ঢাকা ০৫:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আমার ছবি এক নম্বর ব্যবসা সফল হয়নি, আমি হীনমন্যতায় ভুগিনি’

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ০৯:৪৭:৪৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ অগাস্ট ২০১৯
  • / 247

নির্মাতা মোস্তফা সরওয়ার ফারুকী মিডিয়ার চলমান সংকট নিয়ে কথা বলেছেন। বললেন, সোশ্যাল মিডিয়া মানুষকে এক অন্তহীন হীনমন্যতার টোপে আটকে ফেলছে। যার কারণে সৃষ্টিশীল, সৃজনশীল জিনিস হুমকির মুখে, চরম সংকটের মুখে পড়ছে। নাটক মিউজিক ভিডিওর ‘ভিউজ’ এর পেছনে যে দৌঁড় শুরু হয়েছে তা নিয়ে যেমন শংকা প্রকাশ করেছেন, তেমনি সোশ্যাল মিডিয়ার কাছে বর্তমান সৃষ্টিশীল তরুণদের হতাশার কথাও ব্যক্ত করেছেন।

ফারুকী বুধাবার দুপুরে সোশ্যাল হ্যান্ডেলে লিখেছেন, ‘আগে “আলাদা”, “ভিন্ন” হওয়ার মধ্যে মানুষ সার্থকতা খুঁজে পেত। এখন “আলাদা” হইতে মানুষ ইনসিকিউর ফিল করে। মানুষ এখন সেই বার্গার খাইতেই লাইন দিবে যেটা সবাই খাচ্ছে। সেটা খাইয়া একটা সেলফি না দিতে পারলে সে তার সোশ্যাল রিলাভেন্স হারাইয়া ফেলার আতংকে থাকবে। এখন মানুষ সেই গানই শেয়ার দিবে যেটা আরো তিরিশ মিলিয়ন লোকে শেয়ার দিছে। সেই সিনেমা দেখতেই হল ভাইঙ্গা ফেলবে যেটা পত্রিকার রিপোর্টে ওপেনিং উইকেই হান্ড্রেড মিলিয়ন আয় করছে। তা সেই ছবি যতোই স্টুপিড “গান্জারামন সর্দারন” হউক না কেনো।কারন সেই ছবির হল থেকে দেয়া সেলফিটাই যে কেবল তার অস্তিত্বকে এনডোর্স করছে, দুনিয়াকে বলছে, আমিও আছি, আমিও ছিলাম, ভুলোনা আমায়!’

ব্যান্ডদল ওয়ারফেজের প্রসঙ্গ টেনে ফারুকী নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে বলেন, কখনো দেখি নাই ওয়ারফেজ মমতাজের মতো বিক্রি হইতেছে না বইলা ওয়ারফেজ বা তার ফ্যানদের হীনমন্যতায় ভুগতে। কিন্তু এখন হইলে ভিউ‘র লজ্জায় তাহাদের কাটা মাথা তাহারা কোথায় রাখিবে তার দিশা খুঁজিয়া পাইতো না। আমার ছবি কোনোদিনও এক নম্বর ব্যবসাসফল ছবি হয় নাই, হইছে ডিপজল সাহেবের ছবি, তাতে আমি বিন্দুমাত্র হীনমন্যতায় ভুগছি বইলা তো মনে পড়ে না।

সৃষ্টিশীলদের সমর্থনে লোক পাওয়া যায় না উল্লেখ করে এই নির্মাতা বলেন, ‘ভোক্তা  আজকে নতুন ছেলেদের সাথে কথা বললে দেখি, ভিউ‘র চাপে তারা ম্রিয়মাণ! তারা নতুন ছবি বানানোর, নতুন সুর করার, নতুন কথা লিখার আগেই ভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠ খাবে তো? তার দোষই বা কি? তাকে সমর্থন দিয়ে আগাইতে সাহায্য করবে সেই ভোক্তা কই? যে ভোক্তা আলাদা হইয়া নতুন সুর, নতুন চিন্তা, নতুন কথাকে ছোট হইলেও একটা ধারায় পরিণত করার কথা সে নিজেই তো অস্তিত্বের সংকটে হংসমতো ধুঁকছে। স্রোতের মধ্যে হাঁসের মতে মাথাটা লুকাইয়া কোনমতে অস্তিত্ব টিকাইয়া রাখার সংগ্রামে মানবজাতিকে নামাইয়া দিলো যে সোশ্যাল মিডিয়া, আমরা তার কোন নিয়ামতকে অস্বীকার করিবো?’

Tag :

শেয়ার করুন

আমার ছবি এক নম্বর ব্যবসা সফল হয়নি, আমি হীনমন্যতায় ভুগিনি’

আপডেট টাইম : ০৯:৪৭:৪৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ অগাস্ট ২০১৯

নির্মাতা মোস্তফা সরওয়ার ফারুকী মিডিয়ার চলমান সংকট নিয়ে কথা বলেছেন। বললেন, সোশ্যাল মিডিয়া মানুষকে এক অন্তহীন হীনমন্যতার টোপে আটকে ফেলছে। যার কারণে সৃষ্টিশীল, সৃজনশীল জিনিস হুমকির মুখে, চরম সংকটের মুখে পড়ছে। নাটক মিউজিক ভিডিওর ‘ভিউজ’ এর পেছনে যে দৌঁড় শুরু হয়েছে তা নিয়ে যেমন শংকা প্রকাশ করেছেন, তেমনি সোশ্যাল মিডিয়ার কাছে বর্তমান সৃষ্টিশীল তরুণদের হতাশার কথাও ব্যক্ত করেছেন।

ফারুকী বুধাবার দুপুরে সোশ্যাল হ্যান্ডেলে লিখেছেন, ‘আগে “আলাদা”, “ভিন্ন” হওয়ার মধ্যে মানুষ সার্থকতা খুঁজে পেত। এখন “আলাদা” হইতে মানুষ ইনসিকিউর ফিল করে। মানুষ এখন সেই বার্গার খাইতেই লাইন দিবে যেটা সবাই খাচ্ছে। সেটা খাইয়া একটা সেলফি না দিতে পারলে সে তার সোশ্যাল রিলাভেন্স হারাইয়া ফেলার আতংকে থাকবে। এখন মানুষ সেই গানই শেয়ার দিবে যেটা আরো তিরিশ মিলিয়ন লোকে শেয়ার দিছে। সেই সিনেমা দেখতেই হল ভাইঙ্গা ফেলবে যেটা পত্রিকার রিপোর্টে ওপেনিং উইকেই হান্ড্রেড মিলিয়ন আয় করছে। তা সেই ছবি যতোই স্টুপিড “গান্জারামন সর্দারন” হউক না কেনো।কারন সেই ছবির হল থেকে দেয়া সেলফিটাই যে কেবল তার অস্তিত্বকে এনডোর্স করছে, দুনিয়াকে বলছে, আমিও আছি, আমিও ছিলাম, ভুলোনা আমায়!’

ব্যান্ডদল ওয়ারফেজের প্রসঙ্গ টেনে ফারুকী নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে বলেন, কখনো দেখি নাই ওয়ারফেজ মমতাজের মতো বিক্রি হইতেছে না বইলা ওয়ারফেজ বা তার ফ্যানদের হীনমন্যতায় ভুগতে। কিন্তু এখন হইলে ভিউ‘র লজ্জায় তাহাদের কাটা মাথা তাহারা কোথায় রাখিবে তার দিশা খুঁজিয়া পাইতো না। আমার ছবি কোনোদিনও এক নম্বর ব্যবসাসফল ছবি হয় নাই, হইছে ডিপজল সাহেবের ছবি, তাতে আমি বিন্দুমাত্র হীনমন্যতায় ভুগছি বইলা তো মনে পড়ে না।

সৃষ্টিশীলদের সমর্থনে লোক পাওয়া যায় না উল্লেখ করে এই নির্মাতা বলেন, ‘ভোক্তা  আজকে নতুন ছেলেদের সাথে কথা বললে দেখি, ভিউ‘র চাপে তারা ম্রিয়মাণ! তারা নতুন ছবি বানানোর, নতুন সুর করার, নতুন কথা লিখার আগেই ভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠ খাবে তো? তার দোষই বা কি? তাকে সমর্থন দিয়ে আগাইতে সাহায্য করবে সেই ভোক্তা কই? যে ভোক্তা আলাদা হইয়া নতুন সুর, নতুন চিন্তা, নতুন কথাকে ছোট হইলেও একটা ধারায় পরিণত করার কথা সে নিজেই তো অস্তিত্বের সংকটে হংসমতো ধুঁকছে। স্রোতের মধ্যে হাঁসের মতে মাথাটা লুকাইয়া কোনমতে অস্তিত্ব টিকাইয়া রাখার সংগ্রামে মানবজাতিকে নামাইয়া দিলো যে সোশ্যাল মিডিয়া, আমরা তার কোন নিয়ামতকে অস্বীকার করিবো?’