ঢাকা ০৫:২৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বঙ্গবন্ধুর খুনি রাশেদকে ফেরত পাঠাতে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিবাচক সাড়া

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ১২:৩৫:৩৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৬ নভেম্বর ২০১৯
  • / 111

ঢাকা সফররত যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক ভারপ্রাপ্ত সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী এলিস ওয়েলসের সঙ্গে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রাশেদ চৌধুরীকে ফেরাতে বিচারের কাগজপত্র চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ঢাকা সফররত যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক ভারপ্রাপ্ত সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী এলিস ওয়েলসের সঙ্গে বৈঠক শেষে এসব তথ্য জানান বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন।

এর আগে চলতি বছরের এপ্রিলে ওয়াশিংটনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত আসামি রাশেদ চৌধুরীকে অবিলম্বে ফেরত দিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে এসেছিলেন।

সে বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের সঙ্গে সবসময়ই আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছিল বাংলাদেশ।তারই ধারাবাহিকতায় প্রথমবারের মতো ওয়াশিংটন এই বিষয়ে ঢাকার কাছে নথিপত্র চাইল।

মঙ্গলবার ঢাকা সফররত যুক্তরাষ্ট্রের মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন এ বিষয়ে কথা তুলেন।

এলিস ওয়েলসকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আপনাদের মতো আমরাও আইনের শাসনে বিশ্বাসী। বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি রাশেদ চৌধুরী আপনাদের দেশে এতো বছর ধরে পালিয়ে আছে। তাকে আপনারা ফিরিয়ে দিচ্ছেন না কেন?’

এরপর তিনি বলেন, এর আগে এ ধরনের প্রস্তাবে কোনো সাড়া না মিললেও এবার ব্যতিক্রম দেখা গেছে। এলিস ওয়েলস রাশেদ চৌধুরীর মামলার রায়ের কাগজপত্র পাঠাতে বলেছেন।

এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে আবদুল মোমেন প্রথম যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে আহ্বান জানিয়েছিলেন, বঙ্গবন্ধুর শততম জন্মবার্ষিকীর আগেই খুনি রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত চায় বাংলাদেশ।

উল্লেখ্য, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার দায়ে মত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রাশেদ চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন।

প্রসঙ্গত ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়ার পর ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ দিয়ে বিচার বন্ধ করা হয়। আত্মস্বীকৃত এই ১২ খুনিকে বিদেশে বাংলাদেশের বিভিন্ন মিশনে চাকরি দিয়ে পুনর্বাসন করা হয়।

১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় যাওয়ার পর ১২ নভেম্বর ইনডেমনিটি আইন বাতিল করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করার পথ সুগম করে। তারপর বিচারের আয়োজন করা হয়। ২০১০ সালের জানুয়ারিতে পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।

যেসব খুনির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে তারা হল, সাবেক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফারুক রহমান, মহিউদ্দিন আহমেদ (আর্টিলারি), শাহরিয়ার রশিদ খান এবং একেএম মহিউদ্দিন আহম্মেদ (ল্যান্সার) ও সাবেক মেজর বজলুল হুদা। ঢাকা ও ব্যাংককের মধ্যে বন্দি বিনিময় চুক্তি স্বাক্ষরের পর বজলুল হুদাকে থাইল্যান্ড থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়।

তবে বন্দি বিনিময় চুক্তি না থাকলেও সেনা সমর্থিত অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে বরখাস্তকৃত লেফটেন্যান্ট কর্নেল একেএম মহিউদ্দিন আহমেদকে যুক্তরাষ্ট্র ফিরিয়ে দেয়।

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ছয়জনের রায় কার্যকর হলেও রাশেদ চৌধুরীসহ বিদেশে পলাতক অন্যদের দণ্ড কার্যকর হয়নি।

Tag :

শেয়ার করুন

বঙ্গবন্ধুর খুনি রাশেদকে ফেরত পাঠাতে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিবাচক সাড়া

আপডেট টাইম : ১২:৩৫:৩৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৬ নভেম্বর ২০১৯

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রাশেদ চৌধুরীকে ফেরাতে বিচারের কাগজপত্র চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ঢাকা সফররত যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক ভারপ্রাপ্ত সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী এলিস ওয়েলসের সঙ্গে বৈঠক শেষে এসব তথ্য জানান বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন।

এর আগে চলতি বছরের এপ্রিলে ওয়াশিংটনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত আসামি রাশেদ চৌধুরীকে অবিলম্বে ফেরত দিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে এসেছিলেন।

সে বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের সঙ্গে সবসময়ই আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছিল বাংলাদেশ।তারই ধারাবাহিকতায় প্রথমবারের মতো ওয়াশিংটন এই বিষয়ে ঢাকার কাছে নথিপত্র চাইল।

মঙ্গলবার ঢাকা সফররত যুক্তরাষ্ট্রের মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন এ বিষয়ে কথা তুলেন।

এলিস ওয়েলসকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আপনাদের মতো আমরাও আইনের শাসনে বিশ্বাসী। বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি রাশেদ চৌধুরী আপনাদের দেশে এতো বছর ধরে পালিয়ে আছে। তাকে আপনারা ফিরিয়ে দিচ্ছেন না কেন?’

এরপর তিনি বলেন, এর আগে এ ধরনের প্রস্তাবে কোনো সাড়া না মিললেও এবার ব্যতিক্রম দেখা গেছে। এলিস ওয়েলস রাশেদ চৌধুরীর মামলার রায়ের কাগজপত্র পাঠাতে বলেছেন।

এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে আবদুল মোমেন প্রথম যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে আহ্বান জানিয়েছিলেন, বঙ্গবন্ধুর শততম জন্মবার্ষিকীর আগেই খুনি রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত চায় বাংলাদেশ।

উল্লেখ্য, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার দায়ে মত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রাশেদ চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন।

প্রসঙ্গত ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়ার পর ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ দিয়ে বিচার বন্ধ করা হয়। আত্মস্বীকৃত এই ১২ খুনিকে বিদেশে বাংলাদেশের বিভিন্ন মিশনে চাকরি দিয়ে পুনর্বাসন করা হয়।

১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় যাওয়ার পর ১২ নভেম্বর ইনডেমনিটি আইন বাতিল করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করার পথ সুগম করে। তারপর বিচারের আয়োজন করা হয়। ২০১০ সালের জানুয়ারিতে পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।

যেসব খুনির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে তারা হল, সাবেক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফারুক রহমান, মহিউদ্দিন আহমেদ (আর্টিলারি), শাহরিয়ার রশিদ খান এবং একেএম মহিউদ্দিন আহম্মেদ (ল্যান্সার) ও সাবেক মেজর বজলুল হুদা। ঢাকা ও ব্যাংককের মধ্যে বন্দি বিনিময় চুক্তি স্বাক্ষরের পর বজলুল হুদাকে থাইল্যান্ড থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়।

তবে বন্দি বিনিময় চুক্তি না থাকলেও সেনা সমর্থিত অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে বরখাস্তকৃত লেফটেন্যান্ট কর্নেল একেএম মহিউদ্দিন আহমেদকে যুক্তরাষ্ট্র ফিরিয়ে দেয়।

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ছয়জনের রায় কার্যকর হলেও রাশেদ চৌধুরীসহ বিদেশে পলাতক অন্যদের দণ্ড কার্যকর হয়নি।