ঢাকা ০৭:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজশাহীর নতুন রাস্তায় পুরনো-পরিত্যাক্ত সড়কবাতি, জনমনে ক্ষোভ

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ০১:৩০:৩৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ অক্টোবর ২০২২
  • / 27
রাজশাহীর বিভিন্ন সড়কে ইতিমধ্য বসানো হয়েছে নতুন ও আধুনিক সড়কবাতি। এতে বেড়েছে রাজশাহীর সৌন্দর্য্য ও মান। তবে সম্প্রতি রাজশাহীর কোর্ট স্টেশন বাজার থেকে লিলি হলের মোড় পর্যন্ত সড়কটিতে আলোকায়নের জন্য লাগানো হচ্ছে পুরনো অকেজো সড়কবাতি। মানহীন একাজের জন্য স্থানীয়দের মাঝে দেখা দিয়েছে অসন্তোষ ও ক্ষোভ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সড়কটির ল্যাম্পপোষ্ট গুলোতে ব্যবহার করা হচ্ছে পুরাতন ও অকেজো বাল্ব। পুরাতন ও বহুদিন পড়ে থাকা এসকল বাল্ব কোন রকম মেরামত না করে পুরু ধুলোর প্রলেপে ঢাকা বাল্ব গুলো লাগিয়ে দায় সাড়া কাজ সারছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে গত রবিবার (২ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৭টায় নগরীর লিলি হল এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, প্রায় ২৫ থেকে ৩০ টি ল্যাম্পপোষ্টে এসকল বাল্ব ইতিমধ্যেই লাগানো শেষ করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়াও প্রতিবেদকের ক্যামেরায় ধরা পড়েছে, বিপুল পরিমান পুরনো বাল্ব একটি ট্রাকে আবর্জনার স্তুপের মতো পড়ে আছে। এসব দেখে বোঝার উপায় নাই যে, এই বাল্ব গুলো ব্যবহারের উপযোগী। কোনো বাল্বে মরিচা আবার কোনটির সংযোগ তার ঝলসানো এবং প্রতিটি বাল্বের উপরের আবোরনী কাঁচে লেগে রয়েছে পুরু ধুলাবালির প্রলেপ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, এসব বাল্ব দেখে আমরা খুবই কষ্ট পেয়েছি। কারণ রাজশাহীর প্রায় সব রাস্তাতেই প্রজাপতি ডানা, রাজমুকুট লাইটসহ খুব সুন্দর ও আকর্ষণীয় লাইট ও ল্যাম্পপোস্ট লাগানো হয়েছে, কিন্তু সেখানে কোর্ট স্টেশন থেকে লিলি হলের রাস্তাটিতে লাগানো হচ্ছে পুরাতন অকেজো বাল্প। এসব বাল্ব গুলোর যে অবস্থা, তাতে মনে হচ্ছে লাগনোর পর কতদিন টিকবে তারও কোনো গ্যারান্টি নেই। মূলত: দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার দূর্নীতি করতেই এধরনের পুরনো বাল্ব লাগাচ্ছে।
কোর্ট বাজার এলাকায় কর্মরত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন দায়িত্বে থাকা কর্মচারীদের পুরাতন লাইট লাগনোর ব্যাপারে জানতে চাইলে তারা কোনো সদুত্তোর না দিয়ে সেখান থেকে সটকে পড়েন। পুরনো বাল্ব লাগানোর কাজ করার জায়গাটির পাশেই অবস্থিত রাসিকের ২নং ওর্য়াড কাউন্সিলর নজরুল ইসলামের কার্যালয়।
জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমিই রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনে (রাসিক) বলেছিলাম পুরাতন এই বাল্ব গুলো লাগাতে। কারণ, আমি জানি বাল্ব গুলো খুব ভালো মানের। তবে, হতাশ হয়েছি যখন দেখলাম যে প্রায় ২৫লাখ টাকা সংস্কার বিল দেখানোর কথা বলে এই বাল্ব গুলো লাগানোর কথা থাকলেও পুরাতন এসব বাল্ব একবারও পরিস্কারও করা হয়নি। পূর্বে যে অবস্থাতে ছিলো ঠিক তেমনি ভাবে বাল্ব গুলো লাগিয়ে দেয়া হচ্ছে। এতে আসলেই আমি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অবহেলা ও অব্যবস্থাপনা লক্ষ করছি।
এবিষয়ে সড়কটির দায়িত্বে থাকা রাসিকের কর্মকর্তা সুমনকে কাজের স্থানে পাওয়া যায়নি। কাজ চলাকালীন তিনি সড়কটিতে উপস্থিত না থাকায় তার সাথে মুঠোফোনে কথা হয়। সড়কবাতি লাগানোর বিষয়ে অব্যবস্থাপনার বিষয়ে জানালে তিনি ব্যস্ততার অযুহাতে ফোন কেটে দেন।
সড়কবাতি লাগানোর এসব কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মালিকের নাম আশরাফুল হুদা টিটু। তার মুঠোফোনেও একাধিক বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়ায় তার মন্তব্য মেলেনি।
স্থানীয়দের দাবি- নগরীর প্রতিটি সড়কের মতো কোর্ট বাজার ও লিলি হলের মোড়ের সড়কটিতেও নতুন ও অত্যাধুনিক সড়কবাতি লাগানো হোক।
রাজশাহী প্রতিনিধি/ নিউজ লাইট ৭১
Tag :

শেয়ার করুন

রাজশাহীর নতুন রাস্তায় পুরনো-পরিত্যাক্ত সড়কবাতি, জনমনে ক্ষোভ

আপডেট টাইম : ০১:৩০:৩৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ অক্টোবর ২০২২
রাজশাহীর বিভিন্ন সড়কে ইতিমধ্য বসানো হয়েছে নতুন ও আধুনিক সড়কবাতি। এতে বেড়েছে রাজশাহীর সৌন্দর্য্য ও মান। তবে সম্প্রতি রাজশাহীর কোর্ট স্টেশন বাজার থেকে লিলি হলের মোড় পর্যন্ত সড়কটিতে আলোকায়নের জন্য লাগানো হচ্ছে পুরনো অকেজো সড়কবাতি। মানহীন একাজের জন্য স্থানীয়দের মাঝে দেখা দিয়েছে অসন্তোষ ও ক্ষোভ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সড়কটির ল্যাম্পপোষ্ট গুলোতে ব্যবহার করা হচ্ছে পুরাতন ও অকেজো বাল্ব। পুরাতন ও বহুদিন পড়ে থাকা এসকল বাল্ব কোন রকম মেরামত না করে পুরু ধুলোর প্রলেপে ঢাকা বাল্ব গুলো লাগিয়ে দায় সাড়া কাজ সারছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে গত রবিবার (২ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৭টায় নগরীর লিলি হল এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, প্রায় ২৫ থেকে ৩০ টি ল্যাম্পপোষ্টে এসকল বাল্ব ইতিমধ্যেই লাগানো শেষ করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়াও প্রতিবেদকের ক্যামেরায় ধরা পড়েছে, বিপুল পরিমান পুরনো বাল্ব একটি ট্রাকে আবর্জনার স্তুপের মতো পড়ে আছে। এসব দেখে বোঝার উপায় নাই যে, এই বাল্ব গুলো ব্যবহারের উপযোগী। কোনো বাল্বে মরিচা আবার কোনটির সংযোগ তার ঝলসানো এবং প্রতিটি বাল্বের উপরের আবোরনী কাঁচে লেগে রয়েছে পুরু ধুলাবালির প্রলেপ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, এসব বাল্ব দেখে আমরা খুবই কষ্ট পেয়েছি। কারণ রাজশাহীর প্রায় সব রাস্তাতেই প্রজাপতি ডানা, রাজমুকুট লাইটসহ খুব সুন্দর ও আকর্ষণীয় লাইট ও ল্যাম্পপোস্ট লাগানো হয়েছে, কিন্তু সেখানে কোর্ট স্টেশন থেকে লিলি হলের রাস্তাটিতে লাগানো হচ্ছে পুরাতন অকেজো বাল্প। এসব বাল্ব গুলোর যে অবস্থা, তাতে মনে হচ্ছে লাগনোর পর কতদিন টিকবে তারও কোনো গ্যারান্টি নেই। মূলত: দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার দূর্নীতি করতেই এধরনের পুরনো বাল্ব লাগাচ্ছে।
কোর্ট বাজার এলাকায় কর্মরত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন দায়িত্বে থাকা কর্মচারীদের পুরাতন লাইট লাগনোর ব্যাপারে জানতে চাইলে তারা কোনো সদুত্তোর না দিয়ে সেখান থেকে সটকে পড়েন। পুরনো বাল্ব লাগানোর কাজ করার জায়গাটির পাশেই অবস্থিত রাসিকের ২নং ওর্য়াড কাউন্সিলর নজরুল ইসলামের কার্যালয়।
জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমিই রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনে (রাসিক) বলেছিলাম পুরাতন এই বাল্ব গুলো লাগাতে। কারণ, আমি জানি বাল্ব গুলো খুব ভালো মানের। তবে, হতাশ হয়েছি যখন দেখলাম যে প্রায় ২৫লাখ টাকা সংস্কার বিল দেখানোর কথা বলে এই বাল্ব গুলো লাগানোর কথা থাকলেও পুরাতন এসব বাল্ব একবারও পরিস্কারও করা হয়নি। পূর্বে যে অবস্থাতে ছিলো ঠিক তেমনি ভাবে বাল্ব গুলো লাগিয়ে দেয়া হচ্ছে। এতে আসলেই আমি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অবহেলা ও অব্যবস্থাপনা লক্ষ করছি।
এবিষয়ে সড়কটির দায়িত্বে থাকা রাসিকের কর্মকর্তা সুমনকে কাজের স্থানে পাওয়া যায়নি। কাজ চলাকালীন তিনি সড়কটিতে উপস্থিত না থাকায় তার সাথে মুঠোফোনে কথা হয়। সড়কবাতি লাগানোর বিষয়ে অব্যবস্থাপনার বিষয়ে জানালে তিনি ব্যস্ততার অযুহাতে ফোন কেটে দেন।
সড়কবাতি লাগানোর এসব কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মালিকের নাম আশরাফুল হুদা টিটু। তার মুঠোফোনেও একাধিক বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়ায় তার মন্তব্য মেলেনি।
স্থানীয়দের দাবি- নগরীর প্রতিটি সড়কের মতো কোর্ট বাজার ও লিলি হলের মোড়ের সড়কটিতেও নতুন ও অত্যাধুনিক সড়কবাতি লাগানো হোক।
রাজশাহী প্রতিনিধি/ নিউজ লাইট ৭১