ঢাকা ১১:০৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জালিয়াতি মামলা মুসা বিন শমসেরের বিরুদ্ধে

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ১০:২৬:৪২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০১৯
  • / 91

জালিয়াতি করে গাড়ি নিবন্ধনের অভিযোগে আলোচিত ব্যবসায়ী মুসা বিন শমসেরের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল বৃহস্পতিবার দুদকের সমন্বিত জেলা

কার্যালয়, ঢাকা-১-এর পরিচালক মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলী বাদী হয়ে গতকাল মামলাটি করেন। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। প্রণব কুমার সাংবাদিকদের বলেন, মামলায় মুসা বিন শমসেরের সঙ্গে আরও চারজনকে আসামি করা হয়েছে। তারা হলেন বিআরটিএ ভোলা জেলা সার্কেলের সহকারী পরিচালক আইয়ুব আনছারী (বর্তমানে ঝালকাঠিতে কর্মরত), গাড়ি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান অটো ডিফাইন ও ফিয়াজ এন্টারপ্রাইজের মালিক ওয়াহিদুর রহমান, মুসা বিন শমসেরের শ্যালক ফারুক-উজ-জামান এবং কার্টেন সুবিধায় গাড়ি আনা ব্রিটিশ পাসপোর্টধারী ফরিদ নাবির।

এছাড়া একই দিন ফারমার্স ব্যাংকের নিরীক্ষা কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতীসহ আট আসামির বিরুদ্ধেও মামলা করেছে দুদক। সংস্থার উপপরিচালক মো. সামছুল আলম মামলাটি করেন। গত ১৩ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দেয় দুদক। তাদের বিরুদ্ধে ৮৮ কোটি ১৬ লাখ ১৭ হাজার টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে। বর্তমানে সুদসহ ওই টাকার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১১৪ কোটি ৩৪ লাখ ৩০ হাজার।

মুসার বিরুদ্ধে মামলা : মুসা বিন শমসের ‘কারনেট ডি প্যাসেজ’ সুবিধায় এই গাড়ি এনেছিলেন। এই সুবিধায় আন্তর্জাতিক সনদ অনুযায়ী পর্যটকরা এক দেশ থেকে অন্য দেশে শুল্ক না দিয়েই গাড়ি নিয়ে ঢুকতে পারেন। নির্দিষ্ট একটি সময়ের (সাধারণত কয়েক মাস) জন্য এ সুবিধা পান পর্যটকরা। এ গাড়ি বিক্রি কিংবা হস্তান্তর করা যায় না।

গাড়িটি উদ্ধারের পর শুল্ক গোয়েন্দারা জানিয়েছিলেন, ভোলা বিআরটিএ’র কয়েকজন কর্মকর্তার যোগসাজশে ভুয়া কাগজ দিয়ে ওই গাড়ি নিবন্ধন এবং বেনামে অবৈধ আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে।

গাড়িটি জব্দের পর মুসাকে কাকরাইলে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কার্যালয়ে তলব করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। শুল্ক গোয়েন্দারা বলেছিলেন, মুসা বিন শমসের ১৭ লাখ টাকা শুল্ক পরিশোধ দেখিয়ে ভুয়া বিল অব এন্ট্রি প্রদর্শন করে গাড়িটি বেনামে রেজিস্ট্রেশন করেন। কিন্তু দুদকের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ওই গাড়িতে ২ কোটি ১৭ লাখ টাকার শুল্ক প্রযোজ্য। তখন ওই তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে মুসার বিরুদ্ধে মামলা করতে দুর্নীতি দমন কমিশনকে সুপারিশ করেছিল শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। দুই বছর পর গতকাল সেই মামলা হলো।

এই সুবিধায় আনা একটি রেঞ্জ রোভার জিপ গাড়ি ২০১৭ সালের ২১ মার্চ ঢাকার ধানমÐি মুসা বিন শমসেরের ছেলের শ্বশুরবাড়ি থেকে উদ্ধার করেন শুল্ক গোয়েন্দারা। গাড়িটি ভুয়া আমদানি দলিলাদি দিয়ে (ভোলা-ঘ-১১-০০-৩৫ হিসেবে) রেজিস্ট্রেশন নেওয়া হয়েছিল। গাড়িটি রেজিস্ট্রেশন করা হয় মুসা বিন শমসেরের শ্যালক ফারুক-উজ-জামানের নামে। কাগজপত্র যাচাই করে দেখা যায়, চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের বিল অব এন্ট্রি-১০৪৫৯১১, তারিখ ১৩/১২/২০১১-এ ১৩০% শুল্ক প্রদান করে ভোলা থেকে রেজিস্ট্রেশন করা হয়। এছাড়া রেজিস্ট্রেশনে গাড়িটির রং সাদা উল্লেখ থাকলেও উদ্ধার করা গাড়িটি কালো রঙের।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, মামলার আসামিরা ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে প্রতারণা ও জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে ফৌজদারি অপরাধ করেছেন।

জিয়াউর রহমানের আমলে জনশক্তি রপ্তানির ব্যবসা শুরু করেন মুসা। তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম প্রথমে ছিল শাহবাজ ইন্টারন্যাশনাল, পরে নাম হয় ড্যাটকো। মুসা বিন শমসেরের সম্পদ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা রয়েছে। বিলাসী জীবনযাপনের কারণে বিদেশি গণমাধ্যমে অনেক সময় তাকে বলা হয় ‘প্রিন্স অব বাংলাদেশ’। ১৯৯৭ সালে যুক্তরাজ্যে নির্বাচনে লেবার পার্টির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী টনি বেয়ারের নির্বাচনী প্রচারের জন্য ৫ মিলিয়ন ডলার অনুদান দেওয়ার প্রস্তাব দিয়ে আলোচনায় আসেন বাংলাদেশের এই ব্যবসায়ী।

এর আগে ২০১৭ সালে মুসার বিরুদ্ধে একাত্তরে পাকিস্তানি বাহিনীকে সহায়তা করার অভিযোগের অনুসন্ধান শুরু করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। এ ব্যাপারে তদন্ত সংস্থার প্রধান সমন্বয়ক আবদুল হান্নান খান বলেন, যেসব ডকুমেন্টস পেয়েছি, সেগুলো যাচাই-বাছাই চলছে। এখনো অনুসন্ধান পর্যায়ে রয়েছে। অনুসন্ধান বাদ দেওয়া যাবে না। তবে অনুসন্ধান কোন পর্যায়ে রয়েছে তা কাগজপত্র না দেখে বলা যাবে না বলে জানান এই প্রধান সমন্বয়ক।

অভিযোগ রয়েছে, একাত্তরের ২১ এপ্রিল পাকিস্তানি সৈন্যদের ফরিদপুরে ঢোকার ক্ষেত্রে মানচিত্র ও পথ নির্দেশনা দিয়ে নেপথ্যে সহযোগিতা করেন মুসা বিন শমসের। সাংবাদিক-কলামনিস্ট আবু সাঈদের লেখা বইয়েও মুসার একাত্তরের ভ‚মিকার কথা এসেছে। ট্রাইব্যুনালে আবুল কালাম আযাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকারের যুদ্ধাপরাধ মামলায় সাক্ষ্য দেওয়া ফরিদপুরের মুক্তিযোদ্ধা আবু ইউসুফ পাখীর ভাষ্য, ফরিদপুরে পাকিস্তানি সৈন্যরা ঢোকার পরদিন অর্থাৎ একাত্তরের ২২ এপ্রিল ফরিদপুর সার্কিট হাউজে পাকিস্তানি মেজর আকরাম কোরায়েশি ও মুসাকে অন্তরঙ্গ পরিবেশে দেখেছিলেন তিনি। তবে এই ব্যবসায়ীর দাবি, তিনি একাত্তরের ২২ এপ্রিল থেকে ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে বন্দি ছিলেন।

বাবুল চিশতীসহ ৮ আসামির বিরুদ্ধে মামলা : এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন বাবুল চিশতীর ভাই মাজেদুল হক ওরফে শামীম চিশতী, ব্যাংকটির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এ কে এম এম শামীম, শাবাবা অ্যাপারেলসের মালিক মো. আবদুল ওয়াদুদ ওরফে কামরুল, এডিএম ডাইং অ্যান্ড ওয়াশিংয়ের মালিক রাশেদ আলী, তনুজ করপোরেশনের মালিক মো. মেফতাহ ফেরদৌস, মোহাম্মদ আলী ট্রান্সপোর্টের মালিক মো. গোলাম সারোয়ার ও ক্যানাম প্রোডাক্টসের মালিক ইসমাইল হাওলাদার।

২০১৭ সাল থেকে ফারমার্স ব্যাংকে জালিয়াতির ঘটনা অনুসন্ধান করছে দুদক। দুদকের অনুসন্ধানে নথিপত্রের পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনও পর্যালোচনা করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, গ্রাহকের ঋণের ভাগ নিয়েছেন ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও মাহবুবুল হক চিশতী। এর মাধ্যমে দুজনের নৈতিক স্খলন ঘটেছে এবং তারা জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন।

২০১২ সালে রাজনৈতিক বিবেচনায় অনুমোদন পাওয়া ফারমার্স ব্যাংক যাত্রা শুরুর পরই অনিয়মে জড়িয়ে পড়ে। আস্থার সংকটে আমানতকারীদের অর্থ তোলার চাপ বাড়ে। পরিস্থিতির অবনতি হলে পদ ছাড়তে বাধ্য হন মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও মাহবুবুল হক চিশতী।

Tag :

শেয়ার করুন

জালিয়াতি মামলা মুসা বিন শমসেরের বিরুদ্ধে

আপডেট টাইম : ১০:২৬:৪২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০১৯

জালিয়াতি করে গাড়ি নিবন্ধনের অভিযোগে আলোচিত ব্যবসায়ী মুসা বিন শমসেরের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল বৃহস্পতিবার দুদকের সমন্বিত জেলা

কার্যালয়, ঢাকা-১-এর পরিচালক মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলী বাদী হয়ে গতকাল মামলাটি করেন। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। প্রণব কুমার সাংবাদিকদের বলেন, মামলায় মুসা বিন শমসেরের সঙ্গে আরও চারজনকে আসামি করা হয়েছে। তারা হলেন বিআরটিএ ভোলা জেলা সার্কেলের সহকারী পরিচালক আইয়ুব আনছারী (বর্তমানে ঝালকাঠিতে কর্মরত), গাড়ি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান অটো ডিফাইন ও ফিয়াজ এন্টারপ্রাইজের মালিক ওয়াহিদুর রহমান, মুসা বিন শমসেরের শ্যালক ফারুক-উজ-জামান এবং কার্টেন সুবিধায় গাড়ি আনা ব্রিটিশ পাসপোর্টধারী ফরিদ নাবির।

এছাড়া একই দিন ফারমার্স ব্যাংকের নিরীক্ষা কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতীসহ আট আসামির বিরুদ্ধেও মামলা করেছে দুদক। সংস্থার উপপরিচালক মো. সামছুল আলম মামলাটি করেন। গত ১৩ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দেয় দুদক। তাদের বিরুদ্ধে ৮৮ কোটি ১৬ লাখ ১৭ হাজার টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে। বর্তমানে সুদসহ ওই টাকার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১১৪ কোটি ৩৪ লাখ ৩০ হাজার।

মুসার বিরুদ্ধে মামলা : মুসা বিন শমসের ‘কারনেট ডি প্যাসেজ’ সুবিধায় এই গাড়ি এনেছিলেন। এই সুবিধায় আন্তর্জাতিক সনদ অনুযায়ী পর্যটকরা এক দেশ থেকে অন্য দেশে শুল্ক না দিয়েই গাড়ি নিয়ে ঢুকতে পারেন। নির্দিষ্ট একটি সময়ের (সাধারণত কয়েক মাস) জন্য এ সুবিধা পান পর্যটকরা। এ গাড়ি বিক্রি কিংবা হস্তান্তর করা যায় না।

গাড়িটি উদ্ধারের পর শুল্ক গোয়েন্দারা জানিয়েছিলেন, ভোলা বিআরটিএ’র কয়েকজন কর্মকর্তার যোগসাজশে ভুয়া কাগজ দিয়ে ওই গাড়ি নিবন্ধন এবং বেনামে অবৈধ আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে।

গাড়িটি জব্দের পর মুসাকে কাকরাইলে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কার্যালয়ে তলব করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। শুল্ক গোয়েন্দারা বলেছিলেন, মুসা বিন শমসের ১৭ লাখ টাকা শুল্ক পরিশোধ দেখিয়ে ভুয়া বিল অব এন্ট্রি প্রদর্শন করে গাড়িটি বেনামে রেজিস্ট্রেশন করেন। কিন্তু দুদকের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ওই গাড়িতে ২ কোটি ১৭ লাখ টাকার শুল্ক প্রযোজ্য। তখন ওই তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে মুসার বিরুদ্ধে মামলা করতে দুর্নীতি দমন কমিশনকে সুপারিশ করেছিল শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। দুই বছর পর গতকাল সেই মামলা হলো।

এই সুবিধায় আনা একটি রেঞ্জ রোভার জিপ গাড়ি ২০১৭ সালের ২১ মার্চ ঢাকার ধানমÐি মুসা বিন শমসেরের ছেলের শ্বশুরবাড়ি থেকে উদ্ধার করেন শুল্ক গোয়েন্দারা। গাড়িটি ভুয়া আমদানি দলিলাদি দিয়ে (ভোলা-ঘ-১১-০০-৩৫ হিসেবে) রেজিস্ট্রেশন নেওয়া হয়েছিল। গাড়িটি রেজিস্ট্রেশন করা হয় মুসা বিন শমসেরের শ্যালক ফারুক-উজ-জামানের নামে। কাগজপত্র যাচাই করে দেখা যায়, চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের বিল অব এন্ট্রি-১০৪৫৯১১, তারিখ ১৩/১২/২০১১-এ ১৩০% শুল্ক প্রদান করে ভোলা থেকে রেজিস্ট্রেশন করা হয়। এছাড়া রেজিস্ট্রেশনে গাড়িটির রং সাদা উল্লেখ থাকলেও উদ্ধার করা গাড়িটি কালো রঙের।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, মামলার আসামিরা ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে প্রতারণা ও জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে ফৌজদারি অপরাধ করেছেন।

জিয়াউর রহমানের আমলে জনশক্তি রপ্তানির ব্যবসা শুরু করেন মুসা। তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম প্রথমে ছিল শাহবাজ ইন্টারন্যাশনাল, পরে নাম হয় ড্যাটকো। মুসা বিন শমসেরের সম্পদ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা রয়েছে। বিলাসী জীবনযাপনের কারণে বিদেশি গণমাধ্যমে অনেক সময় তাকে বলা হয় ‘প্রিন্স অব বাংলাদেশ’। ১৯৯৭ সালে যুক্তরাজ্যে নির্বাচনে লেবার পার্টির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী টনি বেয়ারের নির্বাচনী প্রচারের জন্য ৫ মিলিয়ন ডলার অনুদান দেওয়ার প্রস্তাব দিয়ে আলোচনায় আসেন বাংলাদেশের এই ব্যবসায়ী।

এর আগে ২০১৭ সালে মুসার বিরুদ্ধে একাত্তরে পাকিস্তানি বাহিনীকে সহায়তা করার অভিযোগের অনুসন্ধান শুরু করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। এ ব্যাপারে তদন্ত সংস্থার প্রধান সমন্বয়ক আবদুল হান্নান খান বলেন, যেসব ডকুমেন্টস পেয়েছি, সেগুলো যাচাই-বাছাই চলছে। এখনো অনুসন্ধান পর্যায়ে রয়েছে। অনুসন্ধান বাদ দেওয়া যাবে না। তবে অনুসন্ধান কোন পর্যায়ে রয়েছে তা কাগজপত্র না দেখে বলা যাবে না বলে জানান এই প্রধান সমন্বয়ক।

অভিযোগ রয়েছে, একাত্তরের ২১ এপ্রিল পাকিস্তানি সৈন্যদের ফরিদপুরে ঢোকার ক্ষেত্রে মানচিত্র ও পথ নির্দেশনা দিয়ে নেপথ্যে সহযোগিতা করেন মুসা বিন শমসের। সাংবাদিক-কলামনিস্ট আবু সাঈদের লেখা বইয়েও মুসার একাত্তরের ভ‚মিকার কথা এসেছে। ট্রাইব্যুনালে আবুল কালাম আযাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকারের যুদ্ধাপরাধ মামলায় সাক্ষ্য দেওয়া ফরিদপুরের মুক্তিযোদ্ধা আবু ইউসুফ পাখীর ভাষ্য, ফরিদপুরে পাকিস্তানি সৈন্যরা ঢোকার পরদিন অর্থাৎ একাত্তরের ২২ এপ্রিল ফরিদপুর সার্কিট হাউজে পাকিস্তানি মেজর আকরাম কোরায়েশি ও মুসাকে অন্তরঙ্গ পরিবেশে দেখেছিলেন তিনি। তবে এই ব্যবসায়ীর দাবি, তিনি একাত্তরের ২২ এপ্রিল থেকে ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে বন্দি ছিলেন।

বাবুল চিশতীসহ ৮ আসামির বিরুদ্ধে মামলা : এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন বাবুল চিশতীর ভাই মাজেদুল হক ওরফে শামীম চিশতী, ব্যাংকটির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এ কে এম এম শামীম, শাবাবা অ্যাপারেলসের মালিক মো. আবদুল ওয়াদুদ ওরফে কামরুল, এডিএম ডাইং অ্যান্ড ওয়াশিংয়ের মালিক রাশেদ আলী, তনুজ করপোরেশনের মালিক মো. মেফতাহ ফেরদৌস, মোহাম্মদ আলী ট্রান্সপোর্টের মালিক মো. গোলাম সারোয়ার ও ক্যানাম প্রোডাক্টসের মালিক ইসমাইল হাওলাদার।

২০১৭ সাল থেকে ফারমার্স ব্যাংকে জালিয়াতির ঘটনা অনুসন্ধান করছে দুদক। দুদকের অনুসন্ধানে নথিপত্রের পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনও পর্যালোচনা করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, গ্রাহকের ঋণের ভাগ নিয়েছেন ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও মাহবুবুল হক চিশতী। এর মাধ্যমে দুজনের নৈতিক স্খলন ঘটেছে এবং তারা জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন।

২০১২ সালে রাজনৈতিক বিবেচনায় অনুমোদন পাওয়া ফারমার্স ব্যাংক যাত্রা শুরুর পরই অনিয়মে জড়িয়ে পড়ে। আস্থার সংকটে আমানতকারীদের অর্থ তোলার চাপ বাড়ে। পরিস্থিতির অবনতি হলে পদ ছাড়তে বাধ্য হন মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও মাহবুবুল হক চিশতী।