নম্বর ক্লোন করে প্রতারণা
- আপডেট টাইম : ০৮:৫৪:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩
- / 33
সোমবার নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপার ও বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নম্বর ক্লোন করে প্রতারণা করার অভিযোগে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপি’র গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ। গ্রেপ্তারকৃতের নাম-ইমরান হোসেন হীরা। তার কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত দুইটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।
গত শনিবার বরিশালের বাকেরগঞ্জ থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ইমরানকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের সোশ্যাল মিডিয়া ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম।
পুলিশ জানায়, একজন প্রতারক ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারের (অ্যাডমিন) সরকারি নম্বর ক্লোন করে মতিঝিল থানার ডিউটি অফিসারের মোবাইল নম্বরে ফোন দিয়ে নিজেকে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) পরিচয় দেন। পরে প্রতারক একটি অভিযোগের ভিত্তিতে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে এমন দুইজন ব্যক্তিকে কেন থানায় আনা হয়েছে তার কারণ জানতে চান এবং দ্রুত তাদের ছেড়ে দেয়ার নির্দেশ দেন। এরপর প্রতারক ওই দুই ব্যক্তিকে থানা থেকে ছাড়িয়ে আনার জন্য টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে প্রতারক তাদের বিভিন্ন হুমকি-ধামকি দেন। ওই ঘটনায় মতিঝিল থানায় মামলা হয়। পরে তদন্ত শুরু করে গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের সোশ্যাল মিডিয়া ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম।
সোমবার নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তি একজন পেশাদার প্রতারক। তিনি দশম শ্রেণি পর্যন্ত অধ্যয়ন করলেও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারে পারদর্শী। তিনি ইন্টারনেট ব্যবহার করে বিভিন্ন অ্যাপসের ব্যবহার সম্পর্কে ভাল ধারণা রাখতেন। বিভিন্ন গুরত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নম্বর ক্লোন করে অনুরূপ নম্বর তৈরির লক্ষ্যে ইন্টারনেট থেকে বিশেষ অ্যাপ ব্যবহার করেন।
একটি বিশেষ অ্যাপের মাধ্যমে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা ও দেশের বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপারের সরকারি নম্বর ক্লোন করে থানায় ওসি ও ডিউটি অফিসারের নম্বরে ফোন করে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের ছেড়ে দেয়ার বিষয়ে অনৈতিক তদবির করতেন। এরপর কৌশলে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের পরিবারের নম্বর নিয়ে তাদের ছেড়ে দেয়ার কথা বলে অর্থ দাবি করতেন।
গ্রেপ্তার ইমরানের বিরুদ্ধে দেশের একাধিক থানায় মামলা রয়েছে জানিয়ে ডিবি কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ বলেন, ইমরান সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সরকারি নম্বর ক্লোন করে বিভিন্ন ধরনের প্রতারণা করতেন। ইউএনও ও প্রশাসনিক কর্মকর্তার নম্বর ক্লোন করে চেয়ারম্যান, মেম্বারের কাছে ফোন করে এলাকার রাস্তা নির্মাণের কাজ বরাদ্দ হয়েছে বলে সরকারি ফি-বাবদ বিভিন্ন অংকের টাকা জমা দিতে বলতেন। প্রতারিত চেয়ারম্যান, মেম্বার সরল বিশ্বাসে প্রতারককে টাকা পাঠাতেন। গ্রেপ্তার ইমরানকে মতিঝিল থানায় দায়ের করা মামলায় আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এ ধরনের প্রতারণা এড়াতে গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের কিছু সুপারিশ করেছে। সেগুলো হলো- সন্দেহজনক কল আসলে বা অনৈতিক প্রস্তাব আসলে অর্থাৎ ক্লোনকৃত নম্বর থেকে কল এলে আবারও কল করা নম্বরে কল করে নিশ্চিত হওয়া। বাংলাদেশের সকল মোবাইল নম্বরের কান্ট্রি কোড+৮৮, ক্লোনকৃত নম্বর +৩৮, +১, +৮৮৮, +০৮ ইত্যাদি সংবলিত থাকে।
কোন উচ্চপদস্থ পুলিশ অফিসার বা অন্য কোন সরকারি কর্মকর্তার নম্বরের প্রথমে +৮৮ এর পরিবর্তে +৩৮, +১, +৮৮৮ ইত্যাদি নম্বর থেকে কল আসলে ইনকামিং নম্বরটি ভালভাবে পর্যবেক্ষণ করে যোগাযোগ করা।
এ ধরনের প্রতারণার শিকার হলে পুলিশকে অবহিত করা।
নিউজ লাইট ৭১