নারীশ্রমিক না পাঠানোর পক্ষে নারী সংগঠকরা
- আপডেট টাইম : ১২:৩৮:৪৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০১৯
- / 129
সরকারের আন্তরিকতার অভাবে মধ্যপ্রাচ্যে প্রবাসী নারীশ্রমিকরা প্রতিনিয়ত নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। বিশেষ করে সৌদি আরবে নারীশ্রমিকদের অবস্থা আরও করুণ। সেখানে তাদের ওপর শারীরিক নির্যাতনের পাশাপাশি যৌন নির্যাতনও চালানো হয়। এসব ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট দূতাবাসে অভিযোগের পরও উল্লেখযোগ্য কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয় না বলে জানিয়েছে বিভিন্ন নারী সংগঠক। এ অবস্থায় সৌদি আরবে আর কোনো নারী শ্রমিক না পাঠানোর দাবি জানিয়েছে তারা।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর শহীদ মিনারে নারী সংগঠকদের আয়োজনে ‘প্রবাসী নারীশ্রমিকের পাশে বাংলাদেশ’ শীর্ষক বিক্ষোভ সমাবেশে এ দাবি জানানো হয়। পরে সমাবেশ থেকে এ দাবির পক্ষে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় বরাবর একটি স্মারকলিপিও দেয়া হয়।
সমাবেশে কমিউনিস্ট পার্টির নারী সেলের সদস্য লূনা নূর বলেন, প্রবাসে নারীশ্রমিকরা নিরাপদ নেই। অথচ এসব নারীশ্রমিকের টাকায় দেশের উন্নয়ন হচ্ছে, সরকারও সে উন্নয়নের ক্রেডিটও নিচ্ছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, সরকার এসব নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে জোরালো কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এক্ষেত্রে সরকার ব্যর্থ এটা বলবো না, তবে সরকারের আন্তরিকতার অভাবেই এসব নির্যাতন হচ্ছে।
সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের পক্ষে ইঞ্জিনিয়ার শম্পা বসু বলেন, শুনেছি সৌদি আরব থেকে দাসপ্রথা চলে গেছে, কিন্তু বাস্তবে ভিন্ন চিত্র। দেশটির নাগরিকরা এখনো দাসপ্রথা চালু রেখেছে। তারা এসব দাসদের নির্যাতন করে আনন্দ পায়। সৌদিসহ মধ্যপ্রাচ্যে প্রতিনিয়ত নারীশ্রমিকরা নির্যাতনের শিকার হলেও সরকার এ বিষয়ে নিশ্চুপ। সরকারের কাছে দাবি, আমরা আর কোনো মা-বোনকে নির্যাতনের শিকার হতে দেখতে চাই না। অবিলম্বে সৌদি থেকে সব নারীশ্রমিককে দেশে ফিরিয়ে আনুন। সেই সঙ্গে নতুন করে সেখানে নারীশ্রমিক পাঠানো বন্ধ করুন।
নারী নেত্রী বহ্নি শিখা জামালি বলেন, ২০১৫ সালে চুক্তির পর থেকে সৌদিতে অনেক নারী কর্মী গেলেও অধিকাংশই সেখানে অনিরাপদে আছেন। সেখানে তাদের ওপর পাশবিক নির্যাতন চালানো হয়। একই পরিবারের বাবা-ছেলেসহ অন্য পুরুষরাও যৌন নির্যাতন চালায় আমাদের মা-বোনদের ওপর। আমরা এমন পরিস্থিতি আর দেখতে চাই না। এ অবস্থা আর চলতে দেয়া যায় না। দেশটিতে নারীশ্রমিক পাঠানো বন্ধ করতে হবে এবং নির্যাতনের শিকার শ্রমিকদের দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে।
নারী সংগঠক মার্জিয়া প্রভা বলেন, আমার মা-বোন নির্যাতনের শিকার হন আর দূতাবাসকে জানানো হলে তারা কোনো পদক্ষেপ নেয় না। সরকার লুটপাটকারীদের পুরস্কার দেয়, গুরুত্বপূর্ণ পদে বসায়, অথচ প্রবাসের টাকা দেশে এনে যারা উন্নয়নে অংশ নিচ্ছে তাদের নির্যাতন করা হলেও কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয় না। এ কেমন দেশে আমরা আছি? অনতিবিলম্বে ব্যবস্থা নিন, না হলে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল শহীদ মিনার থেকে শাহবাগ মোড় পর্যন্ত প্রদক্ষিণ করে। পরে সেখান থেকে একটি প্রতিনিধি দল স্মারকলিপি নিয়ে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে যায়।