ঢাকা ০৬:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নেই কপোতাক্ষ নদের সীমানা পিলার

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ০৮:৩৫:৪৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ মার্চ ২০২৪
  • / 33

যশোরের চৌগাছা উপজেলায় কপোতাক্ষ নদের নেই কোনো সীমানা পিলার। ফলে প্রায় শত কোটি টাকা ব্যয়ে খনন কাজ করলেও দখল মুক্ত হয়নি শতশত একর জমি। সীমানা পিলার না থাকায় খননকৃত মাটি-কাঁদা ফেলা হয়েছে নদের মধ্যেই। ফলে নদের প্লাবনভূমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিন চৌগাছা পৌর শহরের চৌগাছা-মহেশপুর সড়কে ব্রিজঘাট এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে গেলে এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, নদের জমির সীমানা পিলার না থাকায় কপোতাক্ষ খননে নানা অনিয়ম হয়েছে।

যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, কপোতাক্ষ নদ খনন প্রকল্পের আওতায় আমিন এন্ড কোং, আবুল কালাম আজাদ ও নুর হোসেনসহ ১১ জন ঠিকাদারের মাধ্যমে যশোরের চৌগাছা উপজেলার তাহেরপুর থেকে ঝিকরগাছা উপজেলা ও মণিরামপুর উপজেলার চাকলা পর্যন্ত মোট ৭৯ কিলোমিটার কপোতাক্ষ নদ পুনঃখনন ও সংস্কার কাজ করছেন। যা বর্ষা মৌসুমের জন্য বন্ধ রয়েছে।

২০২০-২১ অর্থ বছরে কপোতাক্ষ নদ খননের উদ্যোগ গ্রহণ করে সরকার। নদে পানি বেশি থাকায় ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে শুরু হয় খনন কাজ। এ প্রকল্পের কাজ শেষ হবে ২০২৪ সালের জুন মাসে। যার ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৭০ থেকে ৮০ কোটি টাকা।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, এ কপোতাক্ষ খননে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিশেষ সুবিধা নিয়ে নদের দুই পাশের (বাজার) সংলগ্ন অসংখ্য মালিকানা নীচু জমি ভরাট করা হয়েছে। একাজ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এছাড়া নদের ম্যাপ অনুযায়ী দুই ধারের সীমানায় কোন পিলারও পোতা হয়নি। দায়সারাভাবে নদের মাঝখান বরাবর সরু খাল খনন করা হয়েছে।

স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, নদের জমি যারা দখলে রেখেছেন তারা এলাকার প্রভাবশালী ও প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে সরকারি দলের সাথে সম্পৃক্ত। ওই সব ব্যক্তি নানাভাবে দেন দরবার করে তাদের স্থাপনা রক্ষা করছেন। এইভাবে যদি নদ খননকাজ সম্পন্ন করা হয় তাহলে সরকারের এই উদ্যোগ কোনোভাবেই সফল হবে না।

এ বিষয়ে কপোতাক্ষ বাঁচাও আন্দোলনের স্থানীয় নেতারা বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতি নদের নিজস্ব জমির সীমানায় কোন পিলার না পোতায় নদ দখল মুক্ত হচ্ছে না। সে কারণে নদ সরু খালে পরিণত হয়েছে। নদ খননের আগে এর যে প্রশস্ততা ছিল, খননের পরে তা আরও ছোট সরু খালে পরিণত হচ্ছে। নদ হারিয়েছে তার নব্যতা। তাঁরা বলেন, নদ খননে সরকার কোটি-কোটি টাকা ব্যয় করলেও তা বিন্দু মাত্র কাজে আসেনি।

নদের ঠিকাদার আব্দুল মান্নান মান্না বলেন, কপোতাক্ষ খননে কোন অনিয়ম করা হয়নি। পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত সীমানা বরাবর খনন করা হচ্ছে। তবে মালিকানার জমি ও পুকুর ভরাটের বিষয় তিনি বলেন, খননের শুরুতে কয়েকটি পুকুর ভরাট করা হয়েছিল।

এ ব্যাপারে যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জী বলেন, নদ খননের কাজ চলছে ফলে সীমানা পিলার দিলে সেটা মাটিতে ঢেকে যাবে। তাই খনন শেষে হলে সীমানা ঠিক করে পিলার দেওয়া হবে। অতিদ্রুত সরেজমিনে গিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিউজ লাইট ৭১

Tag :

শেয়ার করুন

নেই কপোতাক্ষ নদের সীমানা পিলার

আপডেট টাইম : ০৮:৩৫:৪৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ মার্চ ২০২৪

যশোরের চৌগাছা উপজেলায় কপোতাক্ষ নদের নেই কোনো সীমানা পিলার। ফলে প্রায় শত কোটি টাকা ব্যয়ে খনন কাজ করলেও দখল মুক্ত হয়নি শতশত একর জমি। সীমানা পিলার না থাকায় খননকৃত মাটি-কাঁদা ফেলা হয়েছে নদের মধ্যেই। ফলে নদের প্লাবনভূমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিন চৌগাছা পৌর শহরের চৌগাছা-মহেশপুর সড়কে ব্রিজঘাট এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে গেলে এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, নদের জমির সীমানা পিলার না থাকায় কপোতাক্ষ খননে নানা অনিয়ম হয়েছে।

যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, কপোতাক্ষ নদ খনন প্রকল্পের আওতায় আমিন এন্ড কোং, আবুল কালাম আজাদ ও নুর হোসেনসহ ১১ জন ঠিকাদারের মাধ্যমে যশোরের চৌগাছা উপজেলার তাহেরপুর থেকে ঝিকরগাছা উপজেলা ও মণিরামপুর উপজেলার চাকলা পর্যন্ত মোট ৭৯ কিলোমিটার কপোতাক্ষ নদ পুনঃখনন ও সংস্কার কাজ করছেন। যা বর্ষা মৌসুমের জন্য বন্ধ রয়েছে।

২০২০-২১ অর্থ বছরে কপোতাক্ষ নদ খননের উদ্যোগ গ্রহণ করে সরকার। নদে পানি বেশি থাকায় ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে শুরু হয় খনন কাজ। এ প্রকল্পের কাজ শেষ হবে ২০২৪ সালের জুন মাসে। যার ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৭০ থেকে ৮০ কোটি টাকা।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, এ কপোতাক্ষ খননে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিশেষ সুবিধা নিয়ে নদের দুই পাশের (বাজার) সংলগ্ন অসংখ্য মালিকানা নীচু জমি ভরাট করা হয়েছে। একাজ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এছাড়া নদের ম্যাপ অনুযায়ী দুই ধারের সীমানায় কোন পিলারও পোতা হয়নি। দায়সারাভাবে নদের মাঝখান বরাবর সরু খাল খনন করা হয়েছে।

স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, নদের জমি যারা দখলে রেখেছেন তারা এলাকার প্রভাবশালী ও প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে সরকারি দলের সাথে সম্পৃক্ত। ওই সব ব্যক্তি নানাভাবে দেন দরবার করে তাদের স্থাপনা রক্ষা করছেন। এইভাবে যদি নদ খননকাজ সম্পন্ন করা হয় তাহলে সরকারের এই উদ্যোগ কোনোভাবেই সফল হবে না।

এ বিষয়ে কপোতাক্ষ বাঁচাও আন্দোলনের স্থানীয় নেতারা বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতি নদের নিজস্ব জমির সীমানায় কোন পিলার না পোতায় নদ দখল মুক্ত হচ্ছে না। সে কারণে নদ সরু খালে পরিণত হয়েছে। নদ খননের আগে এর যে প্রশস্ততা ছিল, খননের পরে তা আরও ছোট সরু খালে পরিণত হচ্ছে। নদ হারিয়েছে তার নব্যতা। তাঁরা বলেন, নদ খননে সরকার কোটি-কোটি টাকা ব্যয় করলেও তা বিন্দু মাত্র কাজে আসেনি।

নদের ঠিকাদার আব্দুল মান্নান মান্না বলেন, কপোতাক্ষ খননে কোন অনিয়ম করা হয়নি। পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত সীমানা বরাবর খনন করা হচ্ছে। তবে মালিকানার জমি ও পুকুর ভরাটের বিষয় তিনি বলেন, খননের শুরুতে কয়েকটি পুকুর ভরাট করা হয়েছিল।

এ ব্যাপারে যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জী বলেন, নদ খননের কাজ চলছে ফলে সীমানা পিলার দিলে সেটা মাটিতে ঢেকে যাবে। তাই খনন শেষে হলে সীমানা ঠিক করে পিলার দেওয়া হবে। অতিদ্রুত সরেজমিনে গিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিউজ লাইট ৭১