ঢাকা ০৫:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঝুলে আছে বধ্যভূমির নির্মাণকাজ

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ১১:০৫:০৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ ডিসেম্বর ২০১৯
  • / 141

নিউজ লাইট ৭১ ডেস্ক: চট্টগ্রামের আনোয়ারায় সবচেয়ে বেশি আলোচিত বন্দর বধ্যভূমি স্মৃতি কমপ্লেক্সের নির্মাণকাজ দীর্ঘদিন ধরে অর্থাভাবে ঝুলে আছে। ২০১০ সালের ১৮ নভেম্বর এ নির্মাণকাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন তৎকালীন সংসদ সদস্য মরহুম আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু।

ইতোমধ্যে কমপ্লেক্সের সীমানা প্রাচীর ও স্মৃতিস্তম্ভের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। তবে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় কমপ্লেক্স নির্মাণ সম্ভব হয়নি।

স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা জানান, উপজেলার বন্দর গ্রামের বধ্যভূমিতে ১৯৭১ সালের ২০ মে ভোর ৪টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী ১৫৬ জন মানুষকে অমানুষিক নির্যাতনের পর গুলি করে মারা হয়। এতে পাকিস্তানি বাহিনীকে সহায়তা করে স্থানীয় রাজাকার, আলবদর ও আলশামস বাহিনী।

এসব শহীদ মুক্তিযোদ্ধার স্মৃতি রক্ষার্থে বধ্যভূমির ৫০ শতক সরকারি খাস জমির উপর আকর্ষণীয় কমপ্লেক্স ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের উদ্যোগ নেয় স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা। কমপ্লেক্সটির নির্মাণকাজে সহায়তা করে বিভিন্ন ব্যাংক ও ধনাঢ্য ব্যক্তিরা। এরই মধ্যে ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে কমপ্লেক্সের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা হয়েছে যার পুরোটাই দিয়েছেন এক মুক্তিযোদ্ধা।

বর্তমানে বধ্যভূমিতে স্মৃতিসৌধ নির্মাণকাজ শেষ হলেও টাকার অভাবে ঝুলে আছে স্মৃতি কমপ্লেক্সের নির্মাণকাজ।

জানা গেছে, ১৯৭১ সালে এখানে ১৫৬ জন বাঙালিকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। ওই শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে ১৫৬টি পিলার হবে। আর প্রতিটি পিলারে একেক জনের ছবি থাকবে। ১৯৭১ সালের বিজয়ের স্মরণে ৭১ ফুট উচ্চতাসম্পন্ন টাওয়ার হবে কমপ্লেক্সে। আর শোকের প্রতীক হিসেবে চারদিকে কালো মার্বেল পাথরখঁচিত আটটি পিলার থাকবে। ১৯৫২ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত ২০ বছর সময়কে স্মরণে রাখার জন্য অর্ধচন্দ্রাকারে ২০টি পিলার থাকবে। কমপ্লেক্সে সম্পূর্ণ আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর বিশালাকার মিলনায়তন থাকবে।

এতে গ্রন্থাগার, জাদুঘর ও সেমিনার কক্ষ থাকবে। আর ছাদের উপর থাকবে খোলা মঞ্চ। এ স্মৃতি কমপ্লেক্স নির্মাণে ব্যয় হবে আড়াই কোটি টাকা।

এরই মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। কমপ্লেক্সের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ক্রিয়েটিভ কনস্ট্রাকশনের ব্যবস্থাপনা অংশীদার ও বারশত ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম এ কাইয়ুম শাহু বলেন, বীর শহীদদের স্মৃতি রক্ষার্থে নির্মিত কমপ্লেক্সের কাজ করতে পেরে আমরা গর্ববোধ করছি। তবে অর্থসঙ্কটের কারণে আপাতত কাজ বন্ধ আছে।

বন্দর বধ্যভূমি স্মৃতি কমপ্লেক্স বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব মুক্তিযোদ্ধা লিয়াকত আলী চৌধুরী জানান, কমপ্লেক্সটির নির্মাণকাজে আড়াই কোটি টাকা ব্যয় হবে। ইতোমধ্যে আমরা এ কাজে এক কোটি ১২ লাখ টাকা ব্যয় করেছি। তার মধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আরো ৩৫ লাখ টাকা পাবে। কমপ্লেক্সের ৫০ শতাংশ কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। বাকি কাজ এখন অর্থাভাবে বন্ধ রয়েছে।

Tag :

শেয়ার করুন

ঝুলে আছে বধ্যভূমির নির্মাণকাজ

আপডেট টাইম : ১১:০৫:০৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ ডিসেম্বর ২০১৯

নিউজ লাইট ৭১ ডেস্ক: চট্টগ্রামের আনোয়ারায় সবচেয়ে বেশি আলোচিত বন্দর বধ্যভূমি স্মৃতি কমপ্লেক্সের নির্মাণকাজ দীর্ঘদিন ধরে অর্থাভাবে ঝুলে আছে। ২০১০ সালের ১৮ নভেম্বর এ নির্মাণকাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন তৎকালীন সংসদ সদস্য মরহুম আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু।

ইতোমধ্যে কমপ্লেক্সের সীমানা প্রাচীর ও স্মৃতিস্তম্ভের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। তবে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় কমপ্লেক্স নির্মাণ সম্ভব হয়নি।

স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা জানান, উপজেলার বন্দর গ্রামের বধ্যভূমিতে ১৯৭১ সালের ২০ মে ভোর ৪টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী ১৫৬ জন মানুষকে অমানুষিক নির্যাতনের পর গুলি করে মারা হয়। এতে পাকিস্তানি বাহিনীকে সহায়তা করে স্থানীয় রাজাকার, আলবদর ও আলশামস বাহিনী।

এসব শহীদ মুক্তিযোদ্ধার স্মৃতি রক্ষার্থে বধ্যভূমির ৫০ শতক সরকারি খাস জমির উপর আকর্ষণীয় কমপ্লেক্স ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের উদ্যোগ নেয় স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা। কমপ্লেক্সটির নির্মাণকাজে সহায়তা করে বিভিন্ন ব্যাংক ও ধনাঢ্য ব্যক্তিরা। এরই মধ্যে ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে কমপ্লেক্সের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা হয়েছে যার পুরোটাই দিয়েছেন এক মুক্তিযোদ্ধা।

বর্তমানে বধ্যভূমিতে স্মৃতিসৌধ নির্মাণকাজ শেষ হলেও টাকার অভাবে ঝুলে আছে স্মৃতি কমপ্লেক্সের নির্মাণকাজ।

জানা গেছে, ১৯৭১ সালে এখানে ১৫৬ জন বাঙালিকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। ওই শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে ১৫৬টি পিলার হবে। আর প্রতিটি পিলারে একেক জনের ছবি থাকবে। ১৯৭১ সালের বিজয়ের স্মরণে ৭১ ফুট উচ্চতাসম্পন্ন টাওয়ার হবে কমপ্লেক্সে। আর শোকের প্রতীক হিসেবে চারদিকে কালো মার্বেল পাথরখঁচিত আটটি পিলার থাকবে। ১৯৫২ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত ২০ বছর সময়কে স্মরণে রাখার জন্য অর্ধচন্দ্রাকারে ২০টি পিলার থাকবে। কমপ্লেক্সে সম্পূর্ণ আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর বিশালাকার মিলনায়তন থাকবে।

এতে গ্রন্থাগার, জাদুঘর ও সেমিনার কক্ষ থাকবে। আর ছাদের উপর থাকবে খোলা মঞ্চ। এ স্মৃতি কমপ্লেক্স নির্মাণে ব্যয় হবে আড়াই কোটি টাকা।

এরই মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। কমপ্লেক্সের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ক্রিয়েটিভ কনস্ট্রাকশনের ব্যবস্থাপনা অংশীদার ও বারশত ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম এ কাইয়ুম শাহু বলেন, বীর শহীদদের স্মৃতি রক্ষার্থে নির্মিত কমপ্লেক্সের কাজ করতে পেরে আমরা গর্ববোধ করছি। তবে অর্থসঙ্কটের কারণে আপাতত কাজ বন্ধ আছে।

বন্দর বধ্যভূমি স্মৃতি কমপ্লেক্স বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব মুক্তিযোদ্ধা লিয়াকত আলী চৌধুরী জানান, কমপ্লেক্সটির নির্মাণকাজে আড়াই কোটি টাকা ব্যয় হবে। ইতোমধ্যে আমরা এ কাজে এক কোটি ১২ লাখ টাকা ব্যয় করেছি। তার মধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আরো ৩৫ লাখ টাকা পাবে। কমপ্লেক্সের ৫০ শতাংশ কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। বাকি কাজ এখন অর্থাভাবে বন্ধ রয়েছে।