প্রতীক বরাদ্দের পর আগামীকাল থেকে পুরোদমে প্রচারের মাঠে থাকবেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা
- আপডেট টাইম : ০১:৪৯:২৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারী ২০২০
- / 103
নিউজ লাইট ৭১ রিপোর্ট: ঢাকা উত্তর এবং দক্ষিণ সিটি নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিলর পদে আজ বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। আজই জানা যাবে কে কে প্রতিযোগিতার মাঠে রয়েছেন। আগামীকাল হবে প্রতীক বরাদ্দ। যদিও প্রতীক বরাদ্দের পর আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরুর রেওয়াজ রয়েছে। তবে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন থেকেই প্রার্থীরা প্রচারে নামতে পারেন। এতে আচরণবিধি লঙ্ঘনে জরিমানার শিকার হবেন না। এ বিবেচনায় দুই সিটির মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা চাইলে দৃশ্যমানভাবে আজ থেকে অনানুষ্ঠানিক প্রচারে নামতে পারবেন। তবে প্রতীক বরাদ্দের পর আগামীকাল থেকে পুরোদমে প্রচারের মাঠে থাকবেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা। এর মাধ্যমে রাজধানীর দুই সিটিতে ভোটযুদ্ধের দামামা বেজে উঠবে। আগামী ২৮ জানুয়ারি মধ্যরাত পর্যন্ত প্রচার চালাতে পারবেন। কারণ ভোটের ৩২ ঘণ্টা আগেই শেষ হয়ে যায় প্রচার।
এদিকে নির্বাচনে লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টিসহ একাধিক রাজনৈতিক দলের প্রার্থী অংশ নেওয়ায় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার পরিবেশ তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে গত সিটি নির্বাচনের মতো এবার মাঠ ছেড়ে না যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপির মেয়র প্রার্থীরা। এতে নির্বাচনে অঘোষিত উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। ফলে এ নির্বাচনের মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে নৌকা-ধানের শীষের মধ্যে তা দুই দলের শীর্ষ রাজনীতিকদের বক্তব্যে উঠে এসেছে। কেউ কাউকে না ছাড় দিতে নিজ নিজ বলয় গড়ে তুলেছে।
উত্তরে ক্ষমতাসীন দলের মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলাম ইতোমধ্যে ব্যবসায়িক ও সাংবাদিকদের শীর্ষ ব্যক্তিদের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক সভায় মিলিত হয়েছেন। নির্বাচনের কৌশল ও মেন্যুফেস্টুতে কী রাখা যায়, যাতে ভোটাররা আকৃষ্ট হতে পারেন; সে বিষয়ে তাদের মতামত ও পরামর্শ নিয়েছেন। একই সঙ্গে সদ্য বিদায়ী মেয়র হওয়ার সুবাধে আওয়ামী লীগের এই প্রার্থী ডেঙ্গুতে ভোটারদের কাছাকাছি পৌঁছানোর কারণে তিনি প্রচারে ঢের এগিয়ে রয়েছেন।
এ সিটির বিএনপির প্রার্থী তাবিথ আওয়াল নিজ দল ও কর্মীদের সুসংঘটিত করতে এত দিন নিরলসভাবে কাজ করেছেন। বিগত সিটি নির্বাচনে প্রার্থী থাকায় বাড়তি কিছু সুবিধা পাবেন তিনি। কারণ প্রায় সাড়ে ৩ লাখ ভোট পেয়েছিলেন ওই নির্বাচনে। ওই সময়ের প্রচারের সুবিধা এবার তাকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সামান্য হলেও হেভিওয়েট ওই প্রার্থীর কাছাকাছি রাখছে। এ ছাড়া তার বাবা আবদুল আউয়াল মিন্টু বড় ব্যবসায়ী হওয়ায় আতিকুলেল মতো তিনিও কিছু আনুকূল্য পেতে পারেন।
দক্ষিণের শেখ পরিবারের সদস্য হওয়ার সুবাধে প্রচারে কিছুটা এগিয়ে রয়েছেন শেখ ফজলে নূর তাপস। কারণ তফসিল ঘোষণার আগেই তিনি ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছিলেন নির্বাচনী এলাকার এমপির পরিচয়ে। অনেক ভোটার এতে তার প্রতি কিছুটা খুশি রয়েছেন। ফলে আনুষ্ঠানিক প্রচারের আগেই তার প্রচার কিছুটা সেরে রাখেন তিনি; এটাও বাড়তি একটা প্রেরণা সিটি ভোটের হেভিওয়েট ওই প্রার্থীর জন্য।
অন্যদিকে, বিএনপির প্রার্থী ইশরাক সাবেক অবিভক্ত সিটির মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে এবং পুরোনো ঢাকার বাসিন্দা হওয়ার সুবাধে বাড়তি কিছু সুবিধা পেয়ে আছেন। তবে অভিজ্ঞতায় ব্যাপক পিছিয়ে থাকায় নির্বাচনে বাড়তি সুবিধা পেয়ে যেতে পারেন ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস।
তবে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে প্রার্থী অভিজ্ঞ, না অনভিজ্ঞ তা খুব বেশি পার্থক্য করে না বলে মনে করছেন সাধারণ ভোটাররা। তাদের ভাষ্যমতে, যেখানে প্রতীক মুখ্য। এ বিবেচনায় নৌকা-ধানের শীষের প্রতীক যারাই পেয়ে যান, অঘোষিত সুবিধা পেয়ে যান তারা। প্রচারে কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও প্রতীকে তারা থাকেন বরাবরই এগিয়ে। ফলে জাতীয় পার্টিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল প্রার্থী দিলেও আলোচনায় ওঠে আসেন না।
এদিকে, সিটি নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন আন্দোলন-সংগ্রামে যাদের কাছে পেয়েছিলেন, তারা এখনো সমর্থন জানাননি। সেদিক থেকে এগিয়ে রয়েছেন বিএনপির প্রার্থীরা। কারণ সংবিধানপ্রণেতা ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন নির্বাচনী ঐক্যফ্রন্ট বুধবার বিএনপির প্রার্থীদের সমর্থন দেওয়ায় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার নতুন মেরূকরণ তৈরি হয়েছে। সরকারবিরোধী এই জোটের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই দুই প্রার্থীর পক্ষে জোটের নেতারা বিভিন্ন প্রচারণাতেও অংশ নেবেন।