(ইউএনডিপি) মানব উন্নয়ন সূচকে একধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ।
- আপডেট টাইম : ১১:১২:২৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০১৯
- / 133
নিউজ লাইট ৭১ ডেস্ক : জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) মানব উন্নয়ন সূচকে একধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ। ১৮৯টি দেশের মধ্যে ১৩৬তম অবস্থান থেকে এক ধাপ এগিয়ে এবছর ১৩৫তম অবস্থানে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। ২০১৮ সালের বিভিন্ন দেশের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, গড় আয়সহ বিভিন্ন সূচক ও তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। গতকাল রাজধানীর শের-ই-বাংলা
নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য শাসমুল আলম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইউএনডিপির কান্ট্রি রিপ্রেজন্টটিভ সুদীপ্ত মূর্খাজী ও পরিকল্পনা সচিব নুরুল আমিন।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, গতবারের মতো এবারও জাতিসংঘের মানব উন্নয়ন সূচকের শীর্ষ আছে নরওয়ে। এরপরের অবস্থানে পর্যায়ক্রমে রয়েছে সুইজারল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, জার্মানি, হংকং ও অস্ট্রেলিয়া।মানব উন্নয়ন সূচকে সবচেয়ে নিচের অবস্থানে আছে নাইজার। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারত, শ্রীলংকা, মালদ্বীপ ও ভুটান বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে। যার মধ্যে ভারতের অবস্থান শ্রীলংকা ৭১তম, মালদ্বীপ ১০৪তম, ১২৯তম ও ভুটান ১৩৪তম। এছাড়া দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের নিচে অবস্থানকারী দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে, নেপাল ১৪৭তম, পাকিস্তান ১৫২তম ও আফগানিস্তান ১৭০তম। এছাড়া প্রতিবেদনটিতে বিশ্বব্যাপী মাবন উন্নয়ন সূচকে বৈষম্য বৃদ্ধির বিষয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ০.৬১৪ স্কোর নিয়ে তালিকায় ১৩৫তম স্থান পেয়েছে বাংলাদেশ। আগের বছর ০.৬০৮ এইচডিআই স্কোর নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৩৬তম। তালিকায় ১৮৯টি দেশকে অতি উন্নত, উন্নত, মধ্যম ও নিম্ন মানব উন্নয়নের ৪টি স্তরে ভাগ করা হয়েছে। মধ্যম মানব উন্নয়ন হয়েছে, বাংলাদেশ এমন দেশগুলোর স্তরে।
পরিকল্পনা কমিশনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, সরকারের প্রণোদনার ভর্তুকি প্রকৃত লোকের কাছে না পৌঁছানোয় বৈষম্য বাড়ছে। এটি এক সমস্যা। আমাদের মূল লক্ষ্য দেশজ উপায়ে উন্নয়ন। তিনি বলেন, ক্ষুধা নিবারণে আমরা সবচেয়ে গুরুত্ব দিচ্ছি। এক্ষেত্রে আমরা শত্রু কাবু করতে পেরেছি। দারিদ্র্য মানুষের কল্যাণে আমরা সরাসরি কাজ করছি। কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে দারিদ্র্য মানুষদের সেবা দেয়া হচ্ছে। বৈষম্য কমাতে কাজ করা হচ্ছে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান বৈষম্যের সূত্র তুলে ধরে বলেন, বিভিন্ন ধরনের শিক্ষাব্যবস্থার কারণে বৈষম্য বাড়ছে। যেমন: ও লেবেল, এ লেবেল পাস করা তরুণ-তরুণীরা অন্যদের তুলনায় কিছুটা এগিয়ে থাকছেন। ব্যাংক, পোশাক কারখানা, এসব অর্থনৈতিক শক্তিগুলো কিছু লোকের হাতে রয়েছে। তারা নীতিনির্ধারণেও প্রভাব ফেলেন। তা না হলে ব্যাংকিংখাত নিয়ে সংস্কারের কথা বলা হলেও কাদের স্বার্থে হচ্ছে না? এ ছাড়া উন্নয়ন ব্যয়ে অসাধুতার কারণেও বৈষম্য সৃষ্টি হচ্ছে।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলতে শিক্ষা ও শ্রমবাজারে ব্যাপক সংস্কার করতে হবে। বৈষম্য কমাতে একদিকে যেমন সরকারি সেবা বাড়াতে হবে, আবার সরকারি বিনিয়োগও চাই। তিনি বলেন, দারিদ্র্যতা ক্ষুধা, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, জেন্ডার সব ক্ষেত্রে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।
পিকেএসএফ চেয়ারম্যান কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, উচ্চ প্রবৃদ্ধি হওয়া সত্ত্বেও মানব উন্নয়নে বাংলাদেশ পিছিয়ে আছে। উন্নয়নের কাঠামোগত কারণেই বৈষম্য বাড়ছে। জলবায়ু পরিবর্তন বৈষম্য বাড়াচ্ছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মানুষকে আরো গরীব করছে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হলে দক্ষ মানব সম্পদের দিকে নজর দিতে হবে। সৃজনশীলতা বাড়াতে হবে।