ঢাকা ০৭:৪৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দিল্লিকে অশান্ত করার দায়ে অমিত শাহর পদত্যাগ দাবি

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ১১:৫০:৫৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২০
  • / 107

নিউজ লাইট ৭১: দিল্লিতে হিন্দুত্ববাদীদের তাণ্ডবে সৃষ্ট সহিংসতা সামাল দিতে ব্যর্থ হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এজন্য সেখানে সেনা নামানোর পক্ষে আবেদন করেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। এ নিয়ে গতকাল বুধবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি পাঠান তিনি। এদিকে দিল্লিকে অশান্ত করার দায়ে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর পদত্যাগ দাবি করেছেন ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের প্রধান সোনিয়া গান্ধী।
বিতর্কিত সিএএ আইনের বিরুদ্ধে দিল্লির শাহিনবাগে অবস্থান নিয়ে টানা দুমাস ধরে বিক্ষোভ করে আসছেন নারীরা। পরে তাদের সেখান থেকে তুলে দেয়ার উদ্যোগ নেয়ার পর গত শনিবার রাত থেকে জাফরাবাদ মেট্রো স্টেশনে বিক্ষোভ শুরু হয়। এর জবাবে পরদিন গত রবিবার বিকাল ৩টায় প্রায় এক কিলোমিটার দূরের মৌজপুর চকে সিএএ সমর্থকদের জড়ো হওয়ার আহ্বান জানিয়ে টুইট করেন দিল্লির বিজেপি নেতা কপিল মিশ্র। হিন্দুত্ববাদী কপিলের সেই উসকানির পর সহিংসতা নতুন মাত্রা পায়। এতে নিহত হয় অন্তত ২০ জন। আর ৭০ জন গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছে দুই শতাধিক মানুষ।
রাজধানীর পরিস্থিতি নিয়ে টুইটারে উদ্বেগ প্রকাশ করে দিল্লির মুখমন্ত্রী লিখেছেন, রাতভর অনেক মানুষের সঙ্গে কথা হয়েছে। পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক। সব রকম চেষ্টা সত্তে¡ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি পুলিশ। মানুষের মধ্যে আত্মবিশ্বাস ফেরানো যায়নি। এবার সেনা নামানো উচিত। ক্ষতিগ্রস্ত সব জায়গায় অবিলম্বে কারফিউ জারি করা উচিত। এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছি আমি।
কলকাতাভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকায় বলা হয়েছে, এর আগে গত মঙ্গলবারও দিল্লিতে সেনা নামানোর পক্ষে দাবি জানিয়েছিলেন কেজরিওয়াল। তবে সেসময়ে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে জানানো হয়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। সেনার পরিবর্তে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েনের পক্ষে মত দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
দিল্লিতে হিন্দুত্ববাদীদের তাণ্ডবের পর অমিত শাহের সঙ্গে একদফা বৈঠক করেছেন কেজরিওয়াল। তবে বিভিন্ন মহলের অভিযোগ, সহিংসতা ঠেকাতে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি দিল্লি সরকার। এমনকি শান্তির আহ্বান জানানো ছাড়া, সহিংসতা নিয়ে কোনো মন্তব্যও করতে দেখা যায়নি তাকে। এসব কারণে রাজনৈতিক মহলে তো বটেই দলের ভেতরেও প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে কেজরিওয়ালকে। ওই দিনও সেনা নামানোর পক্ষে আবেদন করলেও, দিল্লি পুলিশের নিস্ক্রিয়তা নিয়ে যে ব্যাপক অভিযোগ উঠে আসছে, তা নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি তিনি।
এদিকে গতকাল বুধবার নয়াদিল্লিতে কংগ্রেসের সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের প্রধান সোনিয়া গান্ধী বলেছেন, সহিংসতার ঘটনার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও কেন্দ্রীয় সরকার সম্পূর্ণভাবে দায়ী। কংগ্রেস অবিলম্বে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করছে। সংবাদ সম্মেলনে তিনি প্রশ্ন করেন, দিল্লি যখন অশান্ত হলো তখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কোথায় ছিলেন? পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে দেখেও কেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরিস্থিতি মোকাবিলায় যথাযথ ব্যবস্থা নেয়নি? 

Tag :

শেয়ার করুন

দিল্লিকে অশান্ত করার দায়ে অমিত শাহর পদত্যাগ দাবি

আপডেট টাইম : ১১:৫০:৫৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২০

নিউজ লাইট ৭১: দিল্লিতে হিন্দুত্ববাদীদের তাণ্ডবে সৃষ্ট সহিংসতা সামাল দিতে ব্যর্থ হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এজন্য সেখানে সেনা নামানোর পক্ষে আবেদন করেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। এ নিয়ে গতকাল বুধবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি পাঠান তিনি। এদিকে দিল্লিকে অশান্ত করার দায়ে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর পদত্যাগ দাবি করেছেন ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের প্রধান সোনিয়া গান্ধী।
বিতর্কিত সিএএ আইনের বিরুদ্ধে দিল্লির শাহিনবাগে অবস্থান নিয়ে টানা দুমাস ধরে বিক্ষোভ করে আসছেন নারীরা। পরে তাদের সেখান থেকে তুলে দেয়ার উদ্যোগ নেয়ার পর গত শনিবার রাত থেকে জাফরাবাদ মেট্রো স্টেশনে বিক্ষোভ শুরু হয়। এর জবাবে পরদিন গত রবিবার বিকাল ৩টায় প্রায় এক কিলোমিটার দূরের মৌজপুর চকে সিএএ সমর্থকদের জড়ো হওয়ার আহ্বান জানিয়ে টুইট করেন দিল্লির বিজেপি নেতা কপিল মিশ্র। হিন্দুত্ববাদী কপিলের সেই উসকানির পর সহিংসতা নতুন মাত্রা পায়। এতে নিহত হয় অন্তত ২০ জন। আর ৭০ জন গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছে দুই শতাধিক মানুষ।
রাজধানীর পরিস্থিতি নিয়ে টুইটারে উদ্বেগ প্রকাশ করে দিল্লির মুখমন্ত্রী লিখেছেন, রাতভর অনেক মানুষের সঙ্গে কথা হয়েছে। পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক। সব রকম চেষ্টা সত্তে¡ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি পুলিশ। মানুষের মধ্যে আত্মবিশ্বাস ফেরানো যায়নি। এবার সেনা নামানো উচিত। ক্ষতিগ্রস্ত সব জায়গায় অবিলম্বে কারফিউ জারি করা উচিত। এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছি আমি।
কলকাতাভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকায় বলা হয়েছে, এর আগে গত মঙ্গলবারও দিল্লিতে সেনা নামানোর পক্ষে দাবি জানিয়েছিলেন কেজরিওয়াল। তবে সেসময়ে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে জানানো হয়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। সেনার পরিবর্তে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েনের পক্ষে মত দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
দিল্লিতে হিন্দুত্ববাদীদের তাণ্ডবের পর অমিত শাহের সঙ্গে একদফা বৈঠক করেছেন কেজরিওয়াল। তবে বিভিন্ন মহলের অভিযোগ, সহিংসতা ঠেকাতে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি দিল্লি সরকার। এমনকি শান্তির আহ্বান জানানো ছাড়া, সহিংসতা নিয়ে কোনো মন্তব্যও করতে দেখা যায়নি তাকে। এসব কারণে রাজনৈতিক মহলে তো বটেই দলের ভেতরেও প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে কেজরিওয়ালকে। ওই দিনও সেনা নামানোর পক্ষে আবেদন করলেও, দিল্লি পুলিশের নিস্ক্রিয়তা নিয়ে যে ব্যাপক অভিযোগ উঠে আসছে, তা নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি তিনি।
এদিকে গতকাল বুধবার নয়াদিল্লিতে কংগ্রেসের সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের প্রধান সোনিয়া গান্ধী বলেছেন, সহিংসতার ঘটনার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও কেন্দ্রীয় সরকার সম্পূর্ণভাবে দায়ী। কংগ্রেস অবিলম্বে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করছে। সংবাদ সম্মেলনে তিনি প্রশ্ন করেন, দিল্লি যখন অশান্ত হলো তখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কোথায় ছিলেন? পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে দেখেও কেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরিস্থিতি মোকাবিলায় যথাযথ ব্যবস্থা নেয়নি?