ঢাকা ১২:৫৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঈদযাত্রায় সড়ক হোক নির্বিঘ্ন ও স্বস্তিদায়ক

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ১০:৩৪:০৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৮ এপ্রিল ২০২৪
  • / 30

গ্রামে ঈদ করতে ঢাকা শহর ছাড়তে শুরু করেছে মানুষ। প্রতিবছর ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহায় মানুষ ঢাকা ছেড়ে দূর গ্রামে নিজের আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করতে যায়। মাত্র কয়েকদিনের জন্য এ যাওয়া। তার মধ্যেও কত সুখ তা ভুক্তভোগীরাই জানেন। গত ১৫ বছর আগে ২/৩ দিন বসেও মানুষ অনেক কষ্ট সহ্য করে যেত গ্রামে। শিকড়ের টানে এই ফেরার আনন্দ ছিলো অসীম।

পদ্মা সেতুসহ রেল ব্যবস্থার উন্নয়ন, গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত মানুষের উন্নত অর্থনীতি সবকিছু বদলেছে। একই সঙ্গে মানুষের ঘরে ফেরা আরো সহজ ও গতিশীল হয়েছে।

ঈদে আরামদায়ক যাত্রায় দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে মানুষের পছন্দের বাহন ট্রেন। কিন্তু স্বাভাবিক সময়েই রেলওয়ের সক্ষমতার চেয়ে যাত্রীর চাহিদা অন্তত ৮ থেকে ১০ গুণ। বিভিন্ন উৎসবে বিশেষ করে ঈদের সময় এই চাহিদা বেড়ে অন্তত ১৫ থেকে ২০ গুণে দাঁড়ায়। চাহিদামতো টিকিট না পেয়ে যাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। অন্যদিকে আয় কম হওয়ায় রেল লোকসান গুনছে প্রতিবছর।

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে এবারও দূরপাল্লার বেশিরভাগ বাসে আদায় করা হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া। যাত্রীরা বলছেন, কয়েকটি পরিবহনে ভাড়া বাড়িয়ে দ্বিগুণ করা হয়েছে। এ ছাড়া অনেক বাসে অর্ধেক যাত্রায়ও সংশ্লিষ্ট রুটের শেষ গন্তব্যের টিকিটের মূল্য পরিশোধে বাধ্য করা হচ্ছে। তবে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে বাস মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি।

পদ্মা সেতু চালুর পর ঢাকা থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলগামী লঞ্চের যাত্রী কমলেও ঈদ সামনে রেখে তা বাড়তে শুরু করেছে। অথচ কয়েক সপ্তাহ আগেও লঞ্চে ছিল যাত্রীর তীব্র সংকট। লঞ্চের যাত্রীদের অধিকাংশই বৃহত্তর বরিশাল অঞ্চলের। বাকিরা চাঁদপুর, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, মুন্সীগঞ্জ ও নোয়াখালীর হাতিয়ার। সড়কপথে যানজটের ভোগান্তি পোহানোর শঙ্কার পাশাপাশি অতিরিক্ত ভাড়ার কারণে অনেকেই লঞ্চে বাড়ি যাচ্ছেন।

দিনদিন যাত্রী বাড়বে বলে আশা করছেন লঞ্চ মালিক সমিতির নেতারা। কক্সবাজার ঈদের ছুটিতে অনেকেই বিমানে যাওয়ার চিন্তা করলেও বিমানের টিকিটের দামও চড়া। ৭ হাজার টাকার টিকিটের দাম হাঁকা হচ্ছে ১৬ হাজার টাকা। যানজট এড়াতে ও দ্রুত সময়ে গন্তব্যে পৌঁছতে একটি এয়ারলাইনসের টিকিট কেনেন তিনি। এক চাকরিজীবী যশোরে যাওয়ার জন্য ৫ হাজার টাকা দামের টিকিট কেনেন ৯ হাজার টাকায়। তাদের মতোই এখন বিমানের টিকিট চড়াদামে কিনতে বাধ্য হচ্ছেন যাত্রীরা। বেশি দাম দিয়েও কেউ কেউ টিকিট পাচ্ছেন না। বিমানের টিকিটেরও একটা উল্লেখযোগ্য অংশ সিন্ডিকেটের দখলে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

মধ্যবিত্তের বিলাসী জীবনযাত্রার অন্যতম বাহন হয়ে উঠেছে  বিমান। সেখানেও থাবা বসিয়েছে সিন্ডিকেট। বছরজুড়েই সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনার কারণে মারা যায় অনেক মানুষ। এবাও রেলে ধারণ ক্ষমতার ২০ গুণ যাত্রী নেয়ার কথা গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে। এখন বাসসহ সড়ক পথে বিভিন্ন  পরিবহন বেড়েছে। একই সঙ্গে নৌপথও রয়েছে। তারপরও সড়কে ঈদযাত্রীরা যেভাবে ঝুঁকি নিয়ে পরিবহনে ওঠার ছবি পত্র-পত্রিকায় প্রকাশ হচ্ছে-এতে দুর্ঘটনা বাড়ে।  যেকোনো সূত্রে ঈদযাত্রাকে আাশঙ্কামুক্ত রাখা উচিত। যেকোনো উপায়ে ঈদযাত্রায় সড়ক স্বস্তিদায়ক রাখার সর্বাত্মক ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি দেশবাসীর সঙ্গে আমাদেরও।

নিউজ লাইট ৭১

Tag :

শেয়ার করুন

ঈদযাত্রায় সড়ক হোক নির্বিঘ্ন ও স্বস্তিদায়ক

আপডেট টাইম : ১০:৩৪:০৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৮ এপ্রিল ২০২৪

গ্রামে ঈদ করতে ঢাকা শহর ছাড়তে শুরু করেছে মানুষ। প্রতিবছর ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহায় মানুষ ঢাকা ছেড়ে দূর গ্রামে নিজের আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করতে যায়। মাত্র কয়েকদিনের জন্য এ যাওয়া। তার মধ্যেও কত সুখ তা ভুক্তভোগীরাই জানেন। গত ১৫ বছর আগে ২/৩ দিন বসেও মানুষ অনেক কষ্ট সহ্য করে যেত গ্রামে। শিকড়ের টানে এই ফেরার আনন্দ ছিলো অসীম।

পদ্মা সেতুসহ রেল ব্যবস্থার উন্নয়ন, গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত মানুষের উন্নত অর্থনীতি সবকিছু বদলেছে। একই সঙ্গে মানুষের ঘরে ফেরা আরো সহজ ও গতিশীল হয়েছে।

ঈদে আরামদায়ক যাত্রায় দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে মানুষের পছন্দের বাহন ট্রেন। কিন্তু স্বাভাবিক সময়েই রেলওয়ের সক্ষমতার চেয়ে যাত্রীর চাহিদা অন্তত ৮ থেকে ১০ গুণ। বিভিন্ন উৎসবে বিশেষ করে ঈদের সময় এই চাহিদা বেড়ে অন্তত ১৫ থেকে ২০ গুণে দাঁড়ায়। চাহিদামতো টিকিট না পেয়ে যাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। অন্যদিকে আয় কম হওয়ায় রেল লোকসান গুনছে প্রতিবছর।

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে এবারও দূরপাল্লার বেশিরভাগ বাসে আদায় করা হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া। যাত্রীরা বলছেন, কয়েকটি পরিবহনে ভাড়া বাড়িয়ে দ্বিগুণ করা হয়েছে। এ ছাড়া অনেক বাসে অর্ধেক যাত্রায়ও সংশ্লিষ্ট রুটের শেষ গন্তব্যের টিকিটের মূল্য পরিশোধে বাধ্য করা হচ্ছে। তবে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে বাস মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি।

পদ্মা সেতু চালুর পর ঢাকা থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলগামী লঞ্চের যাত্রী কমলেও ঈদ সামনে রেখে তা বাড়তে শুরু করেছে। অথচ কয়েক সপ্তাহ আগেও লঞ্চে ছিল যাত্রীর তীব্র সংকট। লঞ্চের যাত্রীদের অধিকাংশই বৃহত্তর বরিশাল অঞ্চলের। বাকিরা চাঁদপুর, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, মুন্সীগঞ্জ ও নোয়াখালীর হাতিয়ার। সড়কপথে যানজটের ভোগান্তি পোহানোর শঙ্কার পাশাপাশি অতিরিক্ত ভাড়ার কারণে অনেকেই লঞ্চে বাড়ি যাচ্ছেন।

দিনদিন যাত্রী বাড়বে বলে আশা করছেন লঞ্চ মালিক সমিতির নেতারা। কক্সবাজার ঈদের ছুটিতে অনেকেই বিমানে যাওয়ার চিন্তা করলেও বিমানের টিকিটের দামও চড়া। ৭ হাজার টাকার টিকিটের দাম হাঁকা হচ্ছে ১৬ হাজার টাকা। যানজট এড়াতে ও দ্রুত সময়ে গন্তব্যে পৌঁছতে একটি এয়ারলাইনসের টিকিট কেনেন তিনি। এক চাকরিজীবী যশোরে যাওয়ার জন্য ৫ হাজার টাকা দামের টিকিট কেনেন ৯ হাজার টাকায়। তাদের মতোই এখন বিমানের টিকিট চড়াদামে কিনতে বাধ্য হচ্ছেন যাত্রীরা। বেশি দাম দিয়েও কেউ কেউ টিকিট পাচ্ছেন না। বিমানের টিকিটেরও একটা উল্লেখযোগ্য অংশ সিন্ডিকেটের দখলে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

মধ্যবিত্তের বিলাসী জীবনযাত্রার অন্যতম বাহন হয়ে উঠেছে  বিমান। সেখানেও থাবা বসিয়েছে সিন্ডিকেট। বছরজুড়েই সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনার কারণে মারা যায় অনেক মানুষ। এবাও রেলে ধারণ ক্ষমতার ২০ গুণ যাত্রী নেয়ার কথা গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে। এখন বাসসহ সড়ক পথে বিভিন্ন  পরিবহন বেড়েছে। একই সঙ্গে নৌপথও রয়েছে। তারপরও সড়কে ঈদযাত্রীরা যেভাবে ঝুঁকি নিয়ে পরিবহনে ওঠার ছবি পত্র-পত্রিকায় প্রকাশ হচ্ছে-এতে দুর্ঘটনা বাড়ে।  যেকোনো সূত্রে ঈদযাত্রাকে আাশঙ্কামুক্ত রাখা উচিত। যেকোনো উপায়ে ঈদযাত্রায় সড়ক স্বস্তিদায়ক রাখার সর্বাত্মক ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি দেশবাসীর সঙ্গে আমাদেরও।

নিউজ লাইট ৭১