ঢাকা ০৮:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাধ্যের বাইরে চলে গেছে ইলিশ

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ০৬:২১:৩৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ অক্টোবর ২০২২
  • / 27

বাজারে ইলিশ মাছ বিক্রি করা হচ্ছে (ছবি : নিউজ লাইট ৭১)

রাজশাহীতে মধ্যবিত্তের সাধ্যের বাইরে চলে গেছে ইলিশ। আর গরিবের পাতে তো দেখাই পড়ছেই না ইলিশ। অথচ এক সময় বর্ষায় ইলিশ ধনী-গরিব সবার পাতেই চড়ত বলে দাবি করেছেন রাজশাহীর অনেকেই। রাজশাহীর বাজারে গতকাল সোমবার প্রতিকেজি ইলিশ সাইজ অনুযায়ী বিক্রি হচ্ছে ৮শ’ থেকে ১৮শ’ টাকা দরে। এ বছরের শুরু থেকেই প্রায় একই দামে ইলিশ বিক্রি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ফলে এ বছর মধ্যবিত্তদের নাগালের বাইরে অবস্থান করছে ইলিশ।

রাজশাহীর ইলিশের আড়ৎ হলো নগরীর নিউমার্কেট এলাকায়। এখানে প্রতিদিন ভোরে পিকআপ ভ্যানে বা বাসের লাগেজ বাক্সে আসে ইলিশ। এর পর সকাল থেকেই শুরু হয় পাইকারি দরে ইলিশ বেচা-কেনা। গতকাল এ বাজারে পাইকারি প্রতিকেজি ৭০০-৮০০ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৮০০-৯০০ টাকা কেজি দরে। আর এক কেজি সাইজের ইলিশগুলো বিক্রি হয়েছে ১২-১৩শ টাকা দরে। দেড় কেজি সাইজের ইলিশ গতকাল তেমন আসেনি বলে দাবি করেছেন ব্যবসায়ীরা। তার পরেও যেগুলো এসেছে, সেগুলো বিক্রি করতে দেখা গেছে ১৬-১৮শ টাকা কেজি দরে।

এ আড়তের পাশেই খুচরা ইলিশ বিক্রি করেন আলাউদ্দিন নামের এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, এখন ভরা মৌসুম। কিন্তু ইলিশের তেমন আমদানি নাই। এ কারণে এবার ইলিশের দাম শুরু থেকেই চড়া। বাজারে যারা ইলিশ কিনতে আসেন, তাদের অধিকাংশই উচ্চবিত্ত পরিবারের লোকজন। তারাই সাধারণত ইলিশ কেনেন। মধ্যবিত্ত অল্প পরিমাণে ক্রেতা আসলেও তাঁদের চাহিদা থাকে ৭০০-৮০০ গ্রামের ইলিশের দিকে।

আরেক ব্যবসায়ী নাজমুল হোসেন বলেন, এক কেজি বা তার ওপরে হলেই ইলিশের দাম প্রায় দ্বিগুণ থাকছে এবার। আবার ছোট আকারের ইলিশের তেমন সাদ থাকে না বলে মধ্যবিত্তরা সেটিও নিতে চান না। ফলে বাজারে ইলিশের ক্রেতা ধনী লোকজন।

এ বাজারে ইলিশ কিনতে আসা আজাহার আলী বলেন, গত প্রায় এক মাস ধরে ভাবছি ইলিশ কিনব। কিন্তু দাম তো কইমছে না। তাই কিনতে আশার সাহস পাইনি। আজ বাড়িতে লোকজন আসবে, তাই ইলিশ কিনতে এসেছি। দেখি দাম আরও বেশি। তার পরেও ৭০০-৮০০ গ্রামের একটা ইলিশ কিনলাম। বছরে এই প্রথম ইলিশ খাওয়া হবে।

আজাহার উদ্দিন বলেন, আমরা যারা মধ্যবিত্ত পরিবারের লোক, তাদের এখন অন্যান্য জিনিসপত্র কিনতেই হিমশিম খ্যাতে হচ্ছে। এতো টাকা দিয়ে ইলিশ কিনবো কী করে।

আরেক ক্রেতা নাজিবুল ইসলাম উদ্দিন। তিনি একজন সরকারি কর্মকর্তা। ইলিশ প্রসঙ্গে বলেন, আমাদের বাড়ির সবারই পছন্দ ইলিশ। কিন্তু এবার দাম চড়ার কারণে বেশি কিনতে পারিনি। তার পরেও তিন-চার দিন কিনেছি। আজ আবার এসেছি দুইটা ইলিশ কিনতে। এক কেজি সাইজের ইলিশগুলো কিছুটা পছন্দ হলেও দাম চড়া।

এ দিকে রাজশাহীর প্রবীণ ব্যক্তি সাংবাদিক আনসার আলী বলেন, ১৫-২০ বছর আগেও বর্ষায় ধনী-গরিব সবার পাতেই উঠতো ইলিশ। এখন গরিবেরা আর ইলিশ কিনতে পারে বলে মনে হয় না। এই ঊর্ধ্বগতির বাজারে মানুষ ভাত-তরকারি খাবে না ইলিশ খাবে?

নিউজ লাইট ৭১

facebook sharing button
twitter sharing button
pinterest sharing button
email sharing button
sharethis sharing button
Tag :

শেয়ার করুন

সাধ্যের বাইরে চলে গেছে ইলিশ

আপডেট টাইম : ০৬:২১:৩৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ অক্টোবর ২০২২

রাজশাহীতে মধ্যবিত্তের সাধ্যের বাইরে চলে গেছে ইলিশ। আর গরিবের পাতে তো দেখাই পড়ছেই না ইলিশ। অথচ এক সময় বর্ষায় ইলিশ ধনী-গরিব সবার পাতেই চড়ত বলে দাবি করেছেন রাজশাহীর অনেকেই। রাজশাহীর বাজারে গতকাল সোমবার প্রতিকেজি ইলিশ সাইজ অনুযায়ী বিক্রি হচ্ছে ৮শ’ থেকে ১৮শ’ টাকা দরে। এ বছরের শুরু থেকেই প্রায় একই দামে ইলিশ বিক্রি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ফলে এ বছর মধ্যবিত্তদের নাগালের বাইরে অবস্থান করছে ইলিশ।

রাজশাহীর ইলিশের আড়ৎ হলো নগরীর নিউমার্কেট এলাকায়। এখানে প্রতিদিন ভোরে পিকআপ ভ্যানে বা বাসের লাগেজ বাক্সে আসে ইলিশ। এর পর সকাল থেকেই শুরু হয় পাইকারি দরে ইলিশ বেচা-কেনা। গতকাল এ বাজারে পাইকারি প্রতিকেজি ৭০০-৮০০ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৮০০-৯০০ টাকা কেজি দরে। আর এক কেজি সাইজের ইলিশগুলো বিক্রি হয়েছে ১২-১৩শ টাকা দরে। দেড় কেজি সাইজের ইলিশ গতকাল তেমন আসেনি বলে দাবি করেছেন ব্যবসায়ীরা। তার পরেও যেগুলো এসেছে, সেগুলো বিক্রি করতে দেখা গেছে ১৬-১৮শ টাকা কেজি দরে।

এ আড়তের পাশেই খুচরা ইলিশ বিক্রি করেন আলাউদ্দিন নামের এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, এখন ভরা মৌসুম। কিন্তু ইলিশের তেমন আমদানি নাই। এ কারণে এবার ইলিশের দাম শুরু থেকেই চড়া। বাজারে যারা ইলিশ কিনতে আসেন, তাদের অধিকাংশই উচ্চবিত্ত পরিবারের লোকজন। তারাই সাধারণত ইলিশ কেনেন। মধ্যবিত্ত অল্প পরিমাণে ক্রেতা আসলেও তাঁদের চাহিদা থাকে ৭০০-৮০০ গ্রামের ইলিশের দিকে।

আরেক ব্যবসায়ী নাজমুল হোসেন বলেন, এক কেজি বা তার ওপরে হলেই ইলিশের দাম প্রায় দ্বিগুণ থাকছে এবার। আবার ছোট আকারের ইলিশের তেমন সাদ থাকে না বলে মধ্যবিত্তরা সেটিও নিতে চান না। ফলে বাজারে ইলিশের ক্রেতা ধনী লোকজন।

এ বাজারে ইলিশ কিনতে আসা আজাহার আলী বলেন, গত প্রায় এক মাস ধরে ভাবছি ইলিশ কিনব। কিন্তু দাম তো কইমছে না। তাই কিনতে আশার সাহস পাইনি। আজ বাড়িতে লোকজন আসবে, তাই ইলিশ কিনতে এসেছি। দেখি দাম আরও বেশি। তার পরেও ৭০০-৮০০ গ্রামের একটা ইলিশ কিনলাম। বছরে এই প্রথম ইলিশ খাওয়া হবে।

আজাহার উদ্দিন বলেন, আমরা যারা মধ্যবিত্ত পরিবারের লোক, তাদের এখন অন্যান্য জিনিসপত্র কিনতেই হিমশিম খ্যাতে হচ্ছে। এতো টাকা দিয়ে ইলিশ কিনবো কী করে।

আরেক ক্রেতা নাজিবুল ইসলাম উদ্দিন। তিনি একজন সরকারি কর্মকর্তা। ইলিশ প্রসঙ্গে বলেন, আমাদের বাড়ির সবারই পছন্দ ইলিশ। কিন্তু এবার দাম চড়ার কারণে বেশি কিনতে পারিনি। তার পরেও তিন-চার দিন কিনেছি। আজ আবার এসেছি দুইটা ইলিশ কিনতে। এক কেজি সাইজের ইলিশগুলো কিছুটা পছন্দ হলেও দাম চড়া।

এ দিকে রাজশাহীর প্রবীণ ব্যক্তি সাংবাদিক আনসার আলী বলেন, ১৫-২০ বছর আগেও বর্ষায় ধনী-গরিব সবার পাতেই উঠতো ইলিশ। এখন গরিবেরা আর ইলিশ কিনতে পারে বলে মনে হয় না। এই ঊর্ধ্বগতির বাজারে মানুষ ভাত-তরকারি খাবে না ইলিশ খাবে?

নিউজ লাইট ৭১

facebook sharing button
twitter sharing button
pinterest sharing button
email sharing button
sharethis sharing button