ঢাকা ০৮:৩৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সরকারকে আরও কঠোর হতে হবে

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ০৭:০০:৪২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪
  • / 32

ভোগ্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে দেশের নিম্ন আয়ের মানুষের নাভিশ্বাস অবস্থা। লাগামহীন এই পরিস্থিতির কারণে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে। সরকার তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছে।

পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম গত শনিবার ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) এক কর্মশালায় বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হলেও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসছে না। এটা সরকারকে ভাবাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বাজারের লাগাম টেনে ধরতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ডিম, আলু ও পেঁয়াজের সর্বোচ্চ দাম বেঁধে দেয়। এই দাম গত শুক্রবার থেকে কার্যকর হলেও বাজারগুলোতে আগের অবস্থায় দেখা গেছে; বরং একেক বাজারে বা একেক এলাকায় নানা দামে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

ব্যবসায়ীদের দাবি, সরকার অযাচিত পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করেছে। তাদের বেঁধে দেয়া মূল্যে ভোগ্যপণ্য কেনাই যাচ্ছে না। পাইকারি বাজার থেকে বেশি দামে পণ্য কিনে কমে বিক্রি করা সম্ভব নয়। কিন্তু সরকার নির্ধারিত মূল্যের বেশি টাকায় কেন বিক্রি হচ্ছে-এ ব্যাপারে নগরী বিভিন্ন বাজারের ব্যবসায়ীদের কথা এক। তাহলো-কম দামে কিনতে না পারলে তো বেশি দামে বিক্রি করবই। কোল্ড স্টোরেজ থেকে নতুন আলু বাজারে আসেনি। তাই দাম বেশি দিয়ে আগের আলু কিনতে হচ্ছে। সরকার যে দাম বেঁধে দিয়েছে তা বাস্তবায়ন হওয়ার সম্ভাবনা খুব একটা দেখছি না। জানা যায়, সরকার নির্ধারিত নতুন দর কার্যকর নিয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর রাজধানীসহ দেশের জেলা শহরগুলোতে অভিযান চালাচ্ছে। তারপরও সরকার নির্ধারিত মূল্য বাস্তবায়ন হচ্ছে না। হতে আরও কয়েকদিন সময় লাগতে পারে এও ভাষ্য সরকারের সংশ্লিস্ট বিভাগের। সরকার খুচরা বাজারে ছয়টি পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে। যদিও নির্ধারিত দর কেউ মানছে না। বাজারে অভিযান চলছে। কিন্তু তাতেও নতুন দর কার্যকর করানো যাচ্ছে না।

নতুন পণ্যের ঘোষিত দর সরকার কার্যকর করতে চায়। কিন্তু ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মতামত হচ্ছে, মুক্তবাজার অর্থনীতিতে দাম বেঁধে দিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। উৎপাদনস্থলে গিয়ে খোঁজখবর না নিয়ে বাজার অভিযানের মতো পদক্ষেপে হয়তো খুব বেশি লাভ হবে না।

এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়নে যথেষ্ট জনবল আছে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন আছে। কারণ, অভিযানকালে পণ্যের দাম কম নিলেও, পরে জরিমানার টাকাসহ বিক্রেতারা উশুল করে নেন। তখন দেখার কেউ থাকে না। বাজার নিয়ন্ত্রণ করার কথা প্রতি বছর রমজানের আগেই আমরা শুনি। কিন্তু তারপরে দেখা যায় কোনোভাবেই বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয় না। জনগণ নিত্যপণ্যে মূল্যের তোড়ে একদম চিড়ে চ্যাপ্টা। ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না কোনোভাবেই। এ ব্যাপারে সরকারের কঠোরতার কোনো ঘটনাও চোখে পড়ছে না। আমরা মনে করি সরকারকে আরও কঠোর হতে হবে। নতুবা সোজা আঙুলে ঘি উঠবে না। যেকোনোভাবে পণ্যমূল্য না কমালে মানুষের সংকট আরো অসহনীয় হয়ে উঠবে।

নিউজ লাইট ৭১

Tag :

শেয়ার করুন

সরকারকে আরও কঠোর হতে হবে

আপডেট টাইম : ০৭:০০:৪২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪

ভোগ্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে দেশের নিম্ন আয়ের মানুষের নাভিশ্বাস অবস্থা। লাগামহীন এই পরিস্থিতির কারণে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে। সরকার তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছে।

পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম গত শনিবার ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) এক কর্মশালায় বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হলেও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসছে না। এটা সরকারকে ভাবাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বাজারের লাগাম টেনে ধরতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ডিম, আলু ও পেঁয়াজের সর্বোচ্চ দাম বেঁধে দেয়। এই দাম গত শুক্রবার থেকে কার্যকর হলেও বাজারগুলোতে আগের অবস্থায় দেখা গেছে; বরং একেক বাজারে বা একেক এলাকায় নানা দামে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

ব্যবসায়ীদের দাবি, সরকার অযাচিত পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করেছে। তাদের বেঁধে দেয়া মূল্যে ভোগ্যপণ্য কেনাই যাচ্ছে না। পাইকারি বাজার থেকে বেশি দামে পণ্য কিনে কমে বিক্রি করা সম্ভব নয়। কিন্তু সরকার নির্ধারিত মূল্যের বেশি টাকায় কেন বিক্রি হচ্ছে-এ ব্যাপারে নগরী বিভিন্ন বাজারের ব্যবসায়ীদের কথা এক। তাহলো-কম দামে কিনতে না পারলে তো বেশি দামে বিক্রি করবই। কোল্ড স্টোরেজ থেকে নতুন আলু বাজারে আসেনি। তাই দাম বেশি দিয়ে আগের আলু কিনতে হচ্ছে। সরকার যে দাম বেঁধে দিয়েছে তা বাস্তবায়ন হওয়ার সম্ভাবনা খুব একটা দেখছি না। জানা যায়, সরকার নির্ধারিত নতুন দর কার্যকর নিয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর রাজধানীসহ দেশের জেলা শহরগুলোতে অভিযান চালাচ্ছে। তারপরও সরকার নির্ধারিত মূল্য বাস্তবায়ন হচ্ছে না। হতে আরও কয়েকদিন সময় লাগতে পারে এও ভাষ্য সরকারের সংশ্লিস্ট বিভাগের। সরকার খুচরা বাজারে ছয়টি পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে। যদিও নির্ধারিত দর কেউ মানছে না। বাজারে অভিযান চলছে। কিন্তু তাতেও নতুন দর কার্যকর করানো যাচ্ছে না।

নতুন পণ্যের ঘোষিত দর সরকার কার্যকর করতে চায়। কিন্তু ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মতামত হচ্ছে, মুক্তবাজার অর্থনীতিতে দাম বেঁধে দিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। উৎপাদনস্থলে গিয়ে খোঁজখবর না নিয়ে বাজার অভিযানের মতো পদক্ষেপে হয়তো খুব বেশি লাভ হবে না।

এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়নে যথেষ্ট জনবল আছে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন আছে। কারণ, অভিযানকালে পণ্যের দাম কম নিলেও, পরে জরিমানার টাকাসহ বিক্রেতারা উশুল করে নেন। তখন দেখার কেউ থাকে না। বাজার নিয়ন্ত্রণ করার কথা প্রতি বছর রমজানের আগেই আমরা শুনি। কিন্তু তারপরে দেখা যায় কোনোভাবেই বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয় না। জনগণ নিত্যপণ্যে মূল্যের তোড়ে একদম চিড়ে চ্যাপ্টা। ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না কোনোভাবেই। এ ব্যাপারে সরকারের কঠোরতার কোনো ঘটনাও চোখে পড়ছে না। আমরা মনে করি সরকারকে আরও কঠোর হতে হবে। নতুবা সোজা আঙুলে ঘি উঠবে না। যেকোনোভাবে পণ্যমূল্য না কমালে মানুষের সংকট আরো অসহনীয় হয়ে উঠবে।

নিউজ লাইট ৭১