ঢাকা ১১:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অযথা ভয় পাবেন না, বিল পাসের পর মমতা

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ০৯:৩৫:৪০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০১৯
  • / 99

নিউজ লাইট ৭১ ডেস্ক: বহু বিতর্ক, প্রতিকূলতা পেরিয়ে শেষপর্যন্ত সোমবার দুপুরে ভারতের লোকসভায় উপস্থাপন করা হয়েছে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল। বিলটি উপস্থাপনের পক্ষে ২৯৩ টি ভোট এবং বিপক্ষে মাত্র ৮২ টি ভোট পড়েছে। ফলে সংখ্যার নিরিখে সহজেই পাস হয়ে গেছে বিল। 

সংসদে যখন এই বিল পাস হয়, ঠিক সেই সময়ে খড়গপুরের সরকারি সভা থেকে এর প্রতিবাদে ফের সুর চড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তিনি বলেন, সিটিজেন অ্যামেন্ডমেন্ট বিল এবং এনআরসি একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। জনগণকে আবারো অযথা আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে আশ্বস্ত করলেন, কাউকে দেশছাড়া হতে হবে না।

মমতা ব্যানার্জি বারবার আসামে এনআরসি প্রসঙ্গ তুলেই বারবার কেন্দ্রকে আক্রমণ করে এসেছেন। আজও তার ব্যতিক্রম ঘটল না। আসামে ১২ লাখ হিন্দু বাঙালির নাম বাদ পড়েছে, এই উদাহরণ সামনে রেখে খড়গপুরের সভাতেও মমতার হুঁশিয়ারি, এনআরসি বাংলায় হতে দেব না। ভাগাভাগি করতে দেব না। কাউকে তাড়ানো যাবে না। এনআরসি নিয়ে অযথা ভয় পাবেন না। মনে রাখবেন, আমরা যতদিন আছি, এসব হবে না।

এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, এনআরসির কথায় ভয় পেয়ে এখানে বেশ কয়েকজন আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন। এটা কতটা দুঃখের! তাই সবাইকে বলছি, ভয় পাবেন না। আমরা আপনাদের মাথার উপর আছি। এর বিরোধিতায় সকলকে একজোট হওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।

বিলটি ‘অসাংবিধানিক’ এবং ‘বিভেদ সৃষ্টিকারী’ বলে ব্যাখ্যা করেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সৌগত রায়। বিলের একাধিক অংশ নিয়ে আপত্তি তোলেন লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরীও। বিলটি সংখ্যালঘুদের স্বার্থ বিরোধী বলে আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, আমাদের দেশের (ভারতের) সংখ্যালঘু মানুষদের নিশানা করেই এই বিলটি বানানো হয়েছে। অধীর স্পষ্ট অভিযোগ করেন, বিলটি সংবিধানের ১৪ নম্বর অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন করছে।

যদিও আজ অমিত শাহ দাবি করেছেন, এই বিল সংখ্যালঘুদের বিরোধী নয়। এই বিল কেন প্রয়োজন তার প্রেক্ষাপট ব্যাখ্যা করতে গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আফগানিস্তান, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের সংবিধানে রাষ্ট্রের ধর্মের উল্লেখ করা হয়েছে। ভারত ভাগের পর, ১৯৫০ সালে নেহরু-লিয়াকত সমঝোতার মাধ্যমে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, দুর্ভাগ্যবশত তাদের ওপর অত্যাচার হয়েছে।

অমিত শাহের দাবি, তিন দেশেই হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পারসি, ও খ্রিস্টানদের ওপর অত্যাচার হয়েছে। ওই তিন দেশের সংখ্যালঘুদের নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্যই এই বিল, জানান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

 তার এই মন্তব্যের পরই লোকসভায় তুমুল বিরোধিতা শুরু করেন কংগ্রেস-সহ বিরোধী সাংসদরা। একপর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে পাল্টা অমিত শাহ বলেন, কংগ্রেসই ধর্মের ভিত্তিতে দেশ বিভাজন করেছে। এটা ইতিহাস বলছে। আর এখন এটা কংগ্রেসকে শুনতে হবে। অমিতের এই মন্তব্যে ফের হইচই শুরু হয়ে যায়।

Tag :

শেয়ার করুন

অযথা ভয় পাবেন না, বিল পাসের পর মমতা

আপডেট টাইম : ০৯:৩৫:৪০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০১৯

নিউজ লাইট ৭১ ডেস্ক: বহু বিতর্ক, প্রতিকূলতা পেরিয়ে শেষপর্যন্ত সোমবার দুপুরে ভারতের লোকসভায় উপস্থাপন করা হয়েছে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল। বিলটি উপস্থাপনের পক্ষে ২৯৩ টি ভোট এবং বিপক্ষে মাত্র ৮২ টি ভোট পড়েছে। ফলে সংখ্যার নিরিখে সহজেই পাস হয়ে গেছে বিল। 

সংসদে যখন এই বিল পাস হয়, ঠিক সেই সময়ে খড়গপুরের সরকারি সভা থেকে এর প্রতিবাদে ফের সুর চড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তিনি বলেন, সিটিজেন অ্যামেন্ডমেন্ট বিল এবং এনআরসি একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। জনগণকে আবারো অযথা আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে আশ্বস্ত করলেন, কাউকে দেশছাড়া হতে হবে না।

মমতা ব্যানার্জি বারবার আসামে এনআরসি প্রসঙ্গ তুলেই বারবার কেন্দ্রকে আক্রমণ করে এসেছেন। আজও তার ব্যতিক্রম ঘটল না। আসামে ১২ লাখ হিন্দু বাঙালির নাম বাদ পড়েছে, এই উদাহরণ সামনে রেখে খড়গপুরের সভাতেও মমতার হুঁশিয়ারি, এনআরসি বাংলায় হতে দেব না। ভাগাভাগি করতে দেব না। কাউকে তাড়ানো যাবে না। এনআরসি নিয়ে অযথা ভয় পাবেন না। মনে রাখবেন, আমরা যতদিন আছি, এসব হবে না।

এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, এনআরসির কথায় ভয় পেয়ে এখানে বেশ কয়েকজন আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন। এটা কতটা দুঃখের! তাই সবাইকে বলছি, ভয় পাবেন না। আমরা আপনাদের মাথার উপর আছি। এর বিরোধিতায় সকলকে একজোট হওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।

বিলটি ‘অসাংবিধানিক’ এবং ‘বিভেদ সৃষ্টিকারী’ বলে ব্যাখ্যা করেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সৌগত রায়। বিলের একাধিক অংশ নিয়ে আপত্তি তোলেন লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরীও। বিলটি সংখ্যালঘুদের স্বার্থ বিরোধী বলে আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, আমাদের দেশের (ভারতের) সংখ্যালঘু মানুষদের নিশানা করেই এই বিলটি বানানো হয়েছে। অধীর স্পষ্ট অভিযোগ করেন, বিলটি সংবিধানের ১৪ নম্বর অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন করছে।

যদিও আজ অমিত শাহ দাবি করেছেন, এই বিল সংখ্যালঘুদের বিরোধী নয়। এই বিল কেন প্রয়োজন তার প্রেক্ষাপট ব্যাখ্যা করতে গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আফগানিস্তান, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের সংবিধানে রাষ্ট্রের ধর্মের উল্লেখ করা হয়েছে। ভারত ভাগের পর, ১৯৫০ সালে নেহরু-লিয়াকত সমঝোতার মাধ্যমে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, দুর্ভাগ্যবশত তাদের ওপর অত্যাচার হয়েছে।

অমিত শাহের দাবি, তিন দেশেই হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পারসি, ও খ্রিস্টানদের ওপর অত্যাচার হয়েছে। ওই তিন দেশের সংখ্যালঘুদের নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্যই এই বিল, জানান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

 তার এই মন্তব্যের পরই লোকসভায় তুমুল বিরোধিতা শুরু করেন কংগ্রেস-সহ বিরোধী সাংসদরা। একপর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে পাল্টা অমিত শাহ বলেন, কংগ্রেসই ধর্মের ভিত্তিতে দেশ বিভাজন করেছে। এটা ইতিহাস বলছে। আর এখন এটা কংগ্রেসকে শুনতে হবে। অমিতের এই মন্তব্যে ফের হইচই শুরু হয়ে যায়।