ঢাকা ০২:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিটিআরসির পাওনার বিষয়ে আদেশ ২৪ নভেম্বর

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ০৯:৫৩:২৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০১৯
  • / 110

নিউজ লাইট ৭১-গ্রামীণফোনের কাছে টেলি যোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থার (বিটিআরসি) নিরীক্ষা দাবির ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকার বিষয়ে আদেশের জন্য আগামী ২৪ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এই সময়ের মধ্যে এ নিয়ে অন্য কোন ফোরামে মধ্যস্থতার উদ্যোগ না নিতে গ্রামীণফোনকে নির্দেশ দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত।

সোমবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন। আদালতে গ্রামীণফোনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন ও শেখ ফজলে নূর তাপস। বিটিআরসির পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মাহবুবে আলম ও খন্দকার রেজা-ই-রাকিব।

এর আগে বিটিআরসির পাওনা দাবির মধ্যে গ্রামীণফোন কত দিতে পারবে তা জানাতে দুই দফা সময় দেওয়ার পর গত ১৪ নভেম্বর আদালতে শর্ত সাপেক্ষে আপাতত ২০০ কোটি টাকা দিতে রাজি হয় গ্রামীণফোন। আর ওই পাওনার অন্তত ৫০ ভাগ পরিশোধ করে পরবর্তীতে আলোচনার মাধ্যমে বাকি টাকার বিষয়ে সিদ্ধান্তের প্রস্তাব করে বিটিআরসি। ওই দিন আদালত উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে পরবর্তী শুনানি ও আদেশের জন্য সোমবার দিন ধার্য রাখেন।

ব্যারিস্টার রেজা-ই-রাকিব নিউজ লাইট ৭১ কে জানান, শুনানিতে গ্রামীণফোনের আইনজীবীরা আদালতকে জানান, গ্রামীণফোনের শেয়ার হোল্ডার টেলিনর এশিয়া। যেহেতু টেলিনর সিঙ্গাপুরের ইন করপোরেট এবং সিঙ্গাপুর ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি রয়েছে। সেই চুক্তির আওতায় তারা যদি কোনোরকম আর্থিক বিরোধের সম্মুখীন হয় তাহলে তারা আইসিএসআইডির (ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর সেটেলমেন্ট অব ইনভেস্টমেন্ট ডিসপিউটস) মধ্যস্থতায় আরবিট্রেশনের মাধ্যমে বিষয়টি মোকাবিলা করবে। একটি ল ফার্মের মাধ্যমে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি ইতিমধ্যে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।

তবে, তাদের এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন বিটিআরসির আইনজীবী মাহবুবে আলম। তিনি বলেন, বিষয়টি এখন আপিল বিভাগে বিচারাধীন রয়েছে। তাই এই অবস্থায় এ ধরনের প্রস্তাব সমর্থনযোগ্য নয়। শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ উভয় পক্ষের আইনজীবীদের জানায়, যেহেতু সর্বোচ্চ আদালতে এটি বিচারাধীন তাই আদেশের আগে এ নিয়ে গ্রামীণফোন অন্য কোনো ফোরামে যেতে পারবে না।

গত ১৭ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) এক আদেশে গ্রামীণ ফোনের কাছে বিটিআরসির ওই পাওনা আদায়ে ওপর দুই মাসের অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা জারি করে হাইকোর্ট। এরপর হাইকোর্টের এ আদেশের বিরুদ্ধে বিটিআরসি গত ২০ অক্টোবর আপিল বিভাগে আবেদন করে।

বিটিআরসির দাবি অনুযায়ী, ১৯৯৬ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত যন্ত্রপাতি আমদানিসহ বিভিন্ন বিষয়ে গ্রামীণফোনের কাছে নিরীক্ষা আপত্তি দাবির ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা এবং রবির কাছে ৮৬৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে তাদের। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ওই দুটি প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্স বাতিলের হুমকি দিয়ে ২ এপ্রিল নোটিশ দেয় বিটিআরসি।

বিটিআরসির পাওনার বিষয়ে গত আগস্টের শেষ সপ্তাহে ঢাকার সংশ্লিষ্ট দেওয়ানি আদালতে স্বত্বের মামলার (টাইটেল স্যুট) আবেদন করে গ্রামীণফোন। সেই আবেদনটি গৃহীত হয়ে আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। ওই আবেদনের অধীনে বিটিআরসির পাওনা আদায়ের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন জানানো হলে গত ২৮ আগস্ট নিম্ন আদালতে সেটি খারিজ হয়ে যায়। পরে ওই খারিজাদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করে গ্রামীণফোন।

Tag :

শেয়ার করুন

বিটিআরসির পাওনার বিষয়ে আদেশ ২৪ নভেম্বর

আপডেট টাইম : ০৯:৫৩:২৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০১৯

নিউজ লাইট ৭১-গ্রামীণফোনের কাছে টেলি যোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থার (বিটিআরসি) নিরীক্ষা দাবির ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকার বিষয়ে আদেশের জন্য আগামী ২৪ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এই সময়ের মধ্যে এ নিয়ে অন্য কোন ফোরামে মধ্যস্থতার উদ্যোগ না নিতে গ্রামীণফোনকে নির্দেশ দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত।

সোমবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন। আদালতে গ্রামীণফোনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন ও শেখ ফজলে নূর তাপস। বিটিআরসির পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মাহবুবে আলম ও খন্দকার রেজা-ই-রাকিব।

এর আগে বিটিআরসির পাওনা দাবির মধ্যে গ্রামীণফোন কত দিতে পারবে তা জানাতে দুই দফা সময় দেওয়ার পর গত ১৪ নভেম্বর আদালতে শর্ত সাপেক্ষে আপাতত ২০০ কোটি টাকা দিতে রাজি হয় গ্রামীণফোন। আর ওই পাওনার অন্তত ৫০ ভাগ পরিশোধ করে পরবর্তীতে আলোচনার মাধ্যমে বাকি টাকার বিষয়ে সিদ্ধান্তের প্রস্তাব করে বিটিআরসি। ওই দিন আদালত উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে পরবর্তী শুনানি ও আদেশের জন্য সোমবার দিন ধার্য রাখেন।

ব্যারিস্টার রেজা-ই-রাকিব নিউজ লাইট ৭১ কে জানান, শুনানিতে গ্রামীণফোনের আইনজীবীরা আদালতকে জানান, গ্রামীণফোনের শেয়ার হোল্ডার টেলিনর এশিয়া। যেহেতু টেলিনর সিঙ্গাপুরের ইন করপোরেট এবং সিঙ্গাপুর ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি রয়েছে। সেই চুক্তির আওতায় তারা যদি কোনোরকম আর্থিক বিরোধের সম্মুখীন হয় তাহলে তারা আইসিএসআইডির (ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর সেটেলমেন্ট অব ইনভেস্টমেন্ট ডিসপিউটস) মধ্যস্থতায় আরবিট্রেশনের মাধ্যমে বিষয়টি মোকাবিলা করবে। একটি ল ফার্মের মাধ্যমে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি ইতিমধ্যে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।

তবে, তাদের এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন বিটিআরসির আইনজীবী মাহবুবে আলম। তিনি বলেন, বিষয়টি এখন আপিল বিভাগে বিচারাধীন রয়েছে। তাই এই অবস্থায় এ ধরনের প্রস্তাব সমর্থনযোগ্য নয়। শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ উভয় পক্ষের আইনজীবীদের জানায়, যেহেতু সর্বোচ্চ আদালতে এটি বিচারাধীন তাই আদেশের আগে এ নিয়ে গ্রামীণফোন অন্য কোনো ফোরামে যেতে পারবে না।

গত ১৭ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) এক আদেশে গ্রামীণ ফোনের কাছে বিটিআরসির ওই পাওনা আদায়ে ওপর দুই মাসের অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা জারি করে হাইকোর্ট। এরপর হাইকোর্টের এ আদেশের বিরুদ্ধে বিটিআরসি গত ২০ অক্টোবর আপিল বিভাগে আবেদন করে।

বিটিআরসির দাবি অনুযায়ী, ১৯৯৬ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত যন্ত্রপাতি আমদানিসহ বিভিন্ন বিষয়ে গ্রামীণফোনের কাছে নিরীক্ষা আপত্তি দাবির ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা এবং রবির কাছে ৮৬৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে তাদের। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ওই দুটি প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্স বাতিলের হুমকি দিয়ে ২ এপ্রিল নোটিশ দেয় বিটিআরসি।

বিটিআরসির পাওনার বিষয়ে গত আগস্টের শেষ সপ্তাহে ঢাকার সংশ্লিষ্ট দেওয়ানি আদালতে স্বত্বের মামলার (টাইটেল স্যুট) আবেদন করে গ্রামীণফোন। সেই আবেদনটি গৃহীত হয়ে আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। ওই আবেদনের অধীনে বিটিআরসির পাওনা আদায়ের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন জানানো হলে গত ২৮ আগস্ট নিম্ন আদালতে সেটি খারিজ হয়ে যায়। পরে ওই খারিজাদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করে গ্রামীণফোন।