ঢাকা ০৬:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হতাশ ১৫ হাজার পানচাষি

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ০৫:৫৬:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • / 29

ছবি : সংগৃহীত

চুয়াডাঙ্গার প্রধান অর্থকরী ফসল পান। পান চাষের জন্য প্রসিদ্ধ জেলা এটি। এ জেলার পানের চাহিদা রয়েছে দেশজুড়ে। এমনকি এখানকার পান দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রফতানি হয়ে থাকে। পান চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন কৃষকরা। তবে এবার ভরা মৌসুমে বাজারে পানের দাম কমে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা। এছাড়া বিদেশে পান রফতানি বন্ধ থাকায় নতুন করে বাজার পড়েছে। চুয়াডাঙ্গা থেকে পানের একটা বড় অংশ দেশের বাহিরে বিদেশে যায়। সালমনিয়া রোগের কারণে বর্তমানে বিদেশে পান রফতানি বন্ধ আছে। ফলে পানের দাম পড়ে গেছে।

চুয়াডাঙ্গা জেলার মধ্যে সবথেকে বেশি পানের চাষ হয় আলমডাঙ্গা উপজেলায়। পান বরজ কেন্দ্র করে এ উপজেলায় বসে বেশ কয়েকটি সাপ্তাহিক হাটবাজার। হাটবাজারে পানের ন্যায্য দাম না পেয়ে হতাশ আলমডাঙ্গা উপজেলা ১৫ হাজার পানচাষি। গেল বছরের নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে টানা করোনার মধ্যেও চাষিরা পানের ন্যায্য দাম পেয়েছিল। কিন্তু এবার সে দরের পতন ঘটেছে। চুয়াডাঙ্গা জেলার বিভিন্ন উপজেলার পানের হাটে সর্ব্বোচ ভালো মানের পান ৭০ টাকা ও সর্বনিম্ন ৫০ টাকা পণ দরে বিক্রি হচ্ছে।

সরেজমিনে চুয়াডাঙ্গার গোকুলখালি পানের হাটে গিয়ে দেখা যায়, প্রতি পণ পান সর্বোচ্চ ৭০-৮০ টাকা ও সর্বনিম্ন ৪০-৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। যা গত বছরে ২শ টাকার উপরে ছিল। বর্তমানে পানের দরপতনে হতাশ জেলার সকল কৃষক। আলমডাঙ্গার খাদিমপুর গ্রামের পানচাষি মহন মিয়া বলেন, বাজারে পানের দাম প্রতিনিয়ত কমছে। আগে যেখানে এক পণ পান বাজারে প্রকারভেদে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা বিক্রি হয়েছে, এখন সেই পানের দাম কমতে কমতে ৫০ থেকে ৮০ টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। আবার পান চাষের উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়া ও পানের রোগ বালাইয়ে প্রতি বছরই উৎপাদন খরচ বাড়ছে। এ অবস্থায় লাভ তো দূরের কথা, উৎপাদন খরচই তুলতে পারছি না। অব্যাহত লোকসানের কারণে চরম হতাশ হয়ে অনেক পানচাষি দীর্ঘ দিনের পানের বরজ ভেঙে ফেলছেন।

পানচাষিরা বলছেন, আগের মতো যদি পান বিদেশে রফতানি করা যায় তাহলে তারা হয়ত আবার লাভের মুখ দেখবেন।

চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ড. আব্দুল মাজেদ বলেন, কৃষকদের পানের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করছি। পানচাষিরা সিন্ডিকেটের কবলে যেন না পড়ে এ জন্য নিয়মিতভাবে বাজার তদারকি করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের দেওয়া তথ্য মতে, ২০১৮ সালে ১৭৭৪ হেক্টর, ২০১৯ সালে ১৭৩০ হেক্টর, ২০২০ সালে ১৬৭০ হেক্টর, ২০২১ সালে ১৬০৯ হেক্টর ও ২০২২ সালে ১৬৩৩ হেক্টর জমিতে পান চাষ হয়েছিল। এ বছর জেলায় ১ হাজার ৭৬০ হেক্টর জমিতে পানের আবাদ করা হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় অনেকটা কম।

নিউজ লাইট ৭১

Tag :

শেয়ার করুন

হতাশ ১৫ হাজার পানচাষি

আপডেট টাইম : ০৫:৫৬:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২২

চুয়াডাঙ্গার প্রধান অর্থকরী ফসল পান। পান চাষের জন্য প্রসিদ্ধ জেলা এটি। এ জেলার পানের চাহিদা রয়েছে দেশজুড়ে। এমনকি এখানকার পান দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রফতানি হয়ে থাকে। পান চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন কৃষকরা। তবে এবার ভরা মৌসুমে বাজারে পানের দাম কমে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা। এছাড়া বিদেশে পান রফতানি বন্ধ থাকায় নতুন করে বাজার পড়েছে। চুয়াডাঙ্গা থেকে পানের একটা বড় অংশ দেশের বাহিরে বিদেশে যায়। সালমনিয়া রোগের কারণে বর্তমানে বিদেশে পান রফতানি বন্ধ আছে। ফলে পানের দাম পড়ে গেছে।

চুয়াডাঙ্গা জেলার মধ্যে সবথেকে বেশি পানের চাষ হয় আলমডাঙ্গা উপজেলায়। পান বরজ কেন্দ্র করে এ উপজেলায় বসে বেশ কয়েকটি সাপ্তাহিক হাটবাজার। হাটবাজারে পানের ন্যায্য দাম না পেয়ে হতাশ আলমডাঙ্গা উপজেলা ১৫ হাজার পানচাষি। গেল বছরের নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে টানা করোনার মধ্যেও চাষিরা পানের ন্যায্য দাম পেয়েছিল। কিন্তু এবার সে দরের পতন ঘটেছে। চুয়াডাঙ্গা জেলার বিভিন্ন উপজেলার পানের হাটে সর্ব্বোচ ভালো মানের পান ৭০ টাকা ও সর্বনিম্ন ৫০ টাকা পণ দরে বিক্রি হচ্ছে।

সরেজমিনে চুয়াডাঙ্গার গোকুলখালি পানের হাটে গিয়ে দেখা যায়, প্রতি পণ পান সর্বোচ্চ ৭০-৮০ টাকা ও সর্বনিম্ন ৪০-৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। যা গত বছরে ২শ টাকার উপরে ছিল। বর্তমানে পানের দরপতনে হতাশ জেলার সকল কৃষক। আলমডাঙ্গার খাদিমপুর গ্রামের পানচাষি মহন মিয়া বলেন, বাজারে পানের দাম প্রতিনিয়ত কমছে। আগে যেখানে এক পণ পান বাজারে প্রকারভেদে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা বিক্রি হয়েছে, এখন সেই পানের দাম কমতে কমতে ৫০ থেকে ৮০ টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। আবার পান চাষের উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়া ও পানের রোগ বালাইয়ে প্রতি বছরই উৎপাদন খরচ বাড়ছে। এ অবস্থায় লাভ তো দূরের কথা, উৎপাদন খরচই তুলতে পারছি না। অব্যাহত লোকসানের কারণে চরম হতাশ হয়ে অনেক পানচাষি দীর্ঘ দিনের পানের বরজ ভেঙে ফেলছেন।

পানচাষিরা বলছেন, আগের মতো যদি পান বিদেশে রফতানি করা যায় তাহলে তারা হয়ত আবার লাভের মুখ দেখবেন।

চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ড. আব্দুল মাজেদ বলেন, কৃষকদের পানের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করছি। পানচাষিরা সিন্ডিকেটের কবলে যেন না পড়ে এ জন্য নিয়মিতভাবে বাজার তদারকি করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের দেওয়া তথ্য মতে, ২০১৮ সালে ১৭৭৪ হেক্টর, ২০১৯ সালে ১৭৩০ হেক্টর, ২০২০ সালে ১৬৭০ হেক্টর, ২০২১ সালে ১৬০৯ হেক্টর ও ২০২২ সালে ১৬৩৩ হেক্টর জমিতে পান চাষ হয়েছিল। এ বছর জেলায় ১ হাজার ৭৬০ হেক্টর জমিতে পানের আবাদ করা হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় অনেকটা কম।

নিউজ লাইট ৭১