ঢাকা ১২:২৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৫ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফাউন্ডেশনকে অধিদফতর করলে প্রতিবন্ধীদের কোনও লাভ নেই, লাভ কর্মকর্তাদের: প্রধানমন্ত্রী

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ০৪:৪৪:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৬ ডিসেম্বর ২০১৯
  • / 104

নিউজ লাইট ৭১ ডেস্ক: ২৮তম আন্তর্জাতিক ও ২১তম জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস উদযাপন এবং জাতীয় প্রতিবন্ধী কমপ্লেক্স ‘সুবর্ণ ভবন’র উদ্বোধন ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর মিরপুরে জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন চত্বরে এক অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী। প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেন, ‘প্রতিবন্ধী ফাউন্ডেশনকে অধিদফতর করলে সরকারি অফিসারদের লাভ হবে, কিন্তু প্রতিবন্ধীদের কতটুকু লাভ হবে আমি জানি না। কারণ তাদের (কর্মকর্তাদের) হাতে জিম্মি হয়ে যেতে হবে। ফাউন্ডেশনকে অধিদফতর করা ঠিক না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা প্রতিবছরই অত্যন্ত মর্যাদার সঙ্গে প্রতিবন্ধী দিবস পালন করি। কেউ পেছনে পড়ে থাকবে না—এই লক্ষ্য নিয়ে আমরা প্রতিবন্ধীদের নিয়ে কাজ করছি।’ সরকার নানা উদ্যোগ নিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রতিবন্ধিতা নানা কারণে হয়। যে কেউ এরকম হতে পারেন। অটিজমের কারণ এখনও জানা যায়নি। তবে তাদের প্রতি আমাদের মানসিকতা বদলাতে হবে। কানাকে কানা বলিও না, খোঁড়াকে খোঁড়া বলিও না—ছোটবেলা থেকে আমরা এটা শুনে আসছি। ছোট ছোট বাচ্চাদের এই শিক্ষা দিতে হবে।’

প্রতিবন্ধীদের সুরক্ষায় সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন করেছি। এটা থাকলে পরে সুবিধা হলো অনেকে অনুদান দেয়, অবদান রাখে। আন্তর্জাতিকভাবে নানা ধরনের সাহায্য পাওয়া যায়। চিকিৎসা, ট্রেনিং এগুলো পাওয়া যায়। ট্রেনিংগুলো আমরা দিয়ে দিতে পারলে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে আর পরনির্ভরশীল হয়ে থাকতে হয় না। সে কাজ করে খেতে পারে। অর্থ-সম্পদ পাওয়াটাও সহজ হয়।’

তিনি বলেন, ‘সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়কে সরকারের পতিত জমি খুঁজে বের করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এসব জমির তালিকা করতে পারলে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে প্রতিবন্ধীদের খেলাধুলা, প্রশিক্ষণ, কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে অধিদফতর প্রতিষ্ঠার দাবি ছিল, এটা করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ফাউন্ডেশনকে অধিদফতর করে কোনও লাভ নাই। কারণ এতে প্রতিবন্ধীদের কোনও সুবিধা হবে না, লাভ হবে কিছু সরকারি কর্মকর্তার। তারা আরেকটু প্রমোশন পাবে, একটু পদায়নের জায়গা পাবে। কাজেই ফাউন্ডেশন যদি থাকে, তাহলে একটু আর্থিক সহায়তা আসবে, ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা হবে, আমরা মাস্টার ট্রেইনার তৈরি করতে পারবো। মানুষ সাহায্যে এগিয়ে আসতে পারবে। সব বেসরকারি ব্যাংককে বলা আছে, তারা সমাজকল্যাণের কাজে টাকা ব্যয় করে। এসব খাত থেকেও প্রতিবন্ধীদের জন্য টাকা আসবে। কাজেই ফাউন্ডেশনকে অধিদফতর করলে সরকারি অফিসারদের লাভ হবে, কিন্তু প্রতিবন্ধীদের কতটুকু লাভ হবে, আমি জানি না। কারণ তাদের হাতে জিম্মি হয়ে যেতে হবে। ফাউন্ডেশনকে অধিদফতর করা ঠিক না।’

জাতীয় প্রতিবন্ধী কমপ্লেক্স ‘সুবর্ণ ভবনে’ শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, কর্মসংস্থান, বিনোদন এরকম বিভিন্ন কাজের সুযোগ থাকবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সংসদের পাশে প্রতিবন্ধী খেলোয়াড়দের প্র্যাকটিসের একটা জায়গা করে দেওয়া হচ্ছে। সাভারে একটা ব্যবস্থা করা হচ্ছে। প্রতিবন্ধীরাই বেশি ভালো করছে। গত বছর বিভিন্ন খেলাধুলায় তারা ৩৩টি স্বর্ণ এনেছে।’

প্রধানমন্ত্রী দেশের সব প্রতিবন্ধী ও তাদের পরিবারসহ সবাইকে প্রতিবন্ধী দিবসের শুভেচ্ছা জানান।

Tag :

শেয়ার করুন

ফাউন্ডেশনকে অধিদফতর করলে প্রতিবন্ধীদের কোনও লাভ নেই, লাভ কর্মকর্তাদের: প্রধানমন্ত্রী

আপডেট টাইম : ০৪:৪৪:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৬ ডিসেম্বর ২০১৯

নিউজ লাইট ৭১ ডেস্ক: ২৮তম আন্তর্জাতিক ও ২১তম জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস উদযাপন এবং জাতীয় প্রতিবন্ধী কমপ্লেক্স ‘সুবর্ণ ভবন’র উদ্বোধন ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর মিরপুরে জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন চত্বরে এক অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী। প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেন, ‘প্রতিবন্ধী ফাউন্ডেশনকে অধিদফতর করলে সরকারি অফিসারদের লাভ হবে, কিন্তু প্রতিবন্ধীদের কতটুকু লাভ হবে আমি জানি না। কারণ তাদের (কর্মকর্তাদের) হাতে জিম্মি হয়ে যেতে হবে। ফাউন্ডেশনকে অধিদফতর করা ঠিক না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা প্রতিবছরই অত্যন্ত মর্যাদার সঙ্গে প্রতিবন্ধী দিবস পালন করি। কেউ পেছনে পড়ে থাকবে না—এই লক্ষ্য নিয়ে আমরা প্রতিবন্ধীদের নিয়ে কাজ করছি।’ সরকার নানা উদ্যোগ নিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রতিবন্ধিতা নানা কারণে হয়। যে কেউ এরকম হতে পারেন। অটিজমের কারণ এখনও জানা যায়নি। তবে তাদের প্রতি আমাদের মানসিকতা বদলাতে হবে। কানাকে কানা বলিও না, খোঁড়াকে খোঁড়া বলিও না—ছোটবেলা থেকে আমরা এটা শুনে আসছি। ছোট ছোট বাচ্চাদের এই শিক্ষা দিতে হবে।’

প্রতিবন্ধীদের সুরক্ষায় সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন করেছি। এটা থাকলে পরে সুবিধা হলো অনেকে অনুদান দেয়, অবদান রাখে। আন্তর্জাতিকভাবে নানা ধরনের সাহায্য পাওয়া যায়। চিকিৎসা, ট্রেনিং এগুলো পাওয়া যায়। ট্রেনিংগুলো আমরা দিয়ে দিতে পারলে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে আর পরনির্ভরশীল হয়ে থাকতে হয় না। সে কাজ করে খেতে পারে। অর্থ-সম্পদ পাওয়াটাও সহজ হয়।’

তিনি বলেন, ‘সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়কে সরকারের পতিত জমি খুঁজে বের করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এসব জমির তালিকা করতে পারলে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে প্রতিবন্ধীদের খেলাধুলা, প্রশিক্ষণ, কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে অধিদফতর প্রতিষ্ঠার দাবি ছিল, এটা করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ফাউন্ডেশনকে অধিদফতর করে কোনও লাভ নাই। কারণ এতে প্রতিবন্ধীদের কোনও সুবিধা হবে না, লাভ হবে কিছু সরকারি কর্মকর্তার। তারা আরেকটু প্রমোশন পাবে, একটু পদায়নের জায়গা পাবে। কাজেই ফাউন্ডেশন যদি থাকে, তাহলে একটু আর্থিক সহায়তা আসবে, ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা হবে, আমরা মাস্টার ট্রেইনার তৈরি করতে পারবো। মানুষ সাহায্যে এগিয়ে আসতে পারবে। সব বেসরকারি ব্যাংককে বলা আছে, তারা সমাজকল্যাণের কাজে টাকা ব্যয় করে। এসব খাত থেকেও প্রতিবন্ধীদের জন্য টাকা আসবে। কাজেই ফাউন্ডেশনকে অধিদফতর করলে সরকারি অফিসারদের লাভ হবে, কিন্তু প্রতিবন্ধীদের কতটুকু লাভ হবে, আমি জানি না। কারণ তাদের হাতে জিম্মি হয়ে যেতে হবে। ফাউন্ডেশনকে অধিদফতর করা ঠিক না।’

জাতীয় প্রতিবন্ধী কমপ্লেক্স ‘সুবর্ণ ভবনে’ শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, কর্মসংস্থান, বিনোদন এরকম বিভিন্ন কাজের সুযোগ থাকবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সংসদের পাশে প্রতিবন্ধী খেলোয়াড়দের প্র্যাকটিসের একটা জায়গা করে দেওয়া হচ্ছে। সাভারে একটা ব্যবস্থা করা হচ্ছে। প্রতিবন্ধীরাই বেশি ভালো করছে। গত বছর বিভিন্ন খেলাধুলায় তারা ৩৩টি স্বর্ণ এনেছে।’

প্রধানমন্ত্রী দেশের সব প্রতিবন্ধী ও তাদের পরিবারসহ সবাইকে প্রতিবন্ধী দিবসের শুভেচ্ছা জানান।