ঢাকা ০১:৫৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাড়তি ফি নিলে জবাবদিহির সুপারিশ

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ০৩:২৭:২০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ মার্চ ২০২২
  • / 27

বিয়ে এবং তালাক নিবন্ধনে বাড়তি ফি আদায় ঠেকাতে নজরদারি বাড়ানোর সুপারিশ করেছে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।

সোমবার জাতীয় সংসদ ভবনে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে মুসলিম বিবাহ ও তালাক (নিবন্ধন) আইন এবং বিধিমালা নিয়ে আলোচনায় এ সুপারিশ করা হয়।

কমিটি বলছে, বিয়ের নিবন্ধনে আলাদা ‘দুই ধরনের’ খাতা রেখে ‘অসত্য তথ্য’ দেওয়ায় মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে। সরকার ফি নির্দিষ্ট করে দেওয়ার পরও যারা বাড়তি ফি নিচ্ছেন তাদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।

বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি শহীদুজ্জামান সরকার সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমাদের কাছে অনেক সময় এই বেশি ফি আদায় নিয়ে অভিযোগ আসে। আমরা নিজেরাও দেখছি সরকার নির্ধারিত ফির বাইরে গিয়ে কাজী সাহেবরা টাকা নেন। তারা খাতা রাখে দুই রকমের।’

সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে তোলা সুপারিশের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মন্ত্রণালয়কে এ জন্য এ ব্যাপারে নজরদারি বাড়াতে বলা হয়েছে। বেশি ফি যারা নিচ্ছে তাদের একটা জবাবদিহির মধ্যে আনতে হবে।’

মুসলিম বিবাহ ও তালাক (নিবন্ধন) বিধিমালা ২০০৯ এ বলা আছে, একজন নিকাহ নিবন্ধক চার লাখ টাকা পর্যন্ত দেনমোহরের ক্ষেত্রে প্রতি এক হাজার টাকার জন্য সাড়ে ১২ টাকা ফি নিতে পারবেন।

দেনমোহর চার লাখের বেশি হলে এর পর থেকে প্রতি এক লাখ বা অংশ বিশেষের জন্য ১০০ টাকা নিবন্ধন ফি নিতে পারবেন। তবে সর্বনিম্ন ফি হবে ২০০ টাকা। তালাক নিবন্ধনের ফি ৫০০ টাকা।

একজন নিবন্ধক বছরে সরকারি কোষাগারে ১০ হাজার টাকা নিবন্ধন ফি এবং নবায়নের জন্য পাঁচ হাজার টাকা জমা দেন।

কমিটির সদস্য আব্দুল মজিদ খান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘এক বিয়েতে আমি দেখি ২৫ হাজার টাকা ফি চেয়েছেন কাজী। আমি তখন হস্তক্ষেপ করায় নানা রকম টালবাহানা শুরু করে। পরে বলছে, আচ্ছা, যা পারেন দেন। এ রকম বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়। এই জিনিসটা আমরা বন্ধ করতে চাই।’

তালাক নিবন্ধনের নকল সংগ্রহ করার জন্য নিবন্ধকাররা টাকা আদায় করেন উল্লেখ করে কমিটির সভাপতি বলেন, ‘এর জন্য টাকার দরকার নেই। তবুও নেওয়া হচ্ছে। মুসলিম বিবাহ ও তালাক (নিবন্ধন) বিধিমালাটি যুগোপযোগী করার সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি।

বৈঠকে মন্ত্রণালয় জানায়, বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে ২০২০-২১ অর্থবছরে নয়জন নিবন্ধককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। এর মধ্যে দুজনের সনদ বাতিল করা হয়েছে।

বৈঠকে জানানো হয়, নিকাহ রেজিস্ট্রারদের কাছ থেকে ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত মোট সাত কোটি ৮৫ হাজার ৪৫৮ টাকা কোষাগারে জমা পড়েছে।

শহীদুজ্জামান সরকারের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান, আব্দুল মজিদ খান এবং রুমিন ফারহানা অংশ নেন।

নিউজ লাইট ৭১

Tag :

শেয়ার করুন

বাড়তি ফি নিলে জবাবদিহির সুপারিশ

আপডেট টাইম : ০৩:২৭:২০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ মার্চ ২০২২

বিয়ে এবং তালাক নিবন্ধনে বাড়তি ফি আদায় ঠেকাতে নজরদারি বাড়ানোর সুপারিশ করেছে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।

সোমবার জাতীয় সংসদ ভবনে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে মুসলিম বিবাহ ও তালাক (নিবন্ধন) আইন এবং বিধিমালা নিয়ে আলোচনায় এ সুপারিশ করা হয়।

কমিটি বলছে, বিয়ের নিবন্ধনে আলাদা ‘দুই ধরনের’ খাতা রেখে ‘অসত্য তথ্য’ দেওয়ায় মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে। সরকার ফি নির্দিষ্ট করে দেওয়ার পরও যারা বাড়তি ফি নিচ্ছেন তাদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।

বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি শহীদুজ্জামান সরকার সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমাদের কাছে অনেক সময় এই বেশি ফি আদায় নিয়ে অভিযোগ আসে। আমরা নিজেরাও দেখছি সরকার নির্ধারিত ফির বাইরে গিয়ে কাজী সাহেবরা টাকা নেন। তারা খাতা রাখে দুই রকমের।’

সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে তোলা সুপারিশের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মন্ত্রণালয়কে এ জন্য এ ব্যাপারে নজরদারি বাড়াতে বলা হয়েছে। বেশি ফি যারা নিচ্ছে তাদের একটা জবাবদিহির মধ্যে আনতে হবে।’

মুসলিম বিবাহ ও তালাক (নিবন্ধন) বিধিমালা ২০০৯ এ বলা আছে, একজন নিকাহ নিবন্ধক চার লাখ টাকা পর্যন্ত দেনমোহরের ক্ষেত্রে প্রতি এক হাজার টাকার জন্য সাড়ে ১২ টাকা ফি নিতে পারবেন।

দেনমোহর চার লাখের বেশি হলে এর পর থেকে প্রতি এক লাখ বা অংশ বিশেষের জন্য ১০০ টাকা নিবন্ধন ফি নিতে পারবেন। তবে সর্বনিম্ন ফি হবে ২০০ টাকা। তালাক নিবন্ধনের ফি ৫০০ টাকা।

একজন নিবন্ধক বছরে সরকারি কোষাগারে ১০ হাজার টাকা নিবন্ধন ফি এবং নবায়নের জন্য পাঁচ হাজার টাকা জমা দেন।

কমিটির সদস্য আব্দুল মজিদ খান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘এক বিয়েতে আমি দেখি ২৫ হাজার টাকা ফি চেয়েছেন কাজী। আমি তখন হস্তক্ষেপ করায় নানা রকম টালবাহানা শুরু করে। পরে বলছে, আচ্ছা, যা পারেন দেন। এ রকম বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়। এই জিনিসটা আমরা বন্ধ করতে চাই।’

তালাক নিবন্ধনের নকল সংগ্রহ করার জন্য নিবন্ধকাররা টাকা আদায় করেন উল্লেখ করে কমিটির সভাপতি বলেন, ‘এর জন্য টাকার দরকার নেই। তবুও নেওয়া হচ্ছে। মুসলিম বিবাহ ও তালাক (নিবন্ধন) বিধিমালাটি যুগোপযোগী করার সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি।

বৈঠকে মন্ত্রণালয় জানায়, বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে ২০২০-২১ অর্থবছরে নয়জন নিবন্ধককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। এর মধ্যে দুজনের সনদ বাতিল করা হয়েছে।

বৈঠকে জানানো হয়, নিকাহ রেজিস্ট্রারদের কাছ থেকে ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত মোট সাত কোটি ৮৫ হাজার ৪৫৮ টাকা কোষাগারে জমা পড়েছে।

শহীদুজ্জামান সরকারের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান, আব্দুল মজিদ খান এবং রুমিন ফারহানা অংশ নেন।

নিউজ লাইট ৭১