ঢাকা ০২:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নদী গর্ভে তাঁত কারখানা

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ০৩:৪০:৩০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ জুন ২০২২
  • / 29

টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে সিরাজগঞ্জে অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে যমুনা নদীর পানি। পানি বৃদ্ধির ফলে শুরু হয়েছে নদীর পাড় ভাঙন। নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে তিনটি তাঁত কারখানাসহ অন্তত ১০টি বসতভিটা ও বিস্তীর্ণ ফসলি জমি।

মঙ্গলবার (৭ জুন) সকালে সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষার বাঁধ পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি ২৯ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ২ দশমিক ৪১ মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

পানি উন্নয়ন সুত্রে জানা যায়, গত দুদিন যাবত টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে অস্বাভাবিক হারে বাড়তে শুরু করেছে যমুনা নদীর পানি। গত ২৪ ঘণ্টায় শহর রক্ষা বাঁধ পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে ২৯ সেন্টিমিটার। পানি বৃদ্ধির ফলে সিরাজগঞ্জের চৌহালীতে বসত ভিটা ও তাঁত কারখানা নদী গর্ভে বিলিন হয়েছে। হুমকির মুখে পড়েছে বহু ঘরবাড়ি, শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান।

সরেজমিন দেখা যায়, নদী গর্ভে বিলিন হচ্ছে বসতভিটা। দিশেহারা যমুনা পাড়ের মানুষ। কেউ ঘরের খুটি খুলছে, কেউবা টিনের চাল সরিয়ে অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছে। আর মহিলারা কাপড় চোপড়, বিছানাপত্র ও রান্নার জিনিসপত্র নিয়ে যাচ্ছে নিরাপদ স্থানে। যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি ও কমার সময় দফায় দফায় যমুনার ভাঙন হয়েছে। তবে বেশ কয়েকদিন ধরে নদীতে পানি স্থিতিশীল থাকায় ভাঙন বন্ধ ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে সোমবার (৬ জুন) দুপুরে যমুনা নদীতে স্রোত ও ঘূর্ণ্যাবর্তের সৃষ্টি হয়ে কৃষক আমোদ আলী, আবুল কালাম, রুহুল আমিন, ইদ্রিস আলী, তারা মিয়া ও শাহ আলমের বসত ভিটা ও তাঁত কারখানা নদীতে বিলীন হয়ে যায়।

ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক আমোদ আলী, আবুল কালাম জানান, হঠাৎ করেই যমুনায় পানি বৃদ্ধির কারনে ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙনের ফলে আমাদের বসত ভিটা নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। কোন কিছুর সড়াতে পারি নাই। এখন খোলা আকাশের নিচে পরিবার নিয়ে বসবাস করছি।

চৌহালী উপজেলার বাগুটিয়া ইউনিয়নের দেওয়ানগঞ্জের রুহুল আমিন, ইদ্রিস আলী জানান, আর্কশিক ভাবে যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি। ফলে শুরু হয়েছে ভাঙন। এই ভাঙনে আমাদের বেশ কয়েকটি তাঁত কারখানা নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। একটি তাঁতও সড়াতে পারি নাই।

বাঘুটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কালাম মোল্লা জানান, নদী ভাঙনের ব্যাপকতা দেখে আমরা হতভাগ। একদিকে কাজ চলছে জিওব্যাগ ডাম্পিংয়ের। অপর দিকে বসত ভিটা ও তাঁত কারখানা নদীতে চলে যাওয়ায় আমরাও আতঙ্কিত। আশা করছি দ্রুতই ভাঙনরোধে ব্যবস্থা গ্রহন করবে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ। সেই সাথে নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্থ সকলকে সহায়তা দেয়ার অনুরোধ করছি।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড সিরাজগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, চৌহালীর দক্ষিণাঞ্চলে চরছলিমাবাদ এলাকায় ভাঙনরোধে জরুরী ভিত্তিতে জিওব্যাগ নিক্ষেপ করা হচ্ছে। তবে দেওয়ানগঞ্জের নদী ভাঙনে বসত ভিটা বিলীনের বিষয়টি জেনেছি। দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। যমুনা নদীর বামতীরের চৌহালীতে ভাঙন শুরু হওয়ার খবর পেয়েছি। সেখানে ভাঙন নিয়ন্ত্রণে জিওব্যাগ ফেলা শুরু হয়েছে।

নিউজ লাইট ৭১

Tag :

শেয়ার করুন

নদী গর্ভে তাঁত কারখানা

আপডেট টাইম : ০৩:৪০:৩০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ জুন ২০২২

টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে সিরাজগঞ্জে অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে যমুনা নদীর পানি। পানি বৃদ্ধির ফলে শুরু হয়েছে নদীর পাড় ভাঙন। নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে তিনটি তাঁত কারখানাসহ অন্তত ১০টি বসতভিটা ও বিস্তীর্ণ ফসলি জমি।

মঙ্গলবার (৭ জুন) সকালে সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষার বাঁধ পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি ২৯ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ২ দশমিক ৪১ মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

পানি উন্নয়ন সুত্রে জানা যায়, গত দুদিন যাবত টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে অস্বাভাবিক হারে বাড়তে শুরু করেছে যমুনা নদীর পানি। গত ২৪ ঘণ্টায় শহর রক্ষা বাঁধ পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে ২৯ সেন্টিমিটার। পানি বৃদ্ধির ফলে সিরাজগঞ্জের চৌহালীতে বসত ভিটা ও তাঁত কারখানা নদী গর্ভে বিলিন হয়েছে। হুমকির মুখে পড়েছে বহু ঘরবাড়ি, শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান।

সরেজমিন দেখা যায়, নদী গর্ভে বিলিন হচ্ছে বসতভিটা। দিশেহারা যমুনা পাড়ের মানুষ। কেউ ঘরের খুটি খুলছে, কেউবা টিনের চাল সরিয়ে অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছে। আর মহিলারা কাপড় চোপড়, বিছানাপত্র ও রান্নার জিনিসপত্র নিয়ে যাচ্ছে নিরাপদ স্থানে। যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি ও কমার সময় দফায় দফায় যমুনার ভাঙন হয়েছে। তবে বেশ কয়েকদিন ধরে নদীতে পানি স্থিতিশীল থাকায় ভাঙন বন্ধ ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে সোমবার (৬ জুন) দুপুরে যমুনা নদীতে স্রোত ও ঘূর্ণ্যাবর্তের সৃষ্টি হয়ে কৃষক আমোদ আলী, আবুল কালাম, রুহুল আমিন, ইদ্রিস আলী, তারা মিয়া ও শাহ আলমের বসত ভিটা ও তাঁত কারখানা নদীতে বিলীন হয়ে যায়।

ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক আমোদ আলী, আবুল কালাম জানান, হঠাৎ করেই যমুনায় পানি বৃদ্ধির কারনে ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙনের ফলে আমাদের বসত ভিটা নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। কোন কিছুর সড়াতে পারি নাই। এখন খোলা আকাশের নিচে পরিবার নিয়ে বসবাস করছি।

চৌহালী উপজেলার বাগুটিয়া ইউনিয়নের দেওয়ানগঞ্জের রুহুল আমিন, ইদ্রিস আলী জানান, আর্কশিক ভাবে যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি। ফলে শুরু হয়েছে ভাঙন। এই ভাঙনে আমাদের বেশ কয়েকটি তাঁত কারখানা নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। একটি তাঁতও সড়াতে পারি নাই।

বাঘুটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কালাম মোল্লা জানান, নদী ভাঙনের ব্যাপকতা দেখে আমরা হতভাগ। একদিকে কাজ চলছে জিওব্যাগ ডাম্পিংয়ের। অপর দিকে বসত ভিটা ও তাঁত কারখানা নদীতে চলে যাওয়ায় আমরাও আতঙ্কিত। আশা করছি দ্রুতই ভাঙনরোধে ব্যবস্থা গ্রহন করবে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ। সেই সাথে নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্থ সকলকে সহায়তা দেয়ার অনুরোধ করছি।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড সিরাজগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, চৌহালীর দক্ষিণাঞ্চলে চরছলিমাবাদ এলাকায় ভাঙনরোধে জরুরী ভিত্তিতে জিওব্যাগ নিক্ষেপ করা হচ্ছে। তবে দেওয়ানগঞ্জের নদী ভাঙনে বসত ভিটা বিলীনের বিষয়টি জেনেছি। দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। যমুনা নদীর বামতীরের চৌহালীতে ভাঙন শুরু হওয়ার খবর পেয়েছি। সেখানে ভাঙন নিয়ন্ত্রণে জিওব্যাগ ফেলা শুরু হয়েছে।

নিউজ লাইট ৭১