ঢাকা ১১:১০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জঙ্গি সংগঠন হিসেবেই জামায়াত-শিবিরকে মোকাবিলা

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ০৭:১২:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ অগাস্ট ২০২৪
  • / 21

রাজধানীর খামারবাড়ির কেআইবি ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে কৃষক লীগ আয়োজিত স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি, আলোচনা ও দোয়া মাহফিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বক্তব্য রাখছেন। ছবি: সংগৃহীত।

আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলার মাটিতে জঙ্গিদের ঠাঁই হবে না। সেইভাবে আমাদের সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। আমি দেশবাসীকে সজাগ থাকতে বলব, তাদের সহযোগিতা চাই।

এছাড়া নিষিদ্ধ ঘোষণার পর জামায়াত-শিবির ‘আন্ডারগ্রাউন্ডে গিয়ে ধ্বংসের চেষ্টা করবে’ মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এদেরকে মোকাবিলা করতে হবে ‘জঙ্গি সংগঠন’ হিসেবে।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর খামারবাড়ির কেআইবি ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে কৃষক লীগ আয়োজিত স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি, আলোচনা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

কৃষকলীগের সভাপতি সমীর চন্দ্রের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক উম্মুল কুলসুম স্মৃতির সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, কৃষি সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী বক্তব্য দেন।

অনুষ্ঠানে সাম্প্রতিক সময়ে নিহতদের স্মরণে ও ১৫ আগস্টের শহীদদের স্মরণে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। পরে প্রধানমন্ত্রী রক্তদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তানি প্রেতাত্মারা এখনো ছাড়েনি। ধর্মান্ধতার আড়ালে একটি শ্রেণি গড়ে উঠেছে। তার আঘাত এলো কোটা আন্দোলনের নামে।

‘সবার অজান্তেই তারা গড়ে উঠেছে। সেটা কোটা আন্দোলনের নামে বেরিয়ে এলো,’ বলেন তিনি।

কোটা আন্দোলনের পেছনে কে- এই প্রশ্ন তুলে সরকারপ্রধান বলেন, সারাদেশ থেকে ঢাকায় এলো। একদিকে জঙ্গি ঢুকে হত্যাকাণ্ড চালালো, অন্যদিকে মানুষের সেবা দেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোতে আঘাত হানা হলো।

বলেন তিনি, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুটেজগুলোও এসেছে। সবার হাতে ধারালো সব অস্ত্র। হানাদার বাহিনী যেভাবে আক্রমণ করেছে, সেভাবেই মেয়েদের ওপর হামলা করা হয়েছে। বাদ যায়নি সাংবাদিকরা।’

আপিল বিভাগের আদেশে কোটা ইস্যুর ফয়সালা এবং আন্দোলনকারীদের দাবি মেনে নেয়ার প্রসঙ্গ তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা যা চেয়েছিলো তার চেয়ে বেশি পেলো। যেখানে সব দাবি মেনে নেয়া হলো, সেখানে আন্দোলনে চালিয়ে যাওয়ার মানে কি? কার স্বার্থে?

‘এটা কোন ধরনের আন্দোলন? আর তাতে সমর্থন দিচ্ছে কিছু জ্ঞানীগুণী। দাবি তো মেনেই নেয়া হয়েছে,’ যোগ করেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, চারজন শিশু মারা গেছে। প্রায় দুইশোর বেশি মানুষ মারা গেল। স্থাপনাগুলো একসময় গড়ে তোলা যাবে। কিন্তু যারা গুলিবিদ্ধ হলো?

ঘরের মধ্যে গুলি লাগলো কীভাবে- এ প্রশ্ন তুলে শেখ হাসিনা বলেন, ঘরের মধ্যে গুলি লাগলো। হেলিকপ্টার থেকে গুলি করা হয়েছে বলে মিথ্যা ছড়ানো হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোটা আন্দোলনের নাম দিয়ে নাশকতা করা জঙ্গিবাদী কাজ। জাতির উদ্দেশে ভাষণে আমি সবাইকে সতর্ক করেছিলাম যে, জঙ্গিরা এর সুযোগ নিতে পারে। শিক্ষার্থীদের হতাশ না হতে বললাম। সারাদেশে যে এতো প্রাণ গেল এর দায় কার?

এ সময় প্রধানমন্ত্রী তার নেতৃত্বাধীন সরকারের সময় বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি তুলে ধরেন। বলেন, পরিশ্রম করে বিশ্বে বাংলাদেশকে মর্যাদার আসনে উন্নীত করেছিলাম। এখন বাংলাদেশ সম্পর্কে প্রতিটা জায়গায় নেতিবাচক ধারণা।

‘আমি তো নিজের জন্য নিজের পরিবারের জন্য কিছু করিনি। মানুষের জন্য করেছি। এটা কি অপরাধ? কারণ আমি জানি, যে কোনো মুহূর্তে আমার মৃত্যু হতে পারে। কারণ বারবার আমাকে হত্যার চেষ্টা হয়েছে,’ যোগ করেন সরকারপ্রধান।

কোটা আন্দোলনে হতাহতের ঘটনার তদন্ত নিয়ে তিনি বলেন, আমি চাই প্রতিটি জিনিসের তদন্ত করা হোক। জাতিসংঘ কিংবা অন্য কোনো দেশ চাইলে বিশেষজ্ঞ পাঠাক। যারাই দায়ী, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

তিনি বলেন, কোটা আন্দোলনের ছত্রছায়ায় জঙ্গিরা ভয়াল দাঁত দেখালো। এরা এখনো অপপ্রচার চালাচ্ছে। ক্ষমতায় থেকে আমি মানুষের জীবন নেবো, সেটা হতে পারে না।

‘এদের বিচার একদিন হবে। সেজন্যই জাতিসংঘের সহায়তায় সুষ্ঠু তদন্ত চেয়েছি,’ যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, পঁচাত্তরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর যুদ্ধাপরাধী ঘাতকদের মুক্তি দিয়ে তাদের রাজনীতি করার সুযোগ করে দেয়া হয়। দায়মুক্তি দিয়ে তাদের ক্ষমতায় বসানো হয়েছিলো।

সাম্প্রতিক কোটা সংস্কার আন্দোলনে সহিংসতার জন্য জামায়াতে ইসলামী ও তাদের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র শিবিরকে দায়ী করে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে তাদের নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে যাচ্ছে সরকার। নির্বাহী আদেশে সেই নিষেধাজ্ঞার প্রজ্ঞাপন শিগিগরই আসবে বলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছেন।

নিউজ লাইট ৭১

Tag :

শেয়ার করুন

জঙ্গি সংগঠন হিসেবেই জামায়াত-শিবিরকে মোকাবিলা

আপডেট টাইম : ০৭:১২:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ অগাস্ট ২০২৪

আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলার মাটিতে জঙ্গিদের ঠাঁই হবে না। সেইভাবে আমাদের সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। আমি দেশবাসীকে সজাগ থাকতে বলব, তাদের সহযোগিতা চাই।

এছাড়া নিষিদ্ধ ঘোষণার পর জামায়াত-শিবির ‘আন্ডারগ্রাউন্ডে গিয়ে ধ্বংসের চেষ্টা করবে’ মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এদেরকে মোকাবিলা করতে হবে ‘জঙ্গি সংগঠন’ হিসেবে।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর খামারবাড়ির কেআইবি ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে কৃষক লীগ আয়োজিত স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি, আলোচনা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

কৃষকলীগের সভাপতি সমীর চন্দ্রের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক উম্মুল কুলসুম স্মৃতির সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, কৃষি সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী বক্তব্য দেন।

অনুষ্ঠানে সাম্প্রতিক সময়ে নিহতদের স্মরণে ও ১৫ আগস্টের শহীদদের স্মরণে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। পরে প্রধানমন্ত্রী রক্তদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তানি প্রেতাত্মারা এখনো ছাড়েনি। ধর্মান্ধতার আড়ালে একটি শ্রেণি গড়ে উঠেছে। তার আঘাত এলো কোটা আন্দোলনের নামে।

‘সবার অজান্তেই তারা গড়ে উঠেছে। সেটা কোটা আন্দোলনের নামে বেরিয়ে এলো,’ বলেন তিনি।

কোটা আন্দোলনের পেছনে কে- এই প্রশ্ন তুলে সরকারপ্রধান বলেন, সারাদেশ থেকে ঢাকায় এলো। একদিকে জঙ্গি ঢুকে হত্যাকাণ্ড চালালো, অন্যদিকে মানুষের সেবা দেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোতে আঘাত হানা হলো।

বলেন তিনি, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুটেজগুলোও এসেছে। সবার হাতে ধারালো সব অস্ত্র। হানাদার বাহিনী যেভাবে আক্রমণ করেছে, সেভাবেই মেয়েদের ওপর হামলা করা হয়েছে। বাদ যায়নি সাংবাদিকরা।’

আপিল বিভাগের আদেশে কোটা ইস্যুর ফয়সালা এবং আন্দোলনকারীদের দাবি মেনে নেয়ার প্রসঙ্গ তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা যা চেয়েছিলো তার চেয়ে বেশি পেলো। যেখানে সব দাবি মেনে নেয়া হলো, সেখানে আন্দোলনে চালিয়ে যাওয়ার মানে কি? কার স্বার্থে?

‘এটা কোন ধরনের আন্দোলন? আর তাতে সমর্থন দিচ্ছে কিছু জ্ঞানীগুণী। দাবি তো মেনেই নেয়া হয়েছে,’ যোগ করেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, চারজন শিশু মারা গেছে। প্রায় দুইশোর বেশি মানুষ মারা গেল। স্থাপনাগুলো একসময় গড়ে তোলা যাবে। কিন্তু যারা গুলিবিদ্ধ হলো?

ঘরের মধ্যে গুলি লাগলো কীভাবে- এ প্রশ্ন তুলে শেখ হাসিনা বলেন, ঘরের মধ্যে গুলি লাগলো। হেলিকপ্টার থেকে গুলি করা হয়েছে বলে মিথ্যা ছড়ানো হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোটা আন্দোলনের নাম দিয়ে নাশকতা করা জঙ্গিবাদী কাজ। জাতির উদ্দেশে ভাষণে আমি সবাইকে সতর্ক করেছিলাম যে, জঙ্গিরা এর সুযোগ নিতে পারে। শিক্ষার্থীদের হতাশ না হতে বললাম। সারাদেশে যে এতো প্রাণ গেল এর দায় কার?

এ সময় প্রধানমন্ত্রী তার নেতৃত্বাধীন সরকারের সময় বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি তুলে ধরেন। বলেন, পরিশ্রম করে বিশ্বে বাংলাদেশকে মর্যাদার আসনে উন্নীত করেছিলাম। এখন বাংলাদেশ সম্পর্কে প্রতিটা জায়গায় নেতিবাচক ধারণা।

‘আমি তো নিজের জন্য নিজের পরিবারের জন্য কিছু করিনি। মানুষের জন্য করেছি। এটা কি অপরাধ? কারণ আমি জানি, যে কোনো মুহূর্তে আমার মৃত্যু হতে পারে। কারণ বারবার আমাকে হত্যার চেষ্টা হয়েছে,’ যোগ করেন সরকারপ্রধান।

কোটা আন্দোলনে হতাহতের ঘটনার তদন্ত নিয়ে তিনি বলেন, আমি চাই প্রতিটি জিনিসের তদন্ত করা হোক। জাতিসংঘ কিংবা অন্য কোনো দেশ চাইলে বিশেষজ্ঞ পাঠাক। যারাই দায়ী, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

তিনি বলেন, কোটা আন্দোলনের ছত্রছায়ায় জঙ্গিরা ভয়াল দাঁত দেখালো। এরা এখনো অপপ্রচার চালাচ্ছে। ক্ষমতায় থেকে আমি মানুষের জীবন নেবো, সেটা হতে পারে না।

‘এদের বিচার একদিন হবে। সেজন্যই জাতিসংঘের সহায়তায় সুষ্ঠু তদন্ত চেয়েছি,’ যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, পঁচাত্তরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর যুদ্ধাপরাধী ঘাতকদের মুক্তি দিয়ে তাদের রাজনীতি করার সুযোগ করে দেয়া হয়। দায়মুক্তি দিয়ে তাদের ক্ষমতায় বসানো হয়েছিলো।

সাম্প্রতিক কোটা সংস্কার আন্দোলনে সহিংসতার জন্য জামায়াতে ইসলামী ও তাদের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র শিবিরকে দায়ী করে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে তাদের নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে যাচ্ছে সরকার। নির্বাহী আদেশে সেই নিষেধাজ্ঞার প্রজ্ঞাপন শিগিগরই আসবে বলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছেন।

নিউজ লাইট ৭১