ঢাকা ১০:২৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

একটি জাতির উন্নতি হয় ভাষা-সংস্কৃতি দিয়েই

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ০৫:৪৫:২০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • / 33

ছবি: সংগৃহীত

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, একটি জাতি সব সময় উন্নতি করতে পারে, যদি তার ভাষা-সংস্কৃতির উন্নতি হয়। আমাদের প্রতিটি আন্দোলনে আমাদের সংস্কৃতিসেবীদের অবদান রয়েছে। কবি, সাহিত্যিক, লেখক, সংস্কৃতিসেবী প্রত্যেকেই কিন্তু আমাদের আন্দোলন-সংগ্রাম এবং আমাদের অর্জনের পেছনে অবদান রেখে গেছেন।

বাংলা একাডেমি আয়োজিত ‘অমর একুশে বইমেলা ২০২২’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। মঙ্গলবার বিকেলে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বইমেলার উদ্বোধন ঘোষণা করেন তিনি।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী পাতা উলটে বই পড়া নিয়ে তার ভালোলাগার কথা উল্লেখ করে বলেন, ডিজিটাল ডিভাইসে বই পড়ার চেয়ে একটা বই হাতে নিয়ে পাতা উল্টে-পাল্টে পড়া অনেক আনন্দের। বই না পড়লে মনে হয় কী যেন হলো না, কী যেন জানলাম না। এই মেলা হচ্ছে আমাদের প্রাণের মেলা, কোনো কারণে এই মেলা হতে না পারলে আমাদের সকলেরই খারাপ লাগে।

৩৮তম এ বইমেলা চলবে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এবারের বইমেলার মূল প্রতিপাদ্য- ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী’।

তিনি বলেন, করোনা মাহামারীর কারণে বইমেলা শুরু করতে দেরি হলো। প্রতিবছর ফেব্রুয়ারির ১ তারিখে বইমেলা শুরু হয়। কিন্তু এবার করোনা পরিস্থিতির কারণে এই মেলা শুরু হলো ১৫ ফেব্রুয়ারি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলা একাডেমিতে আমরা বইমেলা আয়োজন করে আসছি। এটা আমাদের প্রাণের মেলা। পাকিস্তান সরকার আরবি ও রোমান ভাষায় বাংলা লেখার প্রচলন করতে চেয়েছিল। আমি বলবো, বাংলা যেমন আমাদের আনন্দের ভাষা তেমন আমাদের প্রতিবাদেরও ভাষা।

বক্তব্যের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু ও ভাষা আন্দোলনে শহীদ ও জাতীয় চার নেতার প্রতি শ্রদ্ধার জানান।

তিনি বলেন, করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ায় এবারের বইমেলা দেরি করে শুরু করতে হল। যারা বাংলা একাডেমি পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন, তাদের আমি ধন্যবাদ জানাই। ১৯৪৭ সালে করাচিতে এক সভায় বাংলাকে মাতৃভাষার স্বীকৃতি দিতে আহ্বান জানানো হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৪৭ সালে করাচিতে এক সভায় বাংলাকে মাতৃভাষার স্বীকৃতি দিতে আহ্বান জানানো হয়। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি যে আন্দোলন করা হবে, এর সিদ্ধান্ত বঙ্গবন্ধুই দিয়েছিলেন। পাকিস্তান কখনোই আমাদের ভাষাকে স্বীকৃতি দিতে চায়নি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৫ তারিখে বইমেলা শুরু হয়েছে। তবে আমার ইচ্ছা এই মেলা ১৭ মার্চ পর্যন্ত চালানো। আশা করছি সবাই স্বাস্থ্য-সুরক্ষা মেনে বইমেলায় আসবেন। সবাই টিকা নেবেন। মাস্ক পরে সবাইকে সুরক্ষিত থাকতে হবে। ডিজিটাল পদ্ধতিতে বাংলাকে পরিচিত করাতে বিভিন্ন ফন্ট ব্যবহার করা হচ্ছে। ডিজিটাল প্রকাশনা করতে হবে। আধুনিক এই প্রকাশনা বাদ দিলে চলবে না।

ফেব্রুয়ারি মাসের ১ তারিখ থেকে বইমেলা শুরু হওয়ার রীতি থাকলেও করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে এবার বইমেলা শুরু হচ্ছে মাসের মাঝামাঝিতে। এই বইমেলা ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন দুপুর ২টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। রাত ৮টার পর নতুন করে কেউ মেলায় প্রবেশ করতে পারবেন না। ছুটির দিন বইমেলা বেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে। এছাড়া মহান একুশে ফেব্রুয়ারি মেলা শুরু হবে সকাল ৮টা থেকে চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত।

বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ এবং ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রায় সাড়ে ৭ লাখ বর্গফুট জায়গায় বইমেলা অনুষ্ঠিত হবে। মেলায় মোট ৩৫টি প্যাভিলিয়নসহ একাডেমি প্রাঙ্গণে ১০২টি প্রতিষ্ঠানকে ১৪২টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৪৩২টি প্রতিষ্ঠানকে ৬৩৪টি ইউনিট; মোট ৫৩৪ টি প্রতিষ্ঠানকে ৭৭৬ টি ইউনিট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

নিউজ লাইট ৭১

 

 

Tag :

শেয়ার করুন

একটি জাতির উন্নতি হয় ভাষা-সংস্কৃতি দিয়েই

আপডেট টাইম : ০৫:৪৫:২০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২২

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, একটি জাতি সব সময় উন্নতি করতে পারে, যদি তার ভাষা-সংস্কৃতির উন্নতি হয়। আমাদের প্রতিটি আন্দোলনে আমাদের সংস্কৃতিসেবীদের অবদান রয়েছে। কবি, সাহিত্যিক, লেখক, সংস্কৃতিসেবী প্রত্যেকেই কিন্তু আমাদের আন্দোলন-সংগ্রাম এবং আমাদের অর্জনের পেছনে অবদান রেখে গেছেন।

বাংলা একাডেমি আয়োজিত ‘অমর একুশে বইমেলা ২০২২’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। মঙ্গলবার বিকেলে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বইমেলার উদ্বোধন ঘোষণা করেন তিনি।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী পাতা উলটে বই পড়া নিয়ে তার ভালোলাগার কথা উল্লেখ করে বলেন, ডিজিটাল ডিভাইসে বই পড়ার চেয়ে একটা বই হাতে নিয়ে পাতা উল্টে-পাল্টে পড়া অনেক আনন্দের। বই না পড়লে মনে হয় কী যেন হলো না, কী যেন জানলাম না। এই মেলা হচ্ছে আমাদের প্রাণের মেলা, কোনো কারণে এই মেলা হতে না পারলে আমাদের সকলেরই খারাপ লাগে।

৩৮তম এ বইমেলা চলবে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এবারের বইমেলার মূল প্রতিপাদ্য- ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী’।

তিনি বলেন, করোনা মাহামারীর কারণে বইমেলা শুরু করতে দেরি হলো। প্রতিবছর ফেব্রুয়ারির ১ তারিখে বইমেলা শুরু হয়। কিন্তু এবার করোনা পরিস্থিতির কারণে এই মেলা শুরু হলো ১৫ ফেব্রুয়ারি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলা একাডেমিতে আমরা বইমেলা আয়োজন করে আসছি। এটা আমাদের প্রাণের মেলা। পাকিস্তান সরকার আরবি ও রোমান ভাষায় বাংলা লেখার প্রচলন করতে চেয়েছিল। আমি বলবো, বাংলা যেমন আমাদের আনন্দের ভাষা তেমন আমাদের প্রতিবাদেরও ভাষা।

বক্তব্যের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু ও ভাষা আন্দোলনে শহীদ ও জাতীয় চার নেতার প্রতি শ্রদ্ধার জানান।

তিনি বলেন, করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ায় এবারের বইমেলা দেরি করে শুরু করতে হল। যারা বাংলা একাডেমি পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন, তাদের আমি ধন্যবাদ জানাই। ১৯৪৭ সালে করাচিতে এক সভায় বাংলাকে মাতৃভাষার স্বীকৃতি দিতে আহ্বান জানানো হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৪৭ সালে করাচিতে এক সভায় বাংলাকে মাতৃভাষার স্বীকৃতি দিতে আহ্বান জানানো হয়। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি যে আন্দোলন করা হবে, এর সিদ্ধান্ত বঙ্গবন্ধুই দিয়েছিলেন। পাকিস্তান কখনোই আমাদের ভাষাকে স্বীকৃতি দিতে চায়নি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৫ তারিখে বইমেলা শুরু হয়েছে। তবে আমার ইচ্ছা এই মেলা ১৭ মার্চ পর্যন্ত চালানো। আশা করছি সবাই স্বাস্থ্য-সুরক্ষা মেনে বইমেলায় আসবেন। সবাই টিকা নেবেন। মাস্ক পরে সবাইকে সুরক্ষিত থাকতে হবে। ডিজিটাল পদ্ধতিতে বাংলাকে পরিচিত করাতে বিভিন্ন ফন্ট ব্যবহার করা হচ্ছে। ডিজিটাল প্রকাশনা করতে হবে। আধুনিক এই প্রকাশনা বাদ দিলে চলবে না।

ফেব্রুয়ারি মাসের ১ তারিখ থেকে বইমেলা শুরু হওয়ার রীতি থাকলেও করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে এবার বইমেলা শুরু হচ্ছে মাসের মাঝামাঝিতে। এই বইমেলা ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন দুপুর ২টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। রাত ৮টার পর নতুন করে কেউ মেলায় প্রবেশ করতে পারবেন না। ছুটির দিন বইমেলা বেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে। এছাড়া মহান একুশে ফেব্রুয়ারি মেলা শুরু হবে সকাল ৮টা থেকে চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত।

বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ এবং ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রায় সাড়ে ৭ লাখ বর্গফুট জায়গায় বইমেলা অনুষ্ঠিত হবে। মেলায় মোট ৩৫টি প্যাভিলিয়নসহ একাডেমি প্রাঙ্গণে ১০২টি প্রতিষ্ঠানকে ১৪২টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৪৩২টি প্রতিষ্ঠানকে ৬৩৪টি ইউনিট; মোট ৫৩৪ টি প্রতিষ্ঠানকে ৭৭৬ টি ইউনিট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

নিউজ লাইট ৭১