ঢাকা ১২:১৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নকল ওষুধ: জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ০৯:৩০:৩২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ মার্চ ২০২৪
  • / 29

নকল ওষুধে সয়লাব হচ্ছে বাজার। মানুষের অসুখ-বিসুখ থেকে ভালো হওয়ার ওষুধগুলোতেও যদি ভেজাল থাকে তাহলে মানুষ যাবে কোথায়? গ্রাম-গঞ্জে ক্রেতার হাতে ছড়িয়ে পড়ছে এসব প্রাণঘাতী নকল ওষুধ। ব্যবসায়ীরা কোম্পানি থেকে ওষুধ কিনে যে দামে বিক্রি করে, নকল ওষুধ তার চেয়ে অনেক কম দামে বিক্রি করা হয়। এসব অসাধু ব্যবসায়ীর কারণে অন্য ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে এবং মানুষের জীবন পড়ছে ঝুঁকিতে। গুটিকয়েক নকল ব্যবসায়ীদের জন্য দেশের সব ওষুধ ব্যবসায়ীদের এ অপকর্মের দায় নিতে হচ্ছে। অ্যান্টিবায়োটিক, গ্যাস্ট্রিক এবং মন্টিলুকাস ধরনের ওষুধ বেশি নকল হচ্ছে। এগুলো ধরাও কষ্ট। ভেজাল ওষুধ আসল ওষুধ ভেবে কিনে নিলে মুনাফাখোর লাভবান হয় কিন্তু রোগী মৃত্যুমুখে পতিত হয়। কারণ হলো ভেজাল ওষুধতো রোগ সারাতে পারে না । বরং রোগীর সর্বনাশ করে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে এসব অপরাধীরা গ্রেপ্তার হলেও বের হয়ে আবার একই কাজ শুরু করে। জীবন বাঁচাতে মানুষ ওষুধ সেবন করে। কিন্তু জীবনরক্ষাকারী ওষুধে ভেজাল থাকলে বাঁচার উপায় বিনষ্ট হয়।

ভেজাল ওষুধ তৈরি এবং বাজারজাতকরণের  সঙ্গে জড়িতদের এই চক্রকে ধরতে নিয়মিত অভিযান চললেও দেখা যায়, একদল জেলে গেলে আরেক দল তৈরি হয়ে গেছে। ফলে এদের নির্মূল করা সম্ভব হচ্ছে না। ওষুধ প্রশাসন অধিপ্ততর সূত্রে জানা যায়, নকল, ভেজাল, নিম্নমানের এবং মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রির ঘটনায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে গত বছর প্রায় ২৫০টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ টাকার মতো জরিমানা করা হয়েছে।  তারপরও এদরে লাগামটানা সম্ভব হচ্ছে না। হুবহু ‘আসল’ মোড়কে গ্যাস্ট্রিক, ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, কিডনি রোগসহ বিভিন্ন জটিল রোগের নকল ওষুধ বাজারে ছাড়ছে সংঘবদ্ধ চক্র। যা দেখে ভোক্তাদের আসল-নকল পরখ করা অনেকটাই দুঃসাধ্য।

এ চক্রকে সহযোগিতা করছে অতি মুনাফালোভী কিছু ফার্মেসি মালিক। স্বনামধন্য এবং পরিচিত ওষুধ কোম্পানির ওষুধগুলোই নকল করা হয় বেশি। সাধারণত ইউনানি-হারবালের মতো কারখানাগুলোতে এসব ওষুধ উৎপন্ন করা হয়। রাতে এসব নকল ওষুধ উৎপাদন করে থাকে এসব ভেজাল ওষুধের সিন্ডিকেট। কারখানা থেকে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ঢাকায় চক্রের তালিকাভুক্ত কিছু ফার্মেসিতে এসব ওষুধ পৌঁছানো হয়। মিটফোর্ড কেন্দ্রিক কিছু অসাধু ফার্মেসি ব্যবসায়ীরা এই চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এখান থেকে পাইকারিভাবে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে এ ভেজাল ওষুধ।  আমরা মনেকরি মানুষের অসুখ-বিসুখ আছে, আছে নিরাময়ও।

আধুনিক যুগে ওষুধের ব্যবহার মানুষকে রোগমুক্ত করে বাঁচতে সাহায্য করছে। যেসব ওষুধ খেয়ে একজন মুমূর্ষু মানুষ ভালো হয়ে ওঠে সেইসব ওষুধে ভেজাল দিলে ব্যাপারটা কেমন হয়? টাকার জন্য মানুস মানুষকে হত্যা করতে দ্বিধা করছে না। এটা অমানবিকতার চরম দিক।  বিশ্ববাজারে ১৪৫টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে বাংলাদেশের ওষুধ। ভেজাল এবং নকল ওষুধ এই সুনাম এবং আস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। মাদকের চেয়েও ভয়াবহ ক্ষতি করছে এ ভেজাল ওষুধ। এইসব কোম্পানির বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা না নিলে এদের অপতৎপরতা রোধ করা দুঃসাধ্য হবে। তাই সময় থাকতে জরুরিভাবে এদের আইনের আওতায় আনা দরকার।

নিউজ লাইট ৭১

Tag :

শেয়ার করুন

নকল ওষুধ: জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে

আপডেট টাইম : ০৯:৩০:৩২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ মার্চ ২০২৪

নকল ওষুধে সয়লাব হচ্ছে বাজার। মানুষের অসুখ-বিসুখ থেকে ভালো হওয়ার ওষুধগুলোতেও যদি ভেজাল থাকে তাহলে মানুষ যাবে কোথায়? গ্রাম-গঞ্জে ক্রেতার হাতে ছড়িয়ে পড়ছে এসব প্রাণঘাতী নকল ওষুধ। ব্যবসায়ীরা কোম্পানি থেকে ওষুধ কিনে যে দামে বিক্রি করে, নকল ওষুধ তার চেয়ে অনেক কম দামে বিক্রি করা হয়। এসব অসাধু ব্যবসায়ীর কারণে অন্য ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে এবং মানুষের জীবন পড়ছে ঝুঁকিতে। গুটিকয়েক নকল ব্যবসায়ীদের জন্য দেশের সব ওষুধ ব্যবসায়ীদের এ অপকর্মের দায় নিতে হচ্ছে। অ্যান্টিবায়োটিক, গ্যাস্ট্রিক এবং মন্টিলুকাস ধরনের ওষুধ বেশি নকল হচ্ছে। এগুলো ধরাও কষ্ট। ভেজাল ওষুধ আসল ওষুধ ভেবে কিনে নিলে মুনাফাখোর লাভবান হয় কিন্তু রোগী মৃত্যুমুখে পতিত হয়। কারণ হলো ভেজাল ওষুধতো রোগ সারাতে পারে না । বরং রোগীর সর্বনাশ করে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে এসব অপরাধীরা গ্রেপ্তার হলেও বের হয়ে আবার একই কাজ শুরু করে। জীবন বাঁচাতে মানুষ ওষুধ সেবন করে। কিন্তু জীবনরক্ষাকারী ওষুধে ভেজাল থাকলে বাঁচার উপায় বিনষ্ট হয়।

ভেজাল ওষুধ তৈরি এবং বাজারজাতকরণের  সঙ্গে জড়িতদের এই চক্রকে ধরতে নিয়মিত অভিযান চললেও দেখা যায়, একদল জেলে গেলে আরেক দল তৈরি হয়ে গেছে। ফলে এদের নির্মূল করা সম্ভব হচ্ছে না। ওষুধ প্রশাসন অধিপ্ততর সূত্রে জানা যায়, নকল, ভেজাল, নিম্নমানের এবং মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রির ঘটনায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে গত বছর প্রায় ২৫০টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ টাকার মতো জরিমানা করা হয়েছে।  তারপরও এদরে লাগামটানা সম্ভব হচ্ছে না। হুবহু ‘আসল’ মোড়কে গ্যাস্ট্রিক, ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, কিডনি রোগসহ বিভিন্ন জটিল রোগের নকল ওষুধ বাজারে ছাড়ছে সংঘবদ্ধ চক্র। যা দেখে ভোক্তাদের আসল-নকল পরখ করা অনেকটাই দুঃসাধ্য।

এ চক্রকে সহযোগিতা করছে অতি মুনাফালোভী কিছু ফার্মেসি মালিক। স্বনামধন্য এবং পরিচিত ওষুধ কোম্পানির ওষুধগুলোই নকল করা হয় বেশি। সাধারণত ইউনানি-হারবালের মতো কারখানাগুলোতে এসব ওষুধ উৎপন্ন করা হয়। রাতে এসব নকল ওষুধ উৎপাদন করে থাকে এসব ভেজাল ওষুধের সিন্ডিকেট। কারখানা থেকে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ঢাকায় চক্রের তালিকাভুক্ত কিছু ফার্মেসিতে এসব ওষুধ পৌঁছানো হয়। মিটফোর্ড কেন্দ্রিক কিছু অসাধু ফার্মেসি ব্যবসায়ীরা এই চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এখান থেকে পাইকারিভাবে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে এ ভেজাল ওষুধ।  আমরা মনেকরি মানুষের অসুখ-বিসুখ আছে, আছে নিরাময়ও।

আধুনিক যুগে ওষুধের ব্যবহার মানুষকে রোগমুক্ত করে বাঁচতে সাহায্য করছে। যেসব ওষুধ খেয়ে একজন মুমূর্ষু মানুষ ভালো হয়ে ওঠে সেইসব ওষুধে ভেজাল দিলে ব্যাপারটা কেমন হয়? টাকার জন্য মানুস মানুষকে হত্যা করতে দ্বিধা করছে না। এটা অমানবিকতার চরম দিক।  বিশ্ববাজারে ১৪৫টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে বাংলাদেশের ওষুধ। ভেজাল এবং নকল ওষুধ এই সুনাম এবং আস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। মাদকের চেয়েও ভয়াবহ ক্ষতি করছে এ ভেজাল ওষুধ। এইসব কোম্পানির বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা না নিলে এদের অপতৎপরতা রোধ করা দুঃসাধ্য হবে। তাই সময় থাকতে জরুরিভাবে এদের আইনের আওতায় আনা দরকার।

নিউজ লাইট ৭১