাপ বাড়বে। আমরা মহাসড়কে রয়েছি। যানজট নিরসন ও নির্বিঘ্ন ঈদযাত্রায় আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

বাসে বেশি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ: সরকার-নির্ধারিত ভাড়া থেকে কম মূল্যে টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন দূরপাল্লার পরিবহনের টিকিট বিক্রেতারা। তবে যাত্রীদের অভিযোগ, আগের তুলনায় বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। সরেজমিনে দেখা যায়, গাবতলী বাস টার্মিনাল ঘিরে ব্যাপক পুলিশি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। আপাতত যাত্রী কম থাকলেও অনেক যাত্রী টিকিটের খোঁজে টার্মিনালে এসেছেন। কোনো কোনো কাউন্টারে টিকিট না থাকলেও কেউ কেউ ডেকে ডেকে টিকিট বিক্রি করছেন। তবে বেশি দামে টিকিট বিক্রির বিষয়টি কাউন্টারের কর্মচারীরা স্বীকার করেছেন।

তারা জানান, অন্যান্য সময়ের তুলনায় কিছু টাকা বেশি নেয়া হচ্ছে। তবে বিটিআরসির নির্ধারিত ভাড়া থেকে কম নেয়া হচ্ছে। গাবতলী বাস টার্মিনালে টিকিট কাটতে এসেছেন রাশেদ হোসেন নামের এক ব্যবসায়ী। তিনি বলেন, আমার বাড়ি চুয়াডাঙ্গাতে। টিকিট পাওয়া যাচ্ছে, তবে ভাড়া বেশি দাবি করছে কাউন্টারগুলো। এখন ফেরিঘাটেও সেরকম জ্যাম নেই। তারপরও ভাড়া বেশি চাওয়া হচ্ছে। অন্যান্য সময় আমরা সাড়ে ৬শ টাকায় গেলেও ঈদ আসলেই বাস ভাড়া বেড়ে যায়। তারপরও তো আমাদের বাধ্য হয়ে যেতে হয়।

টিকিটের দাম প্রসঙ্গে সোহাগ কাউন্টারের কর্মকর্তা বলেন, আমাদের টিকিটের দাম বাড়েনি। আগে যেই দামে টিকিট বিক্রি করতাম এখনো সেই একই দামে বিক্রি করছি। তবে ঈদের দাম শুরু হয়নি। আগামী রবিবার থেকে যাত্রীদের চাপ শুরু হতে পারে বলে জানান তিনি।

দেশ ট্রাভেলস কাউন্টারের ম্যানেজার তুষার জানান, গাবতলী থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ যেতে সরকার নির্ধারিত ভাড়া অনুযায়ী ৮৩৮ টাকা গুনতে হয় যাত্রীদের। কিন্তু আমরা ৮ টাকা কমিয়ে ৮৩০ টাকা করে নিচ্ছি। প্রত্যেকটা গাড়িই পরিপূর্ণ যাত্রী নিয়ে যাচ্ছে। আমাদের বাসের প্রায় সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে।

নিউজ লাইট ৭১