পশু জবাই ও মাংস কাটতে গিয়ে অনেকে আহত
- আপডেট টাইম : ০৬:২৮:৪৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ জুন ২০২৩
- / 18
বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা ও ত্যাগের মহিমায় দেশব্যাপী উদযাপিত হচ্ছে মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহৎতম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আযহা। মহান আল্লাহ সন্তষ্টির আশায় পশু কোরবানি করছেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। ত্যাগের মাধ্যমে আনন্দ এই বিশ্বাসে মুসলমানেরা ফজরের নামাজের পর ঈদগাহে গিয়ে দুই রাকাত ঈদুল আযহার নামাজ আদায় করেন। এরপর আর্থিক সামর্থ্য অনুযায়ী কেনা গরু, ছাগল, ভেড়া, মহিষ ও উট আল্লাহর নামে কোরবানি করছেন।
কিন্তু কোরবানির পশু জবাই দিতে গিয়ে ছুরি ফসকে ও মাংস প্রস্তুত করতে গিয়ে অনেকে আহত হয়েছেন। কেউ কেউ তো নিজ হাত ও পায়ের রগও কেটে ফেলেছেন।
বৃহস্পতিবার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (নিটোর) ঘুরে এমন অসংখ্য রোগী দেখা গেছে।
তাদের মধ্যে একজন মোহাম্মদ রহমত। সাভারের বলিয়ারপুর থেকে পঙ্গু হাসপাতালে এসেছেন। গরুর হাড় কোপাতে গিয়ে নিজের বাম হাতে কোপ বসিয়েছেন। ফলে বাম হাতের রগ কেটে গেছে। দ্রুত অস্ত্রোপচার করা না হলে হাতে কেটে ফেলার আশঙ্কা রয়েছে। এ কারণে রহমতকে দ্রুত অপারেশন থিয়েটারে পাঠায় নিটোরের জরুরি বিভাগ।
রহমতের মতো অনেকে গরু জবাই দিতে গিয়ে গরুর লাথি ও গুতা খেয়ে হাত ও পায়ের হাড় ভেঙে কাতরাচ্ছেন। কোরবানির গরু জবাই দিতে গিয়ে ছুরি ফসকে ও মাংস প্রস্তুত করতে গিয়েও অনেকে হাত ও পায়ের রগ কেটে ফেলেছেন।
মামুন নামে এক তরুণ কোরবানির গরু জবাই করার সময় সহায়তা করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু হাত ফসকে রগ কেটে গেছে তার। রাজধানীর মিরপুর এলাকার এই বাসিন্দা পঙ্গু হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে কাতরাচ্ছিলেন। ডান হাতের ৩০ শতাংশ কেটে দুই ভাগ হয়ে গেছে।
কলাবাগান এলাকা থেকে চিকিৎসার জন্য পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রাসেলের বাম হাতের তিনটা আঙুল কেটে পড়ে গেছে।
পঙ্গু হাসাপাতলের এক্সরে রুমের সামনে দেখা যায়, মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে পঙ্গুতে যাওয়া চাঁদ মিয়াকে ট্রলিতে ঠেলে তাকে এক্স-রে রুমে নেয়া হচ্ছে। এক্স-রে রিপোর্টে দেখা গেছে কোমরের হাড় ভেঙে গেছে।
চাঁদ মিয়ার বড় ভাই মিন্টু মিয়া বলেন, গরু জবাই দেয়ার সময় রশি দিয়ে ভালোভাবে বাঁধা হয়নি। যখন হুজুর জবাই শুরু করেন, এমন সময় গরু পা দিয়ে লাথি মেরে ফেলে দিয়েছে। এতে পড়ে গিয়ে হাড় ভেঙে গেছে চাঁদের।
শেওড়াপাড়া থেকে হাসপাতালে আসা সৈয়দ শফিউল হক গরুর মাংস প্রস্তত করতে গিয়ে ডান হাত জখমপ্রাপ্ত হয়েছেন। মাংস প্রস্তুত করতে গিয়ে হাড়ে কোপ মারার সময় ছুরি ফসকে গিয়ে জখম হন তিনি।
আশুলিয়া থেকে আসা রোগী মোক্তার হোসেন বলেন, গরু জবাই দেয়ার সময় হুজুরকে সহায়তা করতে যান তিনি। এ সময় গরু নড়ে উঠলে গরুর গলায় ছুরি না চালিয়ে মুক্তারের হাতে চালিয়ে দেন হুজুর। এতে মোক্তারের বাম হাতের রগ কেটে গেছে। এখন ওই হাত রাখা নিয়ে শঙ্কা দেখা গেছে।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই পঙ্গু হাসপাতালে এমন শত শত রোগী চিকিৎসা নিতে আসছেন। হঠাৎ রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন নিটোরের চিকিৎসক ও কর্মীরা।
নিউজ লাইট ৭১