না পড়িয়েও দিব্যি বেতন নিচ্ছেন শিক্ষিকা
- আপডেট টাইম : ০৮:৩৩:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ নভেম্বর ২০২২
- / 34
নরসিংদীর পলাশে গত দুই বছর ধরে স্কুলে অনুপস্থিত থেকেও নিয়মিত বেতন নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে একজন শিক্ষিকার বিরুদ্ধে। উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের রামপুরা ১নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা তামান্না আক্তার মনিকে সরজমিনে গিয়ে স্কুলে পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা নাছরিন সুলতানার নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, তামান্না আক্তার মনি স্কুলে আসে নাই সে ছুটিতে আছে। আগেও ছুটি নিয়ে দীর্ঘদিন স্কুলে আসেন নাই এবারও ছুটি নিয়েছেন। কারণ হিসেবে জানতে চাইলে তামান্না আক্তার মনি জানান, ছোট দুইটি সন্তান আছে বিপদে পরে দুই বৎসর যাবত স্কুলে এসে ক্লাস নিতে পারছে না। সে স্বামীর সাথে ঢাকায় থাকেন। তার স্বামী ঢাকায় বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশনে চাকরি করেন।
আগে তামান্নার স্বামী পলাশ ইউরিয়া সরকার খানায় চাকরি করতেন। পরবর্তীকালে তিনি বদলি হয়ে ঢাকায় চলে যান; যে কারণে তাকে ঢাকা থাকতে হয়। বারবার ছুটি নিচ্ছেন, করোনা কালীন সময়ে স্কুলের লেখা পড়ার বহু ঘাটতি হয়েছে তাই এত ছুটি কাঙ্ক্ষিত না। ছুটির দরখাস্তর সাথে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশনের মেডিক্যালের ছুটির কাগজ পাওয়া যায়, যা গ্রহণ যোগ্য নয়। কিন্তু মেডিক্যাল ছুটির এসব কাগজে ভর্তি তারিখ এবং ছাড়পত্রে কোন তারিখ খুঁজে পাওয়া যায়নি। কয়েক বারের ছুটির দরখাস্তের সাথে মেডিক্যাল ছুটির কাগজ পাওয়া যায়, যা মেডিক্যাল ছুটির জন্য গ্রহণযোগ্য নয়।
সহকারী শিক্ষিকা মাহিনুর সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এ বছর আমি ১০ দিন ছুটি নিয়েছি। সহকারী শিক্ষিকা নাজমা আক্তার জানান- তিনি ৮ দিন ছুটি নিয়েছেন। অথচ তামান্না আক্তার মনি দিনের পর দিন ছুটি কাটাচ্ছেন এবং বেতনও নিচ্ছেন। প্রধান শিক্ষিকা বলেছেন, আমি ছুটি দিতে চাই না সে ছুটি নিয়ে নেয়।
এলাকাবাসী জানায়- তামান্না আক্তার মনি দীর্ঘ দুই বৎসর যাবত স্কুলে নিয়মিত আসেন না। মাঝে মধ্যে আসেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে স্কুল কমিটির সভাপতি স্বর্ণা আক্তার জানান, ওই শিক্ষিকার সাথে শক্তিশালী লোকজন আছে; বিধায় আমি কিছুই করতে পারছি না। রশিদুল ইসলাম বলেন- হয়তো ওই শিক্ষিকা বদলী হয়ে চলে যাক নতুবা নিয়মিত স্কুলে ক্লাস করুক। না হলে এতে ভোগান্তিতে পড়ছে এলাকার স্কুলের কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীরা। আমরা সাবাইকে জানিয়েছি কোনো ফল পাইনি।
এ দিকে শিক্ষিকা তামান্না আক্তার মনির সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে, তিনি আমার ছোট ছোট দুইটি সন্তান রাখবে কে? আমি আমার সন্তানদেরকে লালন-পালন করতে হয়। তাদেরকে দেখার কেউ নাই, আমিও মাঝে মাঝে অসুস্থ থাকি। তিনি এখন ছুটিতে আছেন আবারও ছুটি নিবেন তাই নিয়মিত ক্লাস করতে পারবে না।
এলাকাবাসী জানায়- তামান্না আক্তার মনির স্বামী আগে পলাশে চাকরি করতেন বিধায় নিয়মিত ক্লাস নিতে পারতেন এখন তার স্বামী ঢাকায় থাকেন বিধায় তারও ঢাকায় থাকতে হচ্ছে। অসুস্থতা একটি উসিলা মাত্র, বেতন তো ঠিকই পাচ্ছেন তার সমস্যা কোথায়?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনৈক ব্যক্তি বলেছেন- ম্যানেজ করে চলছে, স্কুলে আসে না। আমিও এই স্কুলে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছি।
এ ব্যাপারে পলাশ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে কয়েকবার গিয়েও কর্মকর্তাদের অনুপস্থিত থাকার কারণে কারো সাক্ষাৎ পাওয়া যায়নি।
নিউজ লাইট ৭১