ঢাকা ১০:৩৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফিরুক ফুটবলের সোনালি অতীত

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ০৫:২১:৩৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০
  • / 95

৭১: কায়সার হামিদ, মোনায়েম মুন্না, আফজাল, আরিফ খান জয়দের মতো কিছু নতুন প্রজন্মের সুপারস্টার বেরিয়ে আসুক। দর্শক শুধু তাদের খেলা দেখার জন্য স্টেডিয়াম পাড়ায় আবার ভিড় জমাবে। ফুটবলে একজন সুপারস্টার আসবে, যে যুগের পরিবর্তন করে দেবে।

যে একাই নিজের দেশকে পরিচয় করিয়ে দেবে বিশ্বমঞ্চে। বিশ্বকাপের আসরে আমার অস্তিত্ব, আমার অহঙ্কার, লাল-সবুজের পতাকা উড়ানোর স্বপ্ন নিয়ে বিশ্ববাসীকে পরিচয় করিয়ে দিতে পারব নতুন করে।

গত এক যুগ ধরে লাল-সবুজের এই দেশে ফুটবল যেন ঘুমিয়ে গেছে। খুব ইচ্ছে করে লিখি, বেঁচে থাকার গল্প ও জনমানসের মনে জেগে ওঠা প্রজন্ম, ফুটবল যাদের চেতনায় ও অস্তিত্বে।

একবারও কি ইচ্ছে জেগেছে আমাদের মনে— ইশ! আমাদের দেশ যদি বিশ্বকাপ খেলত? কখনো কি প্রশ্ন সৃষ্টি করেছে মনে- আমার দেশটি নেই কেন বিশ্ব আসরের এই মঞ্চে? জেগেছে ঠিকই।

আবার হয়তো হতাশা এসে থামিয়ে দিয়েছে মনের সব ঝড়। কারণ এই দেশে যেন নেই ঝিমিয়ে পড়া অদম্য ফুটবলকে জাগিয়ে তোলা ও বাঁচিয়ে রাখার স্বপ্ন। এমন কেউ কি নেই যে দেবদূত হয়ে ভালোবাসার খেলাকে যত্ন করে দায়িত্ব নিয়ে পৌঁছে দেবে বিশ্ব দরবারে?

ফুটবলে বাংলাদেশের হাতেখড়ির গল্প দিয়ে এর উত্তর খোঁজা শুরু করি। স্বাধীন বাংলা ফুটবল টিম দিয়ে প্রথম শুরু হয়েছিল বাংলাদেশের ফুটবলের অগ্রযাত্রা। জাকারিয়া পিন্টুর নেতৃত্বে কাজী সালাহউদ্দিন, অমলেষ সেনরা মাঠে ঝাঁপিয়ে পড়েন মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা করার জন্য।

প্রথম ম্যাচে ২-২ ড্রয়ে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দেয় দলটি। এরপর ১৬টি প্রীতি ম্যাচ খেলে মুক্তিযোদ্ধা ফান্ডে পাঁচ লাখ টাকা জমা করে স্বাধীন বাংলা ফুটবল টিম। সেই থেকে শুরু। এরপর বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল গঠিত হয়েছিল ১৯৭২ সালে। তবে তখনো আন অফিসিয়ালি। এরপর ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেল এএফসি অনুমোদন লাভ করে ফিফার।

এরপর ছিলো কেবল উত্থান। তখন ইরান, উত্তর কোরিয়া, চীন, সিরিয়ার মতো দলের সঙ্গে টক্কর দিতো বাংলাদেশ ফুটবল। এছাড়াও তখন আবাহনী-মোহামেডানের দ্বৈরথের গল্প কে না জানে।

শুধু এই ঢাকা ডার্বি দেখার জন্য পাড়ি দিত শত কিলোমিটার। অনলাইনে সেই সাদাকালো প্রিন্টের দর্শকভরা মাঠের ছবি নতুন প্রজন্ম দেখলে অবাক হওয়ারই কথা। তবে এরপর হুট করে ধীরে ধীরে দর্শক হারিয়ে যাচ্ছিল মাঠ থেকে।

তবে নতুন জাগরণ হয়ে আসে ২০০৩ সালে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে গোল্ডকাপ জয়। সেই বছর মালদ্বীপকে পরাজিত করে প্রথমবারের মতো সাফ চ্যাম্পিয়ন হয়ে বাংলাদেশ। তবে এরপর আবার মাঠের অসহায়ত্ব বাড়ে। দর্শক আর ফুটবল ঘুমিয়ে যায়। হারিয়ে যায় গন্তব্যহীন পথে। একের পর এক ব্যর্থতা আর নানা দুর্নীতির কবলে পড়ে হারিয়ে যেতে থাকে ফুটবল। শুরু হয় ক্রিকেটের জয়গান।

আর এখন ক্রিকেটের জয়োৎসবের ছায়ায় পড়ে ফুটবল লুকিয়ে গেছে লজ্জার চাদরে। এর পেছনে অনেক ব্যর্থতা রয়েছে। বাফুফের একের পর এক ভুল পদক্ষেপ রয়েছে। যা ফুটবলকে ভঙ্গুর করে ফেলছে প্রতিদিন। এর মাঝে হয়তো কিছু সফলতা আসে। তবে সেগুলো ফুটবলের উন্নতির পরিকল্পনা প্রসূত বলে মনে হয় না।

২০১৫ সালের সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়ন, ২০১৭ সালে সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ মহিলার প্রথম আসরেই চ্যাম্পিয়ন হয়েও যত্ন আর পরিচর্যার অভাবে হারিয়ে যাচ্ছে ফুটবল। তবুও আশা দেখিয়েছে বাংলাদেশ।

২০১৯ সালের ১২ জুন বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে শক্তিশালী কাতারের বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয়। ১৫ অক্টোবর ২০১৯ সালে সল্টলেকে ভারতের বিপক্ষে আধিপত্য বিস্তার করে ড্র। এসবে আশা জোগায় ফুটবলাররা। তবে নীতি নির্ধারকদের খপ্পরে ফুরিয়ে যাচ্ছে আশা গুলোও।

দিনের পর দিন প্রিয় ফুটবলের ব্যর্থতার দায়ভার ফুটবলের নীতিনির্ধারক বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন— বাফুফের। এক যুগের বেশি সময় ধরে ফেডারেশনে রাজত্ব করলেও ফুটবল ও ফুটবলারদের জন্য কিছুই করতে পারেননি ফেডারেশনটি।

দুর্নীতি, ক্যাসিনো, সিন্ডিকেটে পদদলিত হয়ে বরং ফুটবলের উন্নয়ন হারিয়ে যাচ্ছে। যখন কিশোরী ফুটবলারদের লোকাল বাসে বাড়ি পাঠানো হয়, কোমলমতি কিশোরী ফুটবলাররা পথে লাঞ্ছনার শিকার হয়, তখন মনে হয় দায়িত্ব অবহেলার কোন শিখরে পৌঁছেছে বাফুফে। যখন খবরের কাগজে দেখি অনূর্ধ্ব-১৬ সাফ চ্যাম্পিয়ন করা অধিনায়ক গোলকিপার অভাবের টানাপড়েনে রাজমিস্ত্রীর কাজ করে, তখন হতবাক হই।

পেশাদার লিগ চলাকালীন জাতীয় স্টেডিয়ামে ক্যামেরায় ধরা পড়ে মিষ্টি কুমড়ার চাষ। তখন আসলে অকাল কুষ্মাণ্ড বাফুফেকে তিরস্কার জানাতে কার না ইচ্ছে জাগে! তবে পরিবর্তনের আশায় আমরা তাকিয়ে আছি বাফুফের সামনের নির্বাচনের দিকে।

জনসাধারণ থেকে শুরু করে তরুণ প্রজন্ম ফেডারেশনের গত এক যুগের ব্যর্থতায় ক্ষুব্ধ। তারা পরিবর্তন চায়, ফুটবলের উন্নয়ন চায়, দুর্নীতিমুক্ত বাফুফে চায়। আগামী ৩ অক্টোবর নির্বাচন। ১৩৯ কাউন্সিলরের ভোটে নির্বাচিত হবেন আগামী দিনের ফুটবলের অভিভাবক।

সকলের প্রত্যাশা— এই ঘুণে ধরা চলমান মরীচিকাময় ফুটবল থেকে উত্তরণ। কিন্তু কে হবেন সেই সঠিক মানুষ? আসবেন কী সত্যিই? নাকি ঘুরে-ফিরে যারা ফুটবলকে নিজেদের আখের গোছানোর ব্যবসা বানিয়ে বসে আছেন, তারাই আবার? উত্তর সময় বলবে। তবে জনগণ চায় কেউ একজন ত্রাতা হয়ে আসুক, ফিনিক্স পাখির মতো উড়ে আসুক বাংলার ফুটবল উন্নয়নে।

এই ঘুমন্ত ফুটবলকে জাগিয়ে দিতে। দেশের ফুটবলে জাগরণ এনে আমাদের মধ্যে প্রশ্নের উদ্রেক ঘটাক, আমরা কেন বিশ্বকাপ খেলব না? যেখানে বরফের রাজ্যে ফুটবলের রূপকথা রচিত হয়েছে। বলছি আইসল্যান্ডের কথা। ছোট একটি দেশ, যার জনসংখ্যা আমাদের একটা উপজেলার সমানও না, মাত্র তিন লাখ ৩৪ হাজার ২৫২ জন।

আয়তন প্রায় ৪০ হাজার বর্গকিলোমিটার, যা বাংলাদেশের তুলনায় এক-তৃতীয়াংশ। যদি ওরা পারে আমরা কেন পারব না? যদি উত্তর আফ্রিকার ছোট একটি দেশ তিউনিসিয়া বিশ্বকাপ খেলে দেখাতে পারে, আমরা কেন পিছিয়ে থাকবো?

Tag :

শেয়ার করুন

ফিরুক ফুটবলের সোনালি অতীত

আপডেট টাইম : ০৫:২১:৩৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০

৭১: কায়সার হামিদ, মোনায়েম মুন্না, আফজাল, আরিফ খান জয়দের মতো কিছু নতুন প্রজন্মের সুপারস্টার বেরিয়ে আসুক। দর্শক শুধু তাদের খেলা দেখার জন্য স্টেডিয়াম পাড়ায় আবার ভিড় জমাবে। ফুটবলে একজন সুপারস্টার আসবে, যে যুগের পরিবর্তন করে দেবে।

যে একাই নিজের দেশকে পরিচয় করিয়ে দেবে বিশ্বমঞ্চে। বিশ্বকাপের আসরে আমার অস্তিত্ব, আমার অহঙ্কার, লাল-সবুজের পতাকা উড়ানোর স্বপ্ন নিয়ে বিশ্ববাসীকে পরিচয় করিয়ে দিতে পারব নতুন করে।

গত এক যুগ ধরে লাল-সবুজের এই দেশে ফুটবল যেন ঘুমিয়ে গেছে। খুব ইচ্ছে করে লিখি, বেঁচে থাকার গল্প ও জনমানসের মনে জেগে ওঠা প্রজন্ম, ফুটবল যাদের চেতনায় ও অস্তিত্বে।

একবারও কি ইচ্ছে জেগেছে আমাদের মনে— ইশ! আমাদের দেশ যদি বিশ্বকাপ খেলত? কখনো কি প্রশ্ন সৃষ্টি করেছে মনে- আমার দেশটি নেই কেন বিশ্ব আসরের এই মঞ্চে? জেগেছে ঠিকই।

আবার হয়তো হতাশা এসে থামিয়ে দিয়েছে মনের সব ঝড়। কারণ এই দেশে যেন নেই ঝিমিয়ে পড়া অদম্য ফুটবলকে জাগিয়ে তোলা ও বাঁচিয়ে রাখার স্বপ্ন। এমন কেউ কি নেই যে দেবদূত হয়ে ভালোবাসার খেলাকে যত্ন করে দায়িত্ব নিয়ে পৌঁছে দেবে বিশ্ব দরবারে?

ফুটবলে বাংলাদেশের হাতেখড়ির গল্প দিয়ে এর উত্তর খোঁজা শুরু করি। স্বাধীন বাংলা ফুটবল টিম দিয়ে প্রথম শুরু হয়েছিল বাংলাদেশের ফুটবলের অগ্রযাত্রা। জাকারিয়া পিন্টুর নেতৃত্বে কাজী সালাহউদ্দিন, অমলেষ সেনরা মাঠে ঝাঁপিয়ে পড়েন মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা করার জন্য।

প্রথম ম্যাচে ২-২ ড্রয়ে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দেয় দলটি। এরপর ১৬টি প্রীতি ম্যাচ খেলে মুক্তিযোদ্ধা ফান্ডে পাঁচ লাখ টাকা জমা করে স্বাধীন বাংলা ফুটবল টিম। সেই থেকে শুরু। এরপর বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল গঠিত হয়েছিল ১৯৭২ সালে। তবে তখনো আন অফিসিয়ালি। এরপর ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেল এএফসি অনুমোদন লাভ করে ফিফার।

এরপর ছিলো কেবল উত্থান। তখন ইরান, উত্তর কোরিয়া, চীন, সিরিয়ার মতো দলের সঙ্গে টক্কর দিতো বাংলাদেশ ফুটবল। এছাড়াও তখন আবাহনী-মোহামেডানের দ্বৈরথের গল্প কে না জানে।

শুধু এই ঢাকা ডার্বি দেখার জন্য পাড়ি দিত শত কিলোমিটার। অনলাইনে সেই সাদাকালো প্রিন্টের দর্শকভরা মাঠের ছবি নতুন প্রজন্ম দেখলে অবাক হওয়ারই কথা। তবে এরপর হুট করে ধীরে ধীরে দর্শক হারিয়ে যাচ্ছিল মাঠ থেকে।

তবে নতুন জাগরণ হয়ে আসে ২০০৩ সালে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে গোল্ডকাপ জয়। সেই বছর মালদ্বীপকে পরাজিত করে প্রথমবারের মতো সাফ চ্যাম্পিয়ন হয়ে বাংলাদেশ। তবে এরপর আবার মাঠের অসহায়ত্ব বাড়ে। দর্শক আর ফুটবল ঘুমিয়ে যায়। হারিয়ে যায় গন্তব্যহীন পথে। একের পর এক ব্যর্থতা আর নানা দুর্নীতির কবলে পড়ে হারিয়ে যেতে থাকে ফুটবল। শুরু হয় ক্রিকেটের জয়গান।

আর এখন ক্রিকেটের জয়োৎসবের ছায়ায় পড়ে ফুটবল লুকিয়ে গেছে লজ্জার চাদরে। এর পেছনে অনেক ব্যর্থতা রয়েছে। বাফুফের একের পর এক ভুল পদক্ষেপ রয়েছে। যা ফুটবলকে ভঙ্গুর করে ফেলছে প্রতিদিন। এর মাঝে হয়তো কিছু সফলতা আসে। তবে সেগুলো ফুটবলের উন্নতির পরিকল্পনা প্রসূত বলে মনে হয় না।

২০১৫ সালের সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়ন, ২০১৭ সালে সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ মহিলার প্রথম আসরেই চ্যাম্পিয়ন হয়েও যত্ন আর পরিচর্যার অভাবে হারিয়ে যাচ্ছে ফুটবল। তবুও আশা দেখিয়েছে বাংলাদেশ।

২০১৯ সালের ১২ জুন বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে শক্তিশালী কাতারের বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয়। ১৫ অক্টোবর ২০১৯ সালে সল্টলেকে ভারতের বিপক্ষে আধিপত্য বিস্তার করে ড্র। এসবে আশা জোগায় ফুটবলাররা। তবে নীতি নির্ধারকদের খপ্পরে ফুরিয়ে যাচ্ছে আশা গুলোও।

দিনের পর দিন প্রিয় ফুটবলের ব্যর্থতার দায়ভার ফুটবলের নীতিনির্ধারক বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন— বাফুফের। এক যুগের বেশি সময় ধরে ফেডারেশনে রাজত্ব করলেও ফুটবল ও ফুটবলারদের জন্য কিছুই করতে পারেননি ফেডারেশনটি।

দুর্নীতি, ক্যাসিনো, সিন্ডিকেটে পদদলিত হয়ে বরং ফুটবলের উন্নয়ন হারিয়ে যাচ্ছে। যখন কিশোরী ফুটবলারদের লোকাল বাসে বাড়ি পাঠানো হয়, কোমলমতি কিশোরী ফুটবলাররা পথে লাঞ্ছনার শিকার হয়, তখন মনে হয় দায়িত্ব অবহেলার কোন শিখরে পৌঁছেছে বাফুফে। যখন খবরের কাগজে দেখি অনূর্ধ্ব-১৬ সাফ চ্যাম্পিয়ন করা অধিনায়ক গোলকিপার অভাবের টানাপড়েনে রাজমিস্ত্রীর কাজ করে, তখন হতবাক হই।

পেশাদার লিগ চলাকালীন জাতীয় স্টেডিয়ামে ক্যামেরায় ধরা পড়ে মিষ্টি কুমড়ার চাষ। তখন আসলে অকাল কুষ্মাণ্ড বাফুফেকে তিরস্কার জানাতে কার না ইচ্ছে জাগে! তবে পরিবর্তনের আশায় আমরা তাকিয়ে আছি বাফুফের সামনের নির্বাচনের দিকে।

জনসাধারণ থেকে শুরু করে তরুণ প্রজন্ম ফেডারেশনের গত এক যুগের ব্যর্থতায় ক্ষুব্ধ। তারা পরিবর্তন চায়, ফুটবলের উন্নয়ন চায়, দুর্নীতিমুক্ত বাফুফে চায়। আগামী ৩ অক্টোবর নির্বাচন। ১৩৯ কাউন্সিলরের ভোটে নির্বাচিত হবেন আগামী দিনের ফুটবলের অভিভাবক।

সকলের প্রত্যাশা— এই ঘুণে ধরা চলমান মরীচিকাময় ফুটবল থেকে উত্তরণ। কিন্তু কে হবেন সেই সঠিক মানুষ? আসবেন কী সত্যিই? নাকি ঘুরে-ফিরে যারা ফুটবলকে নিজেদের আখের গোছানোর ব্যবসা বানিয়ে বসে আছেন, তারাই আবার? উত্তর সময় বলবে। তবে জনগণ চায় কেউ একজন ত্রাতা হয়ে আসুক, ফিনিক্স পাখির মতো উড়ে আসুক বাংলার ফুটবল উন্নয়নে।

এই ঘুমন্ত ফুটবলকে জাগিয়ে দিতে। দেশের ফুটবলে জাগরণ এনে আমাদের মধ্যে প্রশ্নের উদ্রেক ঘটাক, আমরা কেন বিশ্বকাপ খেলব না? যেখানে বরফের রাজ্যে ফুটবলের রূপকথা রচিত হয়েছে। বলছি আইসল্যান্ডের কথা। ছোট একটি দেশ, যার জনসংখ্যা আমাদের একটা উপজেলার সমানও না, মাত্র তিন লাখ ৩৪ হাজার ২৫২ জন।

আয়তন প্রায় ৪০ হাজার বর্গকিলোমিটার, যা বাংলাদেশের তুলনায় এক-তৃতীয়াংশ। যদি ওরা পারে আমরা কেন পারব না? যদি উত্তর আফ্রিকার ছোট একটি দেশ তিউনিসিয়া বিশ্বকাপ খেলে দেখাতে পারে, আমরা কেন পিছিয়ে থাকবো?