আমার শরীরের ওপর চলত প্রতি রাতেই নির্যাতন
- আপডেট টাইম : ০৯:৪৮:৪৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০১৯
- / 125
প্রতি রাতেই আমার শরীরের ওপর চলত নির্যাতন। প্রতিবাদ করলেই করা হত মারধর। এক পর্যায়ে অজ্ঞান হয়ে পড়তাম। কিন্তু তাতে তারা থেমে যেত না। ওই অবস্থায়ই শরীরের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ত। জ্ঞান ফিরলে বুঝতে পারতাম সেটা। কাজ করতে গিয়ে কেন আমাকে নির্মম নির্যাতনের শিকার হতে হলো-প্রশ্ন করেন সুমি। হ
ঠাৎ একদিন আমাকে জোর করে অন্য একটি বাসায় পাঠানো হলো। নতুন বাসায় গিয়ে আমি পড়লাম আরেক বিপদে। সেখানে আমাকে শারীরিক নির্যাতন করত। নতুন মালিক (কফিল) বলত, বাংলাদেশি প্রায় চার লাখ টাকায় তার কাছে আমাকে বিক্রি করেছে। ওই মালিক বলেন, তোকে কিনে এনেছি। তোর সাথে যা ইচ্ছা তাই করব। এভাবে প্রতি রাতে আমার ওপর যৌন নির্যাতন করা হতো। এভাবেই নির্যাতনের বর্ণনা দিচ্ছিলেন সৌদি আরব থেকে নির্যাতনের শিকার হয়ে বাড়ি ফেরা নারী কর্মী সুমি আক্তার।
শুক্রবার বিকেলে প্রশাসনের মাধ্যমে সুমি আক্তারকে তার বাবা-মার কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ সময় প্রবাসী কল্যাণ ডেক্সের সহকারী পরিচালক আবু হেনা মোস্তফা কামাল, বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মাহমুদ হাসান, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ূন কবীর প্রধান, তার বাবা-মা, স্বামীসহ আত্মীয় স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন। সুমির বাড়ি পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার পাঁচপীর ইউনিয়নের বৈরাতী সেনপাড়া গ্রামে। সুমির বাবা রফিকুল ইসলাম পেশায় একজন দিনমজুর। চার-ভাই বোনের মধ্যে সুমি বড়। এর আগে সকাল সোয়া ৭টায় এয়ার এরাবিয়ার একটি ফ্লাইটে সুমি শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। বিমানবন্দরে আনুষ্ঠানিকতা শেষে তাকে গ্রামের বাড়ির উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়।
সুমির পরিবারের সদস্যরা জানান, চলতি বছরের ৩০ মে রিক্রুটিং এজেন্সি ‘রূপসী বাংলা ওভারসিজ’র মাধ্যমে সৌদি আরব যান আশুলিয়ার চারাবাগ এলাকার নুরুল ইসলামের স্ত্রী সুমি। সেখানে যাওয়ার পর নিয়োগকর্তা (কফিল) ও অন্যদের পাশবিক নির্যাতনের মুখে পড়েন। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে এ মাসের শুরুর দিকে এক পর্যায়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভিডিওবার্তায় কান্নায় ভেঙে পড়ে দেশে ফেরার আকুতি জানান সৌদ প্রবাসী সুমি।
ওই ভিডিওতে সুমি বলেন, ‘ওরা আমারে মাইরা ফালাইবো, আমারে দেশে ফিরাইয়া নিয়া যান। আমি আমার সন্তান ও পরিবারের কাছে ফিরতে চাই। আমাকে আমার পরিবারের কাছে নিয়া যান। আর কিছু দিন থাকলে আমি মরে যাবো। ভালো কাজের’ কথা বলে এনে এখন তারা ওপর নির্যাতন করা হচ্ছে।’