ঢাকা ০৬:৫২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ওকলাহোমার মোহনায় এসে এক অন্যের সঙ্গে মিশে উদযাপনে মাতে প্রবাসী বাংলাদেশিরা

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ১০:০০:৫৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২০
  • / 113

নিউজ লাইট ৭১: জীবন ও জীবিকার দায়ে মাতৃভূমির কোল ছেড়ে শত-সহস্র মেইল দূরের ভিনদেশে পাড়ি জমান বহু বাংলাদেশি। তবে বিদেশের মাটিতে ব্যস্ত জীবনের ফাঁকে স্বদেশি ঐতিহ্যের উদযাপনে প্রায়ই মেতে ওঠেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। এতে করে শুধু যে নিজেদের একত্রিত হওয়ার উপলক্ষই তৈরি করেন তারা, সেটা নয়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বসবাসাকারী বাংলাদেশিরা প্রবাসীদের এসকল উদযাপনগুলো সারা বিশ্বব্যাপী প্রসার ঘটাচ্ছে বাঙালি ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির। যা বাঙালি জাতিসত্ত্বার প্রসারে প্রবাসী বাঙালিদের এক অসামান্য অবদান।

এবারের পিঠা উৎসবে ছিল ভাপা, পুলি, চিতই পাটিসাঁপটা, দুধ পুলি, নক্সি পিঠা, গজা পুলি, হৃদয় হরণ, মাংস পুলির মত ঐতিহ্যবাহি দেশি পিঠাগুলো।

যুক্তরাষ্ট্রের ওকলাহোমা অঙ্গরাজ্যের টালসাতে ঠিক এমনই নানা উৎসবের বর্ণিল আয়োজন করে থাকে ‘মোহনা’ নামের প্রবাসী বাংলাদেশিদের একটি কমিউনিটি। ঈদ, পূজো, পিঠা উৎসব, বৈশাখ, চৈতালি, বিজয় দিবস বা এমন ছোট-বড় যত উপলক্ষই রয়েছে, সেগুলো স্বদেশি সংস্কৃতির ছাঁটে উদযাপনের লক্ষ্যে নানা আয়োজন করে থাকে মোওনা।

সোমবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বরাবরের মত এবারও ঐতিহ্যবাহি দেশি পিঠার সমারহে এক বর্ণাঢ্য উৎসবের আয়োজন করেন তারা। বিভিন্ন প্রকার স্বদেশি পিঠার সমারহ ঘটে এবারের এই আয়োজনে। এবারের পিঠা উৎসবে ছিল ভাপা, পুলি, চিতই পাটিসাঁপটা, দুধ পুলি, নক্সি পিঠা, গজা পুলি, হৃদয় হরণ, মাংস পুলির মত ঐতিহ্যবাহি দেশি পিঠাগুলো।

প্রবাসের ব্যস্ত জীবনের সকল ক্লান্তি ভুলিয়ে সেখানকার বাংলাদেশি নারীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে এই পিঠা উৎসবের আয়োজন করে থাকেন। প্রতিটি পিঠার গায়ে আঁকা বর্ণিল নক্সীকাঁটা আর তাদের সুসজ্জিত উপস্থাপনের মাঝে দেশ ও দেশজ সংস্কৃতির প্রতি সেখানকার বাংলাদেশিদের নিবেদিত ভালবাসা প্রকাশের প্রচেষ্টাটুকু অসাধারণ মুগদ্ধতা ছড়াতে সক্ষম হয়েছে।

বর্ণিল এই পিঠা উৎসবের আয়োজন সম্পর্কে ওকলাহোমায় বসবাসকারী প্রবাসী বাংলাদেশি হাসান ইমাম শামীম জানান, যুক্তরাষ্ট্রের এই সুপরিচিত অঙ্গরাজ্যের বুকে বাংলাদেশি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য চর্চার একটি অবারিত প্রান্তর উন্মুক্ত হয়েছে মোহনার হাত ধরে। প্রতি বছর বিভিন্ন উৎসব উদযাপনের আয়োজনে বাঙালিয়ানার চর্চা বেশ   ধারাবাহিকতার সঙ্গে বজায় রেখে আসছে মোহনা। এবারের এই পিঠা উৎসবটি তারই একটি আদর্শ উদাহরণ।

আমাদের সকল হাসি-কান্না, আনন্দ-বেদনা আর পাওয়া না পাওয়ার পর্বগুলো একত্রে এসে মিশে যায় এই মোহনায়। সেই সঙ্গে বিভিন্ন উদযাপনের সাঁজে মোহনার এই প্রাঙ্গণ প্রতিবারই আমাদের জন্য হয়ে ওঠে এক টুকরো বাংলাদেশ।

জনাব শামীম বলেন, ওকলাহোমার প্রবাসীদের ব্যস্ত আর কর্মমুখী একঘেয়ে জীবনযাপনের বিবর্ণতা দূর করতে ছোট বড় প্রায় প্রতিটি ঐতিহ্যবাহি উপলক্ষের বর্ণিল আয়োজনে প্রতি বছর এভাবে রঙ ছড়ায় বাংলাদেশি কমিউনিটিটি। আমাদের সকল হাসি-কান্না, আনন্দ-বেদনা আর পাওয়া না পাওয়ার পর্বগুলো একত্রে এসে মিশে যায় এই মোহনায়। সেই সঙ্গে বিভিন্ন উদযাপনের সাঁজে মোহনার এই প্রাঙ্গণ প্রতিবারই আমাদের জন্য হয়ে ওঠে একটুকরো বাংলাদেশ।

মোহনার সকল সদস্যদের মত জনাব শামীমও বিশ্বাস করেন যে, বাংলাদেশি কনিউনিটিটর এসকল উদযাপন আয়োজনের মধ্যদিয়ে একদিকে যেমন নিজেদের জাতিসত্ত্বার প্রানণবন্ত উপলদ্ধি উপভোগ করেন এখানকার বাংলাদেশির। তেমন তাদের সন্তানদের মাঝে দেশীয় ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির একটি ধারাবাহিক চর্চাও নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে, যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।

এভাবেই নানা আয়োজনে ওকলাহোমার মোহনায় এসে এক অন্যের সঙ্গে মিশে উদযাপনে মাতে প্রবাসী বাংলাদেশিরা। এবারও বর্ণিল এই পিঠা উৎসবের আয়োজনে সেই দূর রাজ্যে চলছে বাঙালিয়ানার উদযাপন। আর প্রতিটি উপলক্ষকে ঠিক এভাবেই নিজেদের সর্বোচ্চ প্রচেষটা দিয়ে উপভোগ্য করে তোলেন তারা বাংলাদেশ আর স্বত্ত্বায় মিশে থাকা বাঙালিয়ানাকে ভালোবেসে।

Tag :

শেয়ার করুন

ওকলাহোমার মোহনায় এসে এক অন্যের সঙ্গে মিশে উদযাপনে মাতে প্রবাসী বাংলাদেশিরা

আপডেট টাইম : ১০:০০:৫৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২০

নিউজ লাইট ৭১: জীবন ও জীবিকার দায়ে মাতৃভূমির কোল ছেড়ে শত-সহস্র মেইল দূরের ভিনদেশে পাড়ি জমান বহু বাংলাদেশি। তবে বিদেশের মাটিতে ব্যস্ত জীবনের ফাঁকে স্বদেশি ঐতিহ্যের উদযাপনে প্রায়ই মেতে ওঠেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। এতে করে শুধু যে নিজেদের একত্রিত হওয়ার উপলক্ষই তৈরি করেন তারা, সেটা নয়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বসবাসাকারী বাংলাদেশিরা প্রবাসীদের এসকল উদযাপনগুলো সারা বিশ্বব্যাপী প্রসার ঘটাচ্ছে বাঙালি ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির। যা বাঙালি জাতিসত্ত্বার প্রসারে প্রবাসী বাঙালিদের এক অসামান্য অবদান।

এবারের পিঠা উৎসবে ছিল ভাপা, পুলি, চিতই পাটিসাঁপটা, দুধ পুলি, নক্সি পিঠা, গজা পুলি, হৃদয় হরণ, মাংস পুলির মত ঐতিহ্যবাহি দেশি পিঠাগুলো।

যুক্তরাষ্ট্রের ওকলাহোমা অঙ্গরাজ্যের টালসাতে ঠিক এমনই নানা উৎসবের বর্ণিল আয়োজন করে থাকে ‘মোহনা’ নামের প্রবাসী বাংলাদেশিদের একটি কমিউনিটি। ঈদ, পূজো, পিঠা উৎসব, বৈশাখ, চৈতালি, বিজয় দিবস বা এমন ছোট-বড় যত উপলক্ষই রয়েছে, সেগুলো স্বদেশি সংস্কৃতির ছাঁটে উদযাপনের লক্ষ্যে নানা আয়োজন করে থাকে মোওনা।

সোমবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বরাবরের মত এবারও ঐতিহ্যবাহি দেশি পিঠার সমারহে এক বর্ণাঢ্য উৎসবের আয়োজন করেন তারা। বিভিন্ন প্রকার স্বদেশি পিঠার সমারহ ঘটে এবারের এই আয়োজনে। এবারের পিঠা উৎসবে ছিল ভাপা, পুলি, চিতই পাটিসাঁপটা, দুধ পুলি, নক্সি পিঠা, গজা পুলি, হৃদয় হরণ, মাংস পুলির মত ঐতিহ্যবাহি দেশি পিঠাগুলো।

প্রবাসের ব্যস্ত জীবনের সকল ক্লান্তি ভুলিয়ে সেখানকার বাংলাদেশি নারীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে এই পিঠা উৎসবের আয়োজন করে থাকেন। প্রতিটি পিঠার গায়ে আঁকা বর্ণিল নক্সীকাঁটা আর তাদের সুসজ্জিত উপস্থাপনের মাঝে দেশ ও দেশজ সংস্কৃতির প্রতি সেখানকার বাংলাদেশিদের নিবেদিত ভালবাসা প্রকাশের প্রচেষ্টাটুকু অসাধারণ মুগদ্ধতা ছড়াতে সক্ষম হয়েছে।

বর্ণিল এই পিঠা উৎসবের আয়োজন সম্পর্কে ওকলাহোমায় বসবাসকারী প্রবাসী বাংলাদেশি হাসান ইমাম শামীম জানান, যুক্তরাষ্ট্রের এই সুপরিচিত অঙ্গরাজ্যের বুকে বাংলাদেশি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য চর্চার একটি অবারিত প্রান্তর উন্মুক্ত হয়েছে মোহনার হাত ধরে। প্রতি বছর বিভিন্ন উৎসব উদযাপনের আয়োজনে বাঙালিয়ানার চর্চা বেশ   ধারাবাহিকতার সঙ্গে বজায় রেখে আসছে মোহনা। এবারের এই পিঠা উৎসবটি তারই একটি আদর্শ উদাহরণ।

আমাদের সকল হাসি-কান্না, আনন্দ-বেদনা আর পাওয়া না পাওয়ার পর্বগুলো একত্রে এসে মিশে যায় এই মোহনায়। সেই সঙ্গে বিভিন্ন উদযাপনের সাঁজে মোহনার এই প্রাঙ্গণ প্রতিবারই আমাদের জন্য হয়ে ওঠে এক টুকরো বাংলাদেশ।

জনাব শামীম বলেন, ওকলাহোমার প্রবাসীদের ব্যস্ত আর কর্মমুখী একঘেয়ে জীবনযাপনের বিবর্ণতা দূর করতে ছোট বড় প্রায় প্রতিটি ঐতিহ্যবাহি উপলক্ষের বর্ণিল আয়োজনে প্রতি বছর এভাবে রঙ ছড়ায় বাংলাদেশি কমিউনিটিটি। আমাদের সকল হাসি-কান্না, আনন্দ-বেদনা আর পাওয়া না পাওয়ার পর্বগুলো একত্রে এসে মিশে যায় এই মোহনায়। সেই সঙ্গে বিভিন্ন উদযাপনের সাঁজে মোহনার এই প্রাঙ্গণ প্রতিবারই আমাদের জন্য হয়ে ওঠে একটুকরো বাংলাদেশ।

মোহনার সকল সদস্যদের মত জনাব শামীমও বিশ্বাস করেন যে, বাংলাদেশি কনিউনিটিটর এসকল উদযাপন আয়োজনের মধ্যদিয়ে একদিকে যেমন নিজেদের জাতিসত্ত্বার প্রানণবন্ত উপলদ্ধি উপভোগ করেন এখানকার বাংলাদেশির। তেমন তাদের সন্তানদের মাঝে দেশীয় ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির একটি ধারাবাহিক চর্চাও নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে, যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।

এভাবেই নানা আয়োজনে ওকলাহোমার মোহনায় এসে এক অন্যের সঙ্গে মিশে উদযাপনে মাতে প্রবাসী বাংলাদেশিরা। এবারও বর্ণিল এই পিঠা উৎসবের আয়োজনে সেই দূর রাজ্যে চলছে বাঙালিয়ানার উদযাপন। আর প্রতিটি উপলক্ষকে ঠিক এভাবেই নিজেদের সর্বোচ্চ প্রচেষটা দিয়ে উপভোগ্য করে তোলেন তারা বাংলাদেশ আর স্বত্ত্বায় মিশে থাকা বাঙালিয়ানাকে ভালোবেসে।