মানব শরীরের প্রতিটি অংশের চাই সমান গুরুত্ব
- আপডেট টাইম : ০৬:৪৬:৪০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ জানুয়ারী ২০২১
- / 88
মানব শরীরের প্রতিটি অংশের চাই সমান গুরুত্ব। বাহ্যিক বা অভ্যন্তরীণ সব ধরনের অঙ্গই পরিচালিত হয় মস্তিষ্কের মাধ্যমে। মস্তিষ্ক থেকে আসা আদেশ বা তথ্যগুলো পিঠের মধ্যে সংরক্ষিত স্নায়ুরুজ্জু দিয়ে সমস্ত দেহে সঞ্চারিত হয়। মস্তিষ্কের সঙ্গে শরীরের সংযোগ স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হলো পিঠ।
বয়স বেড়ে গেলে একটা সময় পিঠে ব্যথা হওয়া প্রায় অবধারিত। তবে বর্তমানে অল্প বয়সে পিঠে ব্যথা দেখা দিচ্ছি তার কারণ হচ্ছে ব্যায়ামের অভাব, হাড় ক্ষয়, ক্যালসিয়ামের অভাব, বেশি উঁচু বা বেশি নিচু বালিশে ঘুমানো, অফিসে দীর্ঘ বসে কাজ করাসহ বিভিন্ন কারণে আমাদের পিঠে ব্যথা বা টান লাগার মতো সমস্যা হতে পারে। তবে সঠিক ফিটনেস রেজিমে অনেকটাই উপশম সম্ভব।
অনেকেই রয়েছেন যাঁরা পিঠে ব্যথার শিকার হয়ে পেন কিলারের মাধ্যেমে সাময়িকভাবে ব্যথা কমালেও আবার ক’দিন বাদে তা ফিরে আসে। ব্যথা মারাত্মক আকার নিলে অনেকে সার্জারির কথাও ভাবতেও পিছপা হন না। অথচ জানেন কি, পিঠে ব্যথা কমানোর সবচেয়ে সহজ উপায় এক্সারসাইজ়? শুনলে অবাক হবেন, প্রতিদিন মাত্র ৮-১০ মিনিট এক্সারসাইজ় করলে দু’সপ্তাহের মধ্যে পিঠে ব্যথার সমস্যা থেকে অনেকটা রেহাই পাওয়া যায়।
পিঠে ব্যথার সমস্যায় লোয়ার ব্যাক স্ট্রেচ খুব ভাল কাজ দেয়। এই ধরনের এক্সারসাইজ়ে লোয়ার ব্যাকের পেশিগুলি শক্তিশালী হয়ে ওঠে এবং নমনীয়তা বাড়ে। পিঠে ব্যথা কমাতে ‘গুড মর্নিং’ এক্সারসাইজ়ও খুব ভাল কাজ দেয়। এই এক্সারসাইজ় করা হয় ওজনের সাহায্যে। তবে ব্যাক পেনের সমস্যায় ব্যায়াম বেছে নেয়ার আগে একজন ডাক্তার বা ফিটনেস এক্সপার্টের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। আপনার বয়স, শারীরিক সক্ষমতা, ব্যথার ধরন, কমফর্ট লেভেল এই সবকিছুর উপরে নির্ভর করবে কী ধরনের এক্সারসাইজ় আপনার জন্য উপযুক্ত।
এক্সারসাইজ় ছাড়াও আরও কয়েকটি বিষয়ে খেয়াল রাখা জরুরি।
আপনার বসা, হাঁটা, শোয়ার ধরন কিন্তু পিঠের পেশির উপর প্রভাব ফেলে। তাই সবসময় চেষ্টা করুন শরীরের সঠিক পশ্চার ধরে রাখতে। পিঠ সোজা রেখে বসুন, টানটান হয়ে হাঁটুন। ধীরে ধীরে এটাই আপনার অভ্যেসে দাঁড়িয়ে যাবে।
সকালে ঘুম ভাঙার পর হঠাৎ করে উঠে বসবেন না। এতে পিঠে আচমকা আঘাত লাগতে পারে। ঘুম ভাঙার পর প্রথমে পাশ ফিরুন, হাঁটু ভাঁজ করে রাখুন। এবার হাতের উপর ভার দিয়ে ধীরে ধীরে পা মেঝেতে নামিয়ে রেখে উঠে বসুন। এবার পিঠ সোজা রেখে উঠে দাঁড়ান।
সবসময় সোজা হয়ে দাঁড়ান। দাঁড়ানোর সময় পেট এবং বাট মাসলকে ভিতর দিকে টেনে রাখুন। পেটের মাসল টানটান করে রাখলে তা পিঠকে অনেকটাই সার্পোট দিতে পারে। এই ধরনের অভ্যেসগুলো আপনার পশ্চার সুন্দর করার পাশাপাশি আপনার ব্যাক পেনের সমস্যাকে দূর করতেও সাহায্য করবে।
পিঠ ব্যথার সমস্যার জন্য দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা অনেকটাই দায়ী। আপনি কী ধরনের চেয়ারে বসছেন তার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ আপনি দিনের মধ্যে কতটা সময় সিটিং পজ়িশনে থাকছেন। আসলে বসে থাকা অবস্থায় পিঠের উপর সবচেয়ে বেশি চাপ পড়ে। তাই একটানা অনেকক্ষণ বসে থাকবেন না। নির্দিষ্ট সময় অন্তর উঠে দাঁড়ান, সম্ভব হলে একটু হেঁটে আসুন।
অনেকেই চেয়ারে বসে সামনের দিকে ঝুঁকে পড়েন অথবা খুব বেশি পিছনে হেলে থাকেন বা পায়ের উপর পা তুলে বসেন। এই সব দু’ক্ষেত্রেই পিঠের উপর চাপ বেশি পড়ে। চেষ্টা করুন কাজের জায়গায় একটা ফুটস্টুল বা ফুটবার রাখতে। এতে আপনার সোজা হয়ে বসতে সুবিধা হবে এবং থাইয়ের ভারটাও পিঠের উপর পড়বে না।
নিউজ লাইট ৭১