ঢাকা ০৬:১১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নিয়মিত ধূমপান করার ফলে শরীরে পাকাপাকিভাবে পরিবর্তন আসতে পারে।

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ১১:২৫:৫০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩ জানুয়ারী ২০২০
  • / 96

নিউজ লাইট ৭১ রিপোর্ট: যারা ধূমপান করেন, এমনকি যারা আগে ধূমপান করতেন এবং এখন ছেড়ে দিয়েছেন, তারাও অধূমপায়ীদের চেয়ে বেশি শারীরিক যন্ত্রণা ভোগ করেন বলে নতুন এক গবেষণায় উঠে এসেছে।

২ লাখ ২০ হাজার মানুষ নিয়ে চালানো ইউসিএলের এক নতুন গবেষণায় উঠে এসেছে এই তথ্য।

এর কারণ নিশ্চিতভাবে না জানলেও গবেষকরা ধারণা করছেন কোনো সময়ে নিয়মিত ধূমপান করার ফলে শরীরে পাকাপাকিভাবে পরিবর্তন আসতে পারে।

২০০৯ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে বিবিসির একটি অনলাইন জরিপে অংশ নেয়া মানুষের তথ্য উপাত্ত দিয়ে তৈরি করা হয়েছে গবেষণাটি।

কখনো নিয়মিত ধূমপান করেননি, একসময় নিয়মিত ধূমপান করতেন, বর্তমানে নিয়মিত ধূমপান করেন- গবেষণায় অংশ নেয়া মানুষকে এমন ৩টি ভাগে ভাগ করা হয়।

তাদের শারীরিক যন্ত্রণার পরিমাণ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয় এবং পরবর্তীতে তাদের উত্তরের ভিত্তিতে তৈরি করা শূন্য থেকে ১০০ পর্যন্ত একটি স্কেলে সেই উত্তর বসানো হয়।

যারা কখনো ধূমপান করেননি, তাদের চেয়ে বর্তমান ও সাবেক ধূমপায়ীরা গড়ে ১ থেকে ২ পয়েন্ট বেশি পান, অর্থাৎ তাদের শারীরিক যন্ত্রণার হার অধূমপায়ীদের চেয়ে বেশি। অথবা বলা যায়, ধূমপান ছেড়ে দিলেও ভবিষ্যতে এই অভ্যাসের কারণে শারীরিক যন্ত্রণা হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে।

গবেষকদের একজন ডক্টর ওলগা পারস্কি বলেন, ‘গবেষণার প্রধান আবিষ্কার হলো, সাবেক ধূমপায়ীরাও অপেক্ষাকৃত বেশি শারীরিক যন্ত্রণা নিয়ে জীবনযাপন করেন।’ কিন্তু এটি চিকিৎসাগত দিক থেকে অর্থবহ কি না, সেটি এখনো নিশ্চিত না, বলেন তিনি।

ধূমপানের সঙ্গে শারীরিক যন্ত্রণার কী সম্পর্ক, সেবিষয়ে এখনো নিশ্চিত না বিজ্ঞানীরা। একটি ধারণা রয়েছে সিগারেটে যে কয়েক হাজার ধরনের রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়, সেগুলোর কয়েকটি টিস্যুর ক্ষতি করে- যার ফলে শরীরে ব্যথা তৈরি হয়।

আরেকটি ধারণা রয়েছে শরীরের হরমোনে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলতে পারে ধূমপান। তবে এমন সম্ভাবনাও থাকতে পারে, ধূমপান আসলে ব্যথার কারণ নয়, উপসর্গ মাত্র।

তবে গবেষক ডক্টর পারস্কি বলছেন, শরীরে তীব্র ব্যথা এবং পিঠে ব্যথার সঙ্গে ধূমপানের সম্পর্ক আছে, গবেষণায় এর আগেও এমন তথ্য উঠে এসেছে।

ধূমপানবিরোধী ক্যাম্পেইন গ্রুপ অ্যাশের প্রধান নির্বাহী ডেবোরাহ আরনট বলেন, ১৯৫০ সালে প্রথম আবিষ্কৃত হয় যে ধূমপানের সঙ্গে ফুসফুসের ক্যান্সারের সম্পর্ক রয়েছে।

এরপর গত কয়েকদশক ধরে হওয়া নানা গবেষণায় উঠে এসেছে, প্রায় সব ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যার ক্ষেত্রে ধূমপানের কারণে আরো খারাপ অবস্থা তৈরি হয়।

তিনি আরো বলেন, ক্যান্সার, হৃদরোগ ও শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত রোগ ছাড়াও অন্ধত্ব, বধিরতা, ডায়বেটিস, স্মৃতিভ্রম এবং বন্ধ্যত্বের কারণ হতে পারে ধূমপান।

এছাড়া অপারেশন হওয়ার পর ধূমপায়ীরা সেরে উঠতে অধূমপায়ীদের চেয়ে বেশি সময় নেয়। অধূমপায়ীদের তুলনায় ধূমপায়ীদের অপারেশন সফল না হওয়ার আশঙ্কাও বেশি থাকে।

Tag :

শেয়ার করুন

নিয়মিত ধূমপান করার ফলে শরীরে পাকাপাকিভাবে পরিবর্তন আসতে পারে।

আপডেট টাইম : ১১:২৫:৫০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩ জানুয়ারী ২০২০

নিউজ লাইট ৭১ রিপোর্ট: যারা ধূমপান করেন, এমনকি যারা আগে ধূমপান করতেন এবং এখন ছেড়ে দিয়েছেন, তারাও অধূমপায়ীদের চেয়ে বেশি শারীরিক যন্ত্রণা ভোগ করেন বলে নতুন এক গবেষণায় উঠে এসেছে।

২ লাখ ২০ হাজার মানুষ নিয়ে চালানো ইউসিএলের এক নতুন গবেষণায় উঠে এসেছে এই তথ্য।

এর কারণ নিশ্চিতভাবে না জানলেও গবেষকরা ধারণা করছেন কোনো সময়ে নিয়মিত ধূমপান করার ফলে শরীরে পাকাপাকিভাবে পরিবর্তন আসতে পারে।

২০০৯ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে বিবিসির একটি অনলাইন জরিপে অংশ নেয়া মানুষের তথ্য উপাত্ত দিয়ে তৈরি করা হয়েছে গবেষণাটি।

কখনো নিয়মিত ধূমপান করেননি, একসময় নিয়মিত ধূমপান করতেন, বর্তমানে নিয়মিত ধূমপান করেন- গবেষণায় অংশ নেয়া মানুষকে এমন ৩টি ভাগে ভাগ করা হয়।

তাদের শারীরিক যন্ত্রণার পরিমাণ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয় এবং পরবর্তীতে তাদের উত্তরের ভিত্তিতে তৈরি করা শূন্য থেকে ১০০ পর্যন্ত একটি স্কেলে সেই উত্তর বসানো হয়।

যারা কখনো ধূমপান করেননি, তাদের চেয়ে বর্তমান ও সাবেক ধূমপায়ীরা গড়ে ১ থেকে ২ পয়েন্ট বেশি পান, অর্থাৎ তাদের শারীরিক যন্ত্রণার হার অধূমপায়ীদের চেয়ে বেশি। অথবা বলা যায়, ধূমপান ছেড়ে দিলেও ভবিষ্যতে এই অভ্যাসের কারণে শারীরিক যন্ত্রণা হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে।

গবেষকদের একজন ডক্টর ওলগা পারস্কি বলেন, ‘গবেষণার প্রধান আবিষ্কার হলো, সাবেক ধূমপায়ীরাও অপেক্ষাকৃত বেশি শারীরিক যন্ত্রণা নিয়ে জীবনযাপন করেন।’ কিন্তু এটি চিকিৎসাগত দিক থেকে অর্থবহ কি না, সেটি এখনো নিশ্চিত না, বলেন তিনি।

ধূমপানের সঙ্গে শারীরিক যন্ত্রণার কী সম্পর্ক, সেবিষয়ে এখনো নিশ্চিত না বিজ্ঞানীরা। একটি ধারণা রয়েছে সিগারেটে যে কয়েক হাজার ধরনের রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়, সেগুলোর কয়েকটি টিস্যুর ক্ষতি করে- যার ফলে শরীরে ব্যথা তৈরি হয়।

আরেকটি ধারণা রয়েছে শরীরের হরমোনে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলতে পারে ধূমপান। তবে এমন সম্ভাবনাও থাকতে পারে, ধূমপান আসলে ব্যথার কারণ নয়, উপসর্গ মাত্র।

তবে গবেষক ডক্টর পারস্কি বলছেন, শরীরে তীব্র ব্যথা এবং পিঠে ব্যথার সঙ্গে ধূমপানের সম্পর্ক আছে, গবেষণায় এর আগেও এমন তথ্য উঠে এসেছে।

ধূমপানবিরোধী ক্যাম্পেইন গ্রুপ অ্যাশের প্রধান নির্বাহী ডেবোরাহ আরনট বলেন, ১৯৫০ সালে প্রথম আবিষ্কৃত হয় যে ধূমপানের সঙ্গে ফুসফুসের ক্যান্সারের সম্পর্ক রয়েছে।

এরপর গত কয়েকদশক ধরে হওয়া নানা গবেষণায় উঠে এসেছে, প্রায় সব ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যার ক্ষেত্রে ধূমপানের কারণে আরো খারাপ অবস্থা তৈরি হয়।

তিনি আরো বলেন, ক্যান্সার, হৃদরোগ ও শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত রোগ ছাড়াও অন্ধত্ব, বধিরতা, ডায়বেটিস, স্মৃতিভ্রম এবং বন্ধ্যত্বের কারণ হতে পারে ধূমপান।

এছাড়া অপারেশন হওয়ার পর ধূমপায়ীরা সেরে উঠতে অধূমপায়ীদের চেয়ে বেশি সময় নেয়। অধূমপায়ীদের তুলনায় ধূমপায়ীদের অপারেশন সফল না হওয়ার আশঙ্কাও বেশি থাকে।