ঢাকা ০২:৩৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নাকে হাত দেয়ার অভ্যাস আছে অনেক মানুষের

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ০৫:৫০:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২০
  • / 101

কারণে অকারণে নাকে হাত দেয়ার অভ্যাস আছে অনেক মানুষের। বাসে বসে আছেন বা ক্লাসে বা অফিসে- আপনার অগোচরেই হাতের একটা আঙ্গুল ঢুকে গেল নাকে। এমন আচরিত অভ্যাস আপনাকে এবং আপনার চারপাশে যেসব মানুষ আছেন, তাদেরকে সমূহ বিপদে ফেলতে পারে। এর মাধ্যমে একজন মানুষ শুধু তার ভিতরকার ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাসকেই চারপাশে সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিচ্ছেন এমন নয়। একই সঙ্গে আঙ্গুলের সঙ্গে যে জীবাণু লেগে থাকে তা তিনি নিজের শরীরে প্রবেশ করিয়ে দিচ্ছেন। 

সিয়াটলে অবস্থিত ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটন স্কুল অব মেডিসিনের সংক্রামক ব্যাধি বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ড. পল পোটিঞ্জার এমনটাই মনে করেন। এর অর্থ হলো নাকে হাত দেয়ার মাধ্যমে আপনার চারপাশে থাকা অন্যদের মাঝে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে দিচ্ছেন। এ ছাড়া নিজেই নিজের শরীরে ইনফ্লুয়েঞ্জা বা রাইনোভাইরাস (সাধারণ সর্দি) সরাসরি আপনার শরীরে প্রবেশ করিয়ে দিচ্ছেন।

যেসব মাধ্যমে শরীরে ভাইরাস প্রবেশ করতে পারে তার প্রধান তিনটির মধ্যে নাক হলো অন্যতম। অন্য দুটি মাধ্যম হলো মুখ এবং চোখ। এর মধ্যে ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য নাকে আছে বেশ কিছু উপায়। এর মধ্যে আছে নাকের সামনের দিকের লোম। এগুলো বড় বড় কণাকে নাকে প্রবেশ করা থেকে রক্ষা করে। একই রকম কাজ করে নাকের মিউকাস মেমব্রেন। নাকের আর্দ্র চিকন পথে আছে আনুবীক্ষণিক ছোট্ট ছোট্ট গ্লান্ড বা তন্ত্র। বাইরে থেকে কোনো আক্রমণ হলে তার বিরুদ্ধে এসব গ্লান্ত নাকে বাতাস ঢোকার পথে মিউকাস বা স্লেষা নিঃসরণ করে। এর মধ্যে রয়েছে ময়লা আবর্জনা, ধুলোবালি, ফুলের রেণু। এ ছাড়া তাতে থাকতে পারে ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস।

ডা. পোটিঞ্জার বলেন, এসব মিউকাসের কিছু কিছু আছে যা ভাল এবং স্বাস্থ্যকর। এরা বেশির ভাগ বহিঃশত্রুকে বাইরে বের করে দেয়। কিন্তু যখন নাক শুষ্ক হয়ে পড়ে, তখন এমন কাজ করতে পারে না। বিজ্ঞানীরা এমন অবস্থাকে বলেন ক্রাস্ট। যখন আপনার নাকে এমন বোধ হতে থাকবে তখন অনায়াসে কিছু চিন্তা না করেই আপনার একটি আঙ্গুল ঢুকে যেতে পারে নাকের ভিতর।

অনেক মানুষই জানেন না নাকের ভিতরের ত্বক কতটা দুর্বল হতে পারে। নাকের ভিতর আঙ্গুল দেয়ার ফলে পাতলা ওই ত্বকের স্তর ফেটে যেতে পারে। এতে নাকের ভিতর ক্ষত সৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছেন মিসিসিপির জ্যাকসন স্টেট ইউনিভার্সিটির জীববিজ্ঞানের সাবেক সহযোগী প্রফেসর ও মলিকিউলার ভাইরোলজিস্ট সেদ্রিক বাকলে। তার মতে, এমন অবস্থা সৃষ্টি হলে সহজেই ভাইরাল সংক্রমণ শুরু হতে পারে। এ অবস্থায় আপনার হাতে লেগে থাকা ভাইরাস বা জীবাণু সহজেই মূল রক্তপ্রবাহের সঙ্গে মিশে যেতে পারে।

তাই নাকের ভিতর আঙ্গুল দেয়া বন্ধ করা উচিত। বিশেষ করে মহামারির সময়ে এমন অভ্যাস পরিহার করা উচিত। কিন্তু অভ্যাস তো সহজে ভাঙা যায় না। কারণ, সেটা ঘটে যায় আপনার অগোচরেই।

নিউজ লাইট ৭১

Tag :

শেয়ার করুন

নাকে হাত দেয়ার অভ্যাস আছে অনেক মানুষের

আপডেট টাইম : ০৫:৫০:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২০

কারণে অকারণে নাকে হাত দেয়ার অভ্যাস আছে অনেক মানুষের। বাসে বসে আছেন বা ক্লাসে বা অফিসে- আপনার অগোচরেই হাতের একটা আঙ্গুল ঢুকে গেল নাকে। এমন আচরিত অভ্যাস আপনাকে এবং আপনার চারপাশে যেসব মানুষ আছেন, তাদেরকে সমূহ বিপদে ফেলতে পারে। এর মাধ্যমে একজন মানুষ শুধু তার ভিতরকার ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাসকেই চারপাশে সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিচ্ছেন এমন নয়। একই সঙ্গে আঙ্গুলের সঙ্গে যে জীবাণু লেগে থাকে তা তিনি নিজের শরীরে প্রবেশ করিয়ে দিচ্ছেন। 

সিয়াটলে অবস্থিত ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটন স্কুল অব মেডিসিনের সংক্রামক ব্যাধি বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ড. পল পোটিঞ্জার এমনটাই মনে করেন। এর অর্থ হলো নাকে হাত দেয়ার মাধ্যমে আপনার চারপাশে থাকা অন্যদের মাঝে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে দিচ্ছেন। এ ছাড়া নিজেই নিজের শরীরে ইনফ্লুয়েঞ্জা বা রাইনোভাইরাস (সাধারণ সর্দি) সরাসরি আপনার শরীরে প্রবেশ করিয়ে দিচ্ছেন।

যেসব মাধ্যমে শরীরে ভাইরাস প্রবেশ করতে পারে তার প্রধান তিনটির মধ্যে নাক হলো অন্যতম। অন্য দুটি মাধ্যম হলো মুখ এবং চোখ। এর মধ্যে ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য নাকে আছে বেশ কিছু উপায়। এর মধ্যে আছে নাকের সামনের দিকের লোম। এগুলো বড় বড় কণাকে নাকে প্রবেশ করা থেকে রক্ষা করে। একই রকম কাজ করে নাকের মিউকাস মেমব্রেন। নাকের আর্দ্র চিকন পথে আছে আনুবীক্ষণিক ছোট্ট ছোট্ট গ্লান্ড বা তন্ত্র। বাইরে থেকে কোনো আক্রমণ হলে তার বিরুদ্ধে এসব গ্লান্ত নাকে বাতাস ঢোকার পথে মিউকাস বা স্লেষা নিঃসরণ করে। এর মধ্যে রয়েছে ময়লা আবর্জনা, ধুলোবালি, ফুলের রেণু। এ ছাড়া তাতে থাকতে পারে ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস।

ডা. পোটিঞ্জার বলেন, এসব মিউকাসের কিছু কিছু আছে যা ভাল এবং স্বাস্থ্যকর। এরা বেশির ভাগ বহিঃশত্রুকে বাইরে বের করে দেয়। কিন্তু যখন নাক শুষ্ক হয়ে পড়ে, তখন এমন কাজ করতে পারে না। বিজ্ঞানীরা এমন অবস্থাকে বলেন ক্রাস্ট। যখন আপনার নাকে এমন বোধ হতে থাকবে তখন অনায়াসে কিছু চিন্তা না করেই আপনার একটি আঙ্গুল ঢুকে যেতে পারে নাকের ভিতর।

অনেক মানুষই জানেন না নাকের ভিতরের ত্বক কতটা দুর্বল হতে পারে। নাকের ভিতর আঙ্গুল দেয়ার ফলে পাতলা ওই ত্বকের স্তর ফেটে যেতে পারে। এতে নাকের ভিতর ক্ষত সৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছেন মিসিসিপির জ্যাকসন স্টেট ইউনিভার্সিটির জীববিজ্ঞানের সাবেক সহযোগী প্রফেসর ও মলিকিউলার ভাইরোলজিস্ট সেদ্রিক বাকলে। তার মতে, এমন অবস্থা সৃষ্টি হলে সহজেই ভাইরাল সংক্রমণ শুরু হতে পারে। এ অবস্থায় আপনার হাতে লেগে থাকা ভাইরাস বা জীবাণু সহজেই মূল রক্তপ্রবাহের সঙ্গে মিশে যেতে পারে।

তাই নাকের ভিতর আঙ্গুল দেয়া বন্ধ করা উচিত। বিশেষ করে মহামারির সময়ে এমন অভ্যাস পরিহার করা উচিত। কিন্তু অভ্যাস তো সহজে ভাঙা যায় না। কারণ, সেটা ঘটে যায় আপনার অগোচরেই।

নিউজ লাইট ৭১