ঢাকা ০৭:১৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশের আজিজ খান সিঙ্গাপুরের শীর্ষ ধনী

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট টাইম : ০৪:৪৭:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০১৯
  • / 188

নিউজ লাইট ৭১ ডেস্ক: মুহাম্মদ আজিজ খান। তিনি একজন ধনাঢ্য বাংলাদেশি ব‍্যবসায়ী। এছাড়া সামিট গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা এবং চেয়ারম্যান তিনি। সিঙ্গাপুরের শীর্ষ ধনীর তালিকায় উঠে এসেছে তার নাম। আন্তর্জাতিক ব্যবসা সাময়িকী ফোর্বস ২০১৯ সিঙ্গাপুরের শীর্ষ ধনীদের যে তালিকা প্রকাশ করেছে, তাতে ৪০ নম্বরে আছেন তিনি।

ফোর্বসের ওয়েবসাইট অনুসারে, আজিজ খান ও তার পরিবারের মোট সম্পদের পরিমাণ উল্লেখ করেছে ৮৫ কোটি মার্কিন ডলার। সামিট গ্রুপের বাংলাদেশে বিদ্যুৎ, বন্দর, ফাইবার অপটিকস ও আবাসনসহ অন্যান্য ব্যবসা রয়েছে।

মিট গ্রুপ বাংলাদেশের বৃহত্তম শিল্পগোষ্ঠীগুলোর মধ্যে একটি, যার বিদ্যুৎ প্রকল্প বাংলাদেশের বিদ্যুতের প্রায় ২০ শতাংশ উৎপাদন করে। তার নেতৃত্বে সামিট গ্রুপ শুরু থেকেই বাংলাদেশের প্রথম বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিদ‍্যুৎ উৎপাদন করে আসছে। তাছাড়া জ্বালানি বাণিজ্য, বন্দর, টেলিযোগাযোগ, আতিথেয়তা এবং রিয়েল এস্টেট জুড়ে বিনিয়োগের সাথে একটি বৈচিত্রপূর্ণ প্রতিষ্ঠান হিসেবে সামিট গ্রুপ আত্মপ্রকাশ করেছে।

আজিজ খানের নেতৃত্বে সামিট গ্রুপ বিশ্বের অনেক বহুজাতিক সংস্থার সাথে অংশীদারত্ব গড়ে তুলেছেন। এর মধ্যে অন্যতম জিই, আইএফসি এবং ওয়ার্সেসিলা। তিনি বাংলাদেশের অভ্যন্তরে অবকাঠামো প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য কোটি কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছেন। এছাড়া ও তিনি বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে ৩ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগের অঙ্গীকার করেছেন।

মুহাম্মদ আজিজ খান, তার স্ত্রী এবং তিনজন পরিবারের সদস্যকে আইসিআইজে দ্বারা নামকরণ করা হয়েছে, যাতে ব্রিটিশ ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জে সিঙ্গাপুরের ঠিকানা ব্যবহার করে ছয়টি অফশোর কোম্পানি পরিচালনা করা হচ্ছে।

আজিজ খান একজন সেনা কর্মকর্তার ছেলে। তিনি একজন ব্যবসায়ী হিসেবে তার প্রথম পদক্ষেপ গৃহীত হয়েছিল, তার বন্ধুর সঙ্গে, যিনি তার বাবার মৃত্যুর পর পরিবারের আমদানি ব‍্যাবসার সঙ্গে নিযুক্ত হতে বাধ্য হন। তখন ১৮ বছর বয়সী খান ১৯৭৩ সালে পিতার কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা ধার করে বিনিয়োগ করেছিলেন।

১৯৮০ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব‍্যাবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউট (আই.বি.এ) থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। সামিট গ্রুপ ১৯৯৮ সালে দেশের প্রথম বেসরকারি বিদ্যুৎ প্লান্ট স্থাপন করে, যা খুলনা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড নামে পরিচিত।

ওশেন কনটেইনার্স লিমিটেড, সামিট গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের প্রথম বেসরকারী অফ-ডক সুবিধা প্রতিষ্ঠা করেছিল, যা এখন সামিট অ্যালায়েন্স পোর্টস লিমিটেড নামে পরিচিত। বর্তমানে দেশের ৩০ শতাংশ রপ্তানি এবং দেশের আমদানি খাতের ১০ শতাংশ এই প্রতিষ্ঠান করে থাকে।

সামিট কমিউনিকেশনস লিমিটেড প্রথমবারের মতো দেশীয় টেলিকমিউনিকেশন ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক স্থাপন করে যা ফাইবার অপ্টিক্সকে বাংলাদেশের ৭০ শতাংশ কভার করে এবং বাংলাদেশকে, ভারত ও মায়ানমারের সাথে স্থায়ী ফাইবার অপটিক্সের মাধ্যমে সংযুক্ত করে।

আইপিসি ও লিমিটেড , সামিট গ্রুপের একটি আতিথেয়তা এবং রিয়েল এস্টেট কোম্পানি। তারা একটি পাঁচ তারকা, একটি তিন তারকা হোটেল, একটি কনভেনশন হল এবং ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পাশে ১০০০ টি দোকান নির্মাণ করছে।

২০১১ সালে, খান বাংলাদেশে ৩২৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণের জন্য জিইই এর সাথে একটি যৌথ উদ্যোগে নেন। সেখানে তিনি সামিট গ্রুপের নেতৃত্ব দেন।

২০১৬ সালের এপ্রিলে, পানামা প্যাপার্সে মুহাম্মদ আজিজ খান, উনার স্ত্রী আঞ্জুম আজিজ খান, কন্যা আয়েশা আজিজ খান, ভাই জাফর উমায়েদ খান এবং ভাতিজা ফয়সাল করিম খান এর নাম পাওয়া যায়।

এতে দেখা যায় যে তাদের নামে সিঙ্গাপুরের ঠিকানা ব্যবহার করে ছয়টি অফশোর কোম্পানি পরিচালনা করা হচ্ছিল যার অধিকাংশ ব্রিটিশ ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জে অবস্থিত।

Tag :

শেয়ার করুন

বাংলাদেশের আজিজ খান সিঙ্গাপুরের শীর্ষ ধনী

আপডেট টাইম : ০৪:৪৭:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০১৯

নিউজ লাইট ৭১ ডেস্ক: মুহাম্মদ আজিজ খান। তিনি একজন ধনাঢ্য বাংলাদেশি ব‍্যবসায়ী। এছাড়া সামিট গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা এবং চেয়ারম্যান তিনি। সিঙ্গাপুরের শীর্ষ ধনীর তালিকায় উঠে এসেছে তার নাম। আন্তর্জাতিক ব্যবসা সাময়িকী ফোর্বস ২০১৯ সিঙ্গাপুরের শীর্ষ ধনীদের যে তালিকা প্রকাশ করেছে, তাতে ৪০ নম্বরে আছেন তিনি।

ফোর্বসের ওয়েবসাইট অনুসারে, আজিজ খান ও তার পরিবারের মোট সম্পদের পরিমাণ উল্লেখ করেছে ৮৫ কোটি মার্কিন ডলার। সামিট গ্রুপের বাংলাদেশে বিদ্যুৎ, বন্দর, ফাইবার অপটিকস ও আবাসনসহ অন্যান্য ব্যবসা রয়েছে।

মিট গ্রুপ বাংলাদেশের বৃহত্তম শিল্পগোষ্ঠীগুলোর মধ্যে একটি, যার বিদ্যুৎ প্রকল্প বাংলাদেশের বিদ্যুতের প্রায় ২০ শতাংশ উৎপাদন করে। তার নেতৃত্বে সামিট গ্রুপ শুরু থেকেই বাংলাদেশের প্রথম বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিদ‍্যুৎ উৎপাদন করে আসছে। তাছাড়া জ্বালানি বাণিজ্য, বন্দর, টেলিযোগাযোগ, আতিথেয়তা এবং রিয়েল এস্টেট জুড়ে বিনিয়োগের সাথে একটি বৈচিত্রপূর্ণ প্রতিষ্ঠান হিসেবে সামিট গ্রুপ আত্মপ্রকাশ করেছে।

আজিজ খানের নেতৃত্বে সামিট গ্রুপ বিশ্বের অনেক বহুজাতিক সংস্থার সাথে অংশীদারত্ব গড়ে তুলেছেন। এর মধ্যে অন্যতম জিই, আইএফসি এবং ওয়ার্সেসিলা। তিনি বাংলাদেশের অভ্যন্তরে অবকাঠামো প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য কোটি কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছেন। এছাড়া ও তিনি বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে ৩ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগের অঙ্গীকার করেছেন।

মুহাম্মদ আজিজ খান, তার স্ত্রী এবং তিনজন পরিবারের সদস্যকে আইসিআইজে দ্বারা নামকরণ করা হয়েছে, যাতে ব্রিটিশ ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জে সিঙ্গাপুরের ঠিকানা ব্যবহার করে ছয়টি অফশোর কোম্পানি পরিচালনা করা হচ্ছে।

আজিজ খান একজন সেনা কর্মকর্তার ছেলে। তিনি একজন ব্যবসায়ী হিসেবে তার প্রথম পদক্ষেপ গৃহীত হয়েছিল, তার বন্ধুর সঙ্গে, যিনি তার বাবার মৃত্যুর পর পরিবারের আমদানি ব‍্যাবসার সঙ্গে নিযুক্ত হতে বাধ্য হন। তখন ১৮ বছর বয়সী খান ১৯৭৩ সালে পিতার কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা ধার করে বিনিয়োগ করেছিলেন।

১৯৮০ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব‍্যাবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউট (আই.বি.এ) থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। সামিট গ্রুপ ১৯৯৮ সালে দেশের প্রথম বেসরকারি বিদ্যুৎ প্লান্ট স্থাপন করে, যা খুলনা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড নামে পরিচিত।

ওশেন কনটেইনার্স লিমিটেড, সামিট গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের প্রথম বেসরকারী অফ-ডক সুবিধা প্রতিষ্ঠা করেছিল, যা এখন সামিট অ্যালায়েন্স পোর্টস লিমিটেড নামে পরিচিত। বর্তমানে দেশের ৩০ শতাংশ রপ্তানি এবং দেশের আমদানি খাতের ১০ শতাংশ এই প্রতিষ্ঠান করে থাকে।

সামিট কমিউনিকেশনস লিমিটেড প্রথমবারের মতো দেশীয় টেলিকমিউনিকেশন ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক স্থাপন করে যা ফাইবার অপ্টিক্সকে বাংলাদেশের ৭০ শতাংশ কভার করে এবং বাংলাদেশকে, ভারত ও মায়ানমারের সাথে স্থায়ী ফাইবার অপটিক্সের মাধ্যমে সংযুক্ত করে।

আইপিসি ও লিমিটেড , সামিট গ্রুপের একটি আতিথেয়তা এবং রিয়েল এস্টেট কোম্পানি। তারা একটি পাঁচ তারকা, একটি তিন তারকা হোটেল, একটি কনভেনশন হল এবং ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পাশে ১০০০ টি দোকান নির্মাণ করছে।

২০১১ সালে, খান বাংলাদেশে ৩২৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণের জন্য জিইই এর সাথে একটি যৌথ উদ্যোগে নেন। সেখানে তিনি সামিট গ্রুপের নেতৃত্ব দেন।

২০১৬ সালের এপ্রিলে, পানামা প্যাপার্সে মুহাম্মদ আজিজ খান, উনার স্ত্রী আঞ্জুম আজিজ খান, কন্যা আয়েশা আজিজ খান, ভাই জাফর উমায়েদ খান এবং ভাতিজা ফয়সাল করিম খান এর নাম পাওয়া যায়।

এতে দেখা যায় যে তাদের নামে সিঙ্গাপুরের ঠিকানা ব্যবহার করে ছয়টি অফশোর কোম্পানি পরিচালনা করা হচ্ছিল যার অধিকাংশ ব্রিটিশ ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জে অবস্থিত।