ঢাকা ১০:২৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অলি ধরলো কোকেনসহ বিদেশি নাগরিক

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ০৪:১৬:০০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৪
  • / 67

কোকেনসহ কোকেনসহ বিদেশি নাগরিককে আটক করা হয়েছে। ছবি- সংগৃহীত

মাত্র একদিন আগে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় কোকেনের চালান আটকের পর এবার কোকেনসহ তাঞ্জানিয়ান নাগরিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় উত্তরার একটি আবাসিক হোটেলে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের ডগ স্কোয়াড এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের যৌথ অভিযানে ২০০ গ্রাম কোকেনসহ মোহাম্মেদী আলি(৫৫) নামের এক তাঞ্জানিয়ান নাগরিককে আটক করা হয়।

এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জিয়াউল হক জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ এবং ডিএনসির একটি যৌথ দল উত্তরার হোটেল এফোর্ড ইন এ অভিযান চালায়। এ সময় তাদের সাথে এয়ারপোর্ট এপিবিএন এর ডগ স্কোয়াড ও অংশ নেয়। হোটেলটির দোতলায় ১০২ নাম্বার রুমে ছিলেন তাঞ্জানিয়ার অধিবাসী মোহাম্মেদি আলি(৫৫)। প্রথমেই তাকে আটক করে মাদকের ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি তা অস্বীকার করেন। এ সময় সাথে থাকা এপিবিএন ডগ স্কোয়াডের সহায়তায় মোহাম্মেদি আলির কক্ষটিতে তল্লাশী চালানো হয়। তল্লাশী চলাকালে এপিবিএন ডগ স্কোয়াডের ডগ অলি বিদেশি মোহাম্মেদির সাথে থাকা কালো একটি ব্যাগে মাদক রয়েছে বলে তার হ্যান্ডলারকে সতর্ক করে। পরে ম্যানুয়ালি ব্যাগটি সার্চ করলে তার ভেতরে বিশেষ কায়দায় লুকায়িত অবস্থায় ২০০ গ্রাম কোকেন উদ্ধার করা হয়। যার আন্তর্জাতিক বাজার মূল্য প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জিয়াউল হক আরো জানান, ২০১৭ সালে এয়ারপোর্ট এপিবিএনের ডগ স্কোয়াড হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দায়িত্ব পালন শুরু করে। শুরুতে ৮ টি ডগ দিয়ে শুরু হলেও বর্তমানে ২২ টি ডগ রয়েছে এপিবিএনের। এসকল ডগ বিস্ফোরক এবং মাদক উদ্ধারে পারদর্শী। আজকের অভিযানে ডগ অলি এবং তার হ্যান্ডলার সুনেত্রার সহযোগিতায় মাদকের ব্যাগটি শনাক্ত করা হয়। গ্রেফতারকৃত মোহাম্মেদি আলির বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

এর আগে বুধবার (২৪ জানুয়ারি) রাতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সলিড কোকেনের চালান আটক করা হয়েছে। জব্দকৃত কোকেনের পরিমান প্রায় কেজি তিনশ গ্রাম। যার দাম ১০০ কোটি টাকার উপরে। এ ঘটনায় এক নারীকে আটক করা হয়েছে। সংস্থার দাবি, এই মাদক বাংলাদেশে ব্যবহারের জন্য আসেনি। এ মাদক জব্দ করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)। পরে এ নিয়ে বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ডিএনসির উত্তর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিচালক (অপারেশন) তানভীর মমতাজ জানায়, কোকেনের এই চালানটি আফ্রিকার দেশ মালউ অথবা ইথোপিয়া থেকে বাংলাদেশে এসেছে। বাংলাদেশকে ট্রানজিট রুট হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। কারণ, এই পরিমাণ কোকেনের চাহিদা বাংলাদেশে নেই বলে জানান এই কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, গোপন খবরের ভিত্তিতে এই চালান ডিএনসির হাতে এসেছে। নোমথেনডাজো তাওয়েরা সোকো প্রথমে মালউ থেকে ইথোপিয়া যান। পরে তিনি ইথোপিয়া থেকে যান দোহাতে এবং দোহা থেকে কাতারের এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে বাংলাদেশে আসেন। আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি তার বাংলাদেশ থেকে আবারও মালউতে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। আমাদের ধারণা তাওয়েরা সোকো কোকেনের এ চালানটি মালউ অথবা ইথোপিয়া থেকে সংগ্রহ করেছেন।

জিজ্ঞাসাবাদে সোকো জানান, ২০২৩ সালে তিনি বাংলাদেশে একবার এসেছিলেন গার্মেন্টস ব্যবসার কথা বলে। এবারও তিনি বাংলাদেশের একটি গার্মেন্টসের আমন্ত্রণপত্র নিয়ে আসেন। অন অ্যারাইভাল ভিসা নেওয়ার জন্য তিনি তার পরিচয় লুকিয়ে গার্মেন্টস ব্যবসার নাম করে বাংলাদেশে ঢোকেন।

সোকো মালউতে পেশায় একজন নার্স। তিনি মূলত কোকেনের এ চালানের বহনকারী। বাংলাদেশে থাকা বিদেশি নাগরিকের কাছে এ চালান পৌঁছে দিয়ে নিজ দেশে চলে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল সোকোর। আমরা একজন বিদেশিকে সন্দেহ করছি। তদন্তের স্বার্থে এ বিষয়ে বেশি কিছু বলতে চাচ্ছি না, আমরা আশা করি চক্রটিকে ধরতে পারব।

নিউজ লাইট ৭১

Tag :

শেয়ার করুন

অলি ধরলো কোকেনসহ বিদেশি নাগরিক

আপডেট টাইম : ০৪:১৬:০০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৪

মাত্র একদিন আগে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় কোকেনের চালান আটকের পর এবার কোকেনসহ তাঞ্জানিয়ান নাগরিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় উত্তরার একটি আবাসিক হোটেলে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের ডগ স্কোয়াড এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের যৌথ অভিযানে ২০০ গ্রাম কোকেনসহ মোহাম্মেদী আলি(৫৫) নামের এক তাঞ্জানিয়ান নাগরিককে আটক করা হয়।

এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জিয়াউল হক জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ এবং ডিএনসির একটি যৌথ দল উত্তরার হোটেল এফোর্ড ইন এ অভিযান চালায়। এ সময় তাদের সাথে এয়ারপোর্ট এপিবিএন এর ডগ স্কোয়াড ও অংশ নেয়। হোটেলটির দোতলায় ১০২ নাম্বার রুমে ছিলেন তাঞ্জানিয়ার অধিবাসী মোহাম্মেদি আলি(৫৫)। প্রথমেই তাকে আটক করে মাদকের ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি তা অস্বীকার করেন। এ সময় সাথে থাকা এপিবিএন ডগ স্কোয়াডের সহায়তায় মোহাম্মেদি আলির কক্ষটিতে তল্লাশী চালানো হয়। তল্লাশী চলাকালে এপিবিএন ডগ স্কোয়াডের ডগ অলি বিদেশি মোহাম্মেদির সাথে থাকা কালো একটি ব্যাগে মাদক রয়েছে বলে তার হ্যান্ডলারকে সতর্ক করে। পরে ম্যানুয়ালি ব্যাগটি সার্চ করলে তার ভেতরে বিশেষ কায়দায় লুকায়িত অবস্থায় ২০০ গ্রাম কোকেন উদ্ধার করা হয়। যার আন্তর্জাতিক বাজার মূল্য প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জিয়াউল হক আরো জানান, ২০১৭ সালে এয়ারপোর্ট এপিবিএনের ডগ স্কোয়াড হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দায়িত্ব পালন শুরু করে। শুরুতে ৮ টি ডগ দিয়ে শুরু হলেও বর্তমানে ২২ টি ডগ রয়েছে এপিবিএনের। এসকল ডগ বিস্ফোরক এবং মাদক উদ্ধারে পারদর্শী। আজকের অভিযানে ডগ অলি এবং তার হ্যান্ডলার সুনেত্রার সহযোগিতায় মাদকের ব্যাগটি শনাক্ত করা হয়। গ্রেফতারকৃত মোহাম্মেদি আলির বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

এর আগে বুধবার (২৪ জানুয়ারি) রাতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সলিড কোকেনের চালান আটক করা হয়েছে। জব্দকৃত কোকেনের পরিমান প্রায় কেজি তিনশ গ্রাম। যার দাম ১০০ কোটি টাকার উপরে। এ ঘটনায় এক নারীকে আটক করা হয়েছে। সংস্থার দাবি, এই মাদক বাংলাদেশে ব্যবহারের জন্য আসেনি। এ মাদক জব্দ করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)। পরে এ নিয়ে বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ডিএনসির উত্তর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিচালক (অপারেশন) তানভীর মমতাজ জানায়, কোকেনের এই চালানটি আফ্রিকার দেশ মালউ অথবা ইথোপিয়া থেকে বাংলাদেশে এসেছে। বাংলাদেশকে ট্রানজিট রুট হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। কারণ, এই পরিমাণ কোকেনের চাহিদা বাংলাদেশে নেই বলে জানান এই কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, গোপন খবরের ভিত্তিতে এই চালান ডিএনসির হাতে এসেছে। নোমথেনডাজো তাওয়েরা সোকো প্রথমে মালউ থেকে ইথোপিয়া যান। পরে তিনি ইথোপিয়া থেকে যান দোহাতে এবং দোহা থেকে কাতারের এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে বাংলাদেশে আসেন। আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি তার বাংলাদেশ থেকে আবারও মালউতে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। আমাদের ধারণা তাওয়েরা সোকো কোকেনের এ চালানটি মালউ অথবা ইথোপিয়া থেকে সংগ্রহ করেছেন।

জিজ্ঞাসাবাদে সোকো জানান, ২০২৩ সালে তিনি বাংলাদেশে একবার এসেছিলেন গার্মেন্টস ব্যবসার কথা বলে। এবারও তিনি বাংলাদেশের একটি গার্মেন্টসের আমন্ত্রণপত্র নিয়ে আসেন। অন অ্যারাইভাল ভিসা নেওয়ার জন্য তিনি তার পরিচয় লুকিয়ে গার্মেন্টস ব্যবসার নাম করে বাংলাদেশে ঢোকেন।

সোকো মালউতে পেশায় একজন নার্স। তিনি মূলত কোকেনের এ চালানের বহনকারী। বাংলাদেশে থাকা বিদেশি নাগরিকের কাছে এ চালান পৌঁছে দিয়ে নিজ দেশে চলে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল সোকোর। আমরা একজন বিদেশিকে সন্দেহ করছি। তদন্তের স্বার্থে এ বিষয়ে বেশি কিছু বলতে চাচ্ছি না, আমরা আশা করি চক্রটিকে ধরতে পারব।

নিউজ লাইট ৭১