ঢাকা ০৮:২১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কেন্দ্রীয় ব্যাংক একদিনে ধার দিলো ২৫ হাজার কোটি টাকা

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ০৭:৫১:৩৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই ২০২৪
  • / 19

এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে আন্দোলন, সহিংসতার পর কারফিউ জারি করে সরকার। গত শুক্রবার থেকে বন্ধ ছিল ইন্টারনেট সংযোগ। ফলাফল সাধারণ মানুষের নগদ টাকার সংকট। কারণ গত শুক্রবারের পর থেকে এটিএম বুথ কিংবা ব্যাংক থেকে টাকা তোলার সুযোগ ছিল না সাধারণ গ্রাহকদের।

আবার ইন্টারনেট না থাকায় বিকাশ, নগদ, রকেটসহ মোবাইল ব্যাংকের মাধ্যমেও টাকা লেনদেন ছিল প্রায় বন্ধ। একদিকে আতংক অন্যদিকে নগদ টাকার সংকট ভাবিয়ে তোলে সাধারণ মানুষকে। ফলে বুধবার তিনদিন পর ব্যাংক খোলা পেয়ে ভিড় জমান গ্রাহকরা।

এমন বাস্তবতায় সাধারণ মানুষের নিত্যদিনের প্রয়োজন মেটাতে বেড়েছে নগদ টাকার চাহিদা। লেনদেনে স্বাভাবিকতা না থাকায় বুধবার ব্যাংকগুলোকে অতিরিক্ত টাকার যোগান দিতে হিমশিম খেতে হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বুধবার ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ২৫ হাজার ৫২১ কোটি টাকা ধার দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় বাংলাদেশ ব্যাংক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, সাড়ে পঁচিশ হাজার কোটি টাকার মধ্যে শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলো ধার নিয়েছে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা। বাকি টাকা নিয়েছে অন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশ ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, এই প্রক্রিয়ায় নিয়মিতই ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধার দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে বিশেষ পরিস্থিতিতে বুধবার ধারের অংকটা বেশ বড় দেখা গেছে।

কারণ হিসেবে তারা বলছেন, নগদ টাকার চাহিদা বেড়ে গেছে। ব্যাংক শাখার পাশাপাশি এটিএম বুথগুলোতেও নগদ টাকার চাহিদা বেড়েছে।

কর্মকর্তারা আরও জানান, ধার নেয়া এসব অর্থ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে থাকা হিসাবে ঘাটতি ও নগদ জমায় (সিআরআর) ঘাটতি হিসেবে ব্যবহার করে অনেক ব্যাংক। আবার অনেক ব্যাংক গ্রাহকের চাহিদা মেটাতেও তা ব্যবহার করে থাকে।

বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, রেপো, অ্যাসিউরড রেপো, অ্যাসিউরড লিকুইডিটি সাপোর্ট (এএলএস) ও শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোর জন্য ইসলামিক ব্যাংকস লিকুইডিটি ফ্যাসিলিটির নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। নিলামে সাতদিন মেয়াদি রেপো সুবিধার আওতায় ১৪ ব্যাংক ও দুই আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে পাঁচ হাজার সাত কোটি টাকা ধার দেয়া হয়।

১৪ দিন মেয়াদি রেপো সুবিধার আওতায় নয়টি ব্যাংককে দেয়া হয়েছে দুহাজার ৩৭০ কোটি টাকা। ২৮ দিন মেয়াদি ১২টি ব্যাংক ও দুটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হয়েছে আরও সাত হাজার ১৯৭ কোটি টাকা।

ছয় মাস মেয়াদি অ্যাসিউরড রেপোর আওতায় তিন ব্যাংককে পাঁচ হাজার ৬৯১ কোটি টাকা এবং একদিন মেয়াদি অ্যাসিউরড লিকুইডিটি সাপোর্টের আওতায় ১১টি প্রাইমারি ডিলার ব্যাংককে তিন হাজার ৭৭৪ কোটি টাকা দেয়া হয়েছে। সব মিলে বুধবারই ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধার দেয়া হয়েছে ২৫ হাজার ৫২১ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংক আরও জানায়, সাতদিন মেয়াদে ধার দেয়া টাকার সুদ হার ছিল ৮ দশমিক ৬০ শতাংশ। অন্যদিকে ১৪ দিন মেয়াদে সুদ হার ৮ দশমিক ৭০ শতাংশ ও ২৮ দিন মেয়াদি ধারের সুদ হার ছিল ৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ।

এছাড়া অ্যাসিউরড রেপো ও লিকুইডিটির সুদ হার ছিল ৮ দশমিক ৫০ শতাংশ। ইসলামী ধারার ব্যাংকের জন্য ১৪ দিন মেয়াদি মুনাফার হার নির্ধারণ করা হয়েছে সাড়ে ৫ শতাংশ। অন্যদিকে ইসলামী ধারার ব্যাংকের জন্য ২৮ দিন মেয়াদি মুনাফার হার ছিল ৩ দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে সাড়ে ৬ শতাংশ পর্যন্ত।

নিউজ লাইট ৭১

Tag :

শেয়ার করুন

কেন্দ্রীয় ব্যাংক একদিনে ধার দিলো ২৫ হাজার কোটি টাকা

আপডেট টাইম : ০৭:৫১:৩৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই ২০২৪

এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে আন্দোলন, সহিংসতার পর কারফিউ জারি করে সরকার। গত শুক্রবার থেকে বন্ধ ছিল ইন্টারনেট সংযোগ। ফলাফল সাধারণ মানুষের নগদ টাকার সংকট। কারণ গত শুক্রবারের পর থেকে এটিএম বুথ কিংবা ব্যাংক থেকে টাকা তোলার সুযোগ ছিল না সাধারণ গ্রাহকদের।

আবার ইন্টারনেট না থাকায় বিকাশ, নগদ, রকেটসহ মোবাইল ব্যাংকের মাধ্যমেও টাকা লেনদেন ছিল প্রায় বন্ধ। একদিকে আতংক অন্যদিকে নগদ টাকার সংকট ভাবিয়ে তোলে সাধারণ মানুষকে। ফলে বুধবার তিনদিন পর ব্যাংক খোলা পেয়ে ভিড় জমান গ্রাহকরা।

এমন বাস্তবতায় সাধারণ মানুষের নিত্যদিনের প্রয়োজন মেটাতে বেড়েছে নগদ টাকার চাহিদা। লেনদেনে স্বাভাবিকতা না থাকায় বুধবার ব্যাংকগুলোকে অতিরিক্ত টাকার যোগান দিতে হিমশিম খেতে হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বুধবার ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ২৫ হাজার ৫২১ কোটি টাকা ধার দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় বাংলাদেশ ব্যাংক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, সাড়ে পঁচিশ হাজার কোটি টাকার মধ্যে শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলো ধার নিয়েছে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা। বাকি টাকা নিয়েছে অন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশ ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, এই প্রক্রিয়ায় নিয়মিতই ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধার দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে বিশেষ পরিস্থিতিতে বুধবার ধারের অংকটা বেশ বড় দেখা গেছে।

কারণ হিসেবে তারা বলছেন, নগদ টাকার চাহিদা বেড়ে গেছে। ব্যাংক শাখার পাশাপাশি এটিএম বুথগুলোতেও নগদ টাকার চাহিদা বেড়েছে।

কর্মকর্তারা আরও জানান, ধার নেয়া এসব অর্থ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে থাকা হিসাবে ঘাটতি ও নগদ জমায় (সিআরআর) ঘাটতি হিসেবে ব্যবহার করে অনেক ব্যাংক। আবার অনেক ব্যাংক গ্রাহকের চাহিদা মেটাতেও তা ব্যবহার করে থাকে।

বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, রেপো, অ্যাসিউরড রেপো, অ্যাসিউরড লিকুইডিটি সাপোর্ট (এএলএস) ও শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোর জন্য ইসলামিক ব্যাংকস লিকুইডিটি ফ্যাসিলিটির নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। নিলামে সাতদিন মেয়াদি রেপো সুবিধার আওতায় ১৪ ব্যাংক ও দুই আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে পাঁচ হাজার সাত কোটি টাকা ধার দেয়া হয়।

১৪ দিন মেয়াদি রেপো সুবিধার আওতায় নয়টি ব্যাংককে দেয়া হয়েছে দুহাজার ৩৭০ কোটি টাকা। ২৮ দিন মেয়াদি ১২টি ব্যাংক ও দুটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হয়েছে আরও সাত হাজার ১৯৭ কোটি টাকা।

ছয় মাস মেয়াদি অ্যাসিউরড রেপোর আওতায় তিন ব্যাংককে পাঁচ হাজার ৬৯১ কোটি টাকা এবং একদিন মেয়াদি অ্যাসিউরড লিকুইডিটি সাপোর্টের আওতায় ১১টি প্রাইমারি ডিলার ব্যাংককে তিন হাজার ৭৭৪ কোটি টাকা দেয়া হয়েছে। সব মিলে বুধবারই ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধার দেয়া হয়েছে ২৫ হাজার ৫২১ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংক আরও জানায়, সাতদিন মেয়াদে ধার দেয়া টাকার সুদ হার ছিল ৮ দশমিক ৬০ শতাংশ। অন্যদিকে ১৪ দিন মেয়াদে সুদ হার ৮ দশমিক ৭০ শতাংশ ও ২৮ দিন মেয়াদি ধারের সুদ হার ছিল ৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ।

এছাড়া অ্যাসিউরড রেপো ও লিকুইডিটির সুদ হার ছিল ৮ দশমিক ৫০ শতাংশ। ইসলামী ধারার ব্যাংকের জন্য ১৪ দিন মেয়াদি মুনাফার হার নির্ধারণ করা হয়েছে সাড়ে ৫ শতাংশ। অন্যদিকে ইসলামী ধারার ব্যাংকের জন্য ২৮ দিন মেয়াদি মুনাফার হার ছিল ৩ দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে সাড়ে ৬ শতাংশ পর্যন্ত।

নিউজ লাইট ৭১