ঢাকা ০৭:৪৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মাদকের বিনিময়ে পাচার হয় নারী!

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ০৫:৩৫:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ জুন ২০২২
  • / 29

বাংলাদেশের পাশ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে নিয়ে আসা মাদকের বিনিময়ে নারী পাচারের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে শাহনাজ (৩৮) নামে এক নারীর বিরুদ্ধে।

ঘটনাটি ঘটেছে গত মঙ্গলবার (৩১ মে) সকাল নয়টায় নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের নাসিক ১ নং ওয়ার্ডের মিজমিজি পূর্ব পাড়া পাগলাবাড়ী এলাকায়।

বিউটি পার্লারে ভালো বেতনে কাজ করার প্রলোভন দেখিয়ে ভারতে পাচারের উদ্দেশ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে দীপা (১৬) নামের এক তরুণীকে নিজ বাসায় নিয়ে আসেন শাহনাজ নামে এক নারী পাচারকারী দলের সদস্য। তবে চাকরির কথা বলে নিয়ে আসলেও ওই তরুণীকে ভারতে পাচার করা হবে জানতে পেরে তিনি চলে যেতে চায়। ওই তরুনী ভারতে যেতে রাজি না হওয়ায় সোমবার সারারাত তাকে শারীরিক নির্যাতন করা হয়।

পর দিন মঙ্গলবার নির্যাতন সইতে না পেরে সকালবেলা বিবস্ত্র অবস্থায় দীপা নামের ওই তরুণী দৌড়ে পালিয়ে বাঁচার চেষ্টা করেন। এসময় দীপা বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করেছেন বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

অভিযুক্ত নারী পাচারকারী দলের সদস্য শাহনাজ সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি পূর্ব পাড়া পাগলা বাড়ি এলাকার ফরিদ মিয়ার বাড়ির ভাড়াটিয়া। সে দীর্ঘদিন ধরে এ বাসা ভাড়া নিয়ে ভারতে নারী পাচার করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মিজমিজি পাগলা বাড়ি এলাকার ফরিদ মিয়ার বাড়িতে প্রায় আট মাস ধরে রুম ভাড়া নিয়ে শাহনাজ তার স্বামী মাঈনুল ও আরো দু’জন সহযোগী মহিলা থাকেন। অভিযুক্ত শাহনাজের স্বামী মঈনুল পেশায় একজন ট্রাক চালক। বিভিন্ন জেলায় পণ্য পরিবহন করার কারনে রাতে মঈনুল বাসার বাহিরেই থাকেন।

সেই সুযোগ কাজে লাগান তার স্ত্রী অভিযুক্ত শাহনাজ। তবে শাহনাজ ও তার আরো কয়েকজন মহিলা সহযোগী মিলে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে কখনো বিউটি পার্লার, কখনো রেষ্টুরেন্ট, কখনো নামী দামি পাঁচ তারকা হোটেলে কাজ করার প্রলোভন দেখিয়ে কম বয়সী তরুণীদের তার বাসায় নিয়ে এসে ভারতে পাচার করে দেন। ভারতে পাচার হওয়া এমন তিন তরুণীর নাম হাতে এসেছে এই প্রতিবেদকের হাতে। তার হলেন, মরিয়ম, জুমা ও মাহি।

স্থানীয় সূত্রে আরও জানা যায়, অভিযুক্ত নারী শাহনাজ এলাকায় চিহ্নিত একজন মাদক ও দেহ ব্যবসায়ী। তার কাছে আসা যাওয়া করেন স্থানীয় চিহ্নিত প্রভাবশালী মাদক ব্যবসায়ীরা। তাদের শেল্টারেই মূলত দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন তিনি। শাহনাজ প্রায় সময়েই ভারতে আসা যাওয়া করেন বলে জানা গেছে। ভারতে তার রয়েছে নারী পাচারকারী একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। অভিযোগ উঠেছে অভিযুক্ত শাহনাজ ভারত থেকে দীর্ঘদিন ধরে মাদকের বিনিময়ে এই নারী পাচার করে আসছেন। তার এসব কর্মকান্ড স্থানীয়রা জানলেও তার মামলার ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। সে কিছু হলেই থানা পুলিশের ভয় দেখান সাধারণ মানুষদের। কথায় কথায় মামলা করার হুমকিও দেন এই শাহনাজ।

অভিযুক্ত শাহনাজের ভাড়া বাসার মালিক ফরিদ মিয়া ও তার ছেলে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা যখন জানতে পেরেছি বাড়িতে এমন ঘটনা ঘটেছে সঙ্গে সঙ্গেই শাহনাজকে রুম ছেড়ে দিতে বলেছি। সে জুলাই মাসে আমাদের বাড়ি থেকে চলে যাবে। এলাকার সবাই এই মহিলার নামে বিচার দেয়।

এর আগেও গত কয়েক মাস বাড়ি ছাড়ার কথা বললেও শাহনাজ বাড়ি ছাড়ছেন না। শাহনাজের নাকি অনেক ক্ষমতা তাই সে জোরপূর্বক আমার বাসায় থাকছেন। তার কাছে এক প্রকার আমরাও জিম্মি হয়ে পরেছি। স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যাক্তি এই মহিলাকে শেল্টার দেন বলে জানান বাড়ির মালিক। তারা এই জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পেতে স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

নিউজ লাইট ৭১

Tag :

শেয়ার করুন

মাদকের বিনিময়ে পাচার হয় নারী!

আপডেট টাইম : ০৫:৩৫:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ জুন ২০২২

বাংলাদেশের পাশ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে নিয়ে আসা মাদকের বিনিময়ে নারী পাচারের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে শাহনাজ (৩৮) নামে এক নারীর বিরুদ্ধে।

ঘটনাটি ঘটেছে গত মঙ্গলবার (৩১ মে) সকাল নয়টায় নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের নাসিক ১ নং ওয়ার্ডের মিজমিজি পূর্ব পাড়া পাগলাবাড়ী এলাকায়।

বিউটি পার্লারে ভালো বেতনে কাজ করার প্রলোভন দেখিয়ে ভারতে পাচারের উদ্দেশ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে দীপা (১৬) নামের এক তরুণীকে নিজ বাসায় নিয়ে আসেন শাহনাজ নামে এক নারী পাচারকারী দলের সদস্য। তবে চাকরির কথা বলে নিয়ে আসলেও ওই তরুণীকে ভারতে পাচার করা হবে জানতে পেরে তিনি চলে যেতে চায়। ওই তরুনী ভারতে যেতে রাজি না হওয়ায় সোমবার সারারাত তাকে শারীরিক নির্যাতন করা হয়।

পর দিন মঙ্গলবার নির্যাতন সইতে না পেরে সকালবেলা বিবস্ত্র অবস্থায় দীপা নামের ওই তরুণী দৌড়ে পালিয়ে বাঁচার চেষ্টা করেন। এসময় দীপা বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করেছেন বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

অভিযুক্ত নারী পাচারকারী দলের সদস্য শাহনাজ সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি পূর্ব পাড়া পাগলা বাড়ি এলাকার ফরিদ মিয়ার বাড়ির ভাড়াটিয়া। সে দীর্ঘদিন ধরে এ বাসা ভাড়া নিয়ে ভারতে নারী পাচার করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মিজমিজি পাগলা বাড়ি এলাকার ফরিদ মিয়ার বাড়িতে প্রায় আট মাস ধরে রুম ভাড়া নিয়ে শাহনাজ তার স্বামী মাঈনুল ও আরো দু’জন সহযোগী মহিলা থাকেন। অভিযুক্ত শাহনাজের স্বামী মঈনুল পেশায় একজন ট্রাক চালক। বিভিন্ন জেলায় পণ্য পরিবহন করার কারনে রাতে মঈনুল বাসার বাহিরেই থাকেন।

সেই সুযোগ কাজে লাগান তার স্ত্রী অভিযুক্ত শাহনাজ। তবে শাহনাজ ও তার আরো কয়েকজন মহিলা সহযোগী মিলে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে কখনো বিউটি পার্লার, কখনো রেষ্টুরেন্ট, কখনো নামী দামি পাঁচ তারকা হোটেলে কাজ করার প্রলোভন দেখিয়ে কম বয়সী তরুণীদের তার বাসায় নিয়ে এসে ভারতে পাচার করে দেন। ভারতে পাচার হওয়া এমন তিন তরুণীর নাম হাতে এসেছে এই প্রতিবেদকের হাতে। তার হলেন, মরিয়ম, জুমা ও মাহি।

স্থানীয় সূত্রে আরও জানা যায়, অভিযুক্ত নারী শাহনাজ এলাকায় চিহ্নিত একজন মাদক ও দেহ ব্যবসায়ী। তার কাছে আসা যাওয়া করেন স্থানীয় চিহ্নিত প্রভাবশালী মাদক ব্যবসায়ীরা। তাদের শেল্টারেই মূলত দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন তিনি। শাহনাজ প্রায় সময়েই ভারতে আসা যাওয়া করেন বলে জানা গেছে। ভারতে তার রয়েছে নারী পাচারকারী একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। অভিযোগ উঠেছে অভিযুক্ত শাহনাজ ভারত থেকে দীর্ঘদিন ধরে মাদকের বিনিময়ে এই নারী পাচার করে আসছেন। তার এসব কর্মকান্ড স্থানীয়রা জানলেও তার মামলার ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। সে কিছু হলেই থানা পুলিশের ভয় দেখান সাধারণ মানুষদের। কথায় কথায় মামলা করার হুমকিও দেন এই শাহনাজ।

অভিযুক্ত শাহনাজের ভাড়া বাসার মালিক ফরিদ মিয়া ও তার ছেলে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা যখন জানতে পেরেছি বাড়িতে এমন ঘটনা ঘটেছে সঙ্গে সঙ্গেই শাহনাজকে রুম ছেড়ে দিতে বলেছি। সে জুলাই মাসে আমাদের বাড়ি থেকে চলে যাবে। এলাকার সবাই এই মহিলার নামে বিচার দেয়।

এর আগেও গত কয়েক মাস বাড়ি ছাড়ার কথা বললেও শাহনাজ বাড়ি ছাড়ছেন না। শাহনাজের নাকি অনেক ক্ষমতা তাই সে জোরপূর্বক আমার বাসায় থাকছেন। তার কাছে এক প্রকার আমরাও জিম্মি হয়ে পরেছি। স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যাক্তি এই মহিলাকে শেল্টার দেন বলে জানান বাড়ির মালিক। তারা এই জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পেতে স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

নিউজ লাইট ৭১