ঢাকা ০২:১৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাস্তার অবস্থা এতো খারাপ যে এলাকায় গেলে মানুষ গাল দেয়: অর্থমন্ত্রী

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ০৭:০৯:১৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৯
  • / 116

নিউজ লাইট ৭১ রিপোর্ট: রাস্তার অবস্থা এতো খারাপ যে এলাকায় গেলে মানুষ গাল দেয় বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

দেশের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছে বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরস্থ এনইসি মিলনায়তনে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর আয়োজিত সেমিনারে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

‘মহাসড়কের লাইফ টাইম চ্যলেঞ্জ ও করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি বলেন, রাস্তার অবস্থা এতো খারাপ যে এলাকায় গেলে মানুষ গাল দেয়, গাড়ির গ্লাস নামাতে পারি না। প্রধানমন্ত্রী হাজার বার বলার পরেও সড়কের কাজ ঠিক হয় না।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সড়ক বিভাগকে উদ্দেশ্য বলেছেন, প্রশান্ত মহাসাগরের দেশ পারলে আমরা নদীমাতৃক দেশ হয়ে কোয়ালিটি ঠিক করে সড়ক করতে পারছি না কেন? টেকসই হচ্ছে না কেন? প্রধানমন্ত্রী কতোবার নির্দেশ নিয়েছেন তাও মানা হচ্ছে না, লজ্জা লাগে।

তিনি বলেন, আর কোনো নতুন করে সড়ক হবে না। যে সব সড়কের কাজ চলছে তা কোয়ালিটি সম্পন্ন করতে হবে। অনেক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি নেই, তারপরও শুধু তারাই কাজ পায় কেন। এদের কারণে বিদেশি ভালো প্রতিষ্ঠানও কাজ পায় না। শুধু রাস্তা তৈরির বহু প্রকল্প নেয়া হয়। রক্ষণাবেক্ষণে নজর দেয়া হয় না। এটা ঠিক নয়। টোল আদায় করেই রক্ষণা-বেক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. একাব্বর হোসেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা সচিব মো. নুরুল আমিন, যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. শামসুল হক, লেখক ও গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ, নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তারা।

সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের উদ্দেশে অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রতি বছরে ২৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হলেও কোয়ালিটি সম্পন্ন কাজ হচ্ছে না কেন। কাজের মধ্যে স্বচ্ছতা কোথায়? ইংল্যান্ড, শ্রীলংকা টেকসই সড়ক করতে পারলে আপনারা পারছেন না কেন? প্রশান্ত মহাসাগর বিস্তৃত দেশ দেখি পারে। তারাও সড়ক করে, সেখানে রাস্তার লাইফটাইম ৫০ বছর। তাহলে আমরা কেন পারব না।

‘রাস্তার বিষয়ে নদীমাতৃক দেশের কথা আর কোনো দিন কোনো মিটিংয়ে বলবেন না। নিজেরা কাজ করতে পারবেন না, করেন না, হয় বোঝেন না, না হয় করেন না; দুটোর একটা। করতে চাইলেই করা যায়। আমার এলাকায় যদি যান রাস্তা দেখে কান্না আসবে। মানুষ আমাকে প্রতিদিন গালি দেয়। আমি গ্লাস নামাতে পারি না। তা বন্ধ করে যাওয়ার চেষ্টা করি। তাও যেতে পারি না। এই হলো আমাদের অবস্থা।.

মুস্তফা কামাল বলেন, ইংল্যান্ডের একটি এক নম্বর কোম্পানি নিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু তাদের কাজ করতে দেয়া হয়নি। কেন দেয়া হয়নি তা আমরা জানি। ওই কোম্পানি রাস্তাঘাট তৈরি করতে তিনটা গাড়ি ব্যবহার করে। তিনটি গাড়ি মিলে চোখের নিমিষেই ১ কিলোমিটার রাস্তা করে ফেলে। এসব রাস্তার লাইফটাইম হচ্ছে ৫০ বছর। তৈরির প্রথম দশ বছর কিছুই করা লাগবে না। দশ বছর পর ৫ শতাংশ এগ্রি গ্যাস মেশাবে, এর ফলে আরও দশ বছর চলবে।

তিনি বলেন, এভাবে প্রতি ১০ বছর পর পর এগ্রি গ্যাস মেশালেই এর লাইফটাইম ৫০ বছর হবে। আমাদের অনৈক রাস্তা হয়েছে। আর নতুন করে করতে হবে না। যা চলছে তা কোয়ালিটি সম্পন্ন করতে হবে। সড়কে টোল আদায় করে রক্ষণা-বেক্ষণ করতে হবে।

Tag :

শেয়ার করুন

রাস্তার অবস্থা এতো খারাপ যে এলাকায় গেলে মানুষ গাল দেয়: অর্থমন্ত্রী

আপডেট টাইম : ০৭:০৯:১৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৯

নিউজ লাইট ৭১ রিপোর্ট: রাস্তার অবস্থা এতো খারাপ যে এলাকায় গেলে মানুষ গাল দেয় বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

দেশের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছে বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরস্থ এনইসি মিলনায়তনে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর আয়োজিত সেমিনারে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

‘মহাসড়কের লাইফ টাইম চ্যলেঞ্জ ও করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি বলেন, রাস্তার অবস্থা এতো খারাপ যে এলাকায় গেলে মানুষ গাল দেয়, গাড়ির গ্লাস নামাতে পারি না। প্রধানমন্ত্রী হাজার বার বলার পরেও সড়কের কাজ ঠিক হয় না।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সড়ক বিভাগকে উদ্দেশ্য বলেছেন, প্রশান্ত মহাসাগরের দেশ পারলে আমরা নদীমাতৃক দেশ হয়ে কোয়ালিটি ঠিক করে সড়ক করতে পারছি না কেন? টেকসই হচ্ছে না কেন? প্রধানমন্ত্রী কতোবার নির্দেশ নিয়েছেন তাও মানা হচ্ছে না, লজ্জা লাগে।

তিনি বলেন, আর কোনো নতুন করে সড়ক হবে না। যে সব সড়কের কাজ চলছে তা কোয়ালিটি সম্পন্ন করতে হবে। অনেক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি নেই, তারপরও শুধু তারাই কাজ পায় কেন। এদের কারণে বিদেশি ভালো প্রতিষ্ঠানও কাজ পায় না। শুধু রাস্তা তৈরির বহু প্রকল্প নেয়া হয়। রক্ষণাবেক্ষণে নজর দেয়া হয় না। এটা ঠিক নয়। টোল আদায় করেই রক্ষণা-বেক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. একাব্বর হোসেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা সচিব মো. নুরুল আমিন, যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. শামসুল হক, লেখক ও গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ, নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তারা।

সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের উদ্দেশে অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রতি বছরে ২৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হলেও কোয়ালিটি সম্পন্ন কাজ হচ্ছে না কেন। কাজের মধ্যে স্বচ্ছতা কোথায়? ইংল্যান্ড, শ্রীলংকা টেকসই সড়ক করতে পারলে আপনারা পারছেন না কেন? প্রশান্ত মহাসাগর বিস্তৃত দেশ দেখি পারে। তারাও সড়ক করে, সেখানে রাস্তার লাইফটাইম ৫০ বছর। তাহলে আমরা কেন পারব না।

‘রাস্তার বিষয়ে নদীমাতৃক দেশের কথা আর কোনো দিন কোনো মিটিংয়ে বলবেন না। নিজেরা কাজ করতে পারবেন না, করেন না, হয় বোঝেন না, না হয় করেন না; দুটোর একটা। করতে চাইলেই করা যায়। আমার এলাকায় যদি যান রাস্তা দেখে কান্না আসবে। মানুষ আমাকে প্রতিদিন গালি দেয়। আমি গ্লাস নামাতে পারি না। তা বন্ধ করে যাওয়ার চেষ্টা করি। তাও যেতে পারি না। এই হলো আমাদের অবস্থা।.

মুস্তফা কামাল বলেন, ইংল্যান্ডের একটি এক নম্বর কোম্পানি নিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু তাদের কাজ করতে দেয়া হয়নি। কেন দেয়া হয়নি তা আমরা জানি। ওই কোম্পানি রাস্তাঘাট তৈরি করতে তিনটা গাড়ি ব্যবহার করে। তিনটি গাড়ি মিলে চোখের নিমিষেই ১ কিলোমিটার রাস্তা করে ফেলে। এসব রাস্তার লাইফটাইম হচ্ছে ৫০ বছর। তৈরির প্রথম দশ বছর কিছুই করা লাগবে না। দশ বছর পর ৫ শতাংশ এগ্রি গ্যাস মেশাবে, এর ফলে আরও দশ বছর চলবে।

তিনি বলেন, এভাবে প্রতি ১০ বছর পর পর এগ্রি গ্যাস মেশালেই এর লাইফটাইম ৫০ বছর হবে। আমাদের অনৈক রাস্তা হয়েছে। আর নতুন করে করতে হবে না। যা চলছে তা কোয়ালিটি সম্পন্ন করতে হবে। সড়কে টোল আদায় করে রক্ষণা-বেক্ষণ করতে হবে।