সংসদে না বুঝে ‘না’ ভোট দিলেন সরকারি দলের সদস্যরা
- আপডেট টাইম : ০১:২২:০২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯
- / 119
সংসদে সরকারদলীয় সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরীর উথ্যাপিত এক প্রস্তাব প্রত্যাহারের বিষয়ে কিছু না বুঝেই প্রথমে ‘না’ ভোট দেয়ার ঘটনা ঘটেছে।
বিষয়টি বুঝতে না পেরে প্রথমে ‘না’ ভোট দেন সরকারি দলের সংসদ সদস্যরা।
পরে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী প্রস্তাব প্রত্যাহারের বিষয়টি আবার পড়ে শোনালে সেসব সংসদ সদস্যরাই আবার ‘হ্যাঁ’ ভোট দেন।
বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদে এই ঘটনা ঘটে।
এদিন তামাকজাত দ্রব্যের ওপর প্রচলিত অ্যাডুভেলারাম (স্তরভিত্তিক মূল্যের শতকরা হার) পদ্ধতির পরিবর্তে সুনির্দিষ্ট করারোপ করার দাবি জানিয়ে বেসরকারি সিদ্ধান্ত প্রস্তাব এনেছিলেন সাবের হোসেন চৌধুরী। সংশোধনী দিয়ে তার এই প্রস্তাবে সমর্থন জানান আরও ৯ জন সাংসদ।
সাবের হোসেন চৌধুরী তার প্রস্তাবের পক্ষে বলেন, বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারজনিত রোগে প্রতিবছর এক লাখ ৬১ হাজার মানুষ অকাল মৃত্যুবরণ করে। প্রায় ১৫ লাখ প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়। প্রায় ৬১ হাজার শিশি পরোক্ষ ধূমপানের কারণে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়।
২০১৭–২০১৮ অর্থবছরে তামাক ব্যবহারের অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ ৩০ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা। যা একই সময়ে তামাকখাত থেকে অর্জিত রাজস্ব আয়ের চেয়ে বেশি।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে দেশে তামাকের যে কর–কাঠামো তা অত্যন্ত জটিল, পুরোনো ও অকার্যকর। বিশ্বের মাত্র ছয়টি দেশে এভাবে করারোপ করা হয়। অন্যদিকে ফিলিপাইন, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, অস্ট্রেলিয়াসহ বেশিরভাগ দেশে সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি চালু আছে। এটি করা হলে রাজস্ব আয় বাড়বে।
জবাবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, বর্তমান আইনে তামাকপণ্যে সুনির্দিষ্ট করারোপের সুযোগ নেই। চলমান বাজেটে স্তরভিত্তিক শুল্কারোপ করা হয়েছে।
রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে এবং গ্রাহকের ক্রয় ক্ষমতা বিবেচনায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে ক্রমান্বয়ে সুনির্দিষ্ট করারোপ পদ্ধতি চালু করার বিষয়টি পরীক্ষা নীরিক্ষা করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে হয়ত একদিন এটি হবে।
সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে সাধারণত সরকারি দলের সাংসদেরা তাদের সিদ্ধান্ত প্রস্তাব প্রত্যাহার করে নেন।
কিন্তু সাবের হোসেন চৌধুরী তার প্রস্তাব প্রত্যাহার করতে রাজি হননি। তখন নিয়ম অনুযায়ী তার প্রস্তাবটি প্রত্যাহারের জন্য কণ্ঠভোটে দেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।
সাবের হোসেন চৌধুরীর প্রস্তাবে বলা হয়, ‘সংসদের অভিমত এই যে, সকল প্রকার তামাকজাত দ্রব্যের ওপর প্রচলিত অ্যাডুভোলোরাম পদ্ধতির পরিবর্তে সুনির্দিষ্ট করারোপ করা হউক’।
স্পিকার ভোটে বলেন, সাবের হোসেন চৌধুরীর এই প্রস্তাবটি প্রত্যাহার করা হোক, যারা এর পক্ষে আছেন তারা হ্যাঁ বলুন। খুব কম সংখ্যক সদস্য হ্যাঁ বলেন।
স্পিকার বলেন, যারা এর বিপক্ষে আছেন তারা ‘না’ বলুন। বেশিরভাগ সদস্য ‘না’ বলেন।
অর্থাৎ বেশিরভাগ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরীর প্রস্তাবটির পক্ষে ভোট দিয়ে দেন।
এ সময় স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী হেসে ফেলেন। পরে তিনি বলেন, তিনি আবার সব সদস্যের মনোযোগ আকর্ষণ করেন।
তিনি প্রস্তাবটি আবার পড়ে শোনান এবং দ্বিতীয় দফা ভোট দেন। দ্বিতীয় দফায় ‘হ্যাঁ’ ভোট জয়ী হয়।
আর এর মধ্য দিয়ে সরকারদলীয় সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরীর সেই বেসরকারি সিদ্ধান্ত প্রস্তাব পাস হতে হতে হলো না।