ঢাকা ০৭:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আওয়ামী যুবলীগে আবার ভিড়তে মরিয়া বিতর্কিতরা

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ১০:১৭:৪৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২০
  • / 94

নিউজ লাইট ৭১: ক্লিন ইমেজের সংগঠন গড়তে তৎপরতা শুরুর মধ্যেই আওয়ামী যুবলীগে আবার ভিড়তে মরিয়া বিতর্কিতরা। তাদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক কমিটির টেন্ডারবাজ, ক্যাসিনো-কাণ্ডে বিতর্কিত, ছাত্রলীগ নেতার হত্যা মামলার আসামিসহ বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িতরা। ফলে যে লক্ষ্যে আওয়ামী লীগের অন্যতম এই সহযোগী সংগঠনকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা এসেছিল; তা নিয়ে আশাবাদী হলেও আশ্বস্ত হতে পারছেন না দুঃসময়ের-তৃণমূলের কর্মীরা।

জানা গেছে, গত বছরের নভেম্বরে ক্যাসিনো-কাণ্ডে আলোচনায় আসা নেতাদের বাদ দিয়ে শুধু সভপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয় যুবলীগের ৭ম জাতীয় কংগ্রেসে। ১৫১ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটির বাকি ১৪৯ পদ এখনো পূরণ হয়নি।

এখন এই প্রায় দেড়শ নেতা বাছাই করতে গলদ্ঘর্ম হচ্ছেন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। এরই মধ্যে প্রায় ১৫০০ নেতাকর্মীর জীবনবৃত্তান্ত জমা পড়েছে যুবলীগের দফতরে। তাদের মধ্যে রয়েছেন বিতর্কিত ও ক্যাসিনো-কাণ্ডে জড়িত ও হত্যার আসামিও।

এ অবস্থায় শুদ্ধি অভিযানে বাদপড়া ও বিতর্কিতরা যেন যুবলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে আসতে না পারেন, সেজন্য সংগঠনের শীর্ষ দুই নেতার কাছে চিঠি দিতে শুরু করেছেন দুঃসময়ের-তৃণমূলের কর্মীরা। এমন একটি চিঠির নমুনা এই প্রতিবেদকের হাতে রয়েছে। দলীয় তথ্য অনুযায়ী, আওয়ামী যুবলীগের ৭তম কংগ্রেসে পদ-প্রার্থীদের জন্য নির্দিষ্ট বয়সসীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। ১৫০০ সিভির মধ্যে প্রায় ৩০০টি বাছাই করা হবে। সেখানে বয়সসীমার কারণে আগের কমিটির অনেকেই এবার পূর্ণাঙ্গ কমিটি থেকে অনেকেই বাদ পড়ে যাচ্ছেন।

আগামী মার্চের মধ্যে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার পূর্ণ কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। পাশাপাশি ঢাকা মহানগরে সহযোগী সংগঠনগুলোর মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটিগুলোকেও সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। নির্দেশনা আসার পরপরই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সর্ববৃহৎ সংগঠন যুবলীগের কেন্দ্রীয় পদ-প্রত্যাশীরা জোর তদবির চালাচ্ছেন। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে আসতে মরিয়া হয়ে উঠছেন যুবলীগের সাবেক কমিটির ‘বিতর্কিত, টেন্ডারবাজ, ক্যাসিনোর সঙ্গে জড়িত, ছাত্রলীগ নেতার হত্যা মামলার আসামি’সহ বিভিন্ন অপকমের্র সঙ্গে জড়িতরা।

তবে আওয়ামী সরকারের চলমান শুদ্ধি অভিযানের মধ্যে কোনোভাবেই যেনো বিতর্কিত—টেন্ডারবাজরা ক্ষমতাসীন দলের এমন বৃহৎ সংগঠনের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে না আসতে পারে, সেজন্য দলেন দুঃসময়ের ছাত্রনেতারা সংগঠনের শীর্ষ নেতার বরাবর চিঠি প্রধান করেছেন। সাবেক কেন্দ্রীয় এক ছাত্রনেতার দেওয়া চিঠি সূত্রে জানা যায়, ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুজ্জামান বাদলকে ১৯৯২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন্নাহার হলের সামনে গুলি করে হত্যা করা হয়। সেই হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত ২ নম্বর আসামি মোয়াজ্জেম হোসেন। তিনি যুবলীগের গত কমিটির সহ-সম্পাদক ছিলেন। তিনি ছাত্রদলের নেতা ছিলেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

চিঠির সত্যতা খুঁজতে এ বিষয়ে মোয়াজ্জেম হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি নিউজ লাইট ৭১ কে বলেন, নিজের এলাকার স্থানীয় রাজনীতির কোন্দলের কারণেই এবং আমাকে চাপে রাখতে এ ধরনের চিঠি দেওয়া হয়েছে। বাদল হত্যা মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, এ মামলায় ২ নম্বর আসামি নয়, তিনি ১৪ নম্বর আসামি ছিলেন। পরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন তিনি খালাশ পান।

দলীয় সূত্র বলছে, টেন্ডারবাজ ও বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে যুবলীগে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে নির্দেশ দিয়েছে সংগঠনের অভিভাবক আওয়ামী লীগ। তবে থেমে নেই অভিযুক্তদের দৌড়ঝাঁপ। এরই মধ্যে যুবলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের বাসা ও অফিসে ভিড়ছেন বিভিন্ন অপকর্মকারীরা। চাঁদাবাজি, ক্যাসিনো কর্মকাণ্ডসহ নানা নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের নেতারাও যুবলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে স্থান পেতে জোর তদবির চালাচ্ছেন। তবে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা বিভিন্ন সভয় দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার বরাত দিয়ে বলেছেন, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের পদে দলের ত্যাগী, পরিক্ষত ও দুঃসময়ের নেতাকর্মীরাই স্থান পাবেন। এখানে অভিযুক্তরা, চাঁদাবাজি বা ক্যাসিনো-কাণ্ডে জড়িতরা স্থান পাবেন না।

এবারের যুবলীগের কমিটিতে কেমন নেতাকর্মীরা আসছেন, জানতে চাইলে আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, আমাদের নেত্রীর পরিষ্কার কথা, আমরা সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও মাদকমুক্ত, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য, সুন্দর বাংলাদেশ এগিয়ে যাওয়ার জন্য, একটি সুন্দর বসবাস চাই। আমরা সর্ব ক্ষেত্রেই এই বিষয়গুলো মাথা রেখে কাজ করছি। যারা সত্যিকার অর্থে বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত, যারা প্রমাণিত, সেই বিষয়গুলো প্রমাণসাপেক্ষে তো আমাদের হাত দিয়ে দুর্বল নেতৃত্ব তৈরি হবে না।

তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের দফতরে অনেক সিভি পড়েছে। সেগুলো ক্ষতিয়ে দেখা শুরু হয়েছে। অভিযুক্তদের কমিটিতে রাখা হবে না। কমিটিতে ত্যাগী-পরীক্ষতদের মূল্যায়ন করা হবে।

উল্লেখ্য, সরকারের চলমান শুদ্ধি অভিযান নিজদলীয় নেতাকর্মীদের থেকে শুরু হয়েছে। এর মধ্যে ক্যাসিনো-কাণ্ডে সবচেয়ে বেশি বিতর্কিত হয় আওয়ামী যুবলীগ। বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা চাঁদাবাজি, ক্যাসিনো-কাণ্ডসহ নানা নেতিবাচক কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকার কারণে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে যুবলীগ। সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির বাস্তবায়ন শুরু হয় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদকে গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে। এরপর ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট ও এনামুল হক আরমানকে গ্রেফতার করা হয়। সম্রাট, আরমানসহ বেশ কয়েক নেতাকে বহিষ্কারও করা হয়। সে সময়ের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীকেও দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

এর মধ্য দিয়ে সংগঠনটিকে পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি কাটিয়ে আনতে যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ শেখ ফজলুল হক মনির ছেলে শেখ ফজলে শামস পরশকে চেয়ারম্যান পদে রাখা হয়েছে। স্বভাবতই তিনি বাবার হাতে গড়া সংগঠনটিতে বিতর্কিতদের জায়গা দেবেন না।

Tag :

শেয়ার করুন

আওয়ামী যুবলীগে আবার ভিড়তে মরিয়া বিতর্কিতরা

আপডেট টাইম : ১০:১৭:৪৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২০

নিউজ লাইট ৭১: ক্লিন ইমেজের সংগঠন গড়তে তৎপরতা শুরুর মধ্যেই আওয়ামী যুবলীগে আবার ভিড়তে মরিয়া বিতর্কিতরা। তাদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক কমিটির টেন্ডারবাজ, ক্যাসিনো-কাণ্ডে বিতর্কিত, ছাত্রলীগ নেতার হত্যা মামলার আসামিসহ বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িতরা। ফলে যে লক্ষ্যে আওয়ামী লীগের অন্যতম এই সহযোগী সংগঠনকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা এসেছিল; তা নিয়ে আশাবাদী হলেও আশ্বস্ত হতে পারছেন না দুঃসময়ের-তৃণমূলের কর্মীরা।

জানা গেছে, গত বছরের নভেম্বরে ক্যাসিনো-কাণ্ডে আলোচনায় আসা নেতাদের বাদ দিয়ে শুধু সভপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয় যুবলীগের ৭ম জাতীয় কংগ্রেসে। ১৫১ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটির বাকি ১৪৯ পদ এখনো পূরণ হয়নি।

এখন এই প্রায় দেড়শ নেতা বাছাই করতে গলদ্ঘর্ম হচ্ছেন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। এরই মধ্যে প্রায় ১৫০০ নেতাকর্মীর জীবনবৃত্তান্ত জমা পড়েছে যুবলীগের দফতরে। তাদের মধ্যে রয়েছেন বিতর্কিত ও ক্যাসিনো-কাণ্ডে জড়িত ও হত্যার আসামিও।

এ অবস্থায় শুদ্ধি অভিযানে বাদপড়া ও বিতর্কিতরা যেন যুবলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে আসতে না পারেন, সেজন্য সংগঠনের শীর্ষ দুই নেতার কাছে চিঠি দিতে শুরু করেছেন দুঃসময়ের-তৃণমূলের কর্মীরা। এমন একটি চিঠির নমুনা এই প্রতিবেদকের হাতে রয়েছে। দলীয় তথ্য অনুযায়ী, আওয়ামী যুবলীগের ৭তম কংগ্রেসে পদ-প্রার্থীদের জন্য নির্দিষ্ট বয়সসীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। ১৫০০ সিভির মধ্যে প্রায় ৩০০টি বাছাই করা হবে। সেখানে বয়সসীমার কারণে আগের কমিটির অনেকেই এবার পূর্ণাঙ্গ কমিটি থেকে অনেকেই বাদ পড়ে যাচ্ছেন।

আগামী মার্চের মধ্যে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার পূর্ণ কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। পাশাপাশি ঢাকা মহানগরে সহযোগী সংগঠনগুলোর মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটিগুলোকেও সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। নির্দেশনা আসার পরপরই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সর্ববৃহৎ সংগঠন যুবলীগের কেন্দ্রীয় পদ-প্রত্যাশীরা জোর তদবির চালাচ্ছেন। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে আসতে মরিয়া হয়ে উঠছেন যুবলীগের সাবেক কমিটির ‘বিতর্কিত, টেন্ডারবাজ, ক্যাসিনোর সঙ্গে জড়িত, ছাত্রলীগ নেতার হত্যা মামলার আসামি’সহ বিভিন্ন অপকমের্র সঙ্গে জড়িতরা।

তবে আওয়ামী সরকারের চলমান শুদ্ধি অভিযানের মধ্যে কোনোভাবেই যেনো বিতর্কিত—টেন্ডারবাজরা ক্ষমতাসীন দলের এমন বৃহৎ সংগঠনের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে না আসতে পারে, সেজন্য দলেন দুঃসময়ের ছাত্রনেতারা সংগঠনের শীর্ষ নেতার বরাবর চিঠি প্রধান করেছেন। সাবেক কেন্দ্রীয় এক ছাত্রনেতার দেওয়া চিঠি সূত্রে জানা যায়, ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুজ্জামান বাদলকে ১৯৯২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন্নাহার হলের সামনে গুলি করে হত্যা করা হয়। সেই হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত ২ নম্বর আসামি মোয়াজ্জেম হোসেন। তিনি যুবলীগের গত কমিটির সহ-সম্পাদক ছিলেন। তিনি ছাত্রদলের নেতা ছিলেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

চিঠির সত্যতা খুঁজতে এ বিষয়ে মোয়াজ্জেম হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি নিউজ লাইট ৭১ কে বলেন, নিজের এলাকার স্থানীয় রাজনীতির কোন্দলের কারণেই এবং আমাকে চাপে রাখতে এ ধরনের চিঠি দেওয়া হয়েছে। বাদল হত্যা মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, এ মামলায় ২ নম্বর আসামি নয়, তিনি ১৪ নম্বর আসামি ছিলেন। পরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন তিনি খালাশ পান।

দলীয় সূত্র বলছে, টেন্ডারবাজ ও বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে যুবলীগে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে নির্দেশ দিয়েছে সংগঠনের অভিভাবক আওয়ামী লীগ। তবে থেমে নেই অভিযুক্তদের দৌড়ঝাঁপ। এরই মধ্যে যুবলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের বাসা ও অফিসে ভিড়ছেন বিভিন্ন অপকর্মকারীরা। চাঁদাবাজি, ক্যাসিনো কর্মকাণ্ডসহ নানা নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের নেতারাও যুবলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে স্থান পেতে জোর তদবির চালাচ্ছেন। তবে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা বিভিন্ন সভয় দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার বরাত দিয়ে বলেছেন, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের পদে দলের ত্যাগী, পরিক্ষত ও দুঃসময়ের নেতাকর্মীরাই স্থান পাবেন। এখানে অভিযুক্তরা, চাঁদাবাজি বা ক্যাসিনো-কাণ্ডে জড়িতরা স্থান পাবেন না।

এবারের যুবলীগের কমিটিতে কেমন নেতাকর্মীরা আসছেন, জানতে চাইলে আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, আমাদের নেত্রীর পরিষ্কার কথা, আমরা সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও মাদকমুক্ত, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য, সুন্দর বাংলাদেশ এগিয়ে যাওয়ার জন্য, একটি সুন্দর বসবাস চাই। আমরা সর্ব ক্ষেত্রেই এই বিষয়গুলো মাথা রেখে কাজ করছি। যারা সত্যিকার অর্থে বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত, যারা প্রমাণিত, সেই বিষয়গুলো প্রমাণসাপেক্ষে তো আমাদের হাত দিয়ে দুর্বল নেতৃত্ব তৈরি হবে না।

তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের দফতরে অনেক সিভি পড়েছে। সেগুলো ক্ষতিয়ে দেখা শুরু হয়েছে। অভিযুক্তদের কমিটিতে রাখা হবে না। কমিটিতে ত্যাগী-পরীক্ষতদের মূল্যায়ন করা হবে।

উল্লেখ্য, সরকারের চলমান শুদ্ধি অভিযান নিজদলীয় নেতাকর্মীদের থেকে শুরু হয়েছে। এর মধ্যে ক্যাসিনো-কাণ্ডে সবচেয়ে বেশি বিতর্কিত হয় আওয়ামী যুবলীগ। বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা চাঁদাবাজি, ক্যাসিনো-কাণ্ডসহ নানা নেতিবাচক কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকার কারণে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে যুবলীগ। সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির বাস্তবায়ন শুরু হয় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদকে গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে। এরপর ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট ও এনামুল হক আরমানকে গ্রেফতার করা হয়। সম্রাট, আরমানসহ বেশ কয়েক নেতাকে বহিষ্কারও করা হয়। সে সময়ের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীকেও দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

এর মধ্য দিয়ে সংগঠনটিকে পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি কাটিয়ে আনতে যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ শেখ ফজলুল হক মনির ছেলে শেখ ফজলে শামস পরশকে চেয়ারম্যান পদে রাখা হয়েছে। স্বভাবতই তিনি বাবার হাতে গড়া সংগঠনটিতে বিতর্কিতদের জায়গা দেবেন না।