বাঁধ নির্মাণের নামে লাখ টাকার মাছ বিক্রি
- আপডেট টাইম : ০৫:৩৭:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ মার্চ ২০২২
- / 35
সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলায় সীমান্ত ঘেঁষা ডিবির হাওর। যাকে শাপলা বিল নামেই চিনেন সিলেটের মানুষ। বর্ষার শেষে যখন শীতের মৌসুম শুরু হয় তখন প্রতিদিন ভোর হলেই লাল শাপলার গালিচা বিছায় এ হাওর। মাঝে মাঝে দেখা মেলে সাদা শাপলারও। তাইতো সময়ের পরিক্রমায় এর পরিচিত এখন দেশজুড়ে।
এ দিকে শাপলা বিলের সংরক্ষণের জন্য উপজেলা প্রশাসন থেকেও নেওয়া হচ্ছে নতুন নতুন উদ্যোগ, গঠন করা হয়েছে সংরক্ষণ কমিটি। কিন্তু এ সংরক্ষণ কমিটিই এখন বিলের সর্বনাশ ঘটাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বাঁধ নির্মাণের জন্য পানি কমানোর নামে পুরো বিল সেচ দিয়ে মাছ বিক্রির অভিযোগ উঠেছে সংরক্ষণ কমিটির বিরুদ্ধে।
ডিবির হাওর, ইয়ামবিল, হরফকাট বিল ও কেন্দ্রীবিল মিলে প্রায় ৯০০ একর জায়গা জুড়ে এক সাথে বলা হয় শাপলার বিল। শীতের শুরুতে এখানে শাপলা ফুটলেও একটা নির্ধারিত সময় বিলের একাংশে পানি শুকিয়ে যায়। তাই উপজেলা প্রশাসন থেকে পানি সংরক্ষণের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হাওলে এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে পুরো বিল সেচ দিয়ে শুকিয়ে কয়েক লক্ষ টাকার মাছ বিক্রি করে ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছেন সংরক্ষণ কমিটির নেতারা। আর বিল শুকিয়ে মাছ ধরার কারণে আগামীতে শাপলা ফুটবে কি না সেটি নিয়েও দেখা দিয়েছে শঙ্কা।
এ ব্যাপারে শাপলা বিল সংরক্ষণ কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব না হলেও সাংগঠনিক সম্পাদক শাহিনুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘এখানে বাঁধ নির্মাণের জন্য এক্সেভেটর আনা হলে মাটি নরম থাকায় এক্সেভেটর দেবে যাচ্ছিলো। তাই উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা প্রশাসন থেকে আমাদেরকে পানি শুকিয়ে দেওয়ার কথা বললে আমরা পানি শুকিয়ে দিয়েছি। পানি শুকানোর পর মাছ যেগুলো ছিলো এলাকার মানুষ ধরে নিয়েছেন। আমরাও কিছু মাছ বিক্রি করেছি। এর থেকে এক লক্ষ টাকা দিয়ে পর্যটকদের গাড়ি পার্কিং করার জায়গার কাজ করিয়েছি। সকল কিছুই উপজেলা প্রশাসনকে অবগত করে করা হয়েছে।’
তবে মাছ ধরা কিংবা পার্কিং করার ব্যাপারে কিছুই জানেন না বলে জানালেন জৈন্তাপুর উপজেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার (ভূমি ও ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা) রিপামনি দেবী।
তিনি বলেন, ‘পানি সংরক্ষণের জন্য বাঁধ দেওয়া হচ্ছে এখানে পানি শুকানোর প্রশ্নই আসে না। আর কেউ সেচ দিয়ে থাকলে সেটি রাতের আঁধারে হয়েছে। তবে যারাই এটি করেছে আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। পার্কিং করার জন্য উপজেলা প্রশাসন থেকে আগেই কাজ করানো হয়েছে। উনারা কোনো কাজ করাননি।’
অপরদিকে জৈন্তাপুর উপজেলা চেয়ারম্যান কামাল আহমদ বলেন, ‘ছয় লক্ষটাকায় বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প চলছে। এখানে বাঁধের কাজের জন্য এক হাত পানি কমানোর কথা ছিল। এরপর কে, কি ভাবে পানি শুকিয়েছে বা মাছ নিয়েছে সেটা আমি জানি না। তবে সংরক্ষণ কমিটি আমাকে জানিয়েছিল তারা উপজেলা প্রশাসন থেকে খাস কালেকশনের মাধ্যমে মাছ ধরার অনুমতি পেয়েছে। এখন আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বলেছি যদি উনারা অনুমতি না দিয়ে থাকেন তাহলে উনারা ব্যবস্থা নেবেন’।
নিউজ লাইট ৭১