ঢাকা ০২:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্ক্রিনের আলো যেভাবে ঘুমের ওপর প্রভাব ফেলে

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ০৮:৩১:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০১৯
  • / 122

নিউজ লাইট ৭১ রিপোর্ট: স্ক্রিন বা যন্ত্রের পর্দা থেকে আসা কৃত্রিম আলো মানুষকে জাগিয়ে রাখে বলে যে ধারণা প্রচলিত আছে, তাতে ভুল আছে বলে বিজ্ঞানীরা বলছেন। তারা গবেষণা করছেন যে কী ধরনের আলো আসলে মানুষের চোখে ঘুম আনতে পারে। ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের তথ্য অনুযায়ী, যন্ত্র থেকে আসা নীল আলো আসলে এক্ষেত্রে প্রধান সমস্যা নয়। নানা ধরনের আলোর প্রভাব পরীক্ষা করার জন্য ইঁদুরকে নানা রঙের আলোর সংস্পর্শে এনেছেন। কারেন্ট বায়োলজি জার্নালে প্রকাশিত এই বিতর্কিত গবেষণার ফলাফলে বলা হয়েছে, আসল উত্তরটি লুকিয়ে রয়েছে আলো কতটা উষ্ণ ও উজ্জ্বল তার ওপরে।

গবেষণার উদ্দেশ্য

প্রত্যেকের মধ্যেই প্রাকৃতিকভাবে প্রতিদিন ঘুম ও জেগে ওঠার নিয়মিত চক্র আছে। শরীর ঘড়ি আশপাশের পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেয় এবং সে অনুযায়ী দিনের বেলায় জেগে ওঠা আর রাতের বেলায় ঘুমানোর জন্য শরীরকে সংকেত দেয়। কিন্তু গবেষকেরা দীর্ঘদিন ধরেই ধারণা করে আসছেন যে কৃত্রিম আলো শরীরের এই ছন্দের ব্যাঘাত ঘটিয়ে দিচ্ছে। এক্ষেত্রে একটি জনপ্রিয় ধারণা আছে যে নীল আলো, যা কম্পিউটার ও মোবাইলের পর্দা থেকে সাধারণত আসে, তা বিশেষ প্রভাব ফেলে।

গবেষণায় যা জানা গেছে

গবেষণা দলটি ইঁদুরের ওপর আলোর উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে-কমিয়ে দিয়ে এবং নীল আলো থেকে হলুদ আলোয় পরিবর্তন করে পরীক্ষা করে দেখেছে। দুই রঙের উজ্জ্বল আলোই প্রশান্তি আনার পরিবর্তে বরং ধারণা অনুযায়ী উদ্দীপনা তৈরি করেছে। কিন্তু আলোর উজ্জ্বলতা যখন কমিয়ে দেওয়া হয়েছে, হলুদ আলোর তুলনায় নীল আলো অনেক বেশি প্রশান্তি বা স্নিগ্ধতা তৈরি করেছে।

প্রধান গবেষক ড. টিম ব্রাউন বলেছেন, উজ্জ্বল উষ্ণ দিনের আলোয় প্রকৃতিজগতে যা ঘটে, তাদের গবেষণার ফলাফলের সঙ্গে সেটাই মিলে গেছে। তিনি বলেন, ‘দিনের বেলায় আমাদের কাছে যে সাদা বা হলুদ রঙের আলো আসে, তা শরীরের ওপর শক্তিশালী প্রভাব তৈরি করে। আর গোধূলিতে যখন সূর্য অস্ত যেতে শুরু করে, তখন নীলচে আলো আসতে শুরু করে। সুতরাং আপনি যদি শক্তি সঞ্চারকারী আলো থেকে দূরে থাকতে চান, হালকা নীল আলোই হবে সবচেয়ে ভালো।’ তবে বিপরীতভাবে, জেগে থাকতে চাইলে উজ্জ্বল সাদা বা হলুদ আলো সহায়ক হবে।

ঘুমের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব কাটাতে ফোন ও ল্যাপটপে নাইট-মুড বা রাতের অবস্থা নির্ধারণ করে দিয়ে সেটি নীল আলোর নিঃসারণ কমিয়ে দেয়। ড. ব্রাউন বলেন, ‘এখন মানুষ যা করে, তা হলো পর্দার আলোর রং পরিবর্তন করে এবং যন্ত্রের পর্দাগুলো আরো হলুদাভ করে তোলে। কিন্তু আমাদের বক্তব্য হলো, আলোর রং পরিবর্তন আসলে ভুল প্রভাব তৈরি করছে। বরং স্ক্রিন বা পর্দায় উজ্জ্বলতা কমালে যে সুবিধা পাওয়া যেত, এটা সেটার ক্ষেত্রে একটা উলটো বাধা তৈরি করে।’ সূত্র : বিবিসি।

Tag :

শেয়ার করুন

স্ক্রিনের আলো যেভাবে ঘুমের ওপর প্রভাব ফেলে

আপডেট টাইম : ০৮:৩১:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০১৯

নিউজ লাইট ৭১ রিপোর্ট: স্ক্রিন বা যন্ত্রের পর্দা থেকে আসা কৃত্রিম আলো মানুষকে জাগিয়ে রাখে বলে যে ধারণা প্রচলিত আছে, তাতে ভুল আছে বলে বিজ্ঞানীরা বলছেন। তারা গবেষণা করছেন যে কী ধরনের আলো আসলে মানুষের চোখে ঘুম আনতে পারে। ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের তথ্য অনুযায়ী, যন্ত্র থেকে আসা নীল আলো আসলে এক্ষেত্রে প্রধান সমস্যা নয়। নানা ধরনের আলোর প্রভাব পরীক্ষা করার জন্য ইঁদুরকে নানা রঙের আলোর সংস্পর্শে এনেছেন। কারেন্ট বায়োলজি জার্নালে প্রকাশিত এই বিতর্কিত গবেষণার ফলাফলে বলা হয়েছে, আসল উত্তরটি লুকিয়ে রয়েছে আলো কতটা উষ্ণ ও উজ্জ্বল তার ওপরে।

গবেষণার উদ্দেশ্য

প্রত্যেকের মধ্যেই প্রাকৃতিকভাবে প্রতিদিন ঘুম ও জেগে ওঠার নিয়মিত চক্র আছে। শরীর ঘড়ি আশপাশের পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেয় এবং সে অনুযায়ী দিনের বেলায় জেগে ওঠা আর রাতের বেলায় ঘুমানোর জন্য শরীরকে সংকেত দেয়। কিন্তু গবেষকেরা দীর্ঘদিন ধরেই ধারণা করে আসছেন যে কৃত্রিম আলো শরীরের এই ছন্দের ব্যাঘাত ঘটিয়ে দিচ্ছে। এক্ষেত্রে একটি জনপ্রিয় ধারণা আছে যে নীল আলো, যা কম্পিউটার ও মোবাইলের পর্দা থেকে সাধারণত আসে, তা বিশেষ প্রভাব ফেলে।

গবেষণায় যা জানা গেছে

গবেষণা দলটি ইঁদুরের ওপর আলোর উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে-কমিয়ে দিয়ে এবং নীল আলো থেকে হলুদ আলোয় পরিবর্তন করে পরীক্ষা করে দেখেছে। দুই রঙের উজ্জ্বল আলোই প্রশান্তি আনার পরিবর্তে বরং ধারণা অনুযায়ী উদ্দীপনা তৈরি করেছে। কিন্তু আলোর উজ্জ্বলতা যখন কমিয়ে দেওয়া হয়েছে, হলুদ আলোর তুলনায় নীল আলো অনেক বেশি প্রশান্তি বা স্নিগ্ধতা তৈরি করেছে।

প্রধান গবেষক ড. টিম ব্রাউন বলেছেন, উজ্জ্বল উষ্ণ দিনের আলোয় প্রকৃতিজগতে যা ঘটে, তাদের গবেষণার ফলাফলের সঙ্গে সেটাই মিলে গেছে। তিনি বলেন, ‘দিনের বেলায় আমাদের কাছে যে সাদা বা হলুদ রঙের আলো আসে, তা শরীরের ওপর শক্তিশালী প্রভাব তৈরি করে। আর গোধূলিতে যখন সূর্য অস্ত যেতে শুরু করে, তখন নীলচে আলো আসতে শুরু করে। সুতরাং আপনি যদি শক্তি সঞ্চারকারী আলো থেকে দূরে থাকতে চান, হালকা নীল আলোই হবে সবচেয়ে ভালো।’ তবে বিপরীতভাবে, জেগে থাকতে চাইলে উজ্জ্বল সাদা বা হলুদ আলো সহায়ক হবে।

ঘুমের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব কাটাতে ফোন ও ল্যাপটপে নাইট-মুড বা রাতের অবস্থা নির্ধারণ করে দিয়ে সেটি নীল আলোর নিঃসারণ কমিয়ে দেয়। ড. ব্রাউন বলেন, ‘এখন মানুষ যা করে, তা হলো পর্দার আলোর রং পরিবর্তন করে এবং যন্ত্রের পর্দাগুলো আরো হলুদাভ করে তোলে। কিন্তু আমাদের বক্তব্য হলো, আলোর রং পরিবর্তন আসলে ভুল প্রভাব তৈরি করছে। বরং স্ক্রিন বা পর্দায় উজ্জ্বলতা কমালে যে সুবিধা পাওয়া যেত, এটা সেটার ক্ষেত্রে একটা উলটো বাধা তৈরি করে।’ সূত্র : বিবিসি।