ঢাকা ১০:৫২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মাংস ভাগাভাগি করে নিলেন গ্রামবাসী

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ১০:৩৮:৩০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৮ জানুয়ারী ২০২৪
  • / 47

নীলগাই। ছবি: সংগৃহীত

ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলায় বিলুপ্তপ্রায় একটি নীলগাই উদ্ধার করে মাংসের জন্য জবাই করেছে এলাকাবাসী।

রোববার (৭ জানুয়ারি) বিকালে উপজেলার রাতোর ইউনিয়নের ভেলাই গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানান, বিকালে ভেলাই গ্রামের একটি পুকুরপাড়ের একটি ঝোপঝাড়ে একটি নীলগাই ছোটাছুটি করছিল। ব্যাপারটি গ্রামের কয়েকজনের নজরে এলে তারা প্রাণীটিকে ধাওয়া করে ধরে ফেলেন। খবর ছড়িয়ে পড়লে উৎসুক গ্রামবাসী সেখানে ভিড় জমান। একসময় গ্রামবাসী প্রাণীটিকে জবাই করে মাংস ভাগাভাগি করে নেন।

রাতোর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শরৎচন্দ্র রায় জানান, গ্রামবাসী একটি নীলগাই আটক করে জবাই করে মাংস ভাগাভাগি করে নিয়েছে। বিষয়টি আমি শুনেছি। কাজটি তারা ঠিক করেনি। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে।

রাণীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রকিবুল হাসান জানান, নীলগাইটি জবাই করে দেওয়া ঠিক হয়নি। ঘটনাস্থলে বন বিভাগের লোক পাঠানো হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঠাকুরগাঁও বন বিভাগের কর্মকর্তা শাহজাহান আলী জানান, ঘটনাস্থলে আমাদের পরিদর্শক দল পাঠানো হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পরামর্শমতে ও তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এদিকে বন অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা জোহরা মিলা বলেন, সীমান্ত পেরিয়ে আসা নীলগাইগুলো প্রায়ই স্থানীয়দের মাধ্যমে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করে। এ ধরনের নৃশংতার অবসান হওয়া প্রয়োজন।

তিনি বলেন, দেখতে ঘোড়ার মতো হলেও নীলগাই প্রকৃতপক্ষে অ্যান্টিলোপ-জাতীয় প্রাণী। একসময় বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, নওগাঁ, জয়পুরহাট এলাকার বনে প্রাণীটির দেখা মিলত। তবে ১৯৪০ সালের পর বাংলাদেশে আবাসিক নীলগাই দেখা গেছে, এমন তথ্য পাওয়া যায় না। অনিয়ন্ত্রিত শিকার, বাসস্থান ও খাদ্যের অভাবসহ প্রতিকূল পরিবেশের কারণে প্রাণীটি অনেক আগেই বাংলাদেশ থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। প্রাণীটি সাধারণত দলবেঁধে থাকে। তবে গত কয়েক বছর ধরে মাঝেমধ্যে যে কয়েকটি নীলগাই উদ্ধারের খবর পাওয়া যায়, সেগুলো মূলত ভারত থেকে আসা। বর্তমানে ভারত ছাড়াও পাকিস্তান ও নেপালে নীলগাইয়ের বসবাস রয়েছে। তবে তার সংখ্যাও আশঙ্কাজনক।

নিউজ লাইট ৭১

Tag :

শেয়ার করুন

মাংস ভাগাভাগি করে নিলেন গ্রামবাসী

আপডেট টাইম : ১০:৩৮:৩০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৮ জানুয়ারী ২০২৪

ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলায় বিলুপ্তপ্রায় একটি নীলগাই উদ্ধার করে মাংসের জন্য জবাই করেছে এলাকাবাসী।

রোববার (৭ জানুয়ারি) বিকালে উপজেলার রাতোর ইউনিয়নের ভেলাই গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানান, বিকালে ভেলাই গ্রামের একটি পুকুরপাড়ের একটি ঝোপঝাড়ে একটি নীলগাই ছোটাছুটি করছিল। ব্যাপারটি গ্রামের কয়েকজনের নজরে এলে তারা প্রাণীটিকে ধাওয়া করে ধরে ফেলেন। খবর ছড়িয়ে পড়লে উৎসুক গ্রামবাসী সেখানে ভিড় জমান। একসময় গ্রামবাসী প্রাণীটিকে জবাই করে মাংস ভাগাভাগি করে নেন।

রাতোর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শরৎচন্দ্র রায় জানান, গ্রামবাসী একটি নীলগাই আটক করে জবাই করে মাংস ভাগাভাগি করে নিয়েছে। বিষয়টি আমি শুনেছি। কাজটি তারা ঠিক করেনি। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে।

রাণীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রকিবুল হাসান জানান, নীলগাইটি জবাই করে দেওয়া ঠিক হয়নি। ঘটনাস্থলে বন বিভাগের লোক পাঠানো হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঠাকুরগাঁও বন বিভাগের কর্মকর্তা শাহজাহান আলী জানান, ঘটনাস্থলে আমাদের পরিদর্শক দল পাঠানো হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পরামর্শমতে ও তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এদিকে বন অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা জোহরা মিলা বলেন, সীমান্ত পেরিয়ে আসা নীলগাইগুলো প্রায়ই স্থানীয়দের মাধ্যমে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করে। এ ধরনের নৃশংতার অবসান হওয়া প্রয়োজন।

তিনি বলেন, দেখতে ঘোড়ার মতো হলেও নীলগাই প্রকৃতপক্ষে অ্যান্টিলোপ-জাতীয় প্রাণী। একসময় বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, নওগাঁ, জয়পুরহাট এলাকার বনে প্রাণীটির দেখা মিলত। তবে ১৯৪০ সালের পর বাংলাদেশে আবাসিক নীলগাই দেখা গেছে, এমন তথ্য পাওয়া যায় না। অনিয়ন্ত্রিত শিকার, বাসস্থান ও খাদ্যের অভাবসহ প্রতিকূল পরিবেশের কারণে প্রাণীটি অনেক আগেই বাংলাদেশ থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। প্রাণীটি সাধারণত দলবেঁধে থাকে। তবে গত কয়েক বছর ধরে মাঝেমধ্যে যে কয়েকটি নীলগাই উদ্ধারের খবর পাওয়া যায়, সেগুলো মূলত ভারত থেকে আসা। বর্তমানে ভারত ছাড়াও পাকিস্তান ও নেপালে নীলগাইয়ের বসবাস রয়েছে। তবে তার সংখ্যাও আশঙ্কাজনক।

নিউজ লাইট ৭১