রাজনীতিতে আজ সৌজন্য বোধ বিরল, রাজনীতি ক্রমেই পক্ষপাতিত্ব হয়ে যাচ্ছে, রাজনীতি অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে,রাজনীতিতে ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছি
- আপডেট টাইম : ১০:০৬:১১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৫ জানুয়ারী ২০২০
- / 99
নিউজ লাইট ৭১ রিপোর্ট: আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, রাজনীতিতে খুবই খারাপ সময় চলছে। রাজনীতিতে আজ সৌজন্য বোধ বিরল। রাজনীতি ক্রমেই পক্ষপাতিত্ব হয়ে যাচ্ছে। রাজনীতি অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে। রাজনীতিতে ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছি।
গতকাল রাজধানীর ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ মিলনায়তনে জাতীয় পার্টির (জেপি) ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, রাজনীতিকরা এখন সামাজিক অনুষ্ঠান এবং মৃত্যুর সংবাদ শুনেও সেখানে যেতে অনীহা প্রকাশ করেন। এটি রাজনীতি এবং গণতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর। এ থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার যখন সঙ্কটে ছিল, সে সময় আওয়ামী লীগের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিল জাতীয় পার্টি-জেপি। মূল ভূমিকা পালন করেছিলেন জেপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। জাতীয় পার্টির সাবেক চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টিও আওয়ামী লীগের পাশে থেকে সরকার গঠনে সহায়তা করেছিল।
ওবায়দুল কাদের বলেন, জাতীয় পার্টি দুঃসময়ে আওয়ামী লীগের পাশে থেকে সা¤প্রদায়িক অপশক্তিকে প্রতিহত করতে আমাদের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করেছিল। আজ আমরা একসঙ্গে কাজ করেছি। এ ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। এ সময় তিনি বলেন, গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে হলে বিরোধী দলকে শক্তিশালী হতে হবে। শক্তিশালীবিরোধী দল ছাড়া শক্তিশালী গণতন্ত্র হয় না। এটা আমাদের মনে রাখতে হবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে তৎকালীন সরকার বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পুরস্কৃত করেছিল। তাদের বিদেশে পালিয়ে যেতে সুযোগ করে দিয়েছিল। দূতাবাসে চাকরি দিয়েছিল। ইনডেমনিটি জারি করে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার বন্ধ করে দিয়েছিল। রাজনীতিতে বিভেদের দেয়াল সেখান থেকেই সৃষ্টি হয়েছিল।
অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সভাপতিমÐলীর সদস্য এবং ১৪ দলীয় জোটের সমন্বয়ক মোহাম্মদ নাসিম বিএনপির উদ্দেশে বলেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে বিতর্কিত করবেন না। নির্বাচনের মাঝপথে পালিয়ে যাবেন না। ফলাফল ঘোষণা না পর্যন্ত নির্বাচনে মাঠে থাকবেন।
জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর সভাপতিত্বে এতে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, জেপির মহাসচিব শেখ শহীদুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে বলেন, ছাত্রলীগ আমাদের শৈশবের ভালোবাসা। ছাত্রলীগ আমাদের কৈশরের উচ্ছ¡াস। ছাত্রলীগ আমাদের প্রথম যৌবনের প্রেম। ছাত্রলীগ বাঙালির বার্ধক্যের বিশ্বাস। তবে যে ছাত্রলীগ আবরারকে হত্যা করে, শিক্ষককে পানিতে ফেলে দেয় সে ছাত্রলীগ আমরা চাই না।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার ঐতিহাসিক ঘোষণাস্থল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নবীন ও পুরনো এই মিলন মেলায় বাংলাদেশের সব বাগানে যত ফুল ফুটেছে, সব ফুলের শুভেচ্ছা ছাত্রলীগের জন্য দিলাম। এই মিলন মেলায় দাঁড়িয়ে আজ বারবার মনে পড়ছে, বঙ্গবন্ধুর সব সাফল্যের কেমিস্ট্রি কী ছিল? সেই কেমিস্ট্রি ছিল সাহস। বঙ্গবন্ধু কন্যার রসায়ন হলো, সাহস ও সততা।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি ছিল মানুষের প্রতি অক্ষয় ভালোবাসা। শেখ হাসিনার রাজনীতি এ দেশের মানুষের কাছে থাকা। তার নেতৃত্বে বিশ্ব সভায় বাংলাদেশ বিশেষ মর্যাদায় অধিষ্ঠিত হয়েছে। মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশে গত ৪৪ বছরের সবচেয়ে সৎ, সবচেয়ে বিচক্ষণ, সবচেয়ে সাহসী, সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক নেতার নাম শেখ হাসিনা। বাংলাদেশে গত ৪৪ বছরের সবচেয়ে দক্ষ প্রশাসক, সবচেয়ে সফল ক‚টনীতিকের নাম শেখ হাসিনা।
তিনি বর্তমানের পলিটিশিয়ান নন। শেখ হাসিনা বর্তমানের সীমারেখা পেরিয়ে, নির্বাচনের সীমারেখা পেরিয়ে পরবর্তী জেনারেশনের লিডার। সে জন্য তিনি পলিটিশিয়ান নন, তিনি আমাদের স্টেটস ম্যান। আমরা সে জন্য তাকে রাষ্ট্রনায়ক অবিহিত করি। তিনি আজ রাষ্ট্রনায়কের সেই মর্যাদায় উন্নীত হয়েছেন।