ঢাকা ০৫:৩৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এরশাদকে ‘সফল রাষ্ট্রনায়কে’র স্বীকৃতি দিল সংসদ

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ১০:২৭:৪১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯
  • / 120

সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।

জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে ‘সফল রাষ্ট্রনায়ক’ হিসেবে উল্লেখ করে জাতীয় সংসদে আনা শোকপ্রস্তাব গৃহীত হয়েছে।

রোববার একাদশ জাতীয় সংসদের চতুর্থ অধিবেশন শুরুর পর স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এ শোকপ্রস্তাব সংসদে উত্থাপন করেন। শোকপ্রস্তাবে বলা হয়েছে, ‘এই সংসদ প্রস্তাব করছে যে, ‘হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুতে দেশ একজন প্রবীণ রাজনীতিবিদ, সফল রাষ্ট্রনায়ক এবং নিবেদিতপ্রাণ সমাজসেবককে হারাল। এ সংসদ তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ, বিদেহী রূহের মাগফিরাত কামনা এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি আন্তরিক সহমর্মিতা প্রকাশ করেছে’।

শোকপ্রস্তাবটি উত্থাপনের পর তার কর্মময় জীবন নিয়ে আলোচনায় অংশ নিয়েছেন সরকার ও বিরোধীদলের সংসদ সদস্যরা। শুরুতেই বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু। শোকপ্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নেন সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধী দলের উপনেতা বেগম রওশন এরশাদ, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের, সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, জাতীয় পার্টির মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গা, আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মুজিবুল হক চুন্নু, মো. ফখরুল ইমাম, কাজী ফিরোজ রশীদ, অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম, শামীম হায়দার পাটোয়ারী, আহসান আদিলুর রহমান, পীর ফজলুর রহমান, নাজমা আখতার ও তরিকত ফেডারেশনের মুজিবুল বশর মাইজভান্ডারী। আলোচনা শেষে সর্বসম্মতিক্রমে শোকপ্রস্তাবটি গৃহীত হয়।

বিরোধী দলের উপনেতা বেগম রওশন এরশাদ ব্যক্তিজীবনে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদ কোনো ভুল-ত্রুটি করলে তার জন্য দেশবাসীর কাছে ক্ষমা প্রার্থণা করে বলেন, অসম্ভব জনপ্রিয়, বিনয়ী ও জনদরদী নেতা ছিলেন এইচ এম এরশাদ। একজন স্ত্রী পক্ষে স্বামীর শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশগ্রহণ অত্যন্ত কষ্টের, বেদনার। দেশের মানুষকে তিনি অসম্ভব ভালোবাসতেন, সত্যিকারের পল্লীবন্ধু ছিলেন। আমীর হোসেন আমু তার ১৭ সেকেন্ডের বক্তব্যে বলেন, দোষে-গুণে মানুষ। এ মুহূর্তে তাকে (এরশাদ) নিয়ে কোনো আলোচনা করতে চাই না। আমরা তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করি।

সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, মানুষ মরণশীল, আমাদেরও একদিন চলে যেতে হবে। সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদ পাকিস্তান সেনাবাহিনী থেকে ‘৭৩ সালে দেশে ফিরে আসেন। বঙ্গবন্ধু তাকে মেজর থেকে ব্রিগেডিয়ার পর্যন্ত পদোন্নতি দিয়েছেন। তার ক্ষমতা গ্রহণের সময় আমাদের মধ্যে মত-পথের পার্থক্য ছিল। আমরা তার বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি, তবে ব্যক্তিগতভাবে তিনি (এরশাদ) অত্যন্ত বিনয়ী ও নরম হৃদয়ের সজ্জন মানুষ ছিলেন।

সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, এইচ এম এরশাদ অত্যন্ত মৃদুভাষী নেতা ছিলেন। নিজ জেলা রংপুরের প্রতি তার মমত্ববোধ দেখেছি স্বাস্থ্যমন্ত্রী থাকাকালে। বিরোধী দলের নেতা থাকাকালীন সময়েও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে অসম্ভব শ্রদ্ধা করতেন। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, ক্ষমতায় থাকতে খুনি জিয়াউর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে এইচ এম এরশাদও বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পুরস্কৃত করেছেন, ঘৃণিত খুনি কর্নেল ফারুককে রাষ্ট্রপতি প্রার্থী করেছিলেন।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের ‘অসম্ভব জনপ্রিয় নেতা’ উল্লেখ করে বলেন, ২৭ বছর রাজনীতিতে ছিলেন এইচ এম এরশাদ। গণতন্ত্র রক্ষা ও বিকাশে তিনি কাজ করেছেন। গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিয়েছেন। তার পুরো শাসনকাল আমরা দু’ভাগে ভাগ করতে পারি। প্রথমত- ১৯৮২ থেকে ১৯৮৬ সালে সামরিক শাসনে দেশ পরিচালনা করেছেন। দ্বিতীয় ভাগে ১৯৮৬ থেকে ৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত ক্ষমতা হস্তান্তর পর্যন্ত। তার শাসনভাগের প্রথম ভাগকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছিল। দ্বিতীয় ভাগের বিষয়ে উচ্চ আদালত নেতিবাচক কোনো মন্তব্য করেনি। তার জীবদ্দশায় একটি সংসদ ছাড়া সব সংসদ নির্বাচনে তিনি জয়লাভ করেছেন। তিনি ছিলেন জননন্দিত রাজনীতিবিদ। সব রাজনীতির সমীকরণে প্রধান নিয়ামকও ছিলেন তিনি। আসলে এরশাদ ছিলেন পল্লী বন্ধু।

বিরোধীদলীয় প্রধান হুইপ মশিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, এই সংসদেই দাঁড়িয়ে বিনয়ী সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদ দুঃখ প্রকাশ করে বলেছিলেন, তিনি ক্ষমতায় থাকাকালে বঙ্গবন্ধুকে জাতির পিতা হিসেবে ঘোষণা করতে পারেননি। কিন্তু রাষ্ট্রপতি হয়ে তিনি টুঙ্গিপাড়ায় গিয়ে বঙ্গবন্ধুর মাজার জিয়ারত করেছেন। বিএনপির এমপির অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে তিনি বলেন, তাকে (এরশাদ) কখনোই জোর করে নির্বাচনে অংশগ্রহণে বাধ্য করা হয়নি। গণতান্ত্রিক সরকারের বিরোধী দলের নেতা হিসেবে তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন।

জাতীয় পার্টির ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, দেশের মানুষের যে কোনো দুঃসময়ে রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন এইচ এম এরশাদ প্রাকৃতিক দুর্যোগ উপেক্ষা করে দুর্গত মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে সব সময় শ্রদ্ধা করতেন তিনি। প্রশাসনিক সংস্কার করে উপজেলা পরিষদ করেছিলেন, জেলা বাড়িয়েছেন। দেশের মানুষ সস্তায় ওষুধ কিনে খাচ্ছেন তা এরশাদের প্রণীত ওষুধ নীতির কারণেই।

বিএনপির হারুনুর রশীদ বলেন, জন্ম হলেই মৃত্যু অনিবার্য। এইচ এম এরশাদ নির্বাচিত সরকারকে হঠিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন। ২০১৪ সালের নির্বাচনে এইচ এম এরশাদ অংশগ্রহণ করেননি। কিন্তু অংশগ্রহণ না করা সত্ত্বেও তাকে (এরশাদ) নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে তিনি অত্যন্ত কঠিন সময় পার করেছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।

তরিকত ফেডারেশনের মুজিবুল বশর মাইজভান্ডারী বলেন, দোষে-গুণেই মানুষ। সবারই ভুল হয়। বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিসন্ত্রাস, নাশকতার সময় বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার ডাকে সাড়া দিয়ে সংবিধান রক্ষায় পরবর্তী সব নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন এবং বিরোধী দলের নেতা হয়েছেন।

Tag :

শেয়ার করুন

এরশাদকে ‘সফল রাষ্ট্রনায়কে’র স্বীকৃতি দিল সংসদ

আপডেট টাইম : ১০:২৭:৪১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯

জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে ‘সফল রাষ্ট্রনায়ক’ হিসেবে উল্লেখ করে জাতীয় সংসদে আনা শোকপ্রস্তাব গৃহীত হয়েছে।

রোববার একাদশ জাতীয় সংসদের চতুর্থ অধিবেশন শুরুর পর স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এ শোকপ্রস্তাব সংসদে উত্থাপন করেন। শোকপ্রস্তাবে বলা হয়েছে, ‘এই সংসদ প্রস্তাব করছে যে, ‘হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুতে দেশ একজন প্রবীণ রাজনীতিবিদ, সফল রাষ্ট্রনায়ক এবং নিবেদিতপ্রাণ সমাজসেবককে হারাল। এ সংসদ তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ, বিদেহী রূহের মাগফিরাত কামনা এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি আন্তরিক সহমর্মিতা প্রকাশ করেছে’।

শোকপ্রস্তাবটি উত্থাপনের পর তার কর্মময় জীবন নিয়ে আলোচনায় অংশ নিয়েছেন সরকার ও বিরোধীদলের সংসদ সদস্যরা। শুরুতেই বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু। শোকপ্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নেন সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধী দলের উপনেতা বেগম রওশন এরশাদ, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের, সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, জাতীয় পার্টির মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গা, আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মুজিবুল হক চুন্নু, মো. ফখরুল ইমাম, কাজী ফিরোজ রশীদ, অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম, শামীম হায়দার পাটোয়ারী, আহসান আদিলুর রহমান, পীর ফজলুর রহমান, নাজমা আখতার ও তরিকত ফেডারেশনের মুজিবুল বশর মাইজভান্ডারী। আলোচনা শেষে সর্বসম্মতিক্রমে শোকপ্রস্তাবটি গৃহীত হয়।

বিরোধী দলের উপনেতা বেগম রওশন এরশাদ ব্যক্তিজীবনে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদ কোনো ভুল-ত্রুটি করলে তার জন্য দেশবাসীর কাছে ক্ষমা প্রার্থণা করে বলেন, অসম্ভব জনপ্রিয়, বিনয়ী ও জনদরদী নেতা ছিলেন এইচ এম এরশাদ। একজন স্ত্রী পক্ষে স্বামীর শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশগ্রহণ অত্যন্ত কষ্টের, বেদনার। দেশের মানুষকে তিনি অসম্ভব ভালোবাসতেন, সত্যিকারের পল্লীবন্ধু ছিলেন। আমীর হোসেন আমু তার ১৭ সেকেন্ডের বক্তব্যে বলেন, দোষে-গুণে মানুষ। এ মুহূর্তে তাকে (এরশাদ) নিয়ে কোনো আলোচনা করতে চাই না। আমরা তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করি।

সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, মানুষ মরণশীল, আমাদেরও একদিন চলে যেতে হবে। সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদ পাকিস্তান সেনাবাহিনী থেকে ‘৭৩ সালে দেশে ফিরে আসেন। বঙ্গবন্ধু তাকে মেজর থেকে ব্রিগেডিয়ার পর্যন্ত পদোন্নতি দিয়েছেন। তার ক্ষমতা গ্রহণের সময় আমাদের মধ্যে মত-পথের পার্থক্য ছিল। আমরা তার বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি, তবে ব্যক্তিগতভাবে তিনি (এরশাদ) অত্যন্ত বিনয়ী ও নরম হৃদয়ের সজ্জন মানুষ ছিলেন।

সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, এইচ এম এরশাদ অত্যন্ত মৃদুভাষী নেতা ছিলেন। নিজ জেলা রংপুরের প্রতি তার মমত্ববোধ দেখেছি স্বাস্থ্যমন্ত্রী থাকাকালে। বিরোধী দলের নেতা থাকাকালীন সময়েও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে অসম্ভব শ্রদ্ধা করতেন। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, ক্ষমতায় থাকতে খুনি জিয়াউর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে এইচ এম এরশাদও বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পুরস্কৃত করেছেন, ঘৃণিত খুনি কর্নেল ফারুককে রাষ্ট্রপতি প্রার্থী করেছিলেন।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের ‘অসম্ভব জনপ্রিয় নেতা’ উল্লেখ করে বলেন, ২৭ বছর রাজনীতিতে ছিলেন এইচ এম এরশাদ। গণতন্ত্র রক্ষা ও বিকাশে তিনি কাজ করেছেন। গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিয়েছেন। তার পুরো শাসনকাল আমরা দু’ভাগে ভাগ করতে পারি। প্রথমত- ১৯৮২ থেকে ১৯৮৬ সালে সামরিক শাসনে দেশ পরিচালনা করেছেন। দ্বিতীয় ভাগে ১৯৮৬ থেকে ৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত ক্ষমতা হস্তান্তর পর্যন্ত। তার শাসনভাগের প্রথম ভাগকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছিল। দ্বিতীয় ভাগের বিষয়ে উচ্চ আদালত নেতিবাচক কোনো মন্তব্য করেনি। তার জীবদ্দশায় একটি সংসদ ছাড়া সব সংসদ নির্বাচনে তিনি জয়লাভ করেছেন। তিনি ছিলেন জননন্দিত রাজনীতিবিদ। সব রাজনীতির সমীকরণে প্রধান নিয়ামকও ছিলেন তিনি। আসলে এরশাদ ছিলেন পল্লী বন্ধু।

বিরোধীদলীয় প্রধান হুইপ মশিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, এই সংসদেই দাঁড়িয়ে বিনয়ী সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদ দুঃখ প্রকাশ করে বলেছিলেন, তিনি ক্ষমতায় থাকাকালে বঙ্গবন্ধুকে জাতির পিতা হিসেবে ঘোষণা করতে পারেননি। কিন্তু রাষ্ট্রপতি হয়ে তিনি টুঙ্গিপাড়ায় গিয়ে বঙ্গবন্ধুর মাজার জিয়ারত করেছেন। বিএনপির এমপির অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে তিনি বলেন, তাকে (এরশাদ) কখনোই জোর করে নির্বাচনে অংশগ্রহণে বাধ্য করা হয়নি। গণতান্ত্রিক সরকারের বিরোধী দলের নেতা হিসেবে তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন।

জাতীয় পার্টির ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, দেশের মানুষের যে কোনো দুঃসময়ে রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন এইচ এম এরশাদ প্রাকৃতিক দুর্যোগ উপেক্ষা করে দুর্গত মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে সব সময় শ্রদ্ধা করতেন তিনি। প্রশাসনিক সংস্কার করে উপজেলা পরিষদ করেছিলেন, জেলা বাড়িয়েছেন। দেশের মানুষ সস্তায় ওষুধ কিনে খাচ্ছেন তা এরশাদের প্রণীত ওষুধ নীতির কারণেই।

বিএনপির হারুনুর রশীদ বলেন, জন্ম হলেই মৃত্যু অনিবার্য। এইচ এম এরশাদ নির্বাচিত সরকারকে হঠিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন। ২০১৪ সালের নির্বাচনে এইচ এম এরশাদ অংশগ্রহণ করেননি। কিন্তু অংশগ্রহণ না করা সত্ত্বেও তাকে (এরশাদ) নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে তিনি অত্যন্ত কঠিন সময় পার করেছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।

তরিকত ফেডারেশনের মুজিবুল বশর মাইজভান্ডারী বলেন, দোষে-গুণেই মানুষ। সবারই ভুল হয়। বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিসন্ত্রাস, নাশকতার সময় বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার ডাকে সাড়া দিয়ে সংবিধান রক্ষায় পরবর্তী সব নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন এবং বিরোধী দলের নেতা হয়েছেন।