জালিয়াতিতে টিকে আছে চাকরি
- আপডেট টাইম : ১২:২৩:৫১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ নভেম্বর ২০২১
- / 46
বরগুনার তালতলী উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ (দফাদার) মো. জয়নাল হাওলাদারের ভোটার আইডি কার্ডে বয়স ৬০ বছর পার হলেও ব্যাপক অনিয়মের মাধ্যমে চাকরি টিকিয়ে রাখতে ভয়ংকর জালিয়াতি করেছেন তিনি।
ভোটার আইডি কার্ডে তার চাকরির বয়স পার হলেও জালিয়াতির মাধ্যেমে জন্মনিবন্ধন ও ফটোকপির দোকান থেকে ভোটার আইডি কার্ড তৈরি করে চাকরি করে যাচ্ছেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় বির্তকের সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, গ্রাম পুলিশ মো. জয়নাল হাওলাদারের প্রকৃত জন্ম তারিখ ০১-০৯-১৯৬১। এলাকার ভোটার তালিকায় দেয়া তার নং- (ভোটার নং ০৪০৬৪৪০০০৩০৩ ও জাতীয় পরিচয় পত্রে তার আইডি নং-১৯৬১০৪১০৯৩৯৭৪৮৬০৩ )। সে অনুযায়ী সোমবার (২২ নভেম্বর) পর্যন্ত তার বয়স ৬০ বছর ২ মাস ২০ দিন। তিনি নির্বাচন কমিশনে কোনো ধরণের বয়স সংশোধনের জন্য আবেদন করে নাই বলে জানা যায়।
জানা যায়, মো.জয়নাল হাওলাদার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের গ্রাম পুলিশ (চৌকিদার) পদে যোগদান করেন। পর্যায়ক্রমে তিনি গ্রাম পুলিশের (দফাদার) পদে পদোন্নতি পেয়েছেন। এরপরে তার বয়স অনুযায়ী তার চাকরির শেষ কার্যদিবস ছিল ২০২১ সালের অক্টোবর মাসের ২৮ তারিখ পর্যন্ত। তবে ব্যাপক অনিয়মের মাধ্যমে চাকরি টিকিয়ে রাখতে তিনি ভয়ংকর জালিয়াতি করেছেন। জলিয়াতির মধ্যে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসের ২৩ তারিখ তিনি তার ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে একটি জন্মনিবন্ধন করেন। যার জন্ম তারিখ ১৯৮৪ সালের ১০ এপ্রিল। জন্মনিবন্ধন নং-১৯৮৪০৪১৯২৯১১০০২৩৬।
অন্যদিকে ১৯৮২ সালের ১৮ জানুয়ারি তারিখে স্থানীয় ফটোকপির দোকান থেকে ভোটার আইডি কার্ড তৈরি করেন যার আইডি নং ০৪১০৯৩৯৪৫৭৯৭৭। তবে এই ভোটার আইডি নাম্বারটি নির্বাচন অফিসের মাধ্যমে সার্স দিলে সেখানে ঐ আইডিতে মুনসুর নামের এক ব্যক্তি নাম পাওয়া যায়। সেও একই ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের গ্রাম পুলিশ (চৌকিদার) ছিলেন। তবে ঐ মুনমুর প্রায় এক মাস আগে মারা যান।
গোপন সূত্রে জানা যায়, দফাদার জয়নাল তার প্রকৃত বয়স গোপন রেখে ভয়ংকর জালজালিয়াতীর মাধ্যমে এই জন্মনিবন্ধন ও ভোটার আইডি কার্ডটি করেছেন। এখানেও তৈরি করা জন্মনিবন্ধন ও ভোটার আইডি কার্ডের বয়সের ব্যবধান রয়েছে। তবে কোনটি দিয়ে তিনি এখনও দিব্যি চাকরি করে যাচ্ছেন তা জানেন না সরকারী অফিসের কেউ। তবে সরকারী অফিসর একটি সূত্র জানায় যেহেতু তার প্রকৃত বয়স ৬০ বছর ২ মাস ২০ দিন চলছে। সেক্ষেত্রে তিনি ভুয়া জন্মনিবন্ধন ও ভোটার আইডি কার্ডের যে কোনো একটি দিয়ে চাকরি করছেন। একই সঙ্গে সরকারি বেতন ভাতাসহ অন্যান্য সুবিধা ভোগ করে যাচ্ছেন। এদিকে প্রকৃত বয়স গোপন রাখার বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে বির্তকের সূষ্টি হয়। সুষ্ঠ তদন্ত করে ব্যবস্থার দাবি এলাকাবাসীর।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঐ ইউনিয়নের কয়েকজন ইউপি সদস্য জানান, এই জয়নাল ভূয়া কাগজপত্র তৈরি করে চাকরি টিকিয়ে রাখছেন এটা নিশ্চিত। তবে কি ক্ষমতা বলে এখনো চাকরিতে বহাল আছে তা জানি না। উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা নজর দিলেই হয়।অভিযুক্ত গ্রাম পুলিশ (দফাদার) মো. জয়নাল হাওলাদারকে মুঠোফোনে ফোন দিলে বিষয়টি তিনি এড়িয়ে গিয়ে ফোনটির লাইন কেটে দেয়।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান দুলাল ফরাজীকে একাধিকবার ফোবাইল ফোনে ফোন দিলে তিনি কেটে দেন।তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. কাওছার হোসেন বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, দফদার জয়নাল বয়স প্রমানের জন্য ভোটার আইডি বা জন্ম সনদ কোনটি জমা আছে সেটি খতিয়ে দেখা হবে।
নিউজ লাইট ৭১