ঢাকা ১২:০০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গোয়েন্দা পুলিশে পদোন্নতি পেলেন বাংলাদেশি

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ০৫:১৮:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ জুন ২০২২
  • / 34

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইর্য়ক পুলিশের (এনওয়াইপিডির) গোয়েন্দা বিভাগে গুরুত্বপূর্ণ পদে পদোন্নতি পেলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত সুরঞ্জিত কান্তি দে।

গত ২৭ শে মে প্রায় দুই শতাধিক পদোন্নতি প্রাপ্তদের মধ্যে ডিটেক্টিভ ৩য় গ্রেডে পদোন্নতি পান চট্টগ্রামের বোয়ালখালী থানার এই কৃতিসন্তান।

স্থানীয় সময় শুক্রবার সকালে নিউইর্য়কের কুইন্সে অবস্থিত পুলিশ একাডেমিতে জমকালো এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে তার হাতে পদোন্নতির সনদ তুলে দেন এনওয়াইপিডির বর্তমান পুলিশ কমিশনার কিসেন্ট সিওয়েল। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে পদোন্নতি প্রাপ্তদের অভিনন্দন জানান প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত কমান্ডিং অফিসার ক্যাপ্টেন খন্দকার আব্দুল্লাহ, বাংলাদেশি আমেরিকান পুলিশ এসোসিয়েশনের (বাপার) এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট সার্জেন্ট এরশাদ সিদ্দিকী সহ বাপার অন্যান্য সদস্যবৃন্দ ।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সুরঞ্জিত কান্তি দে চট্টগ্রামের বোয়ালখালী থানার পশ্চিম শাকপুরা গ্রামের সুনীল কান্তি দে এবং নমিতা দের ২য় পুত্র। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন। তিনি ১৯৯০ সালে ময়মনসিংহ কৃষিবিশ্ববিদ্যালয় হাইস্কুল থেকে কৃতিত্বের সাথে এসএসসি এবং ১৯৯২ সালে নাসিরাবাদ কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। পরে তিনি ১৯৯৭ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আনন্দমোহন কলেজ থেকে পদার্থ বিজ্ঞানে
স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।

তিনি ২০০০ সালে ডিভি লটারীতে আমেরিকায় আসার পর ২০০৩ সালে এনওয়াইপিডির অধীনে ট্রাফিক এনফোর্সমেন্ট এজেন্ট হিসেবে যোগদান করেন। এরপর ২০০৭ সালে ৩১ বছর বয়সে পুলিশ একাডেমিতে পুলিশ অফিসার হিসেবে ট্রেনিং শুরু করেন তিনি। কর্মজীবনের শুরুতে তিনি ব্রুকলিনের ট্রানজিট ডিস্ট্রিক ৩০ এ পুলিশ অফিসার হিসেবে দুই বছর দায়িত্ব পালনের পর ট্রানজিট ডিস্ট্রিক ৩৩ এর অধীনে এন্টি ক্রাইম ইউনিটে দীর্ঘ একযুগ ধরে সাদা পোশাকে পুলিশের দায়িত্ব পালন করেন। অত্যন্ত দক্ষতা ও চৌকসের সাথে দায়িত্ব পালনের জন্য তিনি ২০১০ সালে বছরের সেরা পুলিশ অফিসার (কপ অব দ্য ইয়ার) এর সম্মাননা অর্জনের পাশাপাশি ১২ বারের অধিক কপ অব দ্য মানথ হিসেবে ভূষিত হন। বিভিন্ন সময়ে বন্দুকসহ অনেক দুর্ধর্ষ আসামি গ্রেপ্তার করেন বলে সূত্রে জানা যায়।

পদোন্নতির ব্যাপারে তার আপন বড় ভাই বিশ্বজিৎ দে বলেন, আমাদের তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে সুরঞ্জিত দে দ্বিতীয়। ছোটবেলা থেকে সে অত্যন্ত মেধাবী ও কঠোর পরিশ্রমী ছিলেন। তার অনন্য সাফল্যে আমাদের পরিবারের সদসদ্যরা অত্যন্ত আনন্দিত ও গর্বিত।

ছেলে পৃথিবী দে, মেয়ে প্রকৃতি দে এবং সহধর্মিনী দূর্বা সরকারকে নিয়ে কুইন্সের ওজোনপার্কে বসবাস করেন তিনি। সুরঞ্জিত কান্তি দে তার এই সাফল্যের জন্য বাবা-মা, সহধর্মিনী ও ভাইবোনদের অবদানের কথা উল্লেখ করেন।

এদিকে নিউইর্য়ক পুলিশ বিভাগে বাংলাদেশিদের সংখ্যা দিনদিন বেড়েই চলেছে। উল্লেখ্য বর্তমানে এনওয়াইপিডির সদস্য সংখ্যা প্রায় ৩৬ হাজার । নিয়মিত বাহিনীতে প্রায় সাড়ে চারশতাধিক বাংলাদেশি রয়েছেন। তাদের মধ্যে ৪ জন ক্যাপ্টেন, ১০ জন লেফটেন্যান্ট , ৩৯ জন সার্জেন্ট এবং ১৫ জন ডিটেক্টিভসহ প্রায় সাত শতাধিক ট্রাফিক পুলিশ, অর্ধশতাধিক ট্রাফিক সুপারভাইজার, স্কুল সেইফটি এজেন্ট , স্কুল ক্রসিং গার্ডসহ অন্যান্য ইউনিটে মোট হাজারের বেশি বাংলাদেশি অত্যন্ত সুনাম ও দক্ষতার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন।

নিউজ লাইট ৭১

Tag :

শেয়ার করুন

গোয়েন্দা পুলিশে পদোন্নতি পেলেন বাংলাদেশি

আপডেট টাইম : ০৫:১৮:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ জুন ২০২২

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইর্য়ক পুলিশের (এনওয়াইপিডির) গোয়েন্দা বিভাগে গুরুত্বপূর্ণ পদে পদোন্নতি পেলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত সুরঞ্জিত কান্তি দে।

গত ২৭ শে মে প্রায় দুই শতাধিক পদোন্নতি প্রাপ্তদের মধ্যে ডিটেক্টিভ ৩য় গ্রেডে পদোন্নতি পান চট্টগ্রামের বোয়ালখালী থানার এই কৃতিসন্তান।

স্থানীয় সময় শুক্রবার সকালে নিউইর্য়কের কুইন্সে অবস্থিত পুলিশ একাডেমিতে জমকালো এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে তার হাতে পদোন্নতির সনদ তুলে দেন এনওয়াইপিডির বর্তমান পুলিশ কমিশনার কিসেন্ট সিওয়েল। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে পদোন্নতি প্রাপ্তদের অভিনন্দন জানান প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত কমান্ডিং অফিসার ক্যাপ্টেন খন্দকার আব্দুল্লাহ, বাংলাদেশি আমেরিকান পুলিশ এসোসিয়েশনের (বাপার) এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট সার্জেন্ট এরশাদ সিদ্দিকী সহ বাপার অন্যান্য সদস্যবৃন্দ ।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সুরঞ্জিত কান্তি দে চট্টগ্রামের বোয়ালখালী থানার পশ্চিম শাকপুরা গ্রামের সুনীল কান্তি দে এবং নমিতা দের ২য় পুত্র। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন। তিনি ১৯৯০ সালে ময়মনসিংহ কৃষিবিশ্ববিদ্যালয় হাইস্কুল থেকে কৃতিত্বের সাথে এসএসসি এবং ১৯৯২ সালে নাসিরাবাদ কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। পরে তিনি ১৯৯৭ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আনন্দমোহন কলেজ থেকে পদার্থ বিজ্ঞানে
স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।

তিনি ২০০০ সালে ডিভি লটারীতে আমেরিকায় আসার পর ২০০৩ সালে এনওয়াইপিডির অধীনে ট্রাফিক এনফোর্সমেন্ট এজেন্ট হিসেবে যোগদান করেন। এরপর ২০০৭ সালে ৩১ বছর বয়সে পুলিশ একাডেমিতে পুলিশ অফিসার হিসেবে ট্রেনিং শুরু করেন তিনি। কর্মজীবনের শুরুতে তিনি ব্রুকলিনের ট্রানজিট ডিস্ট্রিক ৩০ এ পুলিশ অফিসার হিসেবে দুই বছর দায়িত্ব পালনের পর ট্রানজিট ডিস্ট্রিক ৩৩ এর অধীনে এন্টি ক্রাইম ইউনিটে দীর্ঘ একযুগ ধরে সাদা পোশাকে পুলিশের দায়িত্ব পালন করেন। অত্যন্ত দক্ষতা ও চৌকসের সাথে দায়িত্ব পালনের জন্য তিনি ২০১০ সালে বছরের সেরা পুলিশ অফিসার (কপ অব দ্য ইয়ার) এর সম্মাননা অর্জনের পাশাপাশি ১২ বারের অধিক কপ অব দ্য মানথ হিসেবে ভূষিত হন। বিভিন্ন সময়ে বন্দুকসহ অনেক দুর্ধর্ষ আসামি গ্রেপ্তার করেন বলে সূত্রে জানা যায়।

পদোন্নতির ব্যাপারে তার আপন বড় ভাই বিশ্বজিৎ দে বলেন, আমাদের তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে সুরঞ্জিত দে দ্বিতীয়। ছোটবেলা থেকে সে অত্যন্ত মেধাবী ও কঠোর পরিশ্রমী ছিলেন। তার অনন্য সাফল্যে আমাদের পরিবারের সদসদ্যরা অত্যন্ত আনন্দিত ও গর্বিত।

ছেলে পৃথিবী দে, মেয়ে প্রকৃতি দে এবং সহধর্মিনী দূর্বা সরকারকে নিয়ে কুইন্সের ওজোনপার্কে বসবাস করেন তিনি। সুরঞ্জিত কান্তি দে তার এই সাফল্যের জন্য বাবা-মা, সহধর্মিনী ও ভাইবোনদের অবদানের কথা উল্লেখ করেন।

এদিকে নিউইর্য়ক পুলিশ বিভাগে বাংলাদেশিদের সংখ্যা দিনদিন বেড়েই চলেছে। উল্লেখ্য বর্তমানে এনওয়াইপিডির সদস্য সংখ্যা প্রায় ৩৬ হাজার । নিয়মিত বাহিনীতে প্রায় সাড়ে চারশতাধিক বাংলাদেশি রয়েছেন। তাদের মধ্যে ৪ জন ক্যাপ্টেন, ১০ জন লেফটেন্যান্ট , ৩৯ জন সার্জেন্ট এবং ১৫ জন ডিটেক্টিভসহ প্রায় সাত শতাধিক ট্রাফিক পুলিশ, অর্ধশতাধিক ট্রাফিক সুপারভাইজার, স্কুল সেইফটি এজেন্ট , স্কুল ক্রসিং গার্ডসহ অন্যান্য ইউনিটে মোট হাজারের বেশি বাংলাদেশি অত্যন্ত সুনাম ও দক্ষতার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন।

নিউজ লাইট ৭১