ঢাকা ০৫:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শুরুতেই জিম্মি দশা সড়ক আইন কার্যকরে

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ০৮:৩৫:৩১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০১৯
  • / 115

সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে নয়া আইন কার্যকর হয়েছে চলতি মাসের ১লা নভেম্বর থেকে। কিন্তু আইন সম্পর্কে সবাইকে অবগত করাতে বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে রোববার থেকে। গতকাল থেকে আইন প্রয়োগে নামে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষসহ (বিআরটিএ) ট্রাফিক বিভাগ। নতুন আইনের বিরোধিতার করে আসছে বিভিন্ন পরিবহন শ্রমিক সংগঠন। দেশের অন্তত ১০ টি জেলা থেকে বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে পরিবহন ও শ্রমিক সংগঠনগুলো। এছাড়া রাজধানীতেও গতকাল গণপরিবহনের সংখ্যা কিছুটা কম ছিল।
আইন প্রয়োগের শুরুর দিনই বিআরটিএ রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে। দিনভর শহরের ছয়টি স্পটে মোট আটটি আদালত বসিয়ে বিভিন্ন অভিযোগে ১ লাখ ২১ হাজার ৯শ’ টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। বিআরটিএর পরিচালক (এনফোর্সমেন্ট) এ.কে.এম মাসুদুর রহমান নিউজ লাইট ৭১কে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, যেসব যানবাহনের ফিটনেস, রুট পারমিট, ট্যাক্স টোকেন এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিল না তাদের জরিমানা করা হয়। সকাল থেকে রাজধানীর রায়েরবাগ, শনিরআখড়া, ধোলাইপাড় ও সায়েদাবাদ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন বিআরটিএ’র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাজহারুল ইসলাম। তিনি জানান, সকাল থেকে শুরু হওয়া অভিযান চলে দুপুর পর্যন্ত। অভিযানে ২৪টি পরিবহনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে এবং জরিমানা আদায় করা হয়েছে ৫২ হাজার টাকা। ফিটনেস, রুট পারমিট, ট্যাক্স টোকেন এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকায় এসব গাড়ির জরিমানা করা হয়। তাছাড়া ভারি যানবাহন হালকা লাইসেন্স দিয়ে চালানোর অভিযোগও আমরা পেয়েছি। অভিযান অব্যাহত থাকবে জানিয়ে মাজহারুল ইসলাম বলেন, এখন থেকে প্রতিদিন আমাদের অভিযান চলবে এবং আরও জোরদার করা হবে। এছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয় উত্তরা, বনানী, মতিঝিল, মিরপুর, যাত্রাবাড়ী ও মানিক মিয়া এভিনিউ এলাকায়ও। বিআরটিএ’র আদালত-৭ এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ হাসান পাটোয়ারী ও আদালত-৮ ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ সাদিয়া তাজনীন জানান, অভিযানের মুখ্য উদ্দেশ্য নতুন আইনের প্রয়োগ হলেও জনসচেতনতাকে অধিক গুরুত্ব এবং কম জরিমানা করা হচ্ছে। অভিযানে ফিটনেস, কালার, গাড়ির রেজিস্ট্রেশন, ট্যাক্স টোকেন, চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্সের ব্যত্যয় পেলে মামলা ও জরিমানা করা হচ্ছে। তবে এখনও কাউকে জেল দেয়া হয়নি। এই দুই আদালত সংসদ ভবন এলাকায় ৩০টি মামলা করে। যাতে জরিমানা করা হয় ২৭ হাজার ৫শ টাকা। এছাড়া বনানীতে অভিযান পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এমএম সামিরুল ইসলাম। তিনি মোট ১১টি মামলায় জরিমানা করেন ২১ হাজার টাকা। এদিকে, রাজধানীতে বিআরটিএর ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হলেও দেশের অন্য জেলার চিত্রটাই ছিল ভিন্ন। দিনভর অন্তত দশ জেলায় নতুন সড়ক আইন বাস্তবায়নের প্রতিবাদে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয় পরিবহন শ্রমিক নেতারা। এতে বিপাকে পড়েন এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাতায়াতকারী সাধারণ মানুষ। অনেক ভোগান্তির শিকারও হয়। রাজশাহী থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানান, নতুন সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়নের প্রতিবাদে রাজশাহী থেকে আন্তঃজেলার সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দেন শ্রমিকরা। সকাল থেকে শুরু হওয়া এ ধর্মঘটে চরম ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। পরিবহন শ্রমিক নেতারা বলেন, দুর্ঘটনার মামলা জামিনযোগ্যসহ সড়ক আইনের কয়েকটি ধারা সংশোধন চান চালকরা। তাদের দাবি, আইন সংশোধনের পরই এটি কার্যকর করা হোক। এটা না করা পর্যন্ত আমাদের এ কর্মসূচি চলবে। ঢাকার উদ্দেশ্যে রাজশাহী বাস টার্মিনালে আসা যাত্রী মো. সজিব বলেন, এমন কর্মসূচি পালন করলে আগে থেকে জানিয়ে দেয়া উচিৎ। তাহলে মানুষ এমন দুর্ভোগে পড়বে না। হঠাৎ বাস বন্ধের কারণে দুর্ভোগে পড়েছেন তারা। রাজশাহীর একটি বেসরকারি কলেজের শিক্ষক আহম্মেদ আলী বলেন, সরকার আইন করেছে। সেটা আইন নিয়ে বাস শ্রমিকদের সমস্যা থাকলে তারা নেতা বা মন্ত্রীদের নিয়ে আলোচনায় বসে সমাধান করতে হবে। হুট করে বাস বন্ধ, সড়ক বন্ধ করে দুর্ভোগ সৃষ্টি করা মোটেও ঠিক নয়। কারণ অনেক মানুষের বিভিন্ন সমস্যা হয়। রাজশাহী জেলা সড়ক পরিবহন গ্রুপের (ভারপ্রাপ্ত) সাধারণ সম্পাদক মতিউল হক টিটো বলেন, শ্রমিকরা গাড়ি চালাচ্ছে না। লোকাল রুটের সব বাস বন্ধ রয়েছে। তবে ঢাকার বাসগুলো চলছে। এনিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা হচ্ছে। অল্প সময়ের মধ্যে সমাধান হয়ে যেতে পরে। ঝিনাইদহ প্রতিনিধি জানান, নতুন সড়ক আইন সংশোধনের দাবিতে ঝিনাইদহের স্থানীয় সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দেন শ্রমিকরা। সোমবার সকাল থেকে ঝিনাইদহ-যশোর, ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া, মাগুরা ও চুয়াডাঙ্গার অভ্যন্তরীন রুটে বাস চলাচল বন্ধ রাখেন তারা। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। বাস না পেয়ে অনেকে ইজিবাইক ও মহাসড়কে চলাচলে নিষিদ্ধ ৩ চাকার যানবাহনে চলাচল করেন। ঝিনাইদহ থেকে যশোরগামী রবিউল ইসলাম নামের এক যাত্রী বলেন, সকালে ভিসার আবেদন করার জন্য আমাকে যশোর যেতে হবে। সকাল থেকে প্রায় ২ ঘণ্টা বসে আছি, তবুও বাস পাচ্ছি না। রাশেদ নামের আরেক যাত্রী বলেন, সরকার একটি আইন করেছে। আর বাস মালিক ও শ্রমিকরা সাধারণ যাত্রীদের জিম্মি করে বসে আছে। এখন ভোগান্তিতে আমাদের পড়তে হচ্ছে। সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের এ বিষয়ে প্রদক্ষেপ নেওয়া উচিত। এদিকে চালকরা বলেন, নতুন যে আইন করা হয়েছে তাতে আমাদের মত চালকরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি। দুর্ঘটনা তো দুর্ঘটনায়। কেউ তো ইচ্ছা করে দুর্ঘটনা ঘটায় না। আমাদের যদি ৫ লাখ টাকাই থাকতো তাহলে আমরা গাড়ি চালাতাম না। দ্রুত এই আইন সংশোধেনর দাবি জানান তিনি। খুলনা: নতুন সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়নের প্রতিবাদে খুলনা থেকে সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দেন শ্রমিকরা। সোমবার সকাল থেকে শুরু হওয়া এ ধর্মঘটে চরম ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। ফরিদপুর নিবাসী রাজিয়া আক্তার বলেন, গ্রামে যাওয়ার জন্য সকালে সোনাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে এসে দেখি বাস চলছে না। জরুরিভাবে গ্রামে যাওয়া দরকার ছিল। এখন সমস্যায় পড়তে হলো। মামুন শেখ জানান, তিনি ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। ছুটি শেষ হওয়ায় ঢাকায় যাওয়ার জন্য তিনি রোববার রাতে রয়েল মোড় থেকে ফাল্গুনী পরিবহনের টিকেট কাটেন। কিন্তু সকালে তিনি স্বপরিবারে ঢাকায় যেতে ওই পরিবহনের কাউন্টারে গেলে তার টিকেট নিয়ে টাকা ফেরত দেয়া হয়। বলা হয় পরিবহন চলছে না। পরিবহন শ্রমিক নেতারা বলেন, দুর্ঘটনার মামলা জামিনযোগ্যসহ সড়ক আইনের কয়েকটি ধারা সংশোধন চান চালকরা। তাদের দাবি, আইন সংশোধনের পরই এটি কার্যকর করা হোক। এটা না করা পর্যন্ত আমাদের এ কর্মসূচি চলবে। তারা বলেন, সরকারের বিভিন্ন দফতরে বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও আইনটি সংশোধন ছাড়াই বাস্তবায়নের ঘোষণা দেয়া হয়। এতে শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ ও উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে খুলনায় সব রুটের বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ২১ ও ২২শে নভেম্বর শ্রমিক ফেডারেশন বর্ধিত সভা ডেকেছে। ওই সভার এজেন্ডাগুলোর মধ্যে এক নম্বরে আছে সড়ক পরিবহন আইন সম্পর্কে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ। খুলনা মটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. নুরুল ইসলাম বেবী বলেন, নতুন সড়ক পরিবহন আইন কার্যকরের প্রতিবাদে শ্রমিকরা বাস চালাচ্ছেন না। তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি শুরু করেছেন। তিনি আরও বলেন, কোনো কারণে দুর্ঘটনায় কেউ মারা গেলে নতুন আইনে চালকদের মৃত্যুদণ্ড এবং আহত হলে ৫ লাখ টাকা দিতে হবে। আমাদের এত টাকা দেয়ার সামর্থ্য নেই এবং বাস চালিয়ে আমরা জেলখানায় যেতে চাই না। বাংলাদেশে এমন কোনো চালক নেই যে ৫ লাখ টাকা জরিমানা দিতে পারবে। কারণ একজন চালকের বেতন ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। এ বাজারে যা দিয়ে সংসার চালানো, ছেলে-মেয়ের লেখাপড়ার খরচ চালানো দায়। সেখানে এত জরিমানা কি করে দেওয়া যাবে। এ কারণেই নতুন পরিবহন আইন সংস্কারের দাবি জানান শ্রমিকরা। নইলে তারা বাস চালাবেন না। খুলনা জেলা বাস মিনিবাস কোচ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ার হোসেন সোনা বলেন, শ্রমিকরা ফাঁসি ও যাবজ্জীবন দণ্ডের ভয়ে গাড়ি চালানো বন্ধ করে দিচ্ছে। আমাদের সঙ্গে আলোচনা না করেই তারা এসব করছে।
নড়াইল প্রতিনিধি জানান, নড়াইলে দিনভর সব রুটের যাত্রীবাহী বাস চলাচল বন্ধ রাখেন শ্রমিকরা। নড়াইল থেকে ঢাকাসহ দূর পাল্লার কোনো যাত্রীবাহী বাস চলছে না। এমনকি অভ্যন্তরীন ৫টি রুটের সকল যাত্রীবাহী বাস চলাচল বন্ধ। পূর্ব ঘোষণা ছাড়া রোববার (১৭ নভেম্বর) সন্ধ্যা থেকে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়ায় যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন। জানা গেছে, সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ এর জেল জরিমানা সংশোধনসহ ১১ দফা দাবিতে রোববার নড়াইল পানি উন্নয়নর বোর্ড চত্বরে পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ মানববন্ধন এবং জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন। মানববন্ধনে বক্তারা প্রতিটি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩০৪/খ ধারায় মামলা রুজু করা, মটরযান ও চালকদের ওপর অধিক অর্থদণ্ড ও জেল জরিমানা সংশোধনের দাবি ছাড়াও ১১দফা দাবি জানান। এর ৭ ঘণ্টা পর কোনো ঘোষণা ছাড়াই শ্রমিকরা নড়াইল-যশোর, কালনা-নড়াইল-খুলনা, নড়াইল-লোহাগড়া, নড়াইল-মাগুরা, নড়াইল-নওয়াপাড়া ও নড়াইল-কালিয়া সড়কে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও  নড়াইল জেলা বাস মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ছাদেক আহম্মেদ খান জানান, বাস বন্ধ রাখার ব্যাপারে  সংগঠনের কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। বাস চালক-শ্রমিকরা নতুন পরিবহন আইনের ভয়ে বাস চালানো বন্ধ করে দিয়েছে।
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি জানান, কুষ্টিয়ায় বাস শ্রমিকদের সংগঠন শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা বলেন, কঠিন আইনে বাস চালাবেন না চালকেরা। সকালে যাত্রীরা মজমপুর, চৌড়হাস এলাকায় বাস টার্মিনালে গিয়ে বাস না পেয়ে ইজিবাইক, সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ তিন চাকার বিভিন্ন যানবাহনে গন্তব্যে রওনা দেন। যদিও এসব যান মহাসড়কে চলা অবৈধ।
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি জানান, সাতক্ষীরা বাস টার্মিনাল মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের কয়েকজন নেতা বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় কেউ মারা গেলে নতুন আইনে চালকদের মৃত্যুদণ্ড ও আহত হলে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করা হবে। শ্রমিকদের এত টাকা দেয়ার সামর্থ্য নেই। এ কারণেই আইন সংশোধনের পর এটি বাস্তবায়নের জন্য তারা জোর দাবি জানান। তা না হলে তারা বাস চালাবেন না। সাতক্ষীরা বাস টার্মিনাল মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. জাহিদুর রহমান দাবি করেন, সাতক্ষীরা জেলায় অভ্যন্তরীণ রুটে বাস চলাচল করছে। শুধু যশোর ও খুলনা সড়কে বাস চলাচল করছে না। চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি জানান, চুয়াডাঙ্গায় সকাল ১০টার দিকে অভ্যন্তরীণ ও দুপুর ২টার পর থেকে দূরপাল্লার যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। চুয়াডাঙ্গা জেলা বাস-ট্রাক সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি এম জেনারেল ইসলাম দাবি করেন, শ্রমিক ইউনিয়ন কোনো ধর্মঘট ডাকেনি। পরিবহন শ্রমিকদের কর্মবিরতির কারণে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
স্টাফ রিপোর্টার, যশোর থেকে জানান, রোববার সকাল থেকে বাসচালকেরা কর্মবিরতি শুরু করেন যা গতকাল বিকাল পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। জানতে চাইলে মাগুরা রুটের বাসের সুপারভাইজার হাসান খান বলেন, দৈনিক ২০০ থেকে ৩০০ টাকা শ্রমের দাম পাই। দুর্ঘটনা ঘটলে ৫ লাখ টাকা জরিমানা দেব কেমনে? যশোর জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মামুনুর রশীদ বলেন, অনেক চালকের গাড়ির চালানের লাইসেন্স নেই। গাড়ি বৈধতা নেই অনেকের। যে কারণে ভয়ে মালিক ও চালকেরা গাড়ি চালানো বন্ধ করে দিয়েছেন। এটা আমাদের শ্রমিক সংগঠনের কোনো  কর্মসূচি নয়। -নিউজ লাইট ৭১





Tag :

শেয়ার করুন

শুরুতেই জিম্মি দশা সড়ক আইন কার্যকরে

আপডেট টাইম : ০৮:৩৫:৩১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০১৯

সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে নয়া আইন কার্যকর হয়েছে চলতি মাসের ১লা নভেম্বর থেকে। কিন্তু আইন সম্পর্কে সবাইকে অবগত করাতে বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে রোববার থেকে। গতকাল থেকে আইন প্রয়োগে নামে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষসহ (বিআরটিএ) ট্রাফিক বিভাগ। নতুন আইনের বিরোধিতার করে আসছে বিভিন্ন পরিবহন শ্রমিক সংগঠন। দেশের অন্তত ১০ টি জেলা থেকে বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে পরিবহন ও শ্রমিক সংগঠনগুলো। এছাড়া রাজধানীতেও গতকাল গণপরিবহনের সংখ্যা কিছুটা কম ছিল।
আইন প্রয়োগের শুরুর দিনই বিআরটিএ রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে। দিনভর শহরের ছয়টি স্পটে মোট আটটি আদালত বসিয়ে বিভিন্ন অভিযোগে ১ লাখ ২১ হাজার ৯শ’ টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। বিআরটিএর পরিচালক (এনফোর্সমেন্ট) এ.কে.এম মাসুদুর রহমান নিউজ লাইট ৭১কে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, যেসব যানবাহনের ফিটনেস, রুট পারমিট, ট্যাক্স টোকেন এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিল না তাদের জরিমানা করা হয়। সকাল থেকে রাজধানীর রায়েরবাগ, শনিরআখড়া, ধোলাইপাড় ও সায়েদাবাদ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন বিআরটিএ’র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাজহারুল ইসলাম। তিনি জানান, সকাল থেকে শুরু হওয়া অভিযান চলে দুপুর পর্যন্ত। অভিযানে ২৪টি পরিবহনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে এবং জরিমানা আদায় করা হয়েছে ৫২ হাজার টাকা। ফিটনেস, রুট পারমিট, ট্যাক্স টোকেন এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকায় এসব গাড়ির জরিমানা করা হয়। তাছাড়া ভারি যানবাহন হালকা লাইসেন্স দিয়ে চালানোর অভিযোগও আমরা পেয়েছি। অভিযান অব্যাহত থাকবে জানিয়ে মাজহারুল ইসলাম বলেন, এখন থেকে প্রতিদিন আমাদের অভিযান চলবে এবং আরও জোরদার করা হবে। এছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয় উত্তরা, বনানী, মতিঝিল, মিরপুর, যাত্রাবাড়ী ও মানিক মিয়া এভিনিউ এলাকায়ও। বিআরটিএ’র আদালত-৭ এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ হাসান পাটোয়ারী ও আদালত-৮ ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ সাদিয়া তাজনীন জানান, অভিযানের মুখ্য উদ্দেশ্য নতুন আইনের প্রয়োগ হলেও জনসচেতনতাকে অধিক গুরুত্ব এবং কম জরিমানা করা হচ্ছে। অভিযানে ফিটনেস, কালার, গাড়ির রেজিস্ট্রেশন, ট্যাক্স টোকেন, চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্সের ব্যত্যয় পেলে মামলা ও জরিমানা করা হচ্ছে। তবে এখনও কাউকে জেল দেয়া হয়নি। এই দুই আদালত সংসদ ভবন এলাকায় ৩০টি মামলা করে। যাতে জরিমানা করা হয় ২৭ হাজার ৫শ টাকা। এছাড়া বনানীতে অভিযান পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এমএম সামিরুল ইসলাম। তিনি মোট ১১টি মামলায় জরিমানা করেন ২১ হাজার টাকা। এদিকে, রাজধানীতে বিআরটিএর ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হলেও দেশের অন্য জেলার চিত্রটাই ছিল ভিন্ন। দিনভর অন্তত দশ জেলায় নতুন সড়ক আইন বাস্তবায়নের প্রতিবাদে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয় পরিবহন শ্রমিক নেতারা। এতে বিপাকে পড়েন এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাতায়াতকারী সাধারণ মানুষ। অনেক ভোগান্তির শিকারও হয়। রাজশাহী থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানান, নতুন সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়নের প্রতিবাদে রাজশাহী থেকে আন্তঃজেলার সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দেন শ্রমিকরা। সকাল থেকে শুরু হওয়া এ ধর্মঘটে চরম ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। পরিবহন শ্রমিক নেতারা বলেন, দুর্ঘটনার মামলা জামিনযোগ্যসহ সড়ক আইনের কয়েকটি ধারা সংশোধন চান চালকরা। তাদের দাবি, আইন সংশোধনের পরই এটি কার্যকর করা হোক। এটা না করা পর্যন্ত আমাদের এ কর্মসূচি চলবে। ঢাকার উদ্দেশ্যে রাজশাহী বাস টার্মিনালে আসা যাত্রী মো. সজিব বলেন, এমন কর্মসূচি পালন করলে আগে থেকে জানিয়ে দেয়া উচিৎ। তাহলে মানুষ এমন দুর্ভোগে পড়বে না। হঠাৎ বাস বন্ধের কারণে দুর্ভোগে পড়েছেন তারা। রাজশাহীর একটি বেসরকারি কলেজের শিক্ষক আহম্মেদ আলী বলেন, সরকার আইন করেছে। সেটা আইন নিয়ে বাস শ্রমিকদের সমস্যা থাকলে তারা নেতা বা মন্ত্রীদের নিয়ে আলোচনায় বসে সমাধান করতে হবে। হুট করে বাস বন্ধ, সড়ক বন্ধ করে দুর্ভোগ সৃষ্টি করা মোটেও ঠিক নয়। কারণ অনেক মানুষের বিভিন্ন সমস্যা হয়। রাজশাহী জেলা সড়ক পরিবহন গ্রুপের (ভারপ্রাপ্ত) সাধারণ সম্পাদক মতিউল হক টিটো বলেন, শ্রমিকরা গাড়ি চালাচ্ছে না। লোকাল রুটের সব বাস বন্ধ রয়েছে। তবে ঢাকার বাসগুলো চলছে। এনিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা হচ্ছে। অল্প সময়ের মধ্যে সমাধান হয়ে যেতে পরে। ঝিনাইদহ প্রতিনিধি জানান, নতুন সড়ক আইন সংশোধনের দাবিতে ঝিনাইদহের স্থানীয় সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দেন শ্রমিকরা। সোমবার সকাল থেকে ঝিনাইদহ-যশোর, ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া, মাগুরা ও চুয়াডাঙ্গার অভ্যন্তরীন রুটে বাস চলাচল বন্ধ রাখেন তারা। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। বাস না পেয়ে অনেকে ইজিবাইক ও মহাসড়কে চলাচলে নিষিদ্ধ ৩ চাকার যানবাহনে চলাচল করেন। ঝিনাইদহ থেকে যশোরগামী রবিউল ইসলাম নামের এক যাত্রী বলেন, সকালে ভিসার আবেদন করার জন্য আমাকে যশোর যেতে হবে। সকাল থেকে প্রায় ২ ঘণ্টা বসে আছি, তবুও বাস পাচ্ছি না। রাশেদ নামের আরেক যাত্রী বলেন, সরকার একটি আইন করেছে। আর বাস মালিক ও শ্রমিকরা সাধারণ যাত্রীদের জিম্মি করে বসে আছে। এখন ভোগান্তিতে আমাদের পড়তে হচ্ছে। সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের এ বিষয়ে প্রদক্ষেপ নেওয়া উচিত। এদিকে চালকরা বলেন, নতুন যে আইন করা হয়েছে তাতে আমাদের মত চালকরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি। দুর্ঘটনা তো দুর্ঘটনায়। কেউ তো ইচ্ছা করে দুর্ঘটনা ঘটায় না। আমাদের যদি ৫ লাখ টাকাই থাকতো তাহলে আমরা গাড়ি চালাতাম না। দ্রুত এই আইন সংশোধেনর দাবি জানান তিনি। খুলনা: নতুন সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়নের প্রতিবাদে খুলনা থেকে সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দেন শ্রমিকরা। সোমবার সকাল থেকে শুরু হওয়া এ ধর্মঘটে চরম ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। ফরিদপুর নিবাসী রাজিয়া আক্তার বলেন, গ্রামে যাওয়ার জন্য সকালে সোনাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে এসে দেখি বাস চলছে না। জরুরিভাবে গ্রামে যাওয়া দরকার ছিল। এখন সমস্যায় পড়তে হলো। মামুন শেখ জানান, তিনি ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। ছুটি শেষ হওয়ায় ঢাকায় যাওয়ার জন্য তিনি রোববার রাতে রয়েল মোড় থেকে ফাল্গুনী পরিবহনের টিকেট কাটেন। কিন্তু সকালে তিনি স্বপরিবারে ঢাকায় যেতে ওই পরিবহনের কাউন্টারে গেলে তার টিকেট নিয়ে টাকা ফেরত দেয়া হয়। বলা হয় পরিবহন চলছে না। পরিবহন শ্রমিক নেতারা বলেন, দুর্ঘটনার মামলা জামিনযোগ্যসহ সড়ক আইনের কয়েকটি ধারা সংশোধন চান চালকরা। তাদের দাবি, আইন সংশোধনের পরই এটি কার্যকর করা হোক। এটা না করা পর্যন্ত আমাদের এ কর্মসূচি চলবে। তারা বলেন, সরকারের বিভিন্ন দফতরে বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও আইনটি সংশোধন ছাড়াই বাস্তবায়নের ঘোষণা দেয়া হয়। এতে শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ ও উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে খুলনায় সব রুটের বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ২১ ও ২২শে নভেম্বর শ্রমিক ফেডারেশন বর্ধিত সভা ডেকেছে। ওই সভার এজেন্ডাগুলোর মধ্যে এক নম্বরে আছে সড়ক পরিবহন আইন সম্পর্কে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ। খুলনা মটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. নুরুল ইসলাম বেবী বলেন, নতুন সড়ক পরিবহন আইন কার্যকরের প্রতিবাদে শ্রমিকরা বাস চালাচ্ছেন না। তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি শুরু করেছেন। তিনি আরও বলেন, কোনো কারণে দুর্ঘটনায় কেউ মারা গেলে নতুন আইনে চালকদের মৃত্যুদণ্ড এবং আহত হলে ৫ লাখ টাকা দিতে হবে। আমাদের এত টাকা দেয়ার সামর্থ্য নেই এবং বাস চালিয়ে আমরা জেলখানায় যেতে চাই না। বাংলাদেশে এমন কোনো চালক নেই যে ৫ লাখ টাকা জরিমানা দিতে পারবে। কারণ একজন চালকের বেতন ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। এ বাজারে যা দিয়ে সংসার চালানো, ছেলে-মেয়ের লেখাপড়ার খরচ চালানো দায়। সেখানে এত জরিমানা কি করে দেওয়া যাবে। এ কারণেই নতুন পরিবহন আইন সংস্কারের দাবি জানান শ্রমিকরা। নইলে তারা বাস চালাবেন না। খুলনা জেলা বাস মিনিবাস কোচ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ার হোসেন সোনা বলেন, শ্রমিকরা ফাঁসি ও যাবজ্জীবন দণ্ডের ভয়ে গাড়ি চালানো বন্ধ করে দিচ্ছে। আমাদের সঙ্গে আলোচনা না করেই তারা এসব করছে।
নড়াইল প্রতিনিধি জানান, নড়াইলে দিনভর সব রুটের যাত্রীবাহী বাস চলাচল বন্ধ রাখেন শ্রমিকরা। নড়াইল থেকে ঢাকাসহ দূর পাল্লার কোনো যাত্রীবাহী বাস চলছে না। এমনকি অভ্যন্তরীন ৫টি রুটের সকল যাত্রীবাহী বাস চলাচল বন্ধ। পূর্ব ঘোষণা ছাড়া রোববার (১৭ নভেম্বর) সন্ধ্যা থেকে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়ায় যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন। জানা গেছে, সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ এর জেল জরিমানা সংশোধনসহ ১১ দফা দাবিতে রোববার নড়াইল পানি উন্নয়নর বোর্ড চত্বরে পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ মানববন্ধন এবং জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন। মানববন্ধনে বক্তারা প্রতিটি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩০৪/খ ধারায় মামলা রুজু করা, মটরযান ও চালকদের ওপর অধিক অর্থদণ্ড ও জেল জরিমানা সংশোধনের দাবি ছাড়াও ১১দফা দাবি জানান। এর ৭ ঘণ্টা পর কোনো ঘোষণা ছাড়াই শ্রমিকরা নড়াইল-যশোর, কালনা-নড়াইল-খুলনা, নড়াইল-লোহাগড়া, নড়াইল-মাগুরা, নড়াইল-নওয়াপাড়া ও নড়াইল-কালিয়া সড়কে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও  নড়াইল জেলা বাস মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ছাদেক আহম্মেদ খান জানান, বাস বন্ধ রাখার ব্যাপারে  সংগঠনের কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। বাস চালক-শ্রমিকরা নতুন পরিবহন আইনের ভয়ে বাস চালানো বন্ধ করে দিয়েছে।
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি জানান, কুষ্টিয়ায় বাস শ্রমিকদের সংগঠন শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা বলেন, কঠিন আইনে বাস চালাবেন না চালকেরা। সকালে যাত্রীরা মজমপুর, চৌড়হাস এলাকায় বাস টার্মিনালে গিয়ে বাস না পেয়ে ইজিবাইক, সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ তিন চাকার বিভিন্ন যানবাহনে গন্তব্যে রওনা দেন। যদিও এসব যান মহাসড়কে চলা অবৈধ।
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি জানান, সাতক্ষীরা বাস টার্মিনাল মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের কয়েকজন নেতা বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় কেউ মারা গেলে নতুন আইনে চালকদের মৃত্যুদণ্ড ও আহত হলে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করা হবে। শ্রমিকদের এত টাকা দেয়ার সামর্থ্য নেই। এ কারণেই আইন সংশোধনের পর এটি বাস্তবায়নের জন্য তারা জোর দাবি জানান। তা না হলে তারা বাস চালাবেন না। সাতক্ষীরা বাস টার্মিনাল মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. জাহিদুর রহমান দাবি করেন, সাতক্ষীরা জেলায় অভ্যন্তরীণ রুটে বাস চলাচল করছে। শুধু যশোর ও খুলনা সড়কে বাস চলাচল করছে না। চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি জানান, চুয়াডাঙ্গায় সকাল ১০টার দিকে অভ্যন্তরীণ ও দুপুর ২টার পর থেকে দূরপাল্লার যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। চুয়াডাঙ্গা জেলা বাস-ট্রাক সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি এম জেনারেল ইসলাম দাবি করেন, শ্রমিক ইউনিয়ন কোনো ধর্মঘট ডাকেনি। পরিবহন শ্রমিকদের কর্মবিরতির কারণে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
স্টাফ রিপোর্টার, যশোর থেকে জানান, রোববার সকাল থেকে বাসচালকেরা কর্মবিরতি শুরু করেন যা গতকাল বিকাল পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। জানতে চাইলে মাগুরা রুটের বাসের সুপারভাইজার হাসান খান বলেন, দৈনিক ২০০ থেকে ৩০০ টাকা শ্রমের দাম পাই। দুর্ঘটনা ঘটলে ৫ লাখ টাকা জরিমানা দেব কেমনে? যশোর জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মামুনুর রশীদ বলেন, অনেক চালকের গাড়ির চালানের লাইসেন্স নেই। গাড়ি বৈধতা নেই অনেকের। যে কারণে ভয়ে মালিক ও চালকেরা গাড়ি চালানো বন্ধ করে দিয়েছেন। এটা আমাদের শ্রমিক সংগঠনের কোনো  কর্মসূচি নয়। -নিউজ লাইট ৭১