শিরোনাম :
দেশ করোনামুক্ত না হওয়া পর্যন্ত জনগণের পাশে আওয়ামী লীগ
ডেস্ক রিপোর্ট :
- আপডেট টাইম : ০৩:০৫:২৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ জুলাই ২০২০
- / 97
৭১: বাংলাদেশ করোনামুক্ত না হওয়া পর্যন্ত জনগণের পাশে থাকবে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। শনিবার রাতে করোনাকালীন সংকট নিয়ে বিশেষ ওয়েবিনার ‘বিয়ন্ড দ্যা প্যানডেমিক’ এর নবম পর্বে এসব কথা জানানো হয়। বরাবরের মতোই এবারের পর্বটি সরাসরি প্রচারিত হয় আওয়ামী লীগের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ এবং অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে। একই সঙ্গে দেখা যায় টেলিভিশন এবং বেশকিছু গণমাধ্যমের ফেসবুক পেজেও। এবারের পর্বের আলোচনার বিষয় ছিলো ‘করোনা সংকট মোকাবিলায় তৃণমূলের ভূমিকা’। এই সঙ্কটে মানুষকে সচেতন করতে আওয়ামী লীগের পদক্ষেপ, করোনা চিকিৎসা নিয়ে গুজব মোকাবেলা, দলের জনপ্রতিনিধিদের জন্য আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় বার্তা, ঘূর্ণিঝড় আম্পান পূর্বাভাস পাওয়ার পর ক্ষয়ক্ষতি কমাতে কি ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছিল এবং পরবর্তীতে কর্মহীনদের সহায়তা নিয়ে আলোচনা। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার শাহ আলী ফরহাদ সঞ্চালনায় আলোচক হিসেবে যুক্ত হয়। এছাড়াও আরো ছিলেন- আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ. ফ. ম. বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, ভোলা- ৪ আসনের সংসদ সদস্য আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব, কক্সবাজার- ২ আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, খুলনা- ৬ আসনের সংসদ সদস্য আক্তারুজ্জামান বাবু এবং বাংলাদেশ কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম স্মৃতি। আলোচনায় যুক্ত হয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘করোনা ভাইরাসের প্রকোপ শুরুর পর থেকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা এবং তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের সমন্বয় করে রিলিফ কার্যক্রম কমিটি গঠন, রিলিফ প্রদানে সক্রিয় অংশগ্রহণ করে আওয়ামী লীগ। সাধারণ মানুষকে সচেতন করা থেকে শুরু করে, অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা কার্পন্য করেনি। আওয়ামী লীগের দুর্দিনের নেতা-কর্মীরা মৃত্যুভয়কে উপেক্ষা করে রিলিফ কার্যক্রম এখন পর্যন্ত পরিচালনা করছেন।’ তিনি আরো বলেন, ‘দেশ ও দলের দুর্দিনে আওয়ামী লীগের তৃনমূল কর্মীরা বারবার ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছেন। সমগ্র আন্দোলন সংগ্রামে আমাদের এই দুর্দিনের নেতা কর্মীরাই সবার আগে এগিয়ে এসেছেন। এবং আমাদের দলীয় জনপ্রতিনিধিরা তৃণমূলের নেতা কর্মীদের সাথে সমন্বয় করে জনগণের পাশে থেকেছে, এখনও আছে। করোনামুক্ত বাংলাদেশ হওয়ার আগ পর্যন্ত আমাদের তৃণমূলের নেতা কর্মীরা ও জনপ্রতিনিধিরা যেকোন পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য জনগণের পাশে আছে এবং থাকবে।’ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন বলেন, ‘একজন সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে আমার সাংগঠনিক এলাকার উপজেলা ইউনিয়নের নেতা কর্মীদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। আমাদের তৃনমূলের নেতা কর্মীরা ব্যক্তিগত উদ্যোগে মানুষের ঘরে ঘরে খাদ্য সহায়তা পৌছে দিয়েছে এবং এখনও দিচ্ছে। এছাড়া আমাদের সকল স্তরের জনপ্রতিনিধিরা নিজস্ব এলাকায় সরকারি ও ব্যক্তিগত উদ্যোগ মিলিয়ে মানুষের পাশে থেকেছে। আমরা কেন্দ্র থেকে সবকিছু সার্বক্ষনিক মনিটরিং করছি।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের দপ্তরের হিসেব অনুযায়ী সারাদেশের তৃণমূলের নেতা কর্মীরা এখন পর্যন্ত প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষের কাছে খাদ্য সহায়তা পৌছে দিয়েছে। আওয়ামী লীগের রাজনীতিই হলো অসহায় মানুষের পাশে থাকা, পাশে দাঁড়ানো, মানুষকে সহায়তা করা। আওয়ামী লীগের জন্মলগ্ন থেকে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা সব সময় অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে।’ আলোচনায় যুক্ত হয়ে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, ‘আপনারা জানেন চট্টগ্রাম ইতিমধ্যে করোনার হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে, ঢাকার পরেই চট্টগ্রামের অবস্থান। আসলে করোনা মোকাবেলা করার জন্য যে প্রস্তুতি তা কোথাও ছিলো না, স্বাভাবিক কারণে বাংলাদেশসহ চট্টগ্রামে কোথাও ছিলো না। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত সুনিপুণ নেতৃত্বে করোনা ভাইরাস মোকাবেলা করার জন্য যে ধরণের প্রস্তুতি গ্রহণ করা প্রয়োজন ইতিমধ্যে তিনি সব গ্রহণ করেছেন।’ ‘চট্টগ্রামে আপনারা জানেন আমরা চিকিৎসা ক্ষেত্রে প্রচুর চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছি। কোভিড-১৯ একটি সংক্রামক ব্যাধি। প্রথম দিকে মানুষের মাঝে ব্যাপক ধারণা ছিলো, একটা হাসপাতালে কোভিড এবং নন-কোভিড চিকিৎসা দেয়া সম্ভব না। সেই ধারণাটা চট্টগ্রামে খুব কাজ করেছিলো। শুরুর দিকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ৫০ শয্যা নিয়ে আমরা করোনার চিকিৎসা শুরু করেছিলাম, ধীরে ধীরে শয্যা সংখ্যা বাড়তে বাড়তে সেখানে এখন ১৬০টি শয্যা রয়েছে, সাথে যুক্ত হয়েছে ১০ শয্যার আইসিইউ সেবা, চট্টগ্রাম মেডিকেলে ও প্রথমে স্বল্পসংখ্যাক বেড নিয়ে শুরু করলেও এখন সেখানে ১৫০টি আইসোলেশন সেবাসহ আইসিইউ সেবা চালু হয়েছে। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আরো একাধিক হাসপাতালে করোনা চিকিৎসার সাথে যুক্ত করা হয়েছে। বেসরকারি হাসপাতাল গুলো সরকারের নির্দেশে এখন সেবা দিচ্ছেন।’ ভোলা-৪ আসনের সংসদ সদস্য আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব বলেন, ‘এই দুর্যোগে যেভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিয়মিত দ্বীপ জেলা ভোলা বাসীর খোঁজ নিয়েছেন, আমি তার নিকট ভোলা ৪ আসনের জনগণের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানাই। করোনা সংকটের এই মহামারীতে ডাক্তাররা কাজ করে যাচ্ছে, আমি তাদের প্রতি শ্রদ্ধা রাখছি। আমরা অনেক দূর্যোগ দেখেছি, কিন্তু করোনার মত নতুন দুর্যোগ এই বারেই প্রথম। নতুন এই দুর্যোগ মোকাবিলায় আমরা একেবারে প্রস্তুত ছিলাম না, কিন্তু শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা কাজ করছি এই সংকট মোকাবিলায়।’ খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য আক্তারুজ্জামান বাবু বলেন, ‘বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণের জনপদ পাইকগাছা কয়রায় করোনা শনাক্ত হবার পর থেকে আমরা কাজ করেছি। আজকে এই করোনার সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আমরা কাজ করে যাচ্ছি দুই উপজেলার নেতাদের নিয়ে। আমরা মসজিদের ইমাম মোয়াজ্জিনসহ মন্দিরে আমরা সহায়তা পৌঁছে দিয়েছি। কিন্তু আমাদের ১০টি ইউনিয়ন এখনো আংশিক পানিবন্ধি। ২টি ইউনিয়ন পানিতে আটকে আছে। আমাদের বেড়ীবাদ গুলো অনেক পুরানো। কিন্তু টেকসই বেড়ীবাদ হয় নাই। এবার কয়েক শত কিঃ মিঃ বেড়ীবাধ বিলিন হয়ে যায়, আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ড এর দিকে না তাকিয়ে নিজ উদ্যোগে কাজ করেছি সকলে মিলে। জনগনকে সাথে নিয়ে সংকটের এই দিনে আমরা বেড়িবাঁধ নির্মান করেছি। আমাদের প্রধানমন্ত্রী কথা দিয়েছেন আমাদের টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মান করে দিবেন। উপকুলের মানুষ ত্রাণ চায় না বেড়িবাঁধ চায়।’ কক্সবাজার- ২ আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পরেই উপকূলে সিসি ব্লকের কাজ করা হয়। আম্ফানে ক্ষতিগ্রস্থ বেড়িবাধ আমরা ইতিমধ্যে নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছি। করোনা মোকাবিলায় আমরা একে অপরের কাধে কাধ মিলিয়ে কাজ করেছি। আমাদের প্রত্যেক নেতা-কর্মী শেখ হাসিনার নির্দেশে আমরা তৃণমূলের মানুষদের পাশে ছিলাম সবাই মিলে। রোহিঙ্গা সংকটের সময় কক্সবাজারে ছুটে আসেন আমাদের মমতাময়ী নেত্রী তাদের দেখার জন্য। কোভিড-১৯ সেখানে এখন পর্যন্ত ৫২ জন আক্রান্ত্র। সরকারের পক্ষ থেকে সেখানে ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপন করা হয়েছে। সেখানে আমাদের সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন সংস্থা কাজ করছে।’ বাংলাদেশ কৃষক লীগ-এর সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম স্মৃতি বলেন, ‘কৃষকদের পাশে আমরা সবসময় আছি এবং থাকবো। ১৯৮৪ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত বৃক্ষরোপণ কর্মসূচী চলমান রেখেছে বাংলাদেশ কৃষক লীগ সহ অন্যান্য সহযোগী সংগঠন। সারাদেশে মুজিব বর্ষে এক কোটি গাছ লাগাবে বাংলাদেশ কৃষক লীগ।’ এর আগে, বিয়ন্ড দ্যা প্যান্ডেমিকের আটটি পর্ব অনুষ্ঠিত হয়েছে। সর্বশেষ পর্বটি প্রচারিত হয়েছে গত ৩০ জুন। এই পর্বে আলোচকরা করোনা পরবর্তী বাংলাদেশের তরুণদের মধ্যে শিক্ষা ও দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য নতুন ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছেন। শিক্ষামন্ত্রী ডা: দিপু মনি এবং শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী ছিলেন এই অনুষ্ঠানের অন্যতম আলোচক। |
Tag :